somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পুলিশ কি আদৌ জনগনের বন্ধু হতে পেরেছে নাকি শুধু কাগজে কলমে লেখা হয়েছে

১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমার চাকরি সূত্রে মাঝে মাঝে কিছু ফোন পেয়ে থাকি যা বেশ বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে থাকে। তখন আসলে জবাব দেয়ার মত কোন কিছু খুজে পাই না। কারণ আমি যেই সমাধান দিয়েছি সেটা তার জন্য বেশ ভয় এবং শংকার সৃষ্টি করে থাকে। আসলে আমাদের পরিস্থিতি এমনটা করতে বাধ্য করছে। মানুষ পরিস্থিতির স্বীকার বলেই আজ মানুষ ভয় ও শংকার ভেতর দিয়ে যাচ্ছে।

ঘটনা -
সেই দিন একটি ফোন এসেছিল যে কেউ একজন তার ড্রাইভিং লাইসেন্স ও এটিএম কার্ড রাস্তায় ফেলে গিয়েছেন। যিনি ফোন করেছেন তিনি লাইসেন্স ও কার্ড দুটো পেয়ে আমাদের ফোন করেছিলেন। আমরা কোন একটা সমাধান করে দেব। এই ভেবেই তিনি আমাদের ফোন করেছেন।

আমি প্রথমে তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে তিনি কোথায় পেয়েছেন। আশে পাশে কাউকে খুজতে দেখেছেন কিনা। কতখন আগে পেয়েছেন। এসব কথা আমি তার কাছ থেকে জেনে নেই। যদিও আমার এই ধরনের প্রশ্ন করা ঠিক হয়েছে কিনা জানি না। তবুও করেছি।

তিনি আমার সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন সুন্দর ভাবে। এরপর তিনি আমার কাছে জানতে চাইলেন, এখন তিনি কি করবেন। এগুলো তার কাছে রাখা সম্ভব নয়। তিনি যার লাইসেন্স ও এটিএম কার্ড তাকে ফেরত দিতে চান। আমি তাকে বললাম গ্রুপে একটা পোস্ট করে দিন। তারপর মনে পর এটা ফেসবুকের কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড এর বাইরে চলে যাবে। কারণ এটা কনফেডেনশিয়াল তথ্য সম্বলিত।

তাই পরে বললাম আপনি নিকটস্থ থানায় জমা দিন। এই কথা শুনে লোকটা কিছুটা ভয় পেল। আমি যখন বলেছি সেটা স্বাভাবিক ভাবেই বলেছি। কিন্তু পরে উনি যেই উত্তর দিলেন আমি আসলে অবাক হয়েছি।

তিনি আমাকে বললেন, দেখেন ভাই আমি সাধারণ একজন মানুষ পুলিশের ঝামেলায় যেতে চাই না। আমি নিয়ে গেলে পুলিশ আমাকেই ফাসিয়ে দেবে না এটা গ্যারেন্টি কি। তাছাড়া আমাদের মত গরিব মানুষের পাশে কেউ দাঁড়াবেও না। আর থানা মানেই একটা না একটা ঝামেলার সৃষ্টি হবেই। আপনার কি অন্য কোন উপায় জানা আছে?

আমি ওনাকে বললাম যেই ব্যাংকের এটিএম কার্ড ওই ব্যাংকে গিয়ে খোজ নিতে পারেন। এতে করে আপনি কোন ঝামেলায় পরবেন না। আশা করি ব্যাংক আপনাকে এই বিষয়ে সহায়তা করবে। এরপর তিনি আমাকে ধন্যবাদ জানিয়ে ফোন রেখে দিয়েছেন।

কিন্তু আমি কেমন যেন একটা অস্বস্তির মধ্যে পরে গেলাম। আমার বাবা উকিল, আমার বন্ধুরা উকিল। তারপরও আমি নিজেই পুলিশের কাছে যেতে বা থানায় যেতে আমার বাধবে। ওনার কথার ভেতর এমন কিছু ছিল যা আমি এড়িয়ে যেতে পারিনি। আমাকে বার বার এই প্রশ্নটাই করে যেতে হচ্ছে "পুলিশ জনগণের বন্ধু" এটা কতটা স্বার্থক ভাবে পালন করা হয়েছে?

আজ মানুষ থানা ও পুলিশের কাছে যেতে ভয় পাচ্ছে। এখন প্রশ্ন আসতে পারে কেন? আপনি আমি যদি একটু চারপাশের পরিস্থিতি লক্ষ্য করি তবে দেখতে পাবো যে এই পরিস্থিতির জন্য কিন্তু দায়ী অন্য কেউ নয়। আজ মানুষ তাদের সহায়তা নিতে ভয় কেন পাচ্ছেন। কোথায় এত শংকা। কেন তারা থানা ও পুলিশ সহায়তা নিতে চান না।

কারণ আর কিছু নয়। আমাদের সিস্টেম। আমাদের সিস্টেম এমন দাড়িয়েছে যে আমরা কুড়ে কুড়ে মরে গেলেও আমরা কারো দাড়ে গিয়ে সহায়তা চাইব না। সেই অবস্থা তারা সৃষ্টি করতে পারেনি। ক্ষমতা, দাপট ও টাকার কাছে সব কিছুই বিক্রি হয়ে যায়। এটা ধ্রুব সত্য। এই সত্যটা মনে হয় সেই মানুষটিও উপলব্ধি করেছেন তাই তিনি থানায় যেতে চাননি।

আবার এটাও হতে পারে তারা যে জিনিসটা ফেরত দিবে তার গ্যারান্টি কি? এসব ছোটখাটো কাজ তো তারা করবে না। অথচ এটা কিন্তু কোন ছোটখাটো কাজ না। অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সম্বলিত ডকুমেন্টস। চাইলে এটা নিয়ে অনেক খারাপ কাজ করা যেতেই পারে। তাই এটাকে হেলাফেলা করাও যাচ্ছে না।

তবে এটার জন্য আলাদা একটা সার্ভিসের ব্যবস্থা করা যায়। লস্ট এন্ড ফাউন্ড সার্ভিস চালু করা যেতে পারে। যদিও জানি না এই ধরনের সার্ভিস আছে নাকি নাই। যদি থাকে তবে অবশ্যই এটা সবাই কে জানানো উচিত। আর না থাকলে করা উচিত। যেখানে শুধু মাত্র এই কাজের জন্য ডেডিকেটেড ব্যক্তি থাকবেন। যিনি এই কাজ হ্যান্ডেল করবেন।

প্রশ্নে ফিরে যাওয়া যাক, আদৌ কি পুলিশ বন্ধু হতে পেরেছে?
এর উত্তর আসলে আমাদের কারো জানা নেই। সবাই খারাপ নয়। আবার সবাই ভালো নয়। কিন্তু সিস্টেমের মধ্যে পরে সবাই একই সরল রেখায় চলতে থাকে। এটাই হচ্ছে সত্য কথা। আপনি আমি এই সিস্টমের বাইরে যেতে না পারলেও এড়িয়ে চলি। সব সময় আমাদের কে সর্তক থাকতে হয়। একটা অজানা ভয় ও আশংকা নিয়ে আমাদের থাকতে হয়। এই বুঝি কিছু হল। কিছু বলার সময় পাওয়া যায় না। তার আগেই মুখে তালা মেরে দেয়া হয়।

এক দিন পরিবর্তন আসবে। কারো না কারো হাত ধরে আসবে। সেই অপেক্ষায় থাকতে হবে। নিজেকে মানিয়ে নিতে হবে, নয়ত দেশ ছেড়ে দিতে হবে।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:০৬
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সে কবিতায় অন্য কেউ ছিলনা..

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:১২




সে কবিতায় অন্য কেউ ছিলনা—
শুধু আমিই ছিলাম, তোমার পরম আরাধনা হয়ে;
যেন কত জনমের সাধনা!
আবেগ আপ্লুত এই আমি তখন
বুঝে গেছি —স্বার্থক আমার কবিতা লেখা,
স্বার্থক সাধনা।

প্রেম যেন এক সদ্য প্রস্ফুটিত অপরাজিতা ফুল
স্বার্থক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইলশেগুঁড়ি নয় গল্পটা ইলশে গরুর

লিখেছেন শেরজা তপন, ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:১৭


মাদের বাজারে সারাবছর মাছই বিক্রি হত আর এক পাশে হাস মুরগীর ডিমাশে পাশের দশ বিশ পঞ্চাশ গ্রাম আর চরের মানুষ সদাই পাতি আনাজ মাছ দুধ নিয়ে আসত সেখানে বিক্রি... ...বাকিটুকু পড়ুন

যাপিত জীবন: একটি ইন্টার্ভিউ এবং আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ।

লিখেছেন জাদিদ, ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:৪০

একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান - বাংলাদেশে তাঁদের ফ্যাক্টরি, চায়নার অফিস এবং ঢাকার অফিসের জন্য বিভিন্ন পদে লোক নেয়ার জন্য বিডি জবসে একটি বিজ্ঞাপন দিয়েছিলো। সেখানে আবেদনকারীদের মধ্যে থেকে যোগ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কি নারীদের উপযুক্ত সম্মান দিতে জানি না?

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৪:৩০



গতমাসে তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ বিএনপির নারী নেত্রীদের নিয়ে আপত্তিকর কথাবার্তা বলেছিলেন। সেসব নিয়ে হৈচৈ হয়েছিল খুব। বিএনপির পক্ষ থেকে ঝাড়ু মিছিলও বের হয়েছিল। বক্তব্যটা যে শিষ্টাচার বহির্ভুত, তা বলার অপেক্ষা... ...বাকিটুকু পড়ুন

সৈয়দ আব্দুল হাদীর কালজয়ী কিছু গান

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২৭



এ বছরের মেরিল প্রথম আলো পুরষ্কার অনুষ্ঠানের ইউটিউব ভিডিও ফেসবুকে কিছুটা টেনে দেখতে গিয়ে আটকে গেলাম এই প্রজন্মের চার তরুনের কন্ঠে সৈয়দ আব্দুল হাদীর কিছু গান শুনে। এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

×