somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

পশ্চিমা দেয়ালে, শয়তান নাচেঃ

০৬ ই জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:২৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



আমেরিকায় রাজনীতি করতে হলে রাজনীতিবিদদের যেসকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয় তার মধ্যে অন্যতম একটি পরীক্ষা হলো ইজরায়েলের "Western wall" এর নিকট গিয়ে উপাসনা করা। ইতিহাস থেকে আমরা জানি যে ২০০০ বছর আগে খ্রিস্টানদের মেসিয়াহ্‌ ঈসা (আ) কে ইহুদী আলেম মৌলানারা পরিত্যাগ করে ও রোমানদের সাথে ষড়যন্ত্র করে মসীহ্‌কে ক্রুশবিদ্ধ করে। তাই প্রকৃতির নিয়মানুযায়ী ইহুদী ও খ্রিস্টানদের মাঝে সাপে নেউলে সম্পর্ক থাকার কথা, ছিলোও তাইই। ৭০০ খ্রিস্টব্দের পরে রহস্যময় কারণে ইউরোপীয় খ্রিস্টানরা মসীহ্‌ এর প্রতি কৃত অন্যায়ের শোক ভুলে ইহুদিদের চরম বন্ধুতে পরিণত হয়। এবং বর্তমানে ইহুদীদের নিজস্ব রিচুয়াল খ্রিস্টান পলিটিশিয়ানদের পালন করা একপ্রকার বাধ্যতামুলক হয়ে গেছে। বিশেষত পশ্চিমা দেয়াল পরিদর্শন করা!

American christian politicians at the Jewish wailing wall

বর্তমান অবৈধ ইজরায়েল রাষ্ট্রের সাম্রাজ্যবাদী ইহুদীরা আমাদের এই বলে বিশ্বাস করায় যে এই পশ্চিমা দেয়ালে "দ্বৈব উপস্থিতি" আছে এবং এটি Second Temple of Solomon (PBUH) এর অংশ। এই দেয়ালের প্রতিটি ফাঁক-ফোঁকর ও পাথরে পবিত্রতার ছোঁয়া আছে। কাগজে প্রার্থনা লিখে এই দেয়ালের ফোঁকরে রাখলে ঈশ্বর কর্তৃক সেই প্রার্থনা গৃহীত হয়।
Dead Wrong!
জেরুজালেমের এই Western wailing wall আসলে "ফোর্ট অ্যান্টোনিয়া" নামক রোমান দুর্গের ধ্বংসাবশেষ। ইহা প্রকৃত মন্দিরের উত্তরে অবস্থিত একটি দুর্গ। ৭০ সালে রোমান জেনারেল টাইটাস কর্তৃক জেরুজালেম আক্রমণ করা হয় ও Temple of Solomon (মসজিদ আল-আক্‌সা) কে এমনভাবে ধ্বংস করা হয় যে, কেউ জেরুজালেমে এসে বুঝতেই পারবে না এখানে কোনো মন্দিরের অস্তিত্ব ছিলো। রোমান সৈন্যরা সেটাকে ভেঙ্গে টুকরো টুকরো করে, গলিত স্বর্ণ পিন্ডের খোঁজে প্রতিটি পাথরকে এক এক করে আলগা করে, ঠিক যেমনটি ঈসা (আ) সতর্কবাণী দিয়েছিলেন, “একটি পাথরও অপর পাথরের উপর লেগে থাকবে না; সব ভেঙ্গে ফেলা হবে।” ইহুদীদেরকে জেরুজালেম থেকে বহিষ্কারের লোমহর্ষক কাহিনী পড়তে ফলো করুন- বনী ইজরায়েল ১৭:৪-৭

Historical Fall of Jerusalem in 70 After Jesus

জোসেফাস নামক একজন প্রত্যক্ষদর্শী ইহুদী ঐতিহাসিক তার "jewish war" নামক বইতেও এমনটি লিখে গেছেন। তার মতে, ৭০ খ্রিস্টাব্দে জেরুজালেমকে পরাস্ত করে রোমান জেনারেল টাইটাস জেরুজালেমকে মনিটরিং করার জন্য "Tenth legion" সহ মার্ক অ্যান্টোনিকে ধ্বংসপ্রাপ্ত মসজিদ আল-আক্‌সার উত্তরের এই দুর্গে রেখে যান। দুর্গটি রোমের পুতুল শাসক কিং হেরোডের সময়ে নির্মিত। অ্যান্টোনির নামানুসারে এই দুর্গের নাম হয়ে যায় "ফোর্ট অ্যান্টোনিয়া"। দুর্গটির চারপাশে যে দেয়াল তোলা ছিলো তার অংশবিশেষকেই বর্তমান ইহুদীরা Temole of Solomon এর পবিত্র দেয়াল বলে প্রচার করে ও উপাসনা করে।প্রফেসর ড. আর্নেস্ট মার্টিনের লেখা “The Temples That Jerusalem Forgot” বইয়েও মসজিদ আল-আক্‌সার পরিণতিকে সত্যায়ন করা হয়েছে।

১৩ শতকে কাব্বালিস্ট ইহুদীরা প্রচার প্রপাগান্ডা শুরু করে যে এই Western wailing wall এ দেবতা বসে আছে। এটি দেবতার আসন। ফলে তখন থেকে এই দেয়ালের সাথে পবিত্রতার সম্পর্ক সেঁটে যায়। পরে ১৮ শতকে Hasidic Movement এর মাধ্যমে তা আরও জনপ্রিয় ও বিস্তৃত হয়। আসলে Western wailing wall এর এই তথাকথিত "দ্বৈব উপস্থিতি"র অন্তরালে আছে কাব্বালিস্টিক মহিলা False GOD, the “Shekinah.” ইহুদীরা তাদের নব-উদ্ভাবিত প্রার্থনা "ডাভেনিং" এর মাধ্যমে পা দুটি স্থির রেখে ও কোমর সামনে পিছনে দুলিয়ে যে রিচুয়াল পালন করে তার প্রকৃত উদ্দেশ্য হলো সেকিনা দেবীর সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হয়ে কাব্বালিস্টিক পুরুষ দেবতা "Ein Soph" এর সাথে প্রেমময় সম্পর্কের জন্ম দেওয়া।

Jews at the Western Wall, 1870s

তাই, McCain, Bush, Obama, Clinton, Trump প্রভৃতি অ-ইহুদী রাজনীতিবিদদের ইজরায়েলের এই Wailing Wall এ গিয়ে প্রার্থনা করা কাব্বালিস্টিক শয়তানের সঙ্গে হাত মিলানো ছাড়া আর কিছুই নয়। কোরআন ও বাইবেলের অবিকৃত শিক্ষানুসারে মানুষের হাতে বানানো মসজিদ মন্দিরে যদি স্রষ্টা বাস না করেন, তাইলে প্যাগান রোমানদের বানানো দুর্গের দেয়ালে নিশ্চিত শয়তানই বাস করবে সন্দেহ নাই।
আমেরিকার পলিটিশিয়ানরা রোমান দুর্গ ফোর্ট অ্যান্টোনিয়ায় (যেটার ভুল নাম রাখা হয়েছে "The Western Wall") ইহুদীদের কাছে শুধুমাত্র তাদের আত্মাই বিক্রি করতে যান না, উপ্রোন্তু তারা একটি অশ্লীল অকাল্ট রিচুয়ালেও অংশগ্রহণ করেন, যেখানে "দ্বৈব উপস্থিতি" আসলে শয়তান নিজেই। ইহুদীরা আমেরিকার পলিটিশিয়ানদের পশ্চিমা দেয়ালে নিয়ে গিয়ে শয়তানের আশীর্বাদ গায়ে মাখিয়ে দেয় এবং সেই আশীর্বাদ সারা পথ বিমানে বহন করে হোয়াইট হাউজে ফেরে।

Pope Francis at Jewish occult
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুলাই, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:৩১
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জামাত কি দেশটাকে আবার পূর্ব পাকিস্তান বানাতে চায়? পারবে?

লিখেছেন ঋণাত্মক শূণ্য, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৭:২৮

অন্য যে কোন সময়ে জামাতকে নিয়ে মানুষ যতটা চিন্তিত ছিলো, বর্তমানে তার থেকে অনেক বেশী চিন্তিত বলেই মনে করি।



১৯৭১ এ জামাতের যে অবস্থান, তা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অস্তিত্বের বিরুদ্ধে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইন্দিরা গান্ধীর চোখে মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক: ওরিয়ানা ফলাচির সাক্ষাৎকার

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৫


১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ইতালীয় সাংবাদিক ওরিয়ানা ফলাচি ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সাক্ষাৎকার নেন। এই সাক্ষাৎকারে মুক্তিযুদ্ধ, শরনার্থী সমস্যা, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, আমেরিকার সাম্রাজ্যবাদী পররাষ্ট্রনীতি এবং পাকিস্তানে তাদের সামরিক... ...বাকিটুকু পড়ুন

=যাচ্ছি হেঁটে, সঙ্গে যাবি?=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:০৬


যাচ্ছি হেঁটে দূরের বনে
তুই কি আমার সঙ্গি হবি?
পাশাপাশি হেঁটে কি তুই
দুঃখ সুখের কথা ক'বি?

যাচ্ছি একা অন্য কোথাও,
যেখানটাতে সবুজ আলো
এই শহরে পেরেশানি
আর লাগে না আমার ভালো!

যাবি কি তুই সঙ্গে আমার
যেথায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগামী নির্বাচন কি জাতিকে সাহায্য করবে, নাকি আরো বিপদের দিকে ঠেলে দিবে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:১২



আগামী নির্বচন জাতিকে আরো কমপ্লেক্স সমস্যার মাঝে ঠেলে দিবে; জাতির সমস্যাগুলো কঠিন থেকে কঠিনতর হবে। এই নির্বাচনটা মুলত করা হচ্ছে আমেরিকান দুতাবাসের প্রয়োজনে, আমাদের দেশের কি হবে, সেটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×