গতকাল যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে দু'জন সদস্য বিচার আসনে বসেছিলেন। এসময় চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন। এক পর্যায়ে আইনজীবীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমার দেশ পত্রিকায় আমার সম্পর্কেও কিছু কথাবার্তা আছে। পত্রিকা পড়ে মনে হল, আমার সম্পর্কে কারো স্পস্ট ধারণা নেই। কারো সম্পর্কে কোন কিছু বলা বা লেখার আগে, তার সম্পর্কে জেনেই বলা বা লেখা উচিত। এটা ইসলাম ধর্মেও বলা আছে। কিন্তু আজকাল জ্ঞানী-গুণীরা এই নিষিদ্ধ কাজটি করতে পছন্দ করেন। এটা কালচারে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, কঠিন সংগ্রাম করে আমি এখানে এসেছি। মনে হচ্ছে বাকি জীবনটাও কঠিন পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যাবে। শপথ নেয়ার আগ থেকেই আমি জীবনে একটা আদর্শ মেনে চলতাম। ব্যক্তিগত বা পেশাগত জীবনে আমি কখনো মিথ্যাকে আশ্রয় দেইনি। রাজনৈতিক অঙ্গনে আমি কখনো কোনো ব্যক্তির সাথে খারাপ ব্যবহার করিনি। কোনো রাজনৈতিক সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করিনি। এই কিছু সংখ্যক নিন্দুকের একশ ভাগ নির্লজ্জ মিথ্যা মন্তব্যে মাঝে মাঝে আমি বিচলিত হই। তবে আমি হতাশ না। মিথ্যাতো মিথ্যাই। এই মিথ্যাকে হারিয়ে ভালো এক সময় সামনে আসবেই।
বিচারপতি জাহাঙ্গীর বলেন, নানা কারণে আমি অনেকের ঈর্ষার কারণ হতে পারি। বিচারপতি হওয়ার জন্য মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, আমি যে অবস্থায় ছিলাম, সত্ ছিলাম। সত্ আছি এবং বাকি জীবনটুকুও সত্ থাকব। আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, তিনি ইচ্ছা করলে আমার সম্পর্কে এতবড় শিরোনামটা না দিলেও পারতেন। তবু আমি তাকে ধন্যবাদ দেই। ধন্যবাদ জানাই আমার দেশকে এবং রিপোর্টারকে। অন্য সাংবাদিকদেরও। নিন্দুকের মুখে কালো ছাই দিয়ে বলতে চাই, আমার নাম জাহাঙ্গীর হোসেন। সার্টিফিকেটেও আছে জাহাঙ্গীর হোসেন। এপয়েন্টমেন্টেও ছিলো জাহাঙ্গীর হোসেন। শপথ নেয়ার পরে জাস্টিস জাহাঙ্গীর হোসেন। শুধু জাস্টিস জাহাঙ্গীর হোসেন। এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত আমি ধৈর্য ধরে রয়েছি।
বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেনের বক্তব্য যেন গণমাধ্যমে প্রকাশ না হয়, সেজন্য ট্রাইব্যুনালের নির্দেশনা চান রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সুলতান মাহমুদ। তবে তার আবেদনে সাড়া দেননি বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি বলেন, 'আমার তো কিছু বলার নেই। আমি একটা প্রতিবাদও দিতে পারছি না। সাংবাদিকরাই ভাল বুঝবেন ।
কালের কণ্ঠ