১.
সিএমসিতে এক তালেবর ছাত্রনেতার কাহিনী সাড়া ফেলছিল। স্থানীয় এক ছেলে পাপ ঢাকতে তার শরণ নিছিল। বাচ্চাটা বিক্রি করা হইছিল। সেইটা ঢাকতে গিয়া আরেক কাহিনী। যাক সে কথা। হাসপাতালগুলাতে বাচ্চাকাচ্চা ইধার-উধার হয় বহুত আগে থাইক্যা। মেয়ে বাচ্চা বদল হয় বেশি। আয়া এবং ওয়ার্ড বয়রা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আকামটা করে। সম্প্রতি পত্রিকায় আসছে ডিএনএ টেস্ট কইরা এক দম্পতি জানছে কাউয়ার ঘরে কুকিলের ছাওর কথা।
২.
ছোটবেলায় আমার এক আতঙ্কের নাম ছিল ছেলেধরা। মা আমারে জুজুটা দিত ভাল মতোই, আমার নাকে রুমাল চাইপা ধইরা বস্তায় ভইরা নিয়া যাইব কেউ। কারো খাবার খাবা না, অপরিচিত কারো সঙ্গে কথা বলবা না। স্বাধীনতার পরপর ব্রাক্ষণবাড়িয়া মিশন স্কুলে আমাদেরই ক্লাসের সুমি নামে একটা মেয়েরে অপহরণ কইরা হত্যা করা হইছিল। আমি আতঙ্কিত থাকতাম।
৩.
উটের জকি সেদিনের কথা। টুকরা কইরা প্রত্যঙ্গ বিক্রির গা শিউরানো নির্মমতার কথাও শোনা যায়। এক জায়গায় অনেকগুলা বাচ্চার মাথার খুলি পাওয়া যাওয়ার খবর পত্রিকায় আসছিল। তার আগ পর্যন্ত আমি জানতাম পোলাপাইন ধইরা নিয়া হাত-পা ভাইঙ্গা ভিক্ষুক বানাইয়া দেয়া হয়। কোনটা সত্য জানি না। নারী ও শিশু পাচারের ভয়াবহতা সম্পর্কে জানি, কিন্তু তার আগ্রাসি রূপটার সঙ্গে তেমন পরিচয় নাই।
৪.
প্রতিদিন তিন-চারটা সিগনালে থামতে হয়। সবগুলাতেই থামা গাড়িতে হাত বাড়ায় আবালবৃদ্ধবনিতারা। বেশিরভাগ প্রতিবন্ধী। সবচেয়ে চমকপ্রদ সমাহারটা কলাবাগান মোড়ে, ধানমন্ডীর দিকে বাঁক নিতে। এইখানে বাচ্চারা সংখ্যায় বেশী। একেকজনের একেক অবস্থা। হাত নাই, পা নাই, টিউমার, মানসিক প্রতিবন্ধী ইত্যাদি ইত্যাদি। বুড়া-বুড়িও প্রচুর। একদিন খেয়াল কইরা দেখলাম, তাদের মাঝে প্রতিযোগিতা যেমন, তেমনি সমঝোতাও। তারা একটা সমাজ মেন্টেইন করে। একজন একটা জুস দিছে একটা বাচ্চারে। সে তা আরো দুইজনের সঙ্গে ভাগ কইরা খাইল। সবার মুখ হাসিতে ঝলমল।
৫.
আন্ডার ওয়ার্ল্ড সম্পর্কে যেটুকু ধারণা তাতে নারী-শিশু তাদের জন্য দারুণ মুনাফার পণ্য। এবং ভিক্ষুকদের ওপর কর আদায় করা হয়। প্রতিটা জায়গার জন্য এসব ভিক্ষুক জায়গামতো নির্দিষ্ট অংকের টাকা দিতে বাধ্য। ভিক্ষা করা, রাতে থাকা, সব কিছুর জন্যই তারা আয়করের আওতায় ওই অন্ধকার বলয়ে। ব্যাপারটা সম্পর্কে খুব ভালো না জাইনা মন্তব্য করা ঠিক না। তবে আমি একদম ভুল জানি না।
৬.
সেদিন রাস্তায় এক বিকট মহিলাকে এক নবজাতক নিয়ে রিকশায় উঠতে দেইখ্যা আমার বুকটা মোচড় দিয়া উঠছিল। মনে হইছে সে বাচ্চাটার মা না। আমার পুলিশ ডাকা উচিত। কিন্তু ওই পর্যন্তই। ভাবনাই আমার সীমাবদ্ধতা। তার আগে একদিন দুই নেশাখোরের কাছে দেখছি একটা বাচ্চা। এফডিসির সামনের আখড়ায় এক পাবলিক আসত তার বাচ্চা নিয়া, বাপে হেরোইন খাইত, বাচ্চারে ভাড়া দিত শুটিংয়ের জন্য। পরে এক সিনেমায় বাচ্চারে দেইখ্যা মা জানতে পারছে ঘটনা। সে আরেক কেলেংকারি।
৭.
আমিও বাবা হমু। আমার সন্তানের ভবিষ্যত নিয়াও আমি শঙ্কিত। ক্যামন লাগে সন্তান চুরি হওয়া এসব বাবা মায়ের? ভাবতে চাই না। জুজুটা ফির্যা আসল অন্যরূপে, অন্যভাবে।
*ল্যাখাটা একইসঙ্গে ভিন্ন ব্লগে প্রকাশিত
আলোচিত ব্লগ
ধর্ম ও বিজ্ঞান
করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন
তালগোল
তুমি যাও চলে
আমি যাই গলে
চলে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফুরালেই দিনের আলোয় ফর্সা
ঘুরেঘুরে ফিরেতো আসে, আসেতো ফিরে
তুমি চলে যাও, তুমি চলে যাও, আমাকে ঘিরে
জড়ায়ে মোহ বাতাসে মদির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন
মা
মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।
অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন
কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।
একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন
ভারতকে জানতে হবে কোথায় তার থামতে হবে
ইন্ডিয়াকে স্বপ্ন দেখানো ব্যাক্তিটি একজন মুসলমান এবং উদার চিন্তার ব্যাক্তি তিনি হলেন এপিজে আবুল কালাম। সেই স্বপ্নের উপর ভর করে দেশটি এত বেপরোয়া হবে কেউ চিন্তা করেনি। উনি দেখিয়েছেন ভারত... ...বাকিটুকু পড়ুন