somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার আগামীকে নিয়ে শঙ্কায়

০৮ ই জুন, ২০০৭ সকাল ১০:৫৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১.
সিএমসিতে এক তালেবর ছাত্রনেতার কাহিনী সাড়া ফেলছিল। স্থানীয় এক ছেলে পাপ ঢাকতে তার শরণ নিছিল। বাচ্চাটা বিক্রি করা হইছিল। সেইটা ঢাকতে গিয়া আরেক কাহিনী। যাক সে কথা। হাসপাতালগুলাতে বাচ্চাকাচ্চা ইধার-উধার হয় বহুত আগে থাইক্যা। মেয়ে বাচ্চা বদল হয় বেশি। আয়া এবং ওয়ার্ড বয়রা মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে আকামটা করে। সম্প্রতি পত্রিকায় আসছে ডিএনএ টেস্ট কইরা এক দম্পতি জানছে কাউয়ার ঘরে কুকিলের ছাওর কথা।

২.
ছোটবেলায় আমার এক আতঙ্কের নাম ছিল ছেলেধরা। মা আমারে জুজুটা দিত ভাল মতোই, আমার নাকে রুমাল চাইপা ধইরা বস্তায় ভইরা নিয়া যাইব কেউ। কারো খাবার খাবা না, অপরিচিত কারো সঙ্গে কথা বলবা না। স্বাধীনতার পরপর ব্রাক্ষণবাড়িয়া মিশন স্কুলে আমাদেরই ক্লাসের সুমি নামে একটা মেয়েরে অপহরণ কইরা হত্যা করা হইছিল। আমি আতঙ্কিত থাকতাম।

৩.
উটের জকি সেদিনের কথা। টুকরা কইরা প্রত্যঙ্গ বিক্রির গা শিউরানো নির্মমতার কথাও শোনা যায়। এক জায়গায় অনেকগুলা বাচ্চার মাথার খুলি পাওয়া যাওয়ার খবর পত্রিকায় আসছিল। তার আগ পর্যন্ত আমি জানতাম পোলাপাইন ধইরা নিয়া হাত-পা ভাইঙ্গা ভিক্ষুক বানাইয়া দেয়া হয়। কোনটা সত্য জানি না। নারী ও শিশু পাচারের ভয়াবহতা সম্পর্কে জানি, কিন্তু তার আগ্রাসি রূপটার সঙ্গে তেমন পরিচয় নাই।

৪.
প্রতিদিন তিন-চারটা সিগনালে থামতে হয়। সবগুলাতেই থামা গাড়িতে হাত বাড়ায় আবালবৃদ্ধবনিতারা। বেশিরভাগ প্রতিবন্ধী। সবচেয়ে চমকপ্রদ সমাহারটা কলাবাগান মোড়ে, ধানমন্ডীর দিকে বাঁক নিতে। এইখানে বাচ্চারা সংখ্যায় বেশী। একেকজনের একেক অবস্থা। হাত নাই, পা নাই, টিউমার, মানসিক প্রতিবন্ধী ইত্যাদি ইত্যাদি। বুড়া-বুড়িও প্রচুর। একদিন খেয়াল কইরা দেখলাম, তাদের মাঝে প্রতিযোগিতা যেমন, তেমনি সমঝোতাও। তারা একটা সমাজ মেন্টেইন করে। একজন একটা জুস দিছে একটা বাচ্চারে। সে তা আরো দুইজনের সঙ্গে ভাগ কইরা খাইল। সবার মুখ হাসিতে ঝলমল।

৫.
আন্ডার ওয়ার্ল্ড সম্পর্কে যেটুকু ধারণা তাতে নারী-শিশু তাদের জন্য দারুণ মুনাফার পণ্য। এবং ভিক্ষুকদের ওপর কর আদায় করা হয়। প্রতিটা জায়গার জন্য এসব ভিক্ষুক জায়গামতো নির্দিষ্ট অংকের টাকা দিতে বাধ্য। ভিক্ষা করা, রাতে থাকা, সব কিছুর জন্যই তারা আয়করের আওতায় ওই অন্ধকার বলয়ে। ব্যাপারটা সম্পর্কে খুব ভালো না জাইনা মন্তব্য করা ঠিক না। তবে আমি একদম ভুল জানি না।

৬.
সেদিন রাস্তায় এক বিকট মহিলাকে এক নবজাতক নিয়ে রিকশায় উঠতে দেইখ্যা আমার বুকটা মোচড় দিয়া উঠছিল। মনে হইছে সে বাচ্চাটার মা না। আমার পুলিশ ডাকা উচিত। কিন্তু ওই পর্যন্তই। ভাবনাই আমার সীমাবদ্ধতা। তার আগে একদিন দুই নেশাখোরের কাছে দেখছি একটা বাচ্চা। এফডিসির সামনের আখড়ায় এক পাবলিক আসত তার বাচ্চা নিয়া, বাপে হেরোইন খাইত, বাচ্চারে ভাড়া দিত শুটিংয়ের জন্য। পরে এক সিনেমায় বাচ্চারে দেইখ্যা মা জানতে পারছে ঘটনা। সে আরেক কেলেংকারি।

৭.
আমিও বাবা হমু। আমার সন্তানের ভবিষ্যত নিয়াও আমি শঙ্কিত। ক্যামন লাগে সন্তান চুরি হওয়া এসব বাবা মায়ের? ভাবতে চাই না। জুজুটা ফির‌্যা আসল অন্যরূপে, অন্যভাবে।

*ল্যাখাটা একইসঙ্গে ভিন্ন ব্লগে প্রকাশিত
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সাজানো ভোটে বিএনপিকে সেনাবাহিনী আর আমলারা ক্ষমতায় আনতেছে। ভোট তো কেবল লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা মাত্র।

লিখেছেন তানভির জুমার, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:২২



১০০% নিশ্চিত বিএনপি ক্ষমতায় আসছে, এবং আওয়ামী স্টাইলে ক্ষমতা চালাবে। সন্ত্রাসী লীগকে এই বিএনপিই আবার ফিরিয়ে আনবে।সেনাবাহিনী আর আমলাদের সাথে ডিল কমপ্লিট। সহসাই এই দেশে ন্যায়-ইনসাফ ফিরবে না। লুটপাট... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজনীতির পন্ডিত, ব্লগার তানভীর জুমারের পোষ্টটি পড়েন, জল্লাদ আসিফ মাহমুদ কি কি জানে!

লিখেছেন জেন একাত্তর, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৪৯



সামুর রাজনীতির ডোডো পন্ডিত, ব্লগার তানভীর ১ খানা পোষ্ট প্রসব করেছেন; পোষ্টে বলছেন, ইউনুস ও পাকিসতানীদের জল্লাদ আসিফ মাহমুদ ধরণা করছে, "সেনাবাহিনী ও ব্যুরোক্রেটরা বিএনপি'কে... ...বাকিটুকু পড়ুন

নীল নকশার অন্ধকার রাত

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২১ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:১৬


কায়রোর রাস্তায় তখন শীতের হিম হাওয়া বইছিল। রাত প্রায় সাড়ে এগারোটা। দুইটা বড় সংবাদপত্র অফিস: আল-আহরাম এবং আল-মাসরি আল-ইয়াউম—হঠাৎ করেই আগুনে জ্বলে উঠলো। কিন্তু এই আগুন কোনো সাধারণ দুর্ঘটনা... ...বাকিটুকু পড়ুন

হাদি ভাই, ইনসাফ এবং একটা অসমাপ্ত বিপ্লবের গল্প

লিখেছেন গ্রু, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৩:০৮



ইদানিং একটা কথা খুব মনে পড়ে। হাদি ভাই।

মানুষটা নেই, কিন্তু তার কথাগুলো? ওগুলো যেন আগের চেয়েও বেশি করে কানে বাজে। মাঝেমধ্যে ভাবি, আমরা আসলে কীসের পেছনে ছুটছি? ক্ষমতা? গদি? নাকি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে

লিখেছেন এস.এম. আজাদ রহমান, ২২ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:৩২

আগুন যখন প্রশ্নকে পোড়াতে আসে[

স্বাধীন সাংবাদিকতার কণ্ঠরোধে রাষ্ট্রীয় ব্যর্থতা, মব-রাজনীতি ও এক ভয়ংকর নীরবতার ইতিহাস
চরম স্বৈরশাসন বা ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রেও সাধারণত সংবাদমাধ্যমের কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার সাহস কেউ করে না। কারণ ক্ষমতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×