পর্ব – ১
পর্ব – ২
পর্ব – ৩
দার্জিলিং গেছেন অথচ tiger hill জান নাই এমন লোক খুঁজে পাওয়া যাবে না. আমরাও গিয়েছিলাম, ভোর ৩.৩০ টার সময় রওনা দিয়ে পৌছতে পৌছতে প্রায় ৪.৩০. এই ভোর রাতেও অনেক গাড়ি দেখলাম, সবাই যাচ্ছে tiger hill এ, যেনো বিশাল রহস্য লুকিয়ে আসছে কান্চন্জজঘার বরফ ঢাকা চুড়ায় আর আমরা tiger hill হ্থেকে তা দেখে সেই রহস্য উদ্ধার করে ফেলবো. যাই হোক, টিকেট কাটতে হয় পথে এক জায়গায়, আমরা ২০ রুপির টিকেট নিলাম. এটা সবচে কম দামি টিকেট, আসলে টিকেট কাটাটাই ভুল ছিলো. টিকেট না কেটে যারা বাইরে নিচে দরিয়া দেখছে তারাই ভালো দেখতে পারছে. ছবি না দেখলে বেপারটা ভালো করে বুঝাতে পারবো না.
আমরা পৌছানোর পর যে যার মতো করে জায়গা দখল করলাম. আমরা যখন পৌছাইলাম তখন মানুষ ছিলো হাতে গোনা কয়জন, ৩০ মিনিটের মধ্যে মোটামুটি দাড়ানোর মতো জায়গা পাওয়া মুশকিল হয়ে গেলো. বিশেষ করে কলকাতার দাদারা খুবই ঝামেলা করে. তাদের জন্য ছবি তোলাই মুশকিল. এক দাদা তো আমাকে পিছন থেকে বলেই ফেললো, “ও দাদাআআ, ছবি তো অনেক তুললেন, এবার একটু সরুন, আমরাও কটা ছবি তুলি, ছবি ধোলাই না করলে বাড়িতে দেখাব কেমনে?” আমিও উত্তর দিলাম “দাদা আমাদের ধোলাই খালে আইসেন মাগনা ধোলাই করে দিবো” বলে আমি যা করতেছিলাম তাই করতে লাগলাম (মনে মনে গালি দিলাম আর বললাম, শালা আমাদের এখানে আসতে কত কষ্ট হইছে জানোস? ভোর থেকে লাইনে দাঁরাতে হইছে ভিসার পেপার জমা দেওয়ার জন্য(তখন ইটোকেন ছিলো না), বর্ডারে ৬ ঘন্টা বসে থাকতে হয়েছে. তরা তো খালি বাস অথবা ট্রেনে চড়ে সোজা চলে আসস, ভিসা পাসপোর্ট কিছুই লাগে না).
Tiger hill. সবাই কান্চন্জন্ঝা দেখতে খুব ব্যস্ত. নিচে দাড়াতে কোনো টিকেট লাগে না, যত উপরে থাকতে চান টিকেটের দাম তত বেশি. কিন্তু আমার মনে হয়েছে নিচে থেকেই ভালো দেখা যায়. অন্তত কাঞ্চনজংঘাকে কয়েক ফুট কাছে থেকে দেখা জায়।
আস্তে আস্তে সুর্যের আলো পড়তে শুরু করছে নাঞ্চনজংঘার উপর.
সুর্য অনেক আগেই উঠছে কিন্তু পূর্ব পাশে পাহাড় থাকার জন্য কান্চন্জন্ঘর উপর আলো আসতে অনেক টাইম লাগে. কিন্তু প্রথম কয় মিনিটের আলো পুরা লাল থাকে. অদ্ভুত সেই দৃশ্য. এই লাল খুব বেশি হলে ৫ মিনিট স্থায়ী হয়.
পাহাড়ের ঐপাশ থেকে সুর্য উকি দিতেহে, এই আলোয় কান্চন্জন্ঘা কিছুক্ষনের জন্য লাল হয়ে যায়. এটা পূর্ব দিক, আর কান্চন্জন্ঘা হলো এর প্রায় বিপরীত দিকে.
পূর্ব দিগন্তে সুর্য উঠেছে রক্ত লাল রক্ত লাল রক্ত লাল দেখতে ব্যাস্ত সবাই। ওই দূরে হাতছানি দিয়ে ডাকছে কাঞ্চনজঙ্ঘা
tiger hill টাওয়ারের একতলা থেকে নেওয়া ছবি এটা । তখন সূর্যের লাল রঙ প্রায় পুরাই ফ্যাকাশে হয়ে গেছে।
Tiger hill থেকে কান্চন্জন্ঘা দেখতে দেখতে অদ্ভুত সুন্দর এই মেঘের খেলা দেখলাম. নদীর পানির মতো করে মেঘ বয়ে যাচ্ছিলো পাহাড়ের উপর দিয়ে, Tiger hill থেকে অনেক নিচে. মেঘ যে এত লাইন মেনে বয়ে যায় এর আগে কখনো দেখি নাই.
পুরা কান্চন্জন্ঘা কে হাতের মুঠোয় আনার ব্যর্থ চেষ্টা. ছবিটা ৭.১৬ মিনিটে তোলা।
মানুষের মাথা মানুষ খায়, এত্ত ভীড় থাকে। তবে আগে প্রথমদিকের যারা তারা সবাই ৪.৩০ টার দিকে এসে এই জায়গা দখন করছেন, তা না হলে দাদাদের যন্ত্রনায় টেকা দায়।
চলে জাচ্ছি কাঞ্চনজঙ্গা থেকে। গাড়ি থেকে তোলা ছবি এটা।
তবে আমার ব্যাক্তিগত মত হলো কাঞ্চনজঙ্গা টাইগার হিল থেকেও ভাল দেখা যায় বাতাসিয়া লূপ থেকে। বাতাসিয়া লূপ থেকে কাঞ্চনজঙ্গাকে আরো অনেক কাছে মনে হয়।
চলবে…………
পর্ব – ১
পর্ব – ২
পর্ব – ৩