গোধূলী। আকাশে চলছে রঙের খেলা। রঙের উৎসবে মেতে উঠেছে এক ঝাঁক চিল। কড়ই, মেহগনি, সেগুন, কৃষ্ণচূড়া আর নাম না জানা গাছের পাতার ফাঁকে আলোর মাখামাখি। দূরের সজনে গাছে সরু সরু সজনে ঝুলে আছে, ঠিক যেন ছবির ঝাপসা পাতাওয়ালা গাছ। কৃষ্ণচূড়ার লম্বা কালো কালো ফলগুলো ঝুলে ঝুলে শহরের ব্যস্ততা দেখছে। রাস্তায় রিকশা, সিএনজি, ট্যাক্সি, বাস, ট্রাক, প্রাইভেট কার। কোথাও দেয়ালের বুক জুড়ে কালো অথবা রঙিন প্রতিবাদী শ্লোগান। কোথাও পণ্যের বিজ্ঞাপন। চারিদিকে নানা ধরনের মানুষ। কর্মব্যস্ত মানুষ, ছাত্র-ছাত্রী, বন্ধুদের প্রাণচঞ্চল আড্ডা, কপোত-কপোতীর উচ্ছ্বসিত মুখ, ফুটপাতের গুটিকয়েক উন্মাদ আর জীবনের ভারে কুঁজো মানুষ। আমি রিকশার মৃদু গতিতে বিচিত্র এই জীবনের মাঝ দিয়ে ছুটে যাই।
................................
রাত ৯.৪৫। কর্মব্যস্ত রাস্তাগুলো অবসন্ন হতে শুরু করেছে। রাস্তায় কিছু বাস, ট্রাক, গুটিকয় প্রাইভেট কার আর অল্প কিছু রিকশা। রাস্তা পেরিয়ে হাঁক দেই, মামা যাবেন?
.................................
রিকশা পেলাম না।
আমি এখন হাঁটছি। হালকা ঠান্ডা বাতাস বইছে। সোডিয়াম লাইটের হলুদ আলোয় ঢাকা পথে হাঁটতে ভালই লাগছে। আমার সাথে হাঁটছে আমার ছায়া।
.................................
রাত ১.০০ টা। মনটা বিক্ষিপ্ত। বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছি। কালো আকাশের বুকে ফুটে থাকা তারা দেখতে দেখতে আশপাশের চেনা জগতটাকে কেমন যেন অচেনা মনে হচ্ছে, স্বপ্ন মনে হচ্ছে।
আহ ! জীবনটা যদি স্বপ্ন হত। ঘুমের ঘোরে দেখা স্বপ্ন নয়। সেই স্বপ্ন, যে স্বপ্ন জেগে জেগে দেখা যায়, যেখানে ইচ্ছেমত ভাঙা যায়, ইচ্ছে মত গড়া যায়। জীবনানন্দের মত বলতে ইচ্ছে করে......
পৃথিবীর বাধা--এই দেহের ব্যাঘাতে
হৃদয়ে বেদনা জমে;--স্বপনের হাতে
আমি তাই
আমারে তুলিয়া দিতে চাই !
বলতে ইচ্ছে করে.........
দিনের উজ্জ্বল পথ ছেড়ে দিয়ে
ধূসর স্বপ্নের দেশে গিয়া
হৃদয়ের আকাঙ্ক্ষার নদী
ঢেউ তুলে তৃপ্তি পায় - ঢেউ তুলে তৃপ্তি পায় যদি, -
তবে ওই পৃথিবীর দেয়ালের 'পরে
লিখিতে যেও না তুমি অস্পষ্ট অক্ষরে
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই এপ্রিল, ২০১০ ভোর ৪:৫০

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।






