somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হিপ্নোটাইজ: মাধবী এসেছিলো [পর্ব-০২]

২৯ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ২:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিঃদ্রঃ গল্পের চরিত্র একেবারেই কাল্পনিক; যদি কোন ঘটনার সাথে মিলে তবে আমিই দায়ী থাকবো।


ইতোমধ্যে মাধবীর বিয়ে হয়ে গেছে। আর কখনোই হয়তো আগের মতো করে হয়ে জড়িয়ে থাকবেনা মাধবীলতা আমার দেহের জানালার গ্রীল ধরে। তবু স্বপ্ন এখন গানের সুরে,
"একদিন বৃষ্টিতে বিকেলে
আমরা ধরা পড়ে যাব জেনো ঠিক
ধুয়ে যাবে যত আছে অভিমান
ধুয়ে যাবে সিঁদুরের টিপ
আর চটিটাও ছিঁড়ে যাবে তক্ষুনি
তাই পালানো যাবেনা যে কোথাও
রাস্তা যেমন তেমনি
শুধু লোকজন সব উধাও "

সেবার যখন সম্মোহিত হয়েছিলাম প্রিয়তমার আত্মা দ্বারা; আমার মাথার উপর প্রচন্ড বেগে ফ্যান ঘুরছিলো। তারপর অনেক দিন পেরিয়েছি-সেই ফ্যান এখন আরো বেশি করে ঘুরে; ঘুরে আসেনা স্মৃতি,জ্বালা,প্রেম। কেমন জানি হয়ে গেছি; একটা বিশাল পাথর হয়তো জন্মছে ভেতরে যেখানে ভালোবাসা থাকে।
কয়েকদিন আগের কথা জহির রায়হানের "স্টপ জেনোসাইড" দেখে প্লেলিষ্টে কিছু জাগরণের গান এড করে- শুনতে শুনতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি- আর ঘুমের মধ্যে আমি চলে গেলাম ১৯৭১ এ, আমার মাথায় একটা স্বাধীন বাংলার পতাকা লাগানো, যুদ্ধের ময়দানে আমি খুব যুদ্ধ করছি। এ স্বপ্নের ব্যাখ্যা যে কেউই দিতে পারবে।

আর যেবার মাধবী আসে স্বপ্নে নয়; একবারে আমি জেগেই থাকি- আমার টেবিল,আমার বেড, আমার দেয়াল- সবকিছুর মধ্যেই আচমকা সে চলে আসা শুরু করে- এইতো সেদিন রাতে;তখন ২ টার মতো বাজে...
আমি রুমের লাইট অফ করে অপরাজিতাটার পাশের জানালাটা খুলে দিলাম, বাইরে থেকে নৈশ প্রহরীর বাঁশির শব্দ আসে মাঝে মাঝে, আর মাথার উপর থেকে আসে ফ্যান ঘুরার শব্দ- বসে বসে আমার আগের স্ট্যাটাস- ব্লগে লিখাগুলো পড়তেছিলাম। আমি তখন জীবন্ত একটা মানুষ;একদম ই ঘুম নেই চোখে।
হঠাৎ নৈশ প্রহরীর বাঁশির শব্দ আর থামেনা- কানের মধ্যে একটানা শুধু পু......
অপরাজিতার লতার পাশে জানালাটা মেলে আছে- বাহির থকে হলুদ আলো সেখানে ভিন্ন একটি মাত্রার জন্ম দিয়েছে; এরইমধ্যে আমি কানের ভেতরের শব্দটা পুওওও থেকে ক্যাএএএন...... এ রূপান্তরিত হয়েছে,আর আমি এটিও সৃষ্টি করতে পেরেছিলাম ওটা প্রহরীর বাঁশির শব্দ ছিলোনা।

অপরাজিতার পাশের জানালা মেলানো, সেখানে পড়েছিলো হলুদ আলো, অপরাজিতার ছায়া পড়েছে আমার সামনের দেয়ালে- জানলার গ্রীল ধরে রাখা লতা ; তার ছায়াটা অন্য কোন মানবীর ছায়া ঢেকে দিলো-
পেছনে জানালার দিকে তাকাতেই- মাধবী তার সমগ্র দেহে উপস্থিত আমার জানালার পাশে, কানের উপর অপরাজিতার ডগাটা গুঁজে দিব্বি দাঁঁড়িয়ে আছে,

আমি কি স্বপ্ন দেখছি?
-না ,আমি এসেছি সত্য।

এতো রাতে, এখনতো তোমার বরের সাথে শুয়ে থাকার কথা।
-দেহটাকেতো শুয়িয়েই রেখে আসলাম। হাসি খুশি থাকি সারাবেলা, মনে করতে চাইনা কিছুই - তবু মাঝরাতে তোমাকে খুব মনে পড়ে। আমাকে ক্ষমা করেছোত।
আচ্ছা তোমার মাথায় সিঁদুর কই???
- আমিতো দেহ নই,আমিতো পোড়ামন।

ফ্যানের শব্দ শুনতে পাচ্ছি, ক্যাননন... শব্দটা শুনা যাচ্ছে না- দেয়ালের ছায়াতে শুধু জানালার গ্রীল আর তাকে জড়ানো অপরাজিতা। লতার ডগাটা দুলছে...
এগুলো স্বপ্ন , আমি এটি বিশ্বাস করতে পারিনা। কেননা আমি জীবন্ত জেগে ছিলাম। আমি সম্মোহিত হচ্ছি কারো আত্মা দ্বারা।



পরশু রাতঃ
ইচ্ছে হচ্ছিলো আজ সে আসুক, লাইট অফ; অপরাজিতার পাশের জানালাটা মেলিয়ে - এবার তাকিয়ে আছি দেয়ালে ,যেখানে ছায়া পড়েছে গ্রীলে জড়ানো অপরাজিতার। অপেক্ষায় রাত শেষ , আসেনি সে...
ফজরের আজানের পরপর-
চোখে হালকা ঘুম এসেছে-
এরই মধ্যে টের পেলাম সেই উষ্ণতার। আমার পাশে এসে কেউ বলছে, আঙুলের ভাজে আঙুল রেখে হাতটা সেইভাবে আবার ধরবে একটু সময়ের জন্যে???

তুমি এসেছো?
-আমিতো তোমার সাথেই থাকি, হঠাৎ নীরব হয়ে যাই শুধু।
[তখন তার হাত ধরে আছি আমি, সে যখন পাশে বসে থাকে একটা উষ্ণতা অনুভব করি, কিন্তু তার নাকের প্রশ্বাসে বের হয় ঠান্ডা বাতাস- আর তার হাত হয়ে থাকে হিম শীতল]
আমি কিন্তু তোমাকে অনেক ভুলে গেছি, তোমাকে ভেবে আগে কান্না আসতো,এখন একদমই আসেনা, তোমার বিয়ের দিনেও আমার কোন খারাপ লাগা ছিলোনা।
- এই যে আমার ছায়া, তোমার উপর দিয়ে রাখি বলেই আমাকে ভুলতে পারোনা, আমার অন্তঃমন যখন আর তোমাকে মাঝরাতে সঙ্গ দিবেনা- ক্রমে ক্রমে বদলে যাবে তুমি,তুমি ভুলে যাবে সব।

তবে তুমি এভাবে আসো কেন প্রতিবেলা? আমার কষ্ট জীবন্ত রাখতে?
-এইরকমই ভাবো তুমি? আরে, তুমি যে আমায় জড়িয়ে থাকো সারাবেলা, নিজের মনটাকে তো ভাসিয়ে দিয়েছো, খবর রাখোনা নিজের মনের। প্রতি রাতে আমার দেহ থেকে আত্মাটাকে টেনে কে নিয়ে আসে ,হুম??

প্রশ্ন রেখে চলে গেলো সুবহে সাদিকের সাথে, জানিনা অভিমান করেছে কিনা- জানিনা আমার মন জিদ করে আছে কিনা। না আমি তাকে আর ডাকি, না সে আর আসে...
বাইরে আলো বেড়েছে- জানালার গ্রীল ধরে রাখা অপরাজিতার ভেতর মিশে গেছে কেউ নাকি চলে গেছে...

সম্মোহনঃমাধবী চলে গেছে...
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাঁর বোতলে আটকে আছে বিরোধী দল

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:০৭



সেই ২০০৯ সালে তিনি যে ক্ষমতার মসনদে বসলেন তারপর থেকে কেউ তাঁকে মসনদ থেকে ঠেলে ফেলতে পারেনি। যারা তাঁকে ঠেলে ফেলবে তাদের বড়টাকে তিনি বোতল বন্দ্বি করেছেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ১৬ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৩৪



কেউ কি আমার বন্ধু শাহেদের ঠিকানা জানেন?
আমার খুবই জরুরি তার ঠিকানাটা জানা,
আমি অনেক চেষ্টা করেও ওর ঠিকানা জোগাড় করতে পারছিনা।

আমি অনেক দিন যাবত ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি,
এই ধরুণ, বিশ-একুশ বছর।
আশ্চর্য্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা:কথায় কথায় বয়কট এর ডাক দেয়া পিনাকীদের আইডি/পেইজ/চ্যানেল বাংলাদেশে হাইড করা উচিত কি? ব্লগাররা কি ভাবছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১২:১৩



অপূর্ব একজন চমৎকার অভিনেতা। ছোট পর্দার এই জনপ্রিয় মুখকে চেনেনা এমন কেউ নেই। সাধারণত অভিনেতা অভিনেত্রীদের রুজিরোজগার এর একটি মাধ্যম হইল বিজ্ঞাপনে মডেল হওয়া। বাংলাদেশের কোন তারকা যদি বিদেশী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×