somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছোট ছোট কিছু বাস্তব ভূতের কাহিনি ৩

০৯ ই জুলাই, ২০১৪ সকাল ১১:১৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



১ম পর্ব
২য় পর্ব

৩য় পর্ব:
৭) এই ঘটনাটা আমার এক চাচাত ভাই আলামিন এর । ওর মুখের বর্ণনা ই হুবুহু তুলে ধরলাম। ভোর রাত আনুমানিক ৪ টা। আমার আর আমার বন্ধু রাসেল এর মাছ ধরতে যাওয়ার কথা ছিল গ্রামের বিল এ। সন্ধ্যা রাতেই কথা হয়েছিল আমগো দুইজনের । ৪ টার দিকে রাসেল আমাকে ডাইকা তুইলা নিয়া যায়। আমি খালই (মাছ রাখার পাত্র) আর জাল নিয়া বিলের দিকে যাই রাসেলের সাথে। রাসেল আমার আগে আগে যাইতেছিল আর আমি পেছন পেছন। বিলের কাছে পৌছাইয়া আমি কিনার দিয়া জাল ফেলাইতেছিলাম। রাসেল ও। আমি অনেক মাছ পাইছিলাম খালই অর্ধেক ভইরা গেছিল। রাসেল আরো গভীর পানিতে নামছিল। আমিও ওর দেখাদেখি নামছিলাম। কেমন যেনো ঘোরের মতো লাগছিল আর মনে হচ্ছিল আরেকটু সামনে গেলে অনেক মাছ পামু। পানি যে গভীর হচ্ছে সেই খেয়াল ছিল না। আরও গভীরে যাচ্ছিলাম একটু একটু করে। হঠাৎ বিলের মধ্যে রাখা বাশের কন্চির সা্যেথ আমার লুঙ্গি বাইধা টান খাই, তখন হুশ হয় । দেখি যে, আমি গলা পানি পর্যন্ত পানিতে নাইমা আছি। কেমনে এতোদূর আসছিলাম মনেও করতে পারিনাই। তখন পানি থেকে লুঙ্গি ছাড়াইয়া নিয়া পাড়ের দিকে উঠতে থাকি। রাসেলের কথা মনে পড়লে চারদিকে তাকায় দেখি ওই নাই। তখন ভয় পাইয়া যাই আমি। আরও তারাতারি পড়ের দিকে উঠতে থাকি, কিন্তু যতই উঠি পাড় কাছে আর আসে না চারদিকে খালি পানি আর পানি। ৩/৪ মিনিট আমি পাগলের মতো পাড়ের দিকে উঠতে থাকি। মনে হইতাছিল কোনদিন আর উঠতে পারমুনা । ঐ সময়ে হঠাৎ আজানের শব্দ শুনতে পাই। এর আধা মিনিটের মধ্যে আমি পাড়ে উইঠা আসি। উইঠাই দিছি দৌড়, এক দৌড়ে আমাগো বাড়িতে গেছি। পরের দিন সকালে রাসেলরে জিজ্ঞস করছি আমারে ফালািইয়া কেন ঐ চইলা আইছিল! ঐ কয় ঐ নাকি আমার সাথে মাছ ধরতে যায়ই নাই। ওর হঠাৎ জ্বর আইছিল ।

৮) ছোটবেলা্য় দেখতাম আমার এক চাচাতো চাচীকে প্রায় ই শয়তান/জ্বিন এ ধরতো। অনেক ছেঅট ছিলাম তো তাই আগ্রহ নিয়ে দেখতে যেতাম আমি আর আমার সমবয়সীরা শয়তান/জ্বিন এ ধরলে মানুষ কেমন হয়।তার এই শয়তান/জ্বিন ছাড়াতে কবিরাজ আসতো তাদের বাড়িতে। কিভাবে ছড়াতো তা দেখতে পাইনি কখনো। কেউ ঘরে ঢুকতে দেয়নি আমাদের,বিধায় দেখতেও পারিনি। /:)
যাইহোক, ওনারা আগের বাড়ি ছেড়ে আরও দূরে বাড়ি করে চলে গেছে। তার ছেলে মেয়ে কে বিয়েও দিয়েছে তাদের বাচ্চা ও আছে।
গতবার বাড়িতে গিয়ে শুনি যে, ওনি হুজুর বা কামেল টাইপের কিছু হয়ে গেছে আমাদের গ্রামে। ঘর থেকে বের হয় না, কাওকে ঘরে ঢুকতেও দেয়না। অনেকেই তার কাছ থেকে পানি পড়া এনে খায়, তাবিজ দেয়, ঝাড়-ফুক ও করে। বিনিময়ে অনেকেই হাদিয়া ও দেয়।
সময়ের স্বল্পতার কারণে গিয়ে দেখতে পারিনি আমার ঐ চাচীকে। এবার বাড়িতে গেলে তার আস্তানা দেখে আসবো। :P

৯) ক্যাচ ক্যাচ ক্যাচ করে হঠাৎ রুমের দড়জা খুলে যেতেই রুমানা চমকে উঠে, হর্টবিট বেড়ে যায়। ওফফ্ সাফিনা তুই! এতো আস্তে আস্তে কউ রুমে আসে? আরেকটু হলেই তো আমাকে মেরে ফেলতিস!
হেঃ হেঃ হেঃ ভীতু......তুই এতা ভয় পাস কেনো রে অল্পতেই?
যাহ্ ভালো হইছে ভয় পাই......আমার হার্ট তোদের মতো ওতো কঠিন না বুঝলি! সফট হার্ট তো তাই ! হি হি হি..........
তা এতো রাতে আমার রুমে কি রে? যা এখন ঘুমাবো, কাল ক্লাস আছে। রুমানা তোর অর্থনীতি বইটা একটু দে তো, একটা প্রশ্নের উত্তর খুজে পাচ্ছিনা রে।
ওকে। টেবিলের ওপর আছে নিয়ে যা। কাল সকালে দিয়ে যাস। আমার লাগবে।
ওকে ভীতু রানী। হেহেহেহে.......
যাহ্ হইছে সাহসী মানবী।
হলের করিডরে বের হয়ে আসে সাফিনা। রাত সাড়ে বারোটা বেজে গেছে, পড়াটা রেডি করে দেন ঘুমাতে যাবো আনমনে বলছে সাফিনা। সামনে ছাদের দিকের সিড়িতে ঢং করে আওয়াজ হয়। কে? কে? ঐখানে? একটু এগিয়ে গিয়ে দেখে ওর ক্লাসমেট রুম্পা বসে আছে সিড়িতে।
কি রে রুম্পা এই সময়ে এখানে কি করিস?
কিছুনা বসে আছি, মন ভালো নেই।
কেনো কি হয়েছে?
আয় ছাদে যাই। ছাদে ড়িয়ে বলবো, তোর সময় হবে?
হুম............আচ্ছা চল্।
জানিস সাফিনা ৫ বছর আগে এরকম এক রাতে এই ছাদ থেকে একটা মেয়ে কে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়া হয়েছিল। তোর বয়সেরই হবে।
কি বলছিস এসব? এই রাতের বেলা এই গল্প না করলেই কি হয় না?
সত্যি বলছি। মেয়েটা ছাদ থেকে পড়ে যাওয়ার পরও কিছুক্ষন বেচেঁ ছিল। তখন সে দেখে যে কেউ একজন তার পাশে এসে দাড়িয়েছে। সে বিড় বিড় করে বাচাঁর আকুতি জানাচ্ছিল। তখন ঐ ব্যক্তিটা মেয়েটার মাখা একটা ইট দিয়ে বাড়ি মেরে থেতলিয়ে দিয়েছিল। মেয়েটা তখনি মারা যায়।
কি বলিস!!?? তারপর?
তারপর সকাল বেলা মেয়েটার লাশ দেখে পুলিশ ডাকে স্কুল কতৃপক্ষ। সবার ধারণা হয় মেয়েটা আত্মহত্যা করেছে। তারপর সব শেষ। বেচেঁ যায় খুনীটা।
কে করেছিল খুনটা?
তোর ভালোবাসার মানুষ। রাফি।
রুম্পা.............কি যা তা বলছিস? রাফি কেনো ঐ মেয়ে কে খুন করবে? তাছাড়া এটা মেয়েদের হল। ছেলেদের প্রবেশ নিষেধ।
ভালোবাসা কোন বাধা নিষেধ মেনেছে কখনো?
মানে?
তোর প্রেমির রাফি তখন এই কলেজের ছাত্র ছিল, বিভিন্ন নেতার সাথে আতাঁত ছিল বিধায় ওকে কেই কিছু বলাস সাহস দেখাতো না।
আমি কিছু বুঝতেছিনা রুম্পা............
বুঝবি। সেদিন রাতে ঐ মেয়েটির সাথে দেখা করার কথা ছিল এই ছাদে। আকাশে চাঁদ ছিল কিন্তু মেঘ ও ছিল। রাফি মেয়েটির কাছে এমন কিছু চেয়ে বসেছিল যা মেয়ের পক্ষে দেওয়া সম্ভব ছিল না। রাফি জোর করছিল, মেয়েটি বধা দিচ্ছিল বার বার আর বলছিল বিয়ের পরেই আমি আমার সবকিছু তোমাকে দিতে চাই রাফি। রাফি নাছেড়বান্দার মতো জোর করছিল, মেয়েটির আকুতি ওর কানেই যাচ্ছিলনা্। মেয়েটি পেছাতে পেছাতে ছাদের কিনারে চলে এসেছিল। রাফির সাথে ধ্বস্তাধস্তির এক পর্যায়ে মেয়েটি পরে যায়। রাফি ভয় পেয়ে যায়।ছাদ থেকে নেমে আসার পথে দেখে মেয়েটি বেচেঁ আছে। নিজের মানস্মানের ভয়ে মেয়েটিকে সে একটি ইট দিয়ে অঘাত করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করে।
সাফিনার দুচোখ বেয়ে পানি ঝড়ছে ।রাফির কৃতকর্মের জন্য যতোটা না ততোটা মেয়েটার জন্য। নিজের ওড়না দিয়ে চোখ মুছে দেখতে পায় রুম্পা নেই ছাদে। সাফিনা বুঝতে পারে যে কাহিনিটা বললো সে রুম্পা না ঐ মেয়েটি ছিল।
সামনের সপ্তাহে রাফির সাথে সাফিনার এঙ্গেজমেন্ট ছিল। সেটা বাদ হয়ে যায়। সাফিনার কথায় পুলিশ রাফিকে ধরে নিয়ে যায়। পুলিশের জেরায় রাফি সব স্বীকার করে।
এখন সাফিনা প্রায় রাত সাড়ে বারোটার দিকে ছাদে যায়। অনেকেই শুনেছে সে একা একা কথা বলে। মাঝে মাঝে হাসির শব্দ ও শুনা যায়।


চলবে............................(অফিসে বসে গল্প লেখা যায় নাহ্) :(


১টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে

লিখেছেন জিএম হারুন -অর -রশিদ, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ২:৩১


আশেপাশের কেউই টের পাইনি
খুন হয়ে বসে আছি সেই কবে ।

প্রথমবার যখন খুন হলাম
সেই কি কষ্ট!
সেই কষ্ট একবারের জন্যও ভুলতে পারিনি এখনো।

ছয় বছর বয়সে মহল্লায় চড়ুইভাতি খেলতে গিয়ে প্রায় দ্বিগুন... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাম গাছ (জামুন কা পেড়)

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০৩

মূল: কৃষণ চন্দর
অনুবাদ: কাজী সায়েমুজ্জামান

গত রাতে ভয়াবহ ঝড় হয়েছে। সেই ঝড়ে সচিবালয়ের লনে একটি জাম গাছ পড়ে গেছে। সকালে মালী দেখলো এক লোক গাছের নিচে চাপা পড়ে আছে।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

অনির্বাণ শিখা

লিখেছেন নীলসাধু, ০৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



রাত ন’টার মত বাজে। আমি কি যেন লিখছি হঠাৎ আমার মেজো মেয়ে ছুটতে ছুটতে এসে বলল, বাবা একজন খুব বিখ্যাত মানুষ তোমাকে টেলিফোন করেছেন।

আমি দেখলাম আমার মেয়ের মুখ উত্তেজনায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

=ইয়াম্মি খুব টেস্ট=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪



©কাজী ফাতেমা ছবি
সবুজ আমের কুচি কুচি
কাঁচা লংকা সাথে
ঝালে ঝুলে, সাথে চিনি
কচলে নরম হাতে....

মিষ্টি ঝালের সংমিশ্রনে
ভর্তা কি কয় তারে!
খেলে পরে একবার, খেতে
ইচ্ছে বারে বারে।

ভর্তার আস্বাদ লাগলো জিভে
ইয়াম্মি খুব টেস্ট
গ্রীষ্মের... ...বাকিটুকু পড়ুন

এশিয়ান র‍্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান !!

লিখেছেন ঢাবিয়ান, ০৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:২০

যুক্তরাজ্যভিত্তিক শিক্ষা সাময়িকী 'টাইমস হায়ার এডুকেশন' ২০২৪ সালে এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এশিয়ার সেরা ৩০০ তালিকায় নেই দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়।তালিকায় ভারতের ৪০, পাকিস্তানের ১২টি, মালয়েশিয়ার ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×