somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যোগাযোগ মন্ত্রী আবুল কে ভালোবেসে শহীদ মিনারে ঈদ...:P

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০১১ রাত ৩:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

:)প্রিয় পাঠক, শিরোনামটি পড়েই বুঝতে পেরেছেন ইহা আর কোন আবুল নন, তিনি আমাদের সবার প্রিয়, দেশপ্রেমিক, সদা হাস্য, প্রেমিক পুরুষ, যোগাযোগ মন্ত্রী আবুল। আর হ্যা, এই আবুলের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে, আজ এই পবিত্র ঈদের দিনে আমরা এসেছিলাম শহীদ মিনারে। আর আমাদের হাতে কালো কাপড়ে লেখা ছিল, আবুলের বিশেষ কিছু প্রশংসনীয় গুণবাচক নাম, যে সব নাম জনগন ইতোমধ্যেই পত্রিকা মারফত জানতে পেরেছে।

ভণিতা ছেড়ে আসল কথায় আসি। অতি সম্প্রতি এই আবুলের পদত্যাগের দাবিতে সারা দেশে এক প্রকার আন্দোলনই শুরু হয়ে গেছে। কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে, ভয়াবহ সড়ক হত্যাকান্ড, রাস্তায় অতিরিক্ত খানাখন্দ, ফিটনেস বিহীন গাড়ি আর লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানো ইত্যাদি ইত্যাদি। বিশেষত তারেক মাসুদ আর মিশুক মুনিরের হত্যাকান্ড এই দাবিকে আরো জোড়ালো করেছে। এই আবুলের পদত্যাগের দাবিতে যা হচ্ছে, অতীতে আর কোন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এমনটি হয়েছে বলে আমার জানা নেই। কিন্তু মজার ব্যাপার, সমস্ত নাক লজ্জা ভুলে, এই বেহায়া কোন ভাবেই পদত্যাগ করতে রাজি নন। স্বয়ং এই সরকারের অন্যতম শরীক দলের নেতা, বিশ্ব বেহায়া বলে খ্যাত, নারীবাজ এরশাদ চাচারও বোধ হয় পদের প্রতি এত লোভ নেই।

এখন প্রশ্ন হল, এই জাতীয় বেহায়া আবুল কেন পদ ছাড়তে রাজি নন? কয়েকটি কারণ হতে পারে,

প্রথমত, তিনি তার এলাকার জনগনের কাছে এতটায় ঋণী যে, সেই ঋণের টাকা শোধ না করে তিনি কোনভাবেই ক্ষমতা ছাড়বেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখন ক্ষমতা ছাড়া বা না ছাড়া পুরোটাই নিরভর করছে তার ঋণের পরিমানের উপর। ঋন বেশি হলে দেরিতে ছাড়বেন, আর কম হলে কমপক্ষে ২ বছর পর ছাড়বেন।

দ্বিতীয়ত, একথা সত্য যে, যদি আবুলের প্রধান কাজ জনগনের সেবা হত, তবে তিনি বহু আগেই ব্যরথতা স্বীকার করে ক্ষমতা ছেড়ে দিতেন। যেহেতু তার প্রধান কাজ হল, মন্ত্রীত্বের নাম ভাংগিয়ে চাদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ক্ষমতার অপব্যবহার, দূরনীতি আর স্বজনপ্রতি করা, তাই তিনি এই পদ ছাড়ছেন না। কারণ পদ ছাড়লে এগুলো করবেন কিভাবে? তখন তো পাওয়ার এক্সসারসাইজ করতে পারবেন না। তাই লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে, বাকি সময়ে যা আখের গোছানো যায় তাই গুছিয়ে নিচ্ছেন।

তৃতীয়ত, তিনি হয়ত এরশাদের সাথে “বেহায়া প্রতিযোগিতা” শুরু করেছেন এবং শেষ পরযন্ত ১ নাম্বার পজিশন না নিয়ে ছাড়বেন না। যদি তাই হয়, তবে আমাদের কিছুই বলার নেই। কোন আন্দোলন, মিছিল-মিটিং, মানববন্ধন, আমরণ অনশনই তাকে একচুল ছড়াতে পারবে না। আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি।

মজার বিষয় হল, যখনই সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করেন, তখনই তিনি একমুখ স্ফীত হেসে বলেন, সবকিছুর জন্য নাকি বিগত সরকারের সীমাহীন দূরনীতি(চিরাচরিত কথা) আর অতি বৃষ্টি দায়ী।

এখন প্রশ্ন হল, সব কিছুর জন্য যদি বিগত সরকার দায়ী হয়, তবে তোর কাজ কি? বসে বসে আংগুল চোষা? মেনে নিলাম যে, বিগত সরকারের সীমাহীন দূরনীতির কারনেই জনগন তোকে ম্যান্ডেড দিয়ে ক্ষ্মতায় এনেছে। এখন তুই যদি কাজ না করে, কথায় কথায় বিগত সরকারের দোষ দিস, তবে তোকে ক্ষ্মতায় এনে দেশের লাভ কি? আমি জানি ৩ বছরে দেশকে সোনায় মোড়ানো সম্ভব না। কিন্তু যেটুকু হওয়ার কথা ছিল তা কি হয়েছে? প্রতিদিন যে সড়ক দূরঘটনায় কত মানুষ মারা যাচ্ছে। এ জন্য মন্ত্রী কি একবারের জন্যও দুঃখ প্রকাশ করেছেন? এটি সমাধানে কোন উদ্যোগ নিয়েছেন?

যাই হোক, এবার আসুন বৃষ্টির দিকে। কথায় কথায় নিরীহ বৃষ্টিকে দোষ দেয়া হচ্ছে। মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় কি জানেন, এই সময়ে বৃষ্টি কতটা গুরুত্বপুরণ। এখন বৃষ্টি না হলে ফসলের কি ক্ষতি হবে তা কি এই মূরখ মন্ত্রী জানেন? আর বৃষ্টির আগে তিনি কি রামলীলায় ব্যস্ত ছিলেন? তখন তার এত সংস্কার কাজ কোথায় ছিল?

আবুলের মতে, বাজেট স্বল্পতাও নাকি এই উদ্ভূত সমস্যার অন্যতম কারন। তাহলে এতদিন কেন চুপচাপ ছিলেন? কেন আবুল মাল কে কিছু বলেন নি? তাহলে কি ধরে নিব, এই ৬৯০ কোটি টাকা পকেটে গোজার জন্য চুপচাপ বসে ছিলেন?

আগে রাস্তা ঘাট ঠিক করুন, পড়ে বড় বড় কথা বলুন। অযথা মানুষকে উড়াল সড়ক, মেট্রো ট্রেন ইত্যাদির ভুংভাং স্বপ্ন দেখায়ে স্বপ্নদোষ করানোর কোন মানে নেয়।

ভালো করে শুনে রাখুন, যোগ্যতা থাকলে কাজ করুন, নয়লে ভালোয় ভালোয় সরে পড়ুন। পড়ে পালানোর জায়গা পাবেন না। এভাবে গণতন্ত্র, প্রগতিশীলতা, স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি আর মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে আর কতদিন জনগনকে শোষণ করবেন? আপনাদের মত গনতন্ত্রের মুখোশধারী স্বৈরশাসকদের ভবিষ্যত যে ভালো হয় না, তা তো ইতিহাসই সাক্ষী হয়ে আছে।

ইচ্ছা ছিলো বাসায় সবার সাথে ঈদের আনন্দ করবো। কিন্তু পারিনি, নিজের বিবেকের টানে ঈদের দিন ছুটে গিয়েছি শহীদ মিনারে। রক্ত দিতে না পারি, একটু ঘৃণা তো প্রকাশ করতে পারবো। X((
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আরো একটি সফলতা যুক্ত হোলো আধা নোবেল জয়ীর একাউন্টে‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪০



সেদিন প্রথম আলো-র সম্পাদক বলেছিলেন—
“আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে, প্রথম আলো এখনো আছে।”

একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আজ আমি পাল্টা প্রশ্ন রাখতে চাই—
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেব, আপনারা কি সত্যিই আছেন?

যেদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১১

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

ছবি এআই জেনারেটেড

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ প্রতিবাদের ভাষা নয় কখনোই
আমরা এসব আর দেখতে চাই না কোনভাবেই

আততায়ীর বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাদিকে
হাদিকে ফিরে পাব না... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×