ভণিতা ছেড়ে আসল কথায় আসি। অতি সম্প্রতি এই আবুলের পদত্যাগের দাবিতে সারা দেশে এক প্রকার আন্দোলনই শুরু হয়ে গেছে। কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে, ভয়াবহ সড়ক হত্যাকান্ড, রাস্তায় অতিরিক্ত খানাখন্দ, ফিটনেস বিহীন গাড়ি আর লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালানো ইত্যাদি ইত্যাদি। বিশেষত তারেক মাসুদ আর মিশুক মুনিরের হত্যাকান্ড এই দাবিকে আরো জোড়ালো করেছে। এই আবুলের পদত্যাগের দাবিতে যা হচ্ছে, অতীতে আর কোন মন্ত্রীর বিরুদ্ধে এমনটি হয়েছে বলে আমার জানা নেই। কিন্তু মজার ব্যাপার, সমস্ত নাক লজ্জা ভুলে, এই বেহায়া কোন ভাবেই পদত্যাগ করতে রাজি নন। স্বয়ং এই সরকারের অন্যতম শরীক দলের নেতা, বিশ্ব বেহায়া বলে খ্যাত, নারীবাজ এরশাদ চাচারও বোধ হয় পদের প্রতি এত লোভ নেই।
এখন প্রশ্ন হল, এই জাতীয় বেহায়া আবুল কেন পদ ছাড়তে রাজি নন? কয়েকটি কারণ হতে পারে,
প্রথমত, তিনি তার এলাকার জনগনের কাছে এতটায় ঋণী যে, সেই ঋণের টাকা শোধ না করে তিনি কোনভাবেই ক্ষমতা ছাড়বেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এখন ক্ষমতা ছাড়া বা না ছাড়া পুরোটাই নিরভর করছে তার ঋণের পরিমানের উপর। ঋন বেশি হলে দেরিতে ছাড়বেন, আর কম হলে কমপক্ষে ২ বছর পর ছাড়বেন।
দ্বিতীয়ত, একথা সত্য যে, যদি আবুলের প্রধান কাজ জনগনের সেবা হত, তবে তিনি বহু আগেই ব্যরথতা স্বীকার করে ক্ষমতা ছেড়ে দিতেন। যেহেতু তার প্রধান কাজ হল, মন্ত্রীত্বের নাম ভাংগিয়ে চাদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ক্ষমতার অপব্যবহার, দূরনীতি আর স্বজনপ্রতি করা, তাই তিনি এই পদ ছাড়ছেন না। কারণ পদ ছাড়লে এগুলো করবেন কিভাবে? তখন তো পাওয়ার এক্সসারসাইজ করতে পারবেন না। তাই লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে, বাকি সময়ে যা আখের গোছানো যায় তাই গুছিয়ে নিচ্ছেন।
তৃতীয়ত, তিনি হয়ত এরশাদের সাথে “বেহায়া প্রতিযোগিতা” শুরু করেছেন এবং শেষ পরযন্ত ১ নাম্বার পজিশন না নিয়ে ছাড়বেন না। যদি তাই হয়, তবে আমাদের কিছুই বলার নেই। কোন আন্দোলন, মিছিল-মিটিং, মানববন্ধন, আমরণ অনশনই তাকে একচুল ছড়াতে পারবে না। আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি।
মজার বিষয় হল, যখনই সাংবাদিকরা তাকে প্রশ্ন করেন, তখনই তিনি একমুখ স্ফীত হেসে বলেন, সবকিছুর জন্য নাকি বিগত সরকারের সীমাহীন দূরনীতি(চিরাচরিত কথা) আর অতি বৃষ্টি দায়ী।
এখন প্রশ্ন হল, সব কিছুর জন্য যদি বিগত সরকার দায়ী হয়, তবে তোর কাজ কি? বসে বসে আংগুল চোষা? মেনে নিলাম যে, বিগত সরকারের সীমাহীন দূরনীতির কারনেই জনগন তোকে ম্যান্ডেড দিয়ে ক্ষ্মতায় এনেছে। এখন তুই যদি কাজ না করে, কথায় কথায় বিগত সরকারের দোষ দিস, তবে তোকে ক্ষ্মতায় এনে দেশের লাভ কি? আমি জানি ৩ বছরে দেশকে সোনায় মোড়ানো সম্ভব না। কিন্তু যেটুকু হওয়ার কথা ছিল তা কি হয়েছে? প্রতিদিন যে সড়ক দূরঘটনায় কত মানুষ মারা যাচ্ছে। এ জন্য মন্ত্রী কি একবারের জন্যও দুঃখ প্রকাশ করেছেন? এটি সমাধানে কোন উদ্যোগ নিয়েছেন?
যাই হোক, এবার আসুন বৃষ্টির দিকে। কথায় কথায় নিরীহ বৃষ্টিকে দোষ দেয়া হচ্ছে। মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় কি জানেন, এই সময়ে বৃষ্টি কতটা গুরুত্বপুরণ। এখন বৃষ্টি না হলে ফসলের কি ক্ষতি হবে তা কি এই মূরখ মন্ত্রী জানেন? আর বৃষ্টির আগে তিনি কি রামলীলায় ব্যস্ত ছিলেন? তখন তার এত সংস্কার কাজ কোথায় ছিল?
আবুলের মতে, বাজেট স্বল্পতাও নাকি এই উদ্ভূত সমস্যার অন্যতম কারন। তাহলে এতদিন কেন চুপচাপ ছিলেন? কেন আবুল মাল কে কিছু বলেন নি? তাহলে কি ধরে নিব, এই ৬৯০ কোটি টাকা পকেটে গোজার জন্য চুপচাপ বসে ছিলেন?
আগে রাস্তা ঘাট ঠিক করুন, পড়ে বড় বড় কথা বলুন। অযথা মানুষকে উড়াল সড়ক, মেট্রো ট্রেন ইত্যাদির ভুংভাং স্বপ্ন দেখায়ে স্বপ্নদোষ করানোর কোন মানে নেয়।
ভালো করে শুনে রাখুন, যোগ্যতা থাকলে কাজ করুন, নয়লে ভালোয় ভালোয় সরে পড়ুন। পড়ে পালানোর জায়গা পাবেন না। এভাবে গণতন্ত্র, প্রগতিশীলতা, স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি আর মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে আর কতদিন জনগনকে শোষণ করবেন? আপনাদের মত গনতন্ত্রের মুখোশধারী স্বৈরশাসকদের ভবিষ্যত যে ভালো হয় না, তা তো ইতিহাসই সাক্ষী হয়ে আছে।
ইচ্ছা ছিলো বাসায় সবার সাথে ঈদের আনন্দ করবো। কিন্তু পারিনি, নিজের বিবেকের টানে ঈদের দিন ছুটে গিয়েছি শহীদ মিনারে। রক্ত দিতে না পারি, একটু ঘৃণা তো প্রকাশ করতে পারবো।

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।




