somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

"শিবির আমার পায়ের রগ কেটেছে "

১৫ ই নভেম্বর, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:১৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রিয় ব্লগার ভাই ও বোনেরা, আসসালামু আলাইকুম। আজ আমি নিতান্তই বিপদে পরে, আপনাদের কাছে হাত পেতেছি। ভুল বুঝবেন না, কোন টাকা পয়সার জন্য না। একটু উপকারের আশায়। আজ আমি ঘটনাক্রমে এক কঠিন পরিস্থিতির সস্মুখীন। আমার মান সস্মান, বন্ধুত্ব সব আজ হুমকির মুখে। আপনাদের একটু সহযোগিতা পারে আমাকে এই বিপদ থেকে বাচাতে। যাই হোক, ভনিতা ছেড়ে এবার আসল কথায় আসি।
আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪র্থ বর্ষে পড়ুয়া একজন ছাত্র। ক্লাসে মোটামুটি মেধাবী ছাত্রদের মধ্যে একজন। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরুতেই বেশ কিছু বন্ধু-বান্ধবীদের সংগে আমার সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। এখন প্রায় ১০-১২ নিয়ে আমাদের সার্কেল। আমার বন্ধুদের মধ্যে দুইজন শিবির করে বলে আমরা জানি। এদের একজন আবার ডিপার্টমেন্টে ফার্ষ্ট। ফলে আমাদের ক্যারিয়ারের স্বার্থেই ওর সংগে আমরা সবাই সুসম্পর্ক বজায় রাখি। তাছাড়া ব্যক্তিগত জীবনেও সে খুব ভালো এবং চরিত্রবান। যাই হোক আমরা প্রায় সব সময়ই ওকে রাজাকার, আল বদর বলে বিরক্ত করি এবং নানা রকম কটুক্তি করি। এতে সে খুব বেশি মাইন্ড করে না বলেই মনে হয়। ফলে এই কটুক্তির মাত্রা দিন দিন বাড়তেই থাকে।
একদিনের ঘটনা, আমরা সবাই বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। সেই দিন কি কারনে ওর মুড অফ ছিল। আমি হঠাত বলে বসলাম, “কিরে তুই কি কারোর রগ কাটছছ নাকি?”
সে জবাব দিল, “শিবির কারোর রগ কাটে না”
তার এই মন্তব্যে সবার মধ্যে হাসির রোল পরে গেল। আমি বললাম “এত দিন জানতাম, চোরের মার বড় গলা, এখনতো দেখি চোরের বাপেরও বড় গলা”।
এতে সে রাগান্বিত হয়ে বলল, শিবিরের বিরুদ্ধে এটা প্রপাগান্ডা ছাড়া কিছুই না। তার এই কথায় কয়েক জন মাথা নাড়তেই, আমার মেজাজ চটে গেল।
আমি বললাম, সারা দেশের লোক যে বলাবলি করে, এটা কি মিত্থ্যা?
সে বলল, তারা শুধু বলাবলিই করে, আজ পর্যন্ত প্রমান করতে পারে নি। এটা নাকি শিবিরের মত একটা আদর্শবাদী দলের ইমেজ নষ্ট করার একটা পায়তারা।
একথা শুনে আমার মেজাজ গেল খারাপ হয়ে। শালা বলে কি? এতদিন যা শুনে আসছি, সবকি তাহলে মিথ্যা? এক পর্যায়ে আমি বিষয়টি নিয়ে সিরিয়াস হয়ে পড়লাম। আমি সবার সামনে ওপেন চ্যালেঞ্জ করে বসলাম। ঘটনার আকস্মিকতায় সবাই ভড়কে গেল। আমার বন্ধুটিও চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিল।
সে বলল, আমি যদি কোন ভাবে এটি প্রমাণ করতে পারি যে শিবির রগ কাটে, তবে সে নাকি শিবির ছেড়ে দেবে আর আমাকে ১০ হাজার টাকা দেবে। নিজের পার্সোনালিটি ধরে রাখতে আমিও বললাম, যদি প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়, তবে আমিও শিবিরে যোগ দেব আর তাকে ১০ হাজার টাকা দেব। আমার বন্ধুরা সাক্ষী হিসেবে থাকল।
যাই হোক, ঘটনার প্রায় ১ মাস পেড়িয়ে গেছে। আমি কোন প্রমান হাজির করতে পারিনি। ফলে লজ্জায় আমি কারোর সাথে দেখা করতে পারছি না। প্রমাণ দেয়া এত কষ্ট জানলে, এই বোকামি করতাম না।
ইন্টারনেটে অনেক ঘাটাঘাটি করেছি। কিছুই পায়নি। পাব বলেও মনে হয় না। প্রায় ৩০ জন মতো বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সিনিয়র সাংবাদিকের সাথে কথা বলেছি। কেউ কোন তথ্য দিতে পারল না। সবাই মাথা নিচু করে পালাল।
আমার এক চাচা আছে। যিনি দীর্ঘদিন পুলিশ সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। পরে সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন শেষে অবসর নিয়েছেন। তিনি কট্টর জামায়াত-শিবির বিরোধী। তাকে বললাম, আপনার দীর্ঘ চাকুরী জীবনে রগ কাটার অপরাধে কোন শিবির কর্মী গ্রেফতার করেছেন?
সে নির্দ্বিধায় জবাব দিল, না। এমন কোন ঘটনা আমি আজও দেখিনি। আমি আরো হতাশ হয়ে পড়লাম।
আবার জিক্ষাসা করলাম, শিবির কর্মী না হোক, রগ কাটার অপরাধে কোন সন্ত্রাসীকে আটক করেছেন?
সে আবার বলল, না।
এবার আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না। বললাম, তাইলে শিবিরকে রগ কাটা বলেন কেন?
সে কোন জবাব না দিয়ে মাথা নিচু করে বসে রইলো।
প্রিয় ব্লগার ভাইয়েরা, বুঝতেই পারছেন আমি কতটা বিপদে আছি। আমার বন্ধুরা আমাকে নিয়ে হাসি ঠাট্টা করছে। একজন তো রীতিমত শিবিরের ভর্তি ফরম নিয়ে হাজির।
যাই হোক, সব জায়গায় ব্যর্থ হয়ে আপনাদের কাছে হাত পেতেছি। আমি জানি, ব্লগাররা অনেক চিন্তাশীল এবং পড়ুয়া। তাছাড়া, এখানে অনেক ব্লগার আছেন, যারা নিয়মিত শিবির-জামায়াত বিরোধী তথ্য সংগ্রহে সদা সচেষ্ট। শিবির সম্পর্কিত অনেক অজানা তথ্য তাদের জানা থাকে। তারা অনেক বুদ্ধীমান। আমি তাদের পথ পানে চেয়ে আছি।
আপনি কি চান, একজন রাজাকারের কাছে একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তানের পরাজয় হোক? আপনি কি চান, আমি শিবিরের মত একটি সন্ত্রাসী দলে যোগ দেয়? আপনি কি চান, পাকিস্তানপন্থীদের কাছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরাজয় হোক? আপনি কি চান, রক্ষণশীলতার কাছে প্রগতিশীলতার পরাজয় হোক? নিশ্চয় চান না। তবে দয়া করে একটু এগিয়ে আসুন।
যিনি তথ্য দিয়ে উপকার করবেন, তাকে আমি ১০ হাজার টাকার অর্ধেক দিয়ে দেব। আমি আপনাদের সাহায্যের দিকে চেয়ে আছি।
আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যদি শেষ পর্যন্ত প্রমান করতে ব্যর্থ হয়, তবে নিজেই নিজের পায়ের রগ কেটে বন্ধুকে বলব, “দেখ শিবির আমার পায়ের রগ কেটেছে”।
১৮টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মব সন্ত্রাস, আগুন ও ব্লাসফেমি: হেরে যাচ্ছে বাংলাদেশ?

লিখেছেন শ্রাবণধারা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৩:৫২


ময়মনসিংহে হিন্দু সম্প্রদায়ের একজন মানুষকে ধর্মীয় কটূক্তির অভিযোগে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। মধ্যযুগীয় এই ঘটনা এই বার্তা দেয় যে, জঙ্গিরা মবতন্ত্রের মাধ্যমে ব্লাসফেমি ও শরিয়া কার্যকর করে ফেলেছে। এখন তারই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আরো একটি সফলতা যুক্ত হোলো আধা নোবেল জয়ীর একাউন্টে‼️

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৮:৪০



সেদিন প্রথম আলো-র সম্পাদক বলেছিলেন—
“আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে, প্রথম আলো এখনো আছে।”

একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আজ আমি পাল্টা প্রশ্ন রাখতে চাই—
প্রথম আলোর সম্পাদক সাহেব, আপনারা কি সত্যিই আছেন?

যেদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

লিখেছেন নতুন নকিব, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১০:১১

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ নয়, আমরা শান্তি চাই

ছবি এআই জেনারেটেড

হামলা ভাংচুর অগ্নিসংযোগ প্রতিবাদের ভাষা নয় কখনোই
আমরা এসব আর দেখতে চাই না কোনভাবেই

আততায়ীর বুলেট কেড়ে নিয়েছে আমাদের হাদিকে
হাদিকে ফিরে পাব না... ...বাকিটুকু পড়ুন

তৌহিদি জনতার নামে মব সন্ত্রাস

লিখেছেন কিরকুট, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:৫৪




ছবিঃ অনলাইন থেকে সংগৃহীত।


দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে ধর্মের নাম ব্যবহার করে সংঘটিত দলবদ্ধ সহিংসতার ঘটনা নতুন করে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে তৌহিদি জনতা পরিচয়ে সংঘবদ্ধ হয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুখ গুজে রাখা সুশীল সমাজের তরে ,,,,,,,,

লিখেছেন ডঃ এম এ আলী, ২০ শে ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৪:০৫


দুর্যোগ যখন নামে আকাশে বাতাশে আগুনের ধোঁয়া জমে
রাস্তা জুড়ে কখনো নীরবতা কখনো উত্তাল প্রতিবাদের ঢেউ
এই শহরের শিক্ষিত হৃদয়গুলো কি তখনও নিশ্চুপ থাকে
নাকি জ্বলে ওঠে তাদের চোখের ভেতর নাগরিক বজ্র
কেউ কেও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×