somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শীরোনামহীন.. গপপো..

০১ লা আগস্ট, ২০১১ বিকাল ৩:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

একটি গল্প লেখব বলে বসলাম। জীবনের গল্পটা একবার লিখা দরকার। এক একটা জীবনের গল্প এক একটা মহা কাব্য। কিন্তু কিভাবে শুরু করি বুঝতে পারছি না। আজকে সকাল থেকে মনটা বেপক খারাপ হয়ে আছে...
একটা ছোট্ট গল্প বলি এর আগে, এটা অবশ্য খুবি সাধারন মানের একটা গল্প... সবারই শোনার কথা। তাও বলতে ইচ্ছা করছে বলেই বলব। গল্পটা এই রকম ...
এক বিরাট বড়লোকের(টাকাওয়ালা...কেউ অন্য কিছু মনে করবেন না) মেয়ে একবার একটা রচনা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহান করলো... তাকে বলা হল যে একটা খুবি দুঃখের একটা গল্প লিখতে হবে। সে একটা ফাটাফাটি টাইপের গল্প লিখলো। সে লিখল... একদেশে ছিল এক খুবি দুখি একটা মেয়ে... যাদের বাসার অবস্থা ছিল অনেক খারাপ . তাদের বাসায় এসিটা ছিল নষ্ট... তাদের কোন ড্রাইভার ছিল না... তাদের ফ্রিজ়টা এ কোন খাবার থাকত না। তাদের আইস্ক্রিম গুলা ছিল নষ্ট... তাদের কাজের বুয়া ছিল না কোন... তাদের বাগানের মালিটা ছিল অলস ... এত দুখি একটা মেয়ে সারাদিন কষ্ট করে জীবন কাটাতো ... ইত্যাদি ... এবং ইত্যাদি।
আসলেই গল্পটা অনেক দুখের... কি বলেন সবাই...
এবার আমি একটা গল্প বলি...
আজকের ঘুমটা রাতে ভালো হলেও মনটা অনেক খারাপ ছিল ... হমম... সেই গল্প বলা যাবে না। তো ঘুম থেকে উঠে ভাবলাম একটু ক্যাম্পাস এ যাই... গেলাম ... কিন্তু খারাপ লাগাটা কমছিল না। টংএ এককাপ চা খেলাম। বিষাদ চা টা এখন এত ভালো লাগে না খেলে মনে হয় কি যেন খাই নি। আহা আর কয়েটা দিন ...
তো একটা ছোটভাই ছিল সাথে ওকে বললাম যে ভাল লাগছে না চল বাসায় চলে যাই। আমাদের গোলচত্তর এ রিক্সা পাওয়া একটা যুদ্ধজয়ের চেয়ে কম না। রোদে দাড়ালাম অনেক্ষন। কিন্তু ওই পর্জন্তই।
একটা রিক্সা কে বললাম “মামা চলেন” ।
সে বলল “মামা একটু রেষ্ট নিতাম...”
বললাম “আপনি রেষ্টনেন আমরা অপেক্ষা করি ...”
বলল “আচ্ছা...”
একটু পরে রিক্সাওয়ালাকে দেখি পকেট থেকে একটা কৌটা বের করল। আমি বললাম “মামা এটা কি?”
বলল “মামা এইটা গুল...”
আমি গুল জিনিসটা আসলে কি সেটা চিন্তা করছিলাম একটু তখন সে বলতে থাকল “মামা দেশের কথা মনে হইলে বা টেনশান লাগলে এইটা নেই...”
আমি তখন বুঝলাম আসলে জিনিসটা কি।দেখলাম আংগুলের মাথায় একটু করে নিয়ে জিহ্বার নিচে রেখে দিল। বললাম “মামা এটাতে কি কাজ হয়... টেনশান কি কমে...?”
সে কোন উত্তর দিল না কিন্তু একটা হাসি দিল... এই টাইপের হাসির অর্থ হা অথবা না দুইটাই হয়।
ও বলতে থাকল “মামা কালকে দেশে চইলে যামু... এইখানে পোষায় না...”
বললাম “বাড়ি কই?”
বলল “লালমনিরহাট... প্রতিমাসে বাড়িতে মাত্র ২০০০ ট্যাকা পাঠানো যায়। বলেন এই টাকায় কি চলে।
আমি কি বলব বুঝতে পারলাম না।
এই বলে সে পকেট থেকে টাকা বের করল। দেখাল পকেটে তার সারাদিনের আয়... ১৭০ টাকা।
বলল “রিক্সা ভাড়া আর খাওয়া বাবদ প্রতিদিন লাগে ২০০ ট্যাকা”
তার চোখের কোনায় একটা কিছু চিকচিক করে উঠতে দেখলাম। এটাকি গুলের প্রভাব নাকি তার টেনশান না ভুলতে পারার জন্য ... বুঝতে পারলাম না ... কিন্তু আমার চোখের কোনা ও ভারি হবে বলে মনে হচ্ছিল। তাই তাড়াতাড়ি তাকে “বললাম বাচ্চাকাচ্চা কয়টা...?”
বলল “দুইটা... মেয়েটাকে বিয়া দিছি ... আর ছেলেটা ক্লাস ৬ এ পড়ে।
পরে সে বলল কি কি মেয়ের জামাই কে দেবার কথা ছিল। সে কি দিতে পেরেছে তাও বলল। তবে না দেবার পাল্লাটাই বেশি ভারি ...
আমি বললাম “বিয়া কবে দিছেন?”
বলল “৪ বছর হয়ে গেছে”
আমি বললাম “ও... জামাই কি এখনো ওই জিনিস চায়...? ”
সে বলল “আসলে জামাইকে তো দিতে পারি নাই ... জামাই বলে আমাকে তো আর দেননি আমার বাচ্চাটাকেই দেন... কালকেই বাড়িতে ঝগড়া হইসে এই নিয়া... দিতে তো হবেই .. ”
বলে সে আমার চোখের দিকে তাকাল। আমি আর তার দিকে তার চোখের দিকে তাকাতে পারি নি। আমি মাটির দিকে তাকিয়ে ছিলাম। কি বললব বুঝতে পারছিলাম না। পাশের ছোটভাইটা বলল মামা চলেন।
রিক্সা চলল তার গন্তব্যে... আমি চিন্তা করছিলাম যে জীবনের গন্তব্য কই?
মন খারাপ আরো খারাপ হয়ে গেল...
বাসার কাছে নেমে রিক্সাওয়ালাকে ১০০ টাকার একটা নোট দিয়ে বললাম “মামা রেখে দেন”
দিতে নিজের কাছেই খারাপ লাগছিল... মনে মনে বললাম ... “আমাদের ক্ষমা কর... ক্ষমা করো এই সমাজ ব্যাবস্থাকে...”
গল্পটা অনেক হাসির তাই না ????????? কি বলেন সবাই...
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

লিখেছেন নতুন নকিব, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ১১:২৫

বন্ডাইর মত হত্যাকাণ্ড বন্ধে নেতানিয়াহুদের থামানো জরুরি...

বন্ডাই সৈকতের হামলাস্থল। ছবি: রয়টার্স

অস্ট্রেলিয়ার সিডনির বন্ডাই সৈকত এলাকায় ইহুদিদের একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে সমবেত মানুষের ওপর দুই অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী অতর্কিতে গুলি চালিয়েছে। এতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আল্লাহ সর্বত্র বিরাজমাণ নন বলা কুফুরী

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১৪



সূরাঃ ২ বাকারা, ২৫৫ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৫৫। আল্লাহ, তিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই।তিনি চিরঞ্জীব চির বিদ্যমাণ।তাঁকে তন্দ্রা অথবা নিদ্রা স্পর্শ করে না।আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সমস্তই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিজয়ের আগে রাজাকারের গুলিতে নিহত আফজাল

লিখেছেন প্রামানিক, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:১৩


ঘটনা স্থল গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি থানার উড়িয়া ইউনিয়নের গুণভরি ওয়াপদা বাঁধ।

১৯৭১সালের ১৬ই ডিসেম্বরের কয়েক দিন আগের ঘটনা। আফজাল নামের ভদ্রলোক এসেছিলেন শ্বশুর বাড়ি বেড়াতে। আমাদের পাশের গ্রামেই তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

৫৫ বছর আগে কি ঘটেছে, উহা কি ইডিয়টদের মনে থাকে?

লিখেছেন জেন একাত্তর, ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ বিকাল ৫:৫৮




ব্লগের অনেক প্রশ্নফাঁস ( Gen-F ) ১ দিন আগে পড়া নিউটনের ২য় সুত্রের প্রমাণ মনে করতে পারে না বলেই ফাঁসকরা প্রশ্নপত্র কিনে, বইয়ের পাতা কেটে পরীক্ষার হলে নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

১৯৭১ সালে পাক ভারত যুদ্ধে ভারত বিজয়ী!

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯


দীর্ঘ ২৫ বছরের নানা লাঞ্ছনা গঞ্জনা বঞ্চনা সহ্য করে যখন পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বীর বাঙালী অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে বীরবিক্রমে যুদ্ধ করে দেশ প্রায় স্বাধীন করে ফেলবে এমন সময় বাংলাদেশী ভারতীয়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×