somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মধ্যবিত্ত পরিবারের সুন্দরী মেয়ে পূজা গল্প... লিখক (তাইমুর মাহমুদ শমিক)

০৭ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সকাল ১০:৪৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শাড়ি পড়লে পূজাকে হিন্দি ছবির নায়িকাদের মতো লাগে। মধ্যবিত্ত পরিবারের সুন্দরী মেয়ে পূজা। সুন্দরী হয়ে পরিবারকে ফেলেছে বিপদে। এস.এস.সি. পরীক্ষা দেবার আগে সে বাসায় যে স্যারের কাছে পড়তো, সেই ভদ্রলোক পূজাকে প্রেম নিবেদন করে প্রত্যাখ্যাত হয়েছিলেন। ঘুমের ওষুধ খেয়েছিলেন গোটা বিশেক। মৃত্যু তার সঙ্গে প্রতারণা করে আজো দিব্বি বাঁচিয়ে রেখেছে। এই মৃত্যু ব্যাপারটা অদ্ভুত। আলিঙ্গন করতে চাইলে পাশ কাটিয়ে যায়। প্রয়োজনে দুটো বছর বেশি বাঁচতে চাইলে যেন গলায় পায়ের চাপ দিয়ে এসে শ্বাসরোধ করে।

পূজা আজো তার প্রেমে পাগলাটে স্যারকে মনে রেখেছে। স্যারের জন্য মায়া লাগে। তিনি নিশ্চয়ই তাকে ভালোবাসতেন। শখ করে কেউ বিষ, ঘুমের ওষুধ খায়না। তখন পড়াবার মাঝে স্যারের প্রেমময় দৃষ্টিকে আপদ মনে হতো। আজকাল কেন যেন ওই ভদ্রলোকের বড় চোখ দুটোর কথা মনে পড়ে। উনি কোথায় আছেন, কেমন আছেন কে জানে! উনি কি এখনো তার মতো চেহারার কোন মেয়েকে রাস্তাঘাটে দেখলে চমকে উঠেন! নাকি প্রতিমা, সরস্বতী নামে কাউকে ভালোবেসে দিব্বি বেঁধেছেন সুখের ঘর।


পূজা যখন বিশ্ববিদ্যালয় দ্বিতীয় বর্ষে পড়ে তখন আচমকা একদিন রাস্তায় তার সাথে ঘুমের ওষুধ খাওয়া মাহাতাব স্যারের দেখা হলো। স্যার শুকিয়ে গেছেন। একটা সুতির শার্ট পরনে। মাথার দুপাশে কানের কাছাকাছি জায়গায় চুলে পাক ধরেছে। পূজা পেছন থেকে ডাকতেই মাহাতাব চমকে উঠে ঘুরে তাকায়। চোখের পলক না ফেলে তার দিকে তাকিয়ে থাকে অন্তত মিনিট তিনেক। নির্লিপ্ত নরম গলায় জিজ্ঞেস করে।

পূজা কেমন আছো?
-স্যার আমি ভালো আছি। আপনি আমাকে চিনতে পেরেছেন! কতো বছর কেটে গেছে এর মাঝে।
ছয় বছর এগারো মাস তিনদিন একটা মানুষের চেহারা ভুলে যাবার জন্য খুব বেশি সময় নয় পূজা।
-স্যার আপনি কিন্তু পড়াবার শেষ মাসের টাকাটা নেননি।
আসলে স্লিপিং পিল খাবার পর নিজেকে খুব তুচ্ছ মনে হচ্ছিলো। মনে হচ্ছিলো আই অ্যাম গুড ফর নাথিং। তাই আর তোমার বাসায় পা রাখিনি।
-আমি তো খুব ছোট ছিলাম স্যার। আব্বা আপনাকে অপমান করেছিলো অকথ্য ভাষায়। আমি পর্দার ওপাশে দাঁড়িয়ে আপনাকে নাজেহাল হতে দেখে হাসছিলাম ফিচফিচ করে। আমাকে ক্ষমা করবেন।

শাড়ি পড়লে তোমাকে দেবীর মতো মনে হয়। কথাটা এর আগে বলেছে কেউ তোমাকে?
- না স্যার। এই কথাটা শুনে আপনার সাথে বসে এক কাপ চা খেতে ইচ্ছা করছে।
টং এর দোকানে খেতে হবে তাহলে। সাড়ে আটহাজার টাকা বেতনে বীমা অফিসে কেরানীর চাকরী করি।

-তাই খাবো স্যার। তাছাড়া ডাল, আলুভর্তা খেয়ে অভ্যাস আছে আমার।
কি বলছো বিড়বিড়িয়ে? তরকারী খাবে চায়ের সাথে!
-না স্যার তেমন কিছুনা। আপনার জীবনসঙ্গিনী কেমন আছেন তা তো জানা হলোনা।
বিয়ের পিড়িতে বসা হয়নি পূজা। আমি নীল স্কার্ট পড়া চুলে দুই ঝুঁটি বায়োলজি, কেমিস্ট্রি পড়া সেই মেয়েটাকে ভুলতে পারিনি।

-আপনাকে মাহাতাব বলে ডাকাটা কি বেয়াদবি হবে স্যার?
বেয়াদবি হবে। ঘুমের ওষুধের ঘোর কেটে আজকাল রাতে ঘুম আসেনা।
-মাহাতাব শোন, বেয়াদব পূজা মধ্যবিত্ত আদরে বাকিটা জীবন তোমার চুলে হাত বুলিয়ে ঘুম পারাতে রাজি আছে। সে হারিয়ে ভালোবেসে ফেলেছিলো তার স্যারকে আরো কয়েকজনম মাধুকরী সোহাগে রেখে হাজার বছর পুরানো সে পাপের প্রায়শ্চিত্য করতে চায়। আর এই মুহূর্তে চোখের কোণে জমে ওঠা জলটা দেবীর শাড়ির আঁচলে মুছে নিতে পারো।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:৪০
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×