শৈশবের শীত মানেই ছিল এক অন্যরকম আনন্দ। কুয়াশার চাদরে মোড়ানো ভোরবেলা, খেজুর রসের মিষ্টি ঘ্রাণ, আর মায়ের হাতে বানানো পিঠার স্বাদ—সবকিছুই যেন এক স্বপ্নময় অধ্যায়। তখনকার দিনগুলোতে শীতের সকাল মানে ছিল কোলাহলমুখর গ্রামীণ জীবনের এক অদ্ভুত সৌন্দর্য।
স্কুলের উঠোনে বিজয়ের গৌরব উদযাপন, ১৬ ডিসেম্বরের পতাকা উত্তোলন আর শীতের ছুটিতে পিঠা উৎসবের মাতামাতি—এসব মুহূর্ত আজো হৃদয়ে গেঁথে আছে। মায়ের গল্প, ফজরের নামাজের পর পায়ে হেঁটে হাটের পথে যাওয়া, কুয়াশার ভেতর সূর্যের উঁকি—সবকিছুই যেন প্রকৃতির এক অফুরন্ত ভালবাসার প্রকাশ।
গ্রামের শিশুরা দল বেঁধে মেতে উঠত খেলাধুলায়। পুকুর পাড়ে বসে চাচার সাথে গল্প, হাতে মাটির মগে খেজুর রসের উষ্ণতা—এমন দৃশ্যই ছিল শীতের সকালের সঙ্গী। সন্ধ্যায় ঘরে ফিরে আগুনের পাশে বসে মায়ের সাথে সাপলুডুর খেলা কিংবা গল্পের আসর সেই শৈশবের অমূল্য স্মৃতি।
আজ শহরের কোলাহলে সেই গ্রামের শীতের সকাল হারিয়ে গেছে। কিন্তু স্মৃতির রঙিন ক্যানভাসে আজো ভেসে ওঠে সেই দিনগুলো। মনে হয়, যদি আরেকবার ফিরে যেতে পারতাম মাটির গন্ধ মাখা সেই গ্রামে, যদি আবার শীতের সকালের পিঠা-খেজুর রসের স্বাদ নিতে পারতাম, তাহলে জীবনটা যেন আরও একবার নতুন করে বাঁচা হতো।
শীত শুধু একটা ঋতু নয়, শৈশবের ভালবাসা আর স্মৃতির এক অফুরন্ত ভাণ্ডার। সেই শীতের গ্রামে মন আজো ফিরতে চায়।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ডিসেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৩৬