রাত প্রায় ৯ টা । রুমে বসে সামু নিয়ে ঘাটাঘাটি করছিলাম । হঠাৎ একটা শব্দ । বাইরে তাকিয়ে দেখি চারদিকে আলো । দৌড়ে বারান্দায় চলে আসি । লাল আলোয় চারদিক ভরে যাচ্ছে । ভাবলাম হ্য়ত আতশবাজি ফোটাচ্ছে কেউ । কিছুক্ষন পরেই বুঝলাম এটা আতশবাজি নয়, আগুনের লালিহান শিখা । বারান্দার কোনায় দৌড়ে গেলাম । যা দেখলাম তাকে বর্ননা করার ভাষা আমার জানা নেই । আগুনের লেলিহান শিখা উঠে গেছে প্রায় ১৪-১৫ তলা পর্যন্ত । ভাবলাম একুশে হল অথবা এশিয়াটিক সোসাইটিতে আগুন লেগেছে । ভ্য় পেয়ে গেলাম কারন তাহলে শহীদুল্লাহ হলে আগুন আসা সময়ের ব্যপার মাএ । নিচে চলে গেলাম । চানখারপুল গিয়ে দেখি আগুন আসলে লেগেছে নীমতলী এলাকায় । সামনে দিয়ে কিছুক্ষন পর পর ভ্যনে করে আহত মানুষগুলোকে মেডিকেলে নিয়ে যাচ্ছে । কিছুক্ষন থেকে চলে এলাম । আমার কিছু বন্ধু আগুনের কাছাকাছি যেতে পেরেছিলো । তাদের কাছে যে বর্ননা শুনলাম তা গা শিউরে উঠার মত । সে বর্ননায় আমি যাবনা । শহিদুল্লাহ হলের পুকুর থেকে পাইপ দিয়ে লাইন টেনে আগুন নেভানো হচ্ছে । ফায়ার সার্ভিসের লোকদের সাথে কথা বলে জানতে পারলাম এই পুকুর না থাকলে তাদের কিছুই করার ছিলনা কারন সরু রাস্তা দিয়ে শুধু গাড়ি একদিকে চলতে পারে । ব্যপারটা নিয়ে কিছুক্ষন ভাবলাম । কি হত যদি পুকুর না থাকত?? পুরোনো ঢাকার রাস্তা এত সরু যে ঠিকমত রিকশাই ঢুকতে পারেনা । আর বাড়িগুলোর মাঝে এক হাত ফাকও নেই । শুধু পুরোনো ঢাকাই নয় , ঢাকার অধিকাংশ আবাসিক এলাকার বাসাগুলো এরকম । আমরা হ্য়তো ভূমিকম্প আটকাতে পারবো না , হ্য়তো কোন প্রাকৃতিক বিপর্যয় রুখতে পারবো না , কিন্তু আমরা কি এই অনাকাঙ্খিত মৃত্যু রোধ করতে পারিনা?????? সরকার কি পারেনা সৎ থেকে বিল্ডিং কোড অনুযায়ী বাড়ি করতে মানুষকে উৎসাহিত করতে । তাহলে যেমন ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি কম হবে তেমনি আগুন লেগে মানুষের প্রানহানী ও কমে যাবে । একটা মৃত্যুর কথা না বলে থাকতে পারছি না । ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মী আজকে একটি রুমে একজন গর্ভবতী মা তার দুই সন্তানকে জড়িয়ে ধরা অবস্হায় মৃত দেখতে পান । কথাটা শুনে চোখে পানি এসে গেলো । কিছু হয়তো করতে পারবো না কিন্তু আসুন সবাই মিলে এই হতভাগ্য মানুষের জন্য খোদার কাছে দোয়া করি । তারা যেন পরকালে সুখী হন । আর যেন কোন মাকে এভাবে মৃত্যুবরন করতে না হয় ।
একটি অগ্নিকান্ড , একজন দর্শক এবং কিছু অনুভূতি.......
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৮টি মন্তব্য ৯টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম
স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন
দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ
মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!
বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন
আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।
ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন
মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )
যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন