somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আঁধারে আলো (পর্ব-৯)

২৩ শে মার্চ, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



-স্যার আপনি এখানে?
মিসেসের দিকে তাকিয়ে,
- বৌদি ভালো আছেন?
এই রকম সম্মোধনে আমি তো আকাশ থেকে পড়ি। বাড়ি থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার দূরে এই মেঘমল্লার পাহাড়ের দেশে এসেও পরিচিত লোকজন! কিন্তু তাই বলে তো ধরা দিলে চলবে না। কাজেই চূড়ান্ত বিরক্তির সঙ্গে বলি,
- আমি তো ভাই তোমাকে ঠিক চিনতে পারছি না।
আমার কথা শেষ না হতে হতেই,
-স্যার আপনি নৈঋত পল্লী বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন না?
- না না ঐ নামের কোনো বিদ্যালয়ের কথা আগে কখনো শুনিনি।আর তাছাড়া আমি শিক্ষকতা পেশার সঙ্গেও যুক্ত নই।
ও মুখ নিচু করে,
- স্যরি স্যার আসলে অবিকল আপনার মতোই দেখতে আমার এক মাস্টারমহাশয় ছিলেন,বলে ছেলেটা হাল্কা করে মাথাটা বার দুয়েক দুলুনি দিয়ে দ্রুত আলো আঁধারির মধ্যে অদৃশ্য হয়ে গেল। আমিও একপ্রকার হাঁফ ছেড়ে বাঁচি।

ডাহা মিথ্যা কথা বলে ছেলেটিকে বিদায় দিয়েছিলাম। কিন্তু নিজের কাছে যেন নিজেই ধরা পড়ে গেছিলাম। চলে যাওয়ার সময় ওর মাথা দুলুনি ও ঠোঁটের উপর ঠোঁট চাপার ভঙ্গিমাটা একদিকে চেনা চেনা লাগলেও রহস্যময়ও লেগেছিল। ওকে চিনি না বলাতে ও খুশি হতে পারে নি।আর খুশি হবেই বা কেমনে চোখের সামনে একদা প্রিয় শিক্ষকের সাক্ষাৎ পেয়েও যদি দৃষ্টিভ্রমে অপরকে চিনতে না পারার বাহানা যে হৃদয়ের চাপা অনুরণন সমান্তরাল ভাবে একটা ক্ষোভের জন্ম দিতে পারে সেটা তখনই ওর আচরণে পরিস্ফুটিত হয়েছিল।

হ্যাঁ আমি সৈকতকে সামনাসামনি ধরা দিতে পারিনি ঠিকই কিন্তু অন্তরে যে আমি তার কাছে ধরা খেয়ে গেছিলাম। সম্ভবত নয়/দশ বছর আগের ঘটনা, কর্মজীবনের শুরুতে যখন আমি নৈঋত পল্লী বিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাই তখনই নজরে পড়েছিল ষষ্ঠ শ্রেণীতে পাঠরত মেধাবী ছাত্র সৈকতের। লাজুক স্বভাবের শান্তশিষ্ট শৃঙ্খলা পরায়ণ ছেলেটার আচরণের জন্য এমনিতেই যে কারোর নজরে পড়ারই কথা। তবে এই বয়সে নতুন শিক্ষকদের প্রতি ছাত্র-ছাত্রীদের আলাদা একটা আনুগত্য বোধ কাজ করে।সবার মধ্যে না হলেও ওর মধ্যে এই শ্রদ্ধাবনত মনোভাবটা একটু বেশি বেশি চোখে পড়তো। নবাগত শিক্ষকদের প্রতি ঠিক এমন অনুভূতি বাল্যে আমারও এমন তৈরি হয়েছিল।যষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ার সময় নুতন শিক্ষক মিন্টু ঘোষালকে যে ঐ সময় কী অসম্ভব ভালো লাগতো সে কথা বলে বোঝাতে পারবো না। সেই কবেকার কথা অথচ স্যারকে আমি আজও ভুলতে পারিনি। যাইহোক যে কথা বলছিলাম। সৈকত ক্লাসের মনিটর ছিল।অন্য মনিটর অর্ঘ্য ছিল স্বভাবে সৈকতের সম্পূর্ণ বিপরীত। পড়াশোনা ঠিক মতো করলেও দুষ্টুমিতে ছিল ক্লাসের সেরা। কিছুতেই ওকে বাগে আনতে পারতাম না। উল্লেখ্য ওর এমন স্বভাবের জন্য আমরা অনেকেই অর্ঘ্যকে একদম পছন্দ করতাম না। মূলত অর্ঘ্যের দস্যিপনার জন্যেই সৈকতের উপর আমাদের অনেকেরই আলাদা স্নেহ কাজ করতো। অর্ঘ্যকে বাগে আনতে কথায় কথায় রেফারেন্স টানতাম সৈকতকে। আর এইভাবেই সৈকত হয়ে উঠেছিল আমাদের প্রায় সকলেরই প্রিয় পাত্র।

সে বছর রেজাল্ট বের হতেই খুশি হয়ে পরেরদিন বাবাকে সঙ্গে নিয়ে স্টাফরুমে হাজির হয়। ছোট্ট মানুষ এক বুক প্রত্যাশা অপার আনন্দ যেন চোখে মুখে ঝরে পড়ছিল।যেন টগবগিয়ে ঘোড়ার মতোই খুশি ঠিকরে ঠিকরে বেরোচ্ছিল।জনে জনে আমাদের অনেক শিক্ষকের সঙ্গে বাবার পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলো। একসময় আমার কাছে আসে। ভদ্রলোক প্রণাম করতেই আমিও প্রতি নমস্কার জানাই। সৈকত মার্কশিটটি এগিয়ে ধরে আমার দিকে। আমি অবশ্য আগে থেকেই জানতাম ওর রেজাল্টের কথা ও প্রথম স্থান অধিকার করে ক্লাসে উঠেছিল।। তবুও ওকে বুঝতে না দিয়ে কৌতুহল রেখে মার্কশিটটি ভালো করে খুঁটিয়ে খুটিয়ে দেখে নেই।দেখা শেষ হতেই ওর মাথায় হাত বুলিয়ে আশীর্বাদ করতেই ও নিচু হয়ে পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করতেই বুকে টেনে নিই।এমন ছেলেকে তো এমনিতেই আদর করতে হচ্ছে হবে।

সপ্তম শ্রেণীতে উঠলে ওর সঙ্গে আমার তেমন যোগাযোগ ছিল না। ওদের সেকশনে নিয়মিত ক্লাস ছিল না।প্রোভিশনাল ক্লাস মাঝে মাঝে পড়লেও সেটা ছিল যৎসামান্য। তবে বিদ্যালয়ের সিঁড়িতে ওঠা-নামার সময় পিছন থেকে মাঝে মাঝে পা ঘষার শব্দ পেতাম। বুঝতাম সৈকতের উপস্থিতি। ঘাড় ঘুরিয়ে পেছনে তাকাতেই মিষ্টি হাসি দিয়ে 'গুড মর্নিং' বা 'গুড আফটারনুন স্যার' জানাতো। আমি ওর পিঠে আলতো করে হাত বুলিয়ে ভালোবাসার উষ্ণ পরশ ছড়িয়ে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে যেতে বলতাম। সেই সৈকত অষ্টম শ্রেণীতে উঠলে আবার ওদের নিয়মিত ক্লাস পাই।বলা ভালো এবার আমি ওদের শ্রেণী শিক্ষকের দায়িত্ব পাই।

অষ্টম শ্রেণীতে উঠে আমি যে সৈকতকে পেয়েছিলাম সেই সৈকতকে পেয়ে আমি হতবাক হয়ে যাই। আমি অবাক হয়ে গেছিলাম একটি ছেলের মাত্র এক বছরের মধ্যে এমন অধঃপতন কি করে হয় ভেবে।হতে পারে বয়ঃসন্ধির কারণে একটা পরিবর্তন হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু এইভাবে আমূল বদলে যাওয়া! আমাদের মতো অনেক শিক্ষকের কাছে ছিল রীতিমতো বিস্ময়ের। আমি এই বিষয়টি নিয়ে সে সময়ে অনেকেরই সঙ্গে আলোচনা করেছিলাম। কিন্তু কারোর কাছ থেকে কোন সদুত্তর পাইনি। শ্রেণি শিক্ষক হওয়াই প্রথম পিরিয়ডের ঘন্টা বাজলেই ক্লাসে ঢুকে পড়তাম। বেশিরভাগ ছাত্ররা অনেক আগেই স্কুলে চলে আসে। ওরা বেশিরভাগ ছেলেরা আগেভাগে আসতো মূলত খেলাধুলা করার জন্য। মুষ্টিমেয় কয়েকজন ঘন্টা পড়ার পরে এলে তাদেরকে সাবধান করে দিতাম,যাতে দ্বিতীয় আর কোনো দিন এমন দেরি না হয়। উল্লেখ্য প্রায় সবাইকে একটা শৃংখলের মধ্যে বাঁধতে পারলেও সৈকতকে নিয়ে আমি পড়ি মহা সমস্যায়।ও দিনের পর দিন দেরি করে ক্লাসে আসতো।তার উপরে অদ্ভুত বাজে করে চুল কাটা ছিল।মনে হতো কেউ ধরে বেঁধে কানের উপরের চুলগুলো কামিয়ে দিয়ে শুধুমাত্র মাথার উপর লম্বালম্বি ভাবে মোরগের ঝুঁটির মতো চুল কেটে দিয়েছে।কি বিশ্রী যে লাগতো সে কথা বলে বোঝানো যাবে না।ওর দিকে আমি নিজেই লজ্জায় তাকাতে পারতাম না। এমন একটি কুৎসিত কদাকার চেহারা তৈরি করে চোখ ঘষতে ঘষতে দরজার সামনে এসে দাঁড়াতো। প্রথমদিকে খুব ভালো ভাবে ওকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে সময়ে আসার পরামর্শ দিতাম। এমন করে চুল না কেটে ভদ্রভাবে কাটানোর কথা বলতাম।ও বাধ্য ছেলের মতো শুনে যেতো আমার কথাগুলো। কিন্তু পরের দিন আবার যা তাই। যথারীতি দেরি করে ধীর স্থির ভাবে দরজার সামনে এসে দাঁড়াতো বা চুলের পরিবর্তন কোনো কিছুতেই ওর বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ ছিল বলে মনে হতো না। হাজারো বোঝালেও মুখে কিছুই বলতো না। এমনকি ক্লাসে অনুমতি দেওয়ার জন্য ওর মধ্যে তেমন কোন তাগিদ লক্ষ্য করতাম না। ভাবটা এমন আমার সঙ্গে চোখাচোখি হলে বা ভিতরে আসার অনুমতি দিলে তবেই আসবে অন্যথায় সারাক্ষণ বাইরেই কাটিয়ে দিবে।মহা সমস্যায় ভুগছি ছেলেটাকে নিয়ে। দিনের পর দিন দেরি করে ক্লাসে আসছে অথচ দেরির কারণ জিজ্ঞেস করলে মুখে কোনো কথা নেই। হাজার প্রশ্নতেও কোনো উত্তর নেই। একসময় নিজেই বিরক্ত হয়ে ওকে ক্লাসে বসার অনুমতি দিলে দেখতাম কিছুক্ষণ পর বেঞ্চের মাথা ঠেকিয়ে ঘুমিয়ে পড়তো।কি আশ্চর্য! একে তো দেরিতে আসে , তারপর ক্লাসে বসামাত্রেই ঘুমানো। এসময় বিরক্ত ও করুণা দুটোই সমানে বইতে থাকে ওর উপরে। বুঝতাম রাতে ঘুমটাও ওর মনে হয় ঠিকমতো হচ্ছে না। ওর গভীর নিদ্রাগমন দেখে বাকি ছেলেরা হাসাহাসি করলেও আমি তাদেরকে ওদিকে না লক্ষ্য দিয়ে বরং নিজ নিজ কর্মে ব্যস্ত থাকতে পরামর্শ দিতাম। এইভাবেই বেশ কিছু দিন কেটে যায়। আমি কোনো উপায় না পেয়ে ঠিক করি ওকে নিয়ে আর অহেতুক সময় নষ্ট করবো না। তারচেয়ে কিছুদিন বরং পর্যবেক্ষণে রাখি ও ওর মতো আসুক।দেখি তার পরেও ওর মধ্যে কোনো পরিবর্তন আসে কিনা।

আমার সহকর্মীদের মধ্যে অনেকের সঙ্গেও ইতিমধ্যে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেছি। কেউবা আবার আগবাড়িয়ে গার্ডিয়ান কল করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। আমি আবার কথায় কথায় গার্ডিয়ান কল করার বিরোধী। গার্ডিয়ান কল করার পিছনে একজন শিক্ষকের ছাত্রকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার ব্যর্থতা কাজ করে বলে আমার মনে হয়। কেন জানি মনে হতো একজন শিক্ষক বুদ্ধিতে একজন শিক্ষার্থীকে এঁটে উঠতে না পেরেই যেন তার বাবা-মায়ের শরণাপন্ন হতেই গার্ডিয়ান কল করা। একপ্রকার দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়াও বলা চলে বৈকি। যাইহোক সৈকতকে এভাবে ছাড় দেওয়াতে বেশ কিছুদিন পর আরেকটি সমস্যা তৈরি হয়। অন্যান্য ছেলেরা দেরি করে এলে তাদেরকে এমন দাঁড় করিয়ে রাখলে তারা আবার ঐ সৈকতের দিকে আঙ্গুল তুলে বলতো,
- স্যার আপনি দেরি করলে আমাদের বকা দেন কিন্তু সৈকতকে কিছু বলেন না কেন?
ছাত্রদের এমন প্রশ্ন তোলাতে আমি রীতিমতো দ্বিমুখে চাপের মধ্যে পড়ি। এবার ক্রমশ আমার আস্থা কমতে থাকে। ঠিকই তো বুদ্ধিবৃত্তিতে যে আমি ওকে নিয়ন্ত্রণ করতে একপ্রকার ব্যর্থ একথা মনে মনে মেনে নিই । কাজেই যা হবার তা হয়ে গেছে আর সময় দেওয়া ঠিক হবে না ভেবে বিকল্প চিন্তা করি। ইতিমধ্যে সৈকতকে গার্ডিয়ান কল করার জন্য সহকর্মীদের কাছ থেকে রীতিমতো চাপ আসছিল। এমতাবস্থায় সমস্ত দিক বিবেচনা করে অবশেষে ওকে গার্ডিয়ান কল করতে সিদ্ধান্ত নিই। কিন্তু কল করলেই তো আর হবে না।ও ছেলে যে নিজের মতো করে ভবিষ্যতের প্লান ভেবে বসে আছে। কয়েকদিন চললো এভাবে গার্ডিয়ান কল করে। একসময় ওর চূড়ান্ত সময়সীমাও শেষ হয়। তবুও ও ভাবলেশহীন ভাবে স্কুলে আসে। এবার আমারও যেন সহ্যের বাঁধ ভেঙ্গে যায়। কয়েকদিন পর আর নিয়ন্ত্রণ রাখতে না পেরে একদিন ওকে তীব্র ভর্ৎসনা করি। উল্লেখ করি গোটা বিদ্যালয়ে এই মুহূর্তে সবচেয়ে উশৃংখল ছাত্র তুমি বলে।ও নির্বিকার ভাবে মুখ নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে। ওর নির্লিপ্ততা আমাকে এক প্রকার ক্ষেপিয়ে তোলে। বাধ্য হয়ে ওকে এবার বিদ্যালয়ে আসতে বারণ করে দিই। কিন্তু সেই কৌশলও কাজে দিল না। ও চলতে থাকে নিজস্ব ছন্দে। একদিন খুব করে ধমক দিয়ে বাবার কথা বললে,
- স্যার বাবাকে বলছি দু এক দিনের মধ্যেই আসবে।
যাইহোক এই ভাবেও বেশ কিছুদিন অতিবাহিত হয়। কিন্তু সৈকতের দু একদিন আর শেষ হয় না।আমিই একপ্রকার পরাজয় স্বীকার করে ওকে আর গার্ডিয়ান নিয়ে চাপাচাপি দেওয়া বন্ধ করি।

চাপাচাপি বন্ধ করলেও মনের খুঁতখুতানি বন্ধ হয়নি। মনে মনে ভাবি ওকে নিয়ে একদিন সময় করে বসতে হবে। সেই মতো একদিন টিফিন পিরিয়ডে হাতে সময় নিয়ে সৈকতকে ডেকে নেই।একথায় সে কথায় হাঁটতে হাঁটতে করিডরের নির্জন একটা জায়গায় পৌঁছে যাই।
জিজ্ঞেস করি,
- আচ্ছা সৈকত আমাকে তোমার কেমন লাগে?
যে ছেলের মুখে আগে হরদম খই ফুটতো আজ সেই ছেলের মুখে কোনো কথা নেই। আমি বার দুয়েক প্রশ্নটি করে উত্তর না পেয়ে বুঝে যাই এ ছেলে আর আগের মতো নেই।একদম আমুল বদলে গেছে। কাজেই ওকে লাইনে আনা খুব সহজ হবেনা। এবার জিজ্ঞেস করি,
- তুমি কি কখনো কোথায় ঘুরতে গেছো?
ও চুপ করে থাকে। আমি সিধাসিধি করি
- কি উত্তর দাও..
অনেকক্ষণ পর জানায়,
- না স্যার কোথায় ঘুরতে যাইনি।
আমি আবার বলি,
- যদি তোমার কোনো সুযোগ আসে বাইরে ঘুরতে যাওয়ার তাহলে কি যাবে?
যথারীতি চুপ করে থাকে। আমি আবার ওকে খোঁচাতে থাকি
-কি উত্তর দাও।
-না স্যার।যেতে পারবো না।
ওর এমন পরপর উত্তর দেখে আমি আশার আলো দেখি; প্রত্যাশা যায় বেড়ে বেড়ে যায়।আজ কতোদিন পর ওকে কথা বলাতে পেরেছি। আমি আবার জিজ্ঞেস করি,
- কেন যেতে পারবে না?
এবার আবার ও চলে যায় ওর চেনা ছন্দে। মুখে কুলুপ এঁটে যথারীতি চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে। আমি ওর উত্তর পেতে হাজার চাপাচাপি করলেও ও নির্বিকার ভাবে দূরে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে। নিশ্চুপভাবে দুজনে দাঁড়িয়ে থাকি। মাঝে মাঝে দুজনের ভারী দীর্ঘশ্বাস এসময় আমাদের উপস্থিতির সাক্ষ্য বহন করছিল।এই ভাবে বেশ কিছু সময় চলে যায়। আমারও সময় শেষ হয়ে আসছিল। এমন সময় ঢং ঢং করে ঘন্টা বেজে ওঠে। বুঝতে পারি টিফিন পিরিয়ড শেষ হয়ে গেছে। কাজেই আর সময় দেওয়া সম্ভব নয়। অগত্যা আমরা দুজনে দুই দিকে হাঁটা লাগালাম। জীবনের সব ব্যর্থতা পরাজয় নয়। এমনো কিছু ব্যর্থতা আছে যা মানুষকে জয়ের গন্ধ শোঁকায়; গড়ে তোলে সাফল্য লাভের শক্তি সঞ্চয়ের অদম্য মনোবল।মনে মনে সেদিনই যেন এমন শক্তি সঞ্চয় করেছিলাম যে করেই হোক বাচ্চা ছেলেটার রহস্যের জট আমাকে উদ্ধার করতেই হবে।


সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে মার্চ, ২০২৩ বিকাল ৫:১৮
১৮টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।

লিখেছেন সাইয়িদ রফিকুল হক, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৩:১৫



ভারতীয় পণ্য বয়কটের কেন এই ডাক। একটি সমীক্ষা-অভিমত।।
সাইয়িদ রফিকুল হক

বিএনপি ২০২৪ খ্রিস্টাব্দে দেশে অনুষ্ঠিত “দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে”-এ অংশগ্রহণ করেনি। তারা এই নির্বাচনের বহু আগে থেকেই নির্বাচনে অংশগ্রহণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×