somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিজয় স্মরণীর সামরিক যাদুঘরে একদিন। (ছবি ব্লগ)

১৪ ই নভেম্বর, ২০১২ রাত ৯:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গতকাল গেলাম বিজয় সরণীতে সামরিক যাদুঘরে। অনেকগুলো ট্যাংক, কামান সহ যু্দ্ধক্ষেত্র ব্যবহৃত নানা ধরণের ভারী অস্ত্র দেখে আসলাম। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনী হতে উদ্ধারকৃত। এই যানবাহন গুলোর কিছু ছবি তুলে নিয়ে আসলাম। পরিবার নিয়ে যে কোনো দিন ঘুরে আসতে পারেন, তবে বুধবার বন্ধ। কোনো এন্ট্রি ফি লাগে না। সাজানো গোছানো সবকিছু পরিপাটি। কেউ গাড়ি নিয়ে গেলে গাড়ি পার্কিং এর ব্যবস্হাও আছে।সাথে একটা রেস্টুরেন্টও আছে, চাইলে বিকালে কাবাব, পরটা খেতে পারবেন। (তবে দাম একটু বেশি মনে হয়েছে।)


আসুন এবার কিছু ভারী অস্ত্র দেখি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরী ২৫ পাউন্ডার গান। (পাকিস্তান সেনা প্রধানের সৌজন্যে প্রাপ্ত)



মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরী ১৭ পাউন্ডার ট্যাংক বিধ্বংসী গান। (পাকিস্তান সেনা প্রধানের সৌজন্যে প্রাপ্ত)



মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরী ৪০মি:মি: মটর ক্যারেজ।(পাকিস্তান সেনা প্রধানের সৌজন্যে প্রাপ্ত)



ট্যাংক পি টি ৭৬
রাশিয়ার তৈরী এই ট্যাংকটি পানিতেও ভেলে চলতে সক্ষম। এই ট্যাংকটি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া এলাকা থেকে বাংলাদেশের দামাল মুক্তিযোদ্ধা কর্তৃক পাকিস্তান দখলদার বাহিনী থেকে উদ্ধার করা হয়।

সৌজন্য: এরিয়া সদর দফতর, কুমিল্লা।


এই ট্যাংকটির গায়েই খোদাই করে লিখা হয়েছে ব্রাক্ষণবাড়িয়ার মানুষদের বিজয়কাহিনী।


মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরী ৭৬মি:মি: ট্যাংক ক্রইজার গান মার্ক ।(পাকিস্তান সেনা প্রধানের সৌজন্যে প্রাপ্ত)



মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরী RAM GPO Sexton ট্যাংক ক্রইজার ।(পাকিস্তান সেনা প্রধানের সৌজন্যে প্রাপ্ত)

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরী TK ARV MK II শেরমেন।
(পাকিস্তান সেনা প্রধানের সৌজন্যে প্রাপ্ত)

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরী ৭৫ মিঃমিঃ প্যাক হাউগান।
(পাকিস্তান সেনা প্রধানের সৌজন্যে প্রাপ্ত)


৩৭ মিঃমিঃ এ এ গান ব্যারেল।
পাকিস্তার সেনাবাহিনীর ব্যবহৃত এই ব্যারেলটি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি কর্তৃক উদ্ধার করা হয়।
(সৌজন্যে: ১২ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারী)


অষ্টাদশ শতাব্দীর কামান।
(সৌজন্যে: এরিয়া সদর দফ্তর, চট্টগ্রাম)


ব্যারেল ১০০ মিঃমিঃ ট্যাংক গান।
কামানের এই ব্যারেলটি রাশিয়ার তৈরী ট্যাংক টি-৫৪ এর সাথে ব্যবহৃত হয়। এই ১৯৭৩ সালে মিশর কর্তৃক আরব-ইসরাইল যুদ্ধে ব্যবহৃত হয়েছিলো।
(সৌজন্যে: বেস ওয়ার্কশপ, ইএমই)


১০৬মিঃমিঃ রিকয়েললেস রাইডেল সহ জিপ জি উইলিস।
রিকয়েললেস রাইফেল ট্যাংক বিধ্বংসী অস্ত্র হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এর গোলা একটি ট্যাংকের লোহার পাতের ভিতর ১৬.২০ ইঞ্চি পর্যন্ত ভেদ করতে পারে। জীপটি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর কালে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরী। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর এই জিপটি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নিকট থেকে উদ্ধার করা হয় এবং ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক ব্যবহৃত হয়।


১৭৯৯ সালে যুক্তরাজ্যে তৈরী এই কামানটি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী কর্তৃক ভারতবর্ষে ব্যবহৃত হয়েছিলো। (সৌজন্যে: রংপুর সেনানিবাস)


৬ পাউন্ডার ট্যাংক বিধ্বংসী কামান।
১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সিলেট জেলার বানুগাছা রণাঙ্গণে পাকিস্তান বাহিনীর সাথে ৮ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রচন্ড সংঘর্ষে পাকিস্তানী বাহিনী পর্যুদস্ত হলে পলায়নকালে কামানটি ফেলে যেতে বাধ্য হয়।

(সৌজন্যে: ৮ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট)


১০৫/৫৪ সিএম ক্রুপ গান
১৯৩৭ সালে জার্মানীতে তৈরী কামান। দ্বিতীয় বিশ্বযু্দ্ধে এই অস্ত্রটি ব্যবহৃত হয়েছিলো।


আরো কিছু অস্ত্র







১৪.৫ মিঃমিঃ কোয়াড বিমান বিধ্বংসী কামান।
চীনের তৈরী এই বিমান বিধ্বংসী কামান গোলন্দাজ বাহিনী কর্তৃক ব্যবহৃত হয়। এর কার্যকরী দূরত্ব ২০০০ মিটার।



ট্রাক ১/৪ টন ৪x৪ কাইজার উইলিজ জিপ ওয়াগনার।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাংলাদের সশস্ত্রবাহিনীর সর্বাধিনায়ক জেনারেল এম এ জি ওসমানী এই গাড়িটি নিয়ে বিভিন্ন যুদ্ধ-এলাকা পরিদর্শন করেন।

(সৌজন্যে: যশোর শিক্ষাবোর্ড)


স্টাফ কার মার্সিডিজ বেঞ্জ ৪ সিলিন্ডার, ২০০০ সিসি।
তৎকালীন পশ্চিম জার্মানীর তৈরী এই গাড়িটি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ১৪ ডিভিশনের জিওসি কর্তৃক ব্যবহৃত হত। এই গাড়িটি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নিকট হতে উদ্ধার করা হয়। পরবর্তী কালে বাংলাদেশের তৎকালীন সেনাপ্রধান লেঃ জেনারেল জিয়াউর রহমান, বীর উত্তম এটি ব্যবহার করতেন।


ট্রাক ৬x৪ ডায়মন্ড টি মডেল ৯৮১
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এই যানটি দ্রব্য-সামগ্রী ও সেনা বোঝাই একটি ট্রেইলার টানতে সক্ষম। এই গাড়িটি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নিকট হতে উদ্ধার করা হয়।


মিডিয়াম উদ্ধার যান ৬x৬ মডেল এম ৫৪৩

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরী শক্তিশালী এই যানটি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ৫ টন ওজনের যেকোন শক্তিশালী গাড়ি উদ্ধার করতে সক্ষম। এই গাড়িটি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নিকট হতে উদ্ধার করা হয়। ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত এই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ব্যবহৃত হয়।

ট্রাক কারগো ৬x৬ শপ ভ্যান মডেল এম ১০৯
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরী। যুদ্ধক্ষেত্রে যানবাহন বহন, অস্ত্র, বেতার সামগ্রী ইত্যাদি মেরামত করার যন্ত্রপাতি এই যানটির ভিতর সংযুক্ত থাকে। এই গাড়িটি ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের পর পাকিস্তান সেনাবাহিনীর নিকট হতে উদ্ধার করা হয়। ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত এই বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে ব্যবহৃত হয়।



ঐযে নভো থিয়েটার দেখা যাচ্ছে। সামনে সুন্দর মাঠ, ফুলের গাছ আছে অনেক। মেহেদী গাছও আছে, এখানে গাছ থেকে মেহেদী পাতা বিক্রিও করা হয়। ছোট বাচ্ছারা এত বড় খোলা জায়গা পেলে খুব মজা করতে পারবে।


একটা বিশাল বড় খেলার মাঠ আছে, এখানে বিভিন্ন পেশাদার খেলোয়াড়রা প্রশিক্ষণ নেয়। আজকে কোন একটা ফুটবল দল প্রশিক্ষণ নিচ্ছে, কয়েকজন নাইজেরিয়ান খেলোয়াড়কেও দেখলাম।


সাথে আছে সামরিক যাদুঘর। এই যাদুঘরে স্বাধীনতা যুদ্ধের নানা স্মৃতি রয়েছে।


এসপি আর্টিলারী ২৫, পাউন্ডার সেক্সটন এম-৫, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরী।


৩৭ মিঃমিঃ কামান সহ ট্যাংক, হালকা স্টুয়ার্ড মার্ক-৪


আরো একটা ট্যাংক।


আরো আছে ২টা জাহাজ।পানির অভাবে হাহাকার করছে এই জাহাজ ২টা।


সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই জুলাই, ২০১৫ দুপুর ২:১০
৩৩টি মন্তব্য ৩৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×