somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিএনপি - একটি সার্বজনীন মামুর ডেকচি!

০৬ ই এপ্রিল, ২০০৯ বিকাল ৫:৫১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

তত্ত্বাবধানে আছেন একজন ষাটোর্ধ রূপসী মহিলা। বলা যেতে পারে মরহুম জিয়ার কবর ঘিরে বিরাট একটা মাজার। নানা জাতের নানা মতের নানা ধান্ধার লোক এখানে ভীড় করছে। ডেকচির রান্না হতে সমানে দু'বেলা খিচুড়ি বিলানো হইতেছে। হাতের দু' তালু লেপ্টে চেটেপুটে খাচ্ছে আগত জনতা। শহুরে ভাষায় এটাকে বড় সড় একটা ক্লাব বলা যায়।
ইদানীং আওয়াজ উঠেছে- তৃনমূল বিএনপিকে...জোড়দার করা..। কিছু তৃন পাওয়া যেতে পারে- কিন্তু তাতে মূল কি পাবেন বেগম জিয়া?
শোষক গোস্টির নিপীড়নের বিরূদ্ধে সংগ্রাম করতে করতে সাধারনত রাজনৈতিক দলের ইভ্যুলুশন হয়। ফলে অন্তত: প্রাথমিক পর্যায়ে মতলববাজ লোকজনের জন্য জায়গাটা অত রসালো নয়। কিন্তু ক্ষমতারোহনের পর তাতে 'জনতার' সিল মারতে গিয়ে রাজনৈতিক দলের জন্ম হলে পিপড়াঁ, তেলাপোকা প্রথমেই ভীড়ভাট্টা করে ফেলে। বিএনপির ক্ষেত্রে তার ব্যতিক্রম কিছু হয়নি।
খেয়াল করে দেখুন তো ২০০০ সাল পর্যন্ত হারিছ, ফালু, গিয়াস নামে কাউকে বিএনপি নামক দলটার প্রথম কাতার দুরের কথা সমাবেশের দু'চার মাইলের মধ্যে দেখা যায় কিনা? যেই ২০০১ ইলেকশানে বিএনপি উইন করল ডেকচির গোড়ায় তারা হাজির। হারিছ তো রীতিমত রাজনৈতিক সচিব বনে গেলে। কি রাজনৈতিক জ্ঞানের জাহাজ।
আসি আরেক মতলববাজদের কথায়। রিটায়ার্ড মিলিটারী ও আমলা। গাছেরটা আজীবন খাওয়ার পর তলারটা কুড়ানোর জন্য নেমে পড়েন। জামায়াতে যোগ দিলে আশু লাভের কোন চান্স নেই এবং শালারা আরেক পেইন, সমর্থক ফরম ধরিয়ে বলে-কাজ করতে থাকেন..! আওয়ামীলিগ বাঘা যতীনে ভরা একটি দল। ব্যাপক কুটনৈতিক দক্ষতা না থাকলে...। সুতরাং অল্প আয়েসে তলারটা কুড়াতে চাইলে বিএনপিই ভরসা। ইনাম চৌধুরি, মোফাজ্জল ভাই ও বেরাদরেরা জয়েন করেই তো যথাক্রমে প্রাইভেটাইজেশনের চেয়ারম্যান ও উপদেস্টা বনে গেলেন! তখনও অবশ্য সংস্কার যুগের আভির্ভাব হয়নি। রাতারাতি টাকার স্তুপকে পাহাড় বানানো ও বুড়ো বয়সের শখ পুরন হিসেবে ব্যবসায়ী গোস্টির বিএনপিতে আগমন নিত্যনৈমিত্তিক। আসছেন ভিসি, প্রক্টর, প্রভোস্ট প্রত্যাশী শিক্ষাবিদের দল। মজার একটি কথা বলি- ভিসি যারা হন তারা মোটামুটি ৫০ পেরুনো। ছাত্রজীবনে আর যাই হোক ছাত্রদল করার টেকনিক্যাল সুযোগ নেই! কিন্তু বেগম জিয়ার 'বিএনপি' মনা ভিসি চাই ই। তো কি করা। চতুর শিক্ষক প্রজাতি 'ইনকিলাব (থু:)' জাতীয় পত্রিকায় 'জাতীয়তাবাদি ইসলামি' চেতনার পক্ষে কলাম লিখতে থাকে। এগুলো কাটিং করে বায়োডাটার সাথে এটাচমেন্ট। মুখোশধারী বামপন্থি, আওয়ামীলিগ, জামায়াত বা নিছক অ-রাজনৈতিক চতুর শিক্ষকরা বনে যায় বিএনপি। ছাত্রদলের কথা কি আর বলিব! ভোল পাল্টানো ছাত্রলীগ, ছ্দ্মবেশী শিবির, চাদাঁবাজ, ডাইলবাজ, ভীরু স্বভাবের আর কিছু তারুন্য মিলে বিরাট এক ছাত্রদল। নেত্রী বলেই ফেলেন, 'বিরোধী দল শায়েস্তা করার জন্য ইহারাই যথেস্ট।' বলাবাহুল্য, গত ৯ম সংসদ নির্বাচনে ইহাদেরকে ভোটকেন্দ্রের চৌহদ্দিতে খুঁজিয়া পাওয়া যায়নি।
জেলা, উপজেলা পর্যায়ে অন্য সময় লোক পাওয়া না গেলেও সরকারী আমলে বালু মহাল, নালা নর্দমা নির্মান, খালবিল ভরাট সহ হেন কাজ নেই যাহা পাওয়ার জন্য শত শত জাতীয়তাবাদি পচুঁ-ঘেচুঁর দল স্থানীয় বিএনপি অফিস, এলজিইডি অফিসে ভীড় করে।
এভাবে সাবেক মুসলীমলিগ, পক্ষাঘাতগ্রস্ত বামপন্থী, খেদানো জামায়াত, ফ্রিডম পার্টি, এনডিপি, জামায়াত না পছন্দ মৌ লভি, সুবিধা করতে না পারা মনে মনে আওয়ামীলিগ- নানা তন্ত্র মন্ত্রের লোক জটলা পাকিয়ে অদ্যকার বিএনপি। অনেকটা একগাদা সাপকে বস্তায় ভরে মুখ পেচিঁয়ে চলমান খালেদা জিয়া। উহারা অনবরত ফোসঁফাসঁ, ঢুশঢাশঁ করছেই, করবেই। বনাবনি না হলে বস্তার ফুটো দিয়ে বেরিয়ে পড়ে অলি, বদু, আবদুল, কোরেশী, মান্নান ভাইরা। ঐখানে গনতন্ত্র নেই ইত্যাদি ইত্যাদি বলে ছেলে, পেলে, বউমা মিলে আরেকটা গনতান্ত্রিক (!) দল গঠন করে ...। তারপর কোথায় যেন হারিয়ে যান!
মামুর ডেকচি হতে অপাত্রে হালুয়া বিতরনের দু:খজনক ঘটনাটা ঘটে আমলা ও মিলিটারী যন্ত্রে। কঠিন হস্তে মেধা ও যোগ্যতার সোজা পথে না গিয়ে তিনিও আওয়ামী সুরে বাশিঁ বাজাতে থাকেন। সে কি মোহনীয় মায়াবী সুর। ভাবতে থাকেন, রাজ্যের খাটিঁ বিএনপি সচিব ও জেনারেলরা ক্রলিং করতে করতে ওনার পদতলে হাজির হবেন। হনও বটে প্রচুর! একপাল হয় বাকশালী নয় জামায়াতী। এমন বাশিরঁ সুরে অনেক সময় অবসরপ্রাপ্ত জওয়ান বা গোমস্তারা এসেও হাজির হন কবরস্থান থেকে। এভাবেই সত্যসত্য তেমন কোন মতবাদ ছাড়া চলছে বিএনপি। যার সম্বল তিনটি- ১। ব্যক্তি জিয়ার সততা, জনপ্রিয়তা ও দেশপ্রেম ২। আওয়ামীলিগের ঐতিহাসিক চিরাচরিত সংঘবদ্ধ রক্তচক্ষুর প্রতি সাধারন মানুষের ঘৃনা ও ৩। বেগম জিয়ার অদ্ভুত অব্যাখ্যাত জনপ্রিয়তা।
তেমন কোন আদর্শ না থাকাই দলটি সব ধরনের মানুষের আশ্রয়স্থল। কোন রকমে কোমর সোজা করে দাড়াতে পারলেই আরো বহুবার মানুষ এটিকে ঠেলেঠুলে নিজ গরজে পার্লামেন্টে পাঠাবে। অন্তত: আওয়ামী তান্ডব থেকে নিজের বিষয় সম্পত্তি, মান, হাত পা রক্ষা করার জন্য।
২৫টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×