নগরে ঘুম যায় অনন্তদহনের পাখি, এখানে ওখানে সেখানে পাতা রেখে। পাখিদের চোখে রোদ মরে মরে যায় আর পাতামুনিয়ার ঘর বাতাস কেটে কেটে দোয়েলের শিস খুঁজে ফেরে। রোদ মরে মরে বাতাস কেটে কেটে অজস্র শেয়ালের চোখ মিশে যায় মানুষের অক্ষিকোটরে। রেটিনায় তার মাংসাশী সন্ধ্যার দীর্ঘ চিত্র।
আমি ও আমরা সেই নগরের নাগরিক। চোখের ভেতর জ্বলন্ত উনুনে কাঠ নিয়ে মাংসের ঘ্রাণ খুঁজে ফিরি। আমাদের মগজের ভেতর নেকড়ের খোলস। বাহিরে সফেদ মুখ।
মাংসাশী দন্তের খাজে খাজে লিখে রাখি দূর অতীতের অন্ধকার। চোখে অবিরাম ক্লিক ক্লিক ক্লিক। নগরের সব মাংসেই আমাদের রুচি। শিশু মাংস, কিশোরী মাংস, মধ্যবয়সী বা বৃদ্ধা মাংস। গালের মাংস, পিঠের মাংস, বুকের বা নিতম্বের মাংস। মুসলিম মাংস, হিন্দু মাংস, উপজাতি বা নিধর্মী মাংস। আমাদের ধারালো কেটে ফালা ফালা করে শিশুর কচি মাংস। উদ্ধত দন্ডে বিক্ষত হয় যুবতীর মাংস। ধারালো চাপাতিতে টুকরো টুকরো হয় বিজ্ঞান মাংস।
আমরা তোমাদের পাখিনগরের রোদ কেটে কেটে তুলে আনি বিবমিষা। পান্তা ইলিশের ঘ্রাণে লৈঙ্গিক উন্মাদনায় লিখে রাখি অচেনা ললনার শরীরের ঘাম। তোমার বটমূল, তোমার বোশেখ, তোমার সংগীত ও প্রেম আসল নয়। মাংসই আসল, মাংসই আদি।
মাংস চলে যাবে নগরের সব কসাইঘরে, বাড়িতে উঠোনে, ফুটপাতে, মাইক্রোবাসে। বিজ্ঞান সত্য নয়, চাপাতিই সত্য। মগজহীনতাই সব নিয়ামক। তোমার মাংস, তোমার যৌবন, তোমার হলদেটে মগজ আমার বিজয়। মাংসবিজয়। মাংস উপাখ্যান।
নগরে কোনো পাখির প্রয়োজন নেই। শুধু কাকের প্রয়োজন। শেয়ালের প্রয়োজন। অজস্র চাপাতির প্রয়োজন।
লিখে নাও, পাখিদের মধ্যে কাকই শ্রেষ্ঠ, পশুদের মধ্যে শেয়াল, বোধের মধ্যে শ্রেষ্ঠ চাপাতি। নিকৃষ্টের মধ্যে মানুষ হিসেবে শুধুমাত্র তুমিই সুন্দর ও শ্রেষ্ঠ।
নগর ছেড়ে বন্ধু তাই, চল বনে চলে যাই
মগজ খুলে ফেলে দিয়ে, শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি হয়ে যাই!