দিদারুল আলম বাননা জাহিলিয়াত প্রসঙ্গে Click This Link একটা পোষ্ট দিয়েছিলেন। ইসলামী রাজনীতিতে যারা আছেন তাদের কাছ থেকে প্রায়ই আমরা জাহিলিয়াতের একটা একঘেঁয়ে ধর্মতাত্ত্বিক বয়ান পাই। এতে আমাদের প্রতিক্রিয়া হয় একে ধর্ম মনে করে উপেক্ষা। আর অন্য দিকে কারও কারও কাছে একটা আপ্তবাক্যমূলক রচনা বাধিয়ে রাখার মত বাস্তব জীবনে যা কোন প্রয়োজন মেটায় না, প্রভাবও রাখে না। যেন তা, মেট্রিক পরীক্ষার সিলেবাসে লুতফর রহমানের নৈতিকতা উপদেশমূলক পাঠ্য; পরীক্ষার পাশে যা কাজে লাগে দুনিয়াদারি জীবনে নয়।
তো আমার প্রতিক্রিয়ায় বাননাকে গালাগালি নয়, এই পোষ্টে আমি জাহিলিয়াতের প্রসঙ্গে ধরে ইসলামের সাথে এনগেজমেন্টের কোন রাস্তা বের করতে পারি কী না - এরই একটা চেষ্টা হিসাবে নিয়েছি।
বাননা জাহিলিয়াত মানে অজ্ঞানতা একটা যুগ বলে বুঝেছেন বলে মনে হোল না। অজ্ঞানতার বিরুদ্ধে জ্ঞানের কোন কথাবার্তার জায়গায় দাঁড়িয়ে আপনি এই মূল্যায়ন করেছেন এমন স্বাক্ষর আপনার লেখায় পেলাম না। যা দেখলাম তা হলো কিছু আপ্তবাক্য, তাও আবার বহুল ব্যবহারে জীর্ণ পুরানো ও অকেজোতো বটেই। সত্তর দশক থেকে দেখছি কিছু কমিউনিষ্টের মত সেই একই বয়ান - এই দীর্ঘ পার হওয়া সময়ে বাংলাদেশের, দুনিয়ার সমস্যা একই রকম নাই, আপনার নিজের জীবনযাপন অভিজ্ঞতা দিয়েই যদি দেখেন তাও আর একই রকম নাই। কমপক্ষে এটাকে সৎভাবে অনুভব করতে শিখুন। এরপর এটার বাস্তব মূল্যায়ন করার ক্ষমতা অর্জনের প্রয়োজনে উপযুক্ত জ্ঞানের সন্ধান করুন। দুনিয়াদারির যে জীবন আপনি যাপন করছেন এটা বাস্তব, আপ্তবাক্য নয়। ফলে ইসলামকে আপ্তবাক্যে ভাবে না নিয়ে জ্ঞান হিসাবে নিতে পারেন কী না চেষ্টা করুন। জাহিলিয়াত যদি বাস্তবতা হ্য় তবে আজ আমাদের দরকার জ্ঞানের; নবী মুহাম্মদ মোস্তফা তার কিছু আমাদের দিয়ে যেতে পেরেছিলেন। আজকের প্রয়োজন ওটার সঠিক উপলব্দিসহ আরও অনেক কিছু।
আপনি বলেছেন, "জাহিলিয়াত দুর করার জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ৭ম শতাব্দীর শুরুতে মুহাম্মাদুর রাসুলল্লাহ কে নবুয়াত দেন"। আজকের দিনে সমস্যা হচ্ছে আপনি যদি জাহিলিয়াত মানে অজ্ঞানতা দেখে থাকেন তবুও জাহিলিয়াত দূর করতে আমাদের আর একটা নবী পাবার কোন সম্ভবনা নাই, আপনি নিশ্চয় একথা মানবেন। তাহলে এখন উপায় কী? আশরাফুল মখলুকাত মানুষের নিজেই জ্ঞানের সন্ধানে বের হওয়া ছাড়া আর পথ কই? একাজে সর্বশেষ নবীসহ আরও নবীদের মাধ্যমে ইতোমধ্যেই যে জ্ঞান আমাদের সংগ্রহে এসেছে তা পাথেয় করাসহ জ্ঞানের সন্ধানে আরও অ-নে-ক পথ আমাদের পাড়ি দিতে হবে বলাই বাহুল্য। আর একাজে কূপমন্ডুকতা কোন স্হান তো নাইই বরং, আরও বড় বড় চোখ মেলে চারিদিকে সবকোণে তাকাতে হবে চাতক পাখির মত জ্ঞানের সন্ধানে। সুদীর্ঘ এই পথ আবার ইসলামের ঝান্ডা তুলে পাড়ি দিতে চেয়ে সংকীর্ণ করা যাবে না এটাও বলা বাহুল্য এখনই বুঝা যায়। নবী মুহাম্মদ মোস্তফার উম্মা, মানুষের উম্মা গড়ার শিক্ষা ও কর্তব্য এখনও যদি ভুলে না গিয়ে থাকি তবে একাজ ইসলামকে ডাকনাম বানিয়ে ঝান্ডা তুললে বিভক্তি বাড়বে বৈ কমবে না, দুনিয়ার আশরাফুল মখলুকাত মানুষের সবাইকে একত্র করা যাবে না। মানুষের উম্মা কায়েমের লক্ষ্য হাসিল হবে না। তবে, জ্ঞান হিসাবে ইসলাম কোরান শরিফ আকারে পকেটে বা মগজে চিন্তায় আরও অনেক কিছুর সাথে জ্ঞানের প্রেরণা হিসাবে থেকে যাবে অনুমান করি।
আইয়ামে জাহেলিয়াতের অর্থ মানে অজ্ঞানতা একটা যুগ বলে একে যদি বুঝি তবে কোন আপ্তবাক্যে ধর্মতাত্ত্বিক ব্যাখ্যায় একে বেঁধে রাখার সুযোগ নাই।