somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সশস্ত্র বাহিনীবিহীন দেশের নিরাপত্তা : হাইতি

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০১০ দুপুর ১:৩২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিভিন্ন দেশের সমরশক্তি নিয়ে আমার পুরনো লেখা পবেন নিচের লিঙ্কগুলেতে

View this link View this link Click This Link Click This Link

ইরাক, ইরান, আফগানিস্তান, হাইতিসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোতে মার্কিন সরকার পরিচালিত ও প্রযোজিত একটি নাটক প্রচারিত হচ্ছে যার নাম ‘গণতন্ত্র’। শুধু একেক দেশে পাত্রপাত্রীর পোশাক ও মঞ্চ সজ্জার স্বাতন্ত্র্যে নাটকের পুনরাবৃত্তি সহজে শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না। কিন্তু চিত্রনাট্যটি খেয়াল করলে একটি সহজ-সরল সমীকরণ পাওয়া যাবে। প্রথমে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক তথাকথিত জনদরদী সংস্থাগুলো একটি দেশকে জানাবে যে উন্নয়ন দর্শনে তার দেশ চলছে সেটি তার জন্য অনুকূল নয়। সুতরাং তার কাছে যে স্বপ্নে পাওয়া অব্যর্থ ওষুধ আছে সেটি প্রয়োগের প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। ওষুধটি কেনাও খুব সহজ। ডাক্তারের কাছ থেকে আপাতত টাকা ধার নিয়ে সুস্থ হয়ে খেটে খুটে টাকাটা শোধ করে দিলেই হয়। তবে শর্ত শুধু একটি- পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার জন্য ডাক্তার দায়ী নয় এবং সুস্থ হতে চাইলে আরো ডোজ চালিয়ে যেতে হবে। অন্যথায় প্রতিবাদকারীর কপালে একটি পদবি জুটবে। যেমন ধরা যাক- স্বৈরশাসক, মৌলবাদী কিংবা দানব। কোনোভাবেই যদি তাকে এসব খেতাব না দেয়া যায়, তখন তার দেশে তার প্রশ্রয়ে কিংবা অমনোযোগে বিশ্বধ্বংসী তৎপরতা চলবে। এ সময় ডাক্তারের সমর্থনে সেদেশের ভেতর থেকেই এগিয়ে আসবে ‘সুশীল সমাজ’ বা ‘বুদ্ধিজীবী’ নামের মোড়কে কিছু চরিত্র। তাদের সঙ্গে থাকবে সরকারবিরোধী কিছু দল। শেষে সবাই মিলেমিশে দানবের ঘাড় মটকে তাকে হত্যা করার মাধ্যমে নাটকের যবনিকাপাত টানবে। হাইতিতে এই নাটকের পুনঃপ্রচার বলতে গেলে চলছে ঊনবিংশ শতক ধরে।

মার্কিন সরকার কখনোই চায়নি হাইতি স্বাধীন হোক
মার্কিন সরকার ফরাসি উপনিবেশের পতনের পর ১৮০৪ সাল থেকে কখনোই চায়নি হাইতি স্বাধীন হোক। গত শতক জুড়ে হাইতিকে সে অবমাননাকর মর্যাদা দিয়ে চলেছে। ১৯১৫ থেকে ১৯৩৫ সাল পর্যন্ত মার্কিন বাহিনী সরাসরি হাইতি দখল করে রাখে। এর মধ্য দিয়ে চার্লসেনের কাকোশ বিদ্রোহ (১৯১৯) দমন করে। ১৯৫৭ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার সেবাদাস একনায়ক দুভালিয়ারকে শর্তহীন সমর্থন যুগিয়ে যায়। এই সময়ে হাইতি তার রাজনীতি ও অর্থনীতিতে স্বকীয়তা হারিয়ে দারিদ্যপীড়িত ও দুর্দশাগ্রস্ত দেশে পরিণত হয়।
হাইতি একসময়ে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ ছিল। ছিল বিপুল বনজ সম্পদ। দুভালিয়ারের ৩০ বছরের শাসনামলে হাইতির কৃষিখাত ধ্বংস করা হয়। এ সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে খাদ্যসশ্য আমদানি উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। বিলুপ্ত হয় হাইতির কৃষক ও ব্যবসায়ীদের স্বাধীন সত্তা। ভূমিহীন ও পেশাচ্যুত হয়ে তারা পাড়ি জমায় শহরে। ঘনবসতিপূর্ণ বস্তিতে উদ্বাস্তু ও বেকার জীবন বেছে নিতে হয়। রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের লোকসংখ্যা হয় দেশটির মোট জনসংখ্যার প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। দুর্বল ভিত ও কাঠামোর ওপর নির্মিত বাসগৃহে বসবাসকারী এসব দরিদ্রই গত ১২ জানুয়ারির ভূমিকম্পের শিকার হয়েছে বেশি।

পাহাড় কেটে পুরো হাইতির ভূ-পরিবেশের পরিবর্তন ঘটানো হচ্ছে
হাইতির ২৩৯ বছরের ইতিহাসে ভূমিকম্পের কোনো ঘটনা নেই। তারা জানে না ভূমিকম্প হলে কীভাবে ঘরের বাইরে আশ্রয় নিতে হয়। এ জন্যেই ভূমিকম্পের সময় দৌঁড়ে ঘরের ভেতরে আশ্রয় নিতে গিয়ে মারা পড়েছে বেশির ভাগ মানুষ। একদিকে বন কেটে পাহাড় ন্যাড়া করা এবং অন্যদিকে খনিজ সম্পদ আহরণে পাহাড় কেটে পুরো হাইতির ভূ-পরিবেশেরই পরিবর্তন ঘটানো হচ্ছে। কৃষি ভূমি থেকে উচ্ছেদ হওয়া শহরের বস্তিবাসী পেশাচ্যুত কৃষকদের নিয়ে ধর্মযাজক এরিস্টিড ‘লাভালাস’ আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটিয়েছিলেন এসব বস্তি থেকেই। লাভালাস আসলে অনেকটা নয়া কৃষি আন্দোলনের মতোই। উদ্দেশ্য ছিল কৃষকদের মুক্ত স্বাধীন করে হাইতিকে পুনর্বার সবুজ করা। এরিস্টিড এই আন্দোলনের ফসল হিসেবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন এবং এরই কাফফারা হিসেবে দু’বার মতাচ্যুত হন মার্কিন মদদে। একবার তিনি মতাচ্যুত হন ১৯৯১ সালে এবং দ্বিতীয়বার ২০০৪ সালে। প্রথমবার সিনিয়র বুশ এবং দ্বিতীয়বার জুনিয়র বুশের আমলে। ১৯৯৪ সালে এরিস্টিডকে পুনরায় মতায় বসাতে বাধ্য হয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট বিল কিনটন। বাধ্য হয়েছিলেন কংগ্রেসের অশ্বেতাঙ্গ ককাসের চাপে। তবে সঙ্গে দিয়েছিলেন মার্কিন সেনাবাহিনী। সেই সঙ্গে এরিস্টিকে তার প্রিয় লাভালাস আন্দোলন বাদ দিয়ে নয়া উদারবাদ এজেন্ডা চালুর শর্ত দিতে হয়। হাইতিবাসী এর নাম দেন ‘মৃত্যুর পরিকল্পনা’। কিন্তু তারপরও জুনিয়র বুশের আমলে ‘রেজিম চেঞ্জের’ তত্ত্বে তারাই তাকে মতাচ্যুত ও অপহরণ করে। এরিস্টিড এখন দণি আফ্রিকায় ফেরারি জীবনযাপন করছেন।

হাইতির ভূ-কৌশলগত অবস্থান যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ
কৃষি ছাড়াও হাইতি খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ এক দেশ। এর রয়েছে তেল, গ্যাস, সোনা, ইরিডিয়াম, ইউরেনিয়াম, তামা, লোহার বিশাল মজুদ। এর বা
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই এপ্রিল, ২০১০ রাত ১১:৫০
৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিনেতা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৫



বলতে, আমি নাকি পাক্কা অভিনেতা ,
অভিনয়ে সেরা,খুব ভালো করবো অভিনয় করলে।
আমিও বলতাম, যেদিন হবো সেদিন তুমি দেখবে তো ?
এক গাল হেসে দিয়ে বলতে, সে সময় হলে দেখা যাবে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

তাবলীগ এর ভয়ে ফরজ নামাজ পড়ে দৌড় দিয়েছেন কখনো?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:২৬


আমাদের দেশের অনেক মসজিদে তাবলীগ এর ভাইরা দ্বীন ইসলামের দাওয়াত দিয়ে থাকেন। তাবলীগ এর সাদামাটাভাবে জীবনযাপন খারাপ কিছু মনে হয়না। জামাত শেষ হলে তাদের একজন দাঁড়িয়ে বলেন - °নামাজের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×