খেক শিয়ালের গল্প শুনছেন? আঙ্গুর ফলের টকের টা? আঙ্গুর ফল টক সবাই জানে। টক শিয়াল খায় না। কিন্তু সেই ব্যর্থতা কেন শিয়ালের উপর পড়বে । দোষটা আঙ্গুরের।
আমি জানি, প্রতিটা পুরুষই ভেতর থেকে কাঙ্গাল। হাত পেতেই আছে, কিন্তু হাত পেতে যাদের চাইছে, তারা কেন জানবে । জানলেই বা কী লাভ হবে? সেই তো অপেক্ষাতেই রাখবে। সুতরাং ওদের জানতেই দেব না । কাজল কালো চোখ যে আমার সর্বনাশ, শাড়ির ভাজে যে আমি ফেসে গেছি বলব কেন? ঠোঁট ফেটে বলব না, আপনাকে কোথায় যেন দেখেছি। এসব ছ্যাঁচড়ামি আমার নাই। Be a man. আমি সোজা গিয়ে বলব- কপালের টিপ, কপলের তিল অলিক সুন্দর্য? আমি ফিরে না তাকালেই ব্যার্থ ওসব গয়না গুলো। Attitude, এতটা Attitude রাখতে হবে, মেয়েরা যেচে এসে বলবে তোর মধ্যে এত কীসের Attitude।
সেদিন রুমমেট বলতেছিলো, ভাই, আমরা কী সিঙ্গেলই থাকবো? আমি রিতিমত দেখতে পেলাম ছেলেটার চোখে পানি, টলমল করছে। আমি অবাক, আমার মধ্যে ওসব নেকুপুশু নাই। কী হবে রিলেশন করে? প্রেম করে আজ পর্যন্ত কেউ সুখি হতে পেরেছে ? জানেই আগুন, তারপরও ঝাপ দেবে। কীসের আশায়? হ্যা, একাকী সময়ে সঙ্গী পায়। প্রিয় মানুষের উপস্থিতি আনন্দ দেয় । তাতে কী? আমার ওত ঠেকা নাই । আমার ও চারের কাপে নিরবতা আছে, মুঠোয় বন্দি নিঃসঙ্গতা আছে। কারো মুখাপেক্ষি নই। রান্নাবান্না শিখে নিচ্ছি, ওসব নরম হাতের গরম খাবারের সখ আমার নাই। মারজুক রাসেল বলেছে "যার কেউ নাই তার হাত আছে।" একটা কবিতা বলি, "মুঠো কে মুক্ত করো ঝাকি দাও নিজের হাত। আমার যা লোহা গলে যাক তুমিই প্রেমিকা তুমিই ভোগ ও কিশোর বয়সের তালু জিন্দাবাদ।" না, কবিতাটা আমি লিখিনি, মারজুক রাসেলও লেখেনি। মারজুক রাসেল স্বার্থপর, যেখানে খাওয়া দাওয়ার চান্স নেই সেখানে থেকে ছেড়ে চলে যায়। তারপর এটিটিউড নিয়ে বলে আমি অনেক কিছু ছাইড়া আসা লোক। আরে ভাই ছেড়ে তোরে গেছে তুই পরে থেকে কী করবি, চলে তো আসতেই হবে। মারজুক রাসেল শক্ত পুরুষ নয়, শক্ত পুরুষ সেই যে ধোকায় পরে না। কবিতাটা পেয়েছি "Oh henry" মুভি থেকে, কে লিখেছে জানি না।
নারীরা সুন্দরী । অবহেলিত বাদীর পক্ষ নেব না কেন? কিন্তু সুন্দর্য কতটা ভয়ংকর হয়ে ওঠে একটা উদাহরণ দেই। আমার ফ্রেন্ডের খালাতো ভাই। এক বছর রিলেশনের পর বিয়ে । বিয়েরও এক বছর পেরিয়ে যায়। বউয়ের প্রেমে ছেলেটা এতটাই মগ্নছিল যে বাড়ি, ব্যংকে টাকা সব বউয়ের নামে। দুই বছর পর মেয়েটার এক্স ফিরলো। ছেলেটার কূল কিনারা সবি গেল, শুনেছি ডমেস্টিক ভায়োল্যন্সের কেসও করেছে। বেচারা এখন যাবে কোথায়? ছোটবেলায় নানি গল্প শোনাত। যত রাক্ষুসি ডাইনি আছে তারা নাকি সুন্দরী মেয়েদের রুপ ধারণ করে পৃথিবীতে আসে। তারপর থেকে সুন্দরী মেয়ে দেখলেই আমার ভয় লাগে। বুকের ভেতর হৃদপিণ্ড কাপতে থাকে।
মানছি, মেয়েদের প্রতি সহিংসতা হচ্ছে। কিন্তু পড়ে থাকা খবর গুলো আমরা দেখছি কি? সেদিন একটা নিউজে দেখলাম, পরকীয়া প্রেমে স্ত্রি পালিয়ে যাওয়ায় হাজবেন্ড কেস করে। সেক্ষেত্রে জেলে যেতে হয়েছে প্রেমিক কে, স্ত্রি ফিরে গেছে স্বামীর ঘরে। ঘটনা যদি উল্টো হত, সেক্ষেত্রে স্বামীকেই জেলে যেত হত।
সুবিধার সুযোগ নেওয়া অপরাধ । পুরুষ শুধু শুধু বদনাম হচ্ছে। পুরুষেরা এতটাই সভ্য যে কেবল নারীর শরিরের যে অংশ ঢাকা থাকে পুরুষ সেই অংশের দিকেই তাকিয়ে থাকে । দেশে নারী নির্যাতন দমন আইন আছে, শিশু নির্যাতন দমন আইন আছে, কিন্তু পুরুষ? All mens are dog, আরে পশু নির্যাতন দমন আইনও আছে। ভালো করে লক্ষ্য করে দেখবেন- বাসে লেখা থাকে নারী ও প্রতিবন্ধিদের জন্য সংরক্ষিত। তসলিমা নাসরিন বলেছে- "যে কাজে পুরুষের একটা হাত লাগে, নারীদের সে কাজে এক আঙ্গুলই যথেষ্ট।" আমিও সেটাই বলি, নারিদের যেখানে এক আঙ্গুলেই হয়ে যায়, পুরুষের সেখানে আস্ত একটা হাত লাগে। এ থেকেই বোঝা যায় কার স্ট্যামিনা কত বেশী।
পুরুষ যে সব কাজে বদনাম তারাও সেই অধিকার গুলোই চাচ্ছে, পুরুষ বুকের বোতাম খুলে হাটে, পুরুষ প্রকাশ্যে ধুমপান করে, চারটা বিয়ে করে তারাও করবে। অথোচো দাবী গুলো হওয়ার কথা ছিলো অন্য রকম। দাবী গুলো হয়ার কথা ছিলো পুরুষও চারটা বিয়ে করতে পারবে না। প্রকাশ্যে ধুমপান করা সাস্তি যোগ্য অপরাধ। পুরুষ ও বুকের বোতাম খুলে হাটতে পারবে না। নগ্নতাই যদি সভ্যতা হত তবে আদিম মানুষ যারা গুহায় থাকত তারাই সভ্য ছিলো। কুকুর, বিড়াল গুলোই সভ্য। আপনি কুকুর বিড়াল না আপনি মানুষ। খারাপ মানুষ, কিন্তু মানুষ। মানুষ খারাপ হয়ে গেলে ভয়ংকর পুশুর থেকেও ভয়াবহ হয়ে যায়। কাজী নজরুল ইসলামের একটা কবিতার কিছু অংশ দিয়ে শেষ করছি।
পূজারিণী
কাজী নজরুল ইসলাম
প্রাণ নিয়া এ কি নিদার”ণ খেলা খেলে এরা হায়!
রক্ত-ঝরা রাঙা বুক দ’লে অলক্তক পরে এরা পায়!
এর দেবী, এরা লোভী, এরা চাহে সর্বজন-প্রীতি!
ইহাদের তরে নহে প্রেমিকের পূর্ণ পূজা, পূজারীর পূর্ণ সমর্পণ,
পূজা হেরি’ ইহাদের ভীর” বুকে তাই জাগে এত সত্য-ভীতি।
নারী নাহি হ’তে চায় শুধু একা কারো,
এরা দেবী, এরা লোভী, যত পূজা পায় এরা চায় তত আরো!
ইহাদের অতিলোভী মন
একজনে তৃপ্ত নয়, এক পেয়ে সুখী নয়,
যাচে বহু জন।..
আমি আসলে বুঝি না, আমরা কেন নারীবাদী-পুরুষবাদীর গ্যাঁড়াকলে পড়ছি। আমরা কেন মানুশবাদী হতে পারছি না?
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ৮:৪৪