somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিষিদ্ধ প্রেমের গল্প (A bed of roses)

১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পর্ব-৩

লিলিথের কী যে হয়েছে! আজকাল সে একা একা থাকে। ঘরেই থাকে, একা একা হাটে। কোন রঙ তামাশায় থাকে না। দলের সাথে টাকা তুলতে বেরহয় ঠিকি কিন্তু দলের সঙ্গ সেটুকুই। এরপরই সে একা। যেন কোন এক নির্জন পাথারে পড়ে আছে, কেউ নেই সেখানে। চারিদিকে ধূ ধূ প্রান্তর। শুধু একটা মুখ মনেপড়ে, যেনো সে কত আপন, কত চেনা। যেনো কতকাল ধরে তাকে দেখে না। অথচো সেও রয়েছে কোন অজানায়।

পরদিন দুপুরে আযাযিল যখন খেতে বসে, মেসিয়ার এক বাটি মাংশ দেয়। আগেই মেসিয়ার কে বলা ছিলো। আযাযিল মেসিয়ারের দিকে তাকিয়ে বলে- ভর্তা দেন। মেসিয়ার মুখ তুলে লিলিথের দিকে তাকায়। আযাযিল মেসিয়ারের দৃষ্টি অনুসরণ করে দেখে হোটেলের বাহিরে লিলিথ দাঁড়িয়ে আছে, ওড়ানা দিয়ে অর্ধেক মুখ ঢাকা। দাঁত দিয়ে চেপে ধরে আছে। হোটেলটা বেশ বড় নয়, মনেহয় মুদির দোকান দেবার জন্য করেছিলো। সেটা হোটেল বানিয়েছে। আযাযিল বসেছে মহাজনের ক্যাশের ঠিক পাশে। আযযিল সেদিক থেকে মুখ ফিরিয়ে প্লেটের ভাত নাড়তে নাড়তে বললো- ভিক্ষা খাব না। এমন নয় যে কখনো খাইনি কিন্তু সে সময় এখনো আসেনি।

লিলিথ কিছুই বলে না৷ শুধু তাকিয়ে তাকিয়ে দেখে। মেসিয়ার মাংস নিয়ে ফিরে যায়।

ঘটনাটা রোজ চলতে লাগলো। যেন এটাই নিয়ম, পৃথিবীর ঘূর্ণনয়নের মত। যদিও দুজনেই জানে এই নিয়ম বেশীদিন চলবে না। কোথাও তো বাধা পড়বেই। তবুও সে নিয়ে কেউ চিন্তিত না। লিলিথ কতবার নিজিকে বুঝিয়েছে আর যাবে না, কিন্তু না গিয়ে থাকতে পারে না। দুপুর হলেই তার পা যেন বিদ্রোহ করে ওঠে, শাসনে রাখা মনটা বিগড়ে যায়, ইচ্ছার বিরুদ্ধেই অটোমেটিক এখানে চলে আসে। আযাযিল তেমনি নিঠুরের মত প্রতিদিন মাংসের বাটি ফিরিয়ে দেয়।

একদিন নিয়মের ব্যাতিক্রম হলো। আযাযিল আর মাংসের বাটি ফিরিয়ে দিলো না। লিলিথের বুকে জুড়ে একটা প্রশান্তি নেমে আসলো। কেন
আসলো? লিলিথ জানে না। প্রতিদিন যে কষ্ট হত, কেন হত? সে কারণ ও লিলিথ জানে না।

খাবার খেয়ে আযাযিল মাংসের দাম সহ মিটিয়ে দিয়ে চলে গেল। লিলিথের কষ্ট হল। কেন হল? জানে না। এই ভেবে নিজেকে সান্ত্বনা দিলো রাগ করে হলেও সে তো খেয়েছে। পর মুহুর্তেই মনেহল এর জন্য ওকে যদি আবার ক'দিন না খেয়ে থাকতে হয়। আবার মনেহল টাকা হয়তো কোথাও থেকে পেয়েছে, নইলে ফিরিয়ে দিত, খেত না। এসব কত সম্ভাবনা ভাবতে ভাবতে কখন সে বাড়ি পৌছেছে, সে নিজেও টের পায়নি। দরজায় দাঁড়িয়ে সরদারনি ডাকলো- লিলিথ?
লিলিথ থমকে দাঁড়ালো। সরদারনি লিলিথের কাছে এসে বললো- তোর কী হয়েছে বলতো? কোথায় যাস? কারো সাথে মিশিস না।

লিলিথ মুখে হালকা হাসির রেখা টেনে বললো- কোথায় মা, আমি তো সবার সাথেই মিশি।

যদিও লিলিথের মুখে হাসি ছিলো কিন্তু সরদারনির কাছে কেমন যেন শোনালো। সে লিলিথের আরও কাছে আসলো। লিলিথ মুখ নত করলো। সরদারনি লিলিথের থুতনি ধরে মুখটা উপর দিকে তুলে বললো- সত্যি করে বলতো? তোর কী হয়েছে? সেই ছোরাটা বুঝি আমার মেয়েকে জাদু করেছে?

লিলিথ হাসিমুখে বললো- আমার কিছু হয়নি মা।
সরদারনি বুঝলো লিলিথের কিছু একটা হয়েছে? খুব গভীর কোন অসুক করেছে। মুখটা কেমন ফ্যাকাশে হয়ে থাকে সারাদিন। মানুষ সবসময় ভুল বোঝে। খুকি এসে বললো- তোমার মেয়ে প্রেমে পড়েছে মা।
সরদারনি হেসে লিলিথ কে বললো- তাই নাকিরে মা? লিলিথ লজ্জায় মুখ নামিয়ে নিলো। খুকি ঢং করে বললো- কিরে সখি এখন বল। চুপ করে আছিস কেন?
লিলিথ তবুও চুপ করেই রইলো। সরদারনি কী বুঝলো কে জানে! মানুষ সব সময় ভুল বোঝে। সরদারনি বললো- ভুল করেছিস মা। কষ্ট পাবি।
লিলিথ সরদারনির দিকে মুখ তুলে হেসে বললো- সেই কষ্টই আমার সুখ মা।

সরদারনি চুপ করে দাঁড়িয়ে রইল। লিলিথ তাদের পাশ কাটিয়ে নিজের ঘরের দিকে চলে গেল। খুকি বললো- বলেছিলাম না মা! তোমার এই মেয়ের জন্য আমাদের খুব দু:খ হবে। সখি কেন এমন হল মা?
সরদারনি নিরউত্তর দাঁড়িয়েই রইলো।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:৩১
১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুয়াশা ঝরা শীতের সকাল। ছবি ব্লগ।

লিখেছেন আমি পরাজিত যোদ্ধা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ৮:৩২

সকাল সকাল ঘুম থেকে ঊঠে যাই আমি, বয়স বাড়ছে, ইদানিং ১৫/২০ মিনিট বেশি ঘুমাইলেও কেমন জানি মাথা ভার হয়ে থাকে। যাই হোক, আশা করি সবাই ভালো আছেন। সকাল বেলা ঘুম... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিরিং কিরিং সাইকেল চলে, ফেরিওয়ালা যায়।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:৩৮


ফেসবুকে যারা একটিভ শিরোনামটি তাদের কাছে খুবই কমন ও পরিচিত। আমরা ফেসবুকে কদিন ধরে দেখছি একটা ভিডিও খুবই ভাইরাল। সে ভিডিওতে দেখা গেসে - একজন ট্রেইনার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যারিস্টার শাহাজান ওমরের গত কয়েক দিনের কিছু কথা!

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:৩০


গত কয়েকদিন বিএনপি'র সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমরকে নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। এই বীর মুক্তিযোদ্ধা গত কয়েকদিনে বেশ চাঞ্চল্যকর কিছু কথা ও তথ্য দিয়েছেন, যেগুলি নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাবাকে মনে পড়ে...

লিখেছেন রেজা ঘটক, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১:৪৭

বাবা,

তুমি কী জানো, এখনো মহাকাশের সন্ধ্যাতারার মেলায়, তোমাকে আমি দিব্যি দেখতে পাই। আদমসুরাতের এলেবেলে নির্জন রাস্তায় তোমার পাকা চুল কেমন চিকচিক করে ওঠে। তোমার হাসিমাখা মুখ, হাসির সময়ে ছোট... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরিবি

লিখেছেন মৌন পাঠক, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ৯:২১


চিত্রঃ অন্তর্জাল

গরিবি বা ফকিন্নি ও সেল করা যায়,
উহারে এনক্যাশ করা যায়।

সেই এনক্যাশমেন্টটা গরিব নিজেও সেল করতে পারে, আবার তার গরিবানারে অন্য কেউও এনক্যাশ করতে পারে।

দেশের সিংহভাগ এতিমখানা মাদ্রাসা এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

×