অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড প্রদেশের সর্ব উত্তরে অবস্থিত কেপ ইয়র্ক পেনিনসুলা। অস্ট্রেলিয়ার মেইনল্যান্ড বা মূল ভূখন্ড এখানেই শেষ। এরপর সাগর। সাগরের অপর পাড়ে পাপুয়া নিউ গিনি। কিন্তু দুই দেশের মধ্যখানে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য ছোট ছোট দ্বীপ, এগুলোকে একত্রে বলা হয় টরেস স্ট্রেইট, যা অস্ট্রেলিয়ার মালিকানাধীন। এর একটি থার্সডে আইল্যান্ড। খুব বেশী বড় নয়, মাত্র ৩.৫ বর্গকিলোমিটার। আকারে ছোট হলেও থার্সডে আইল্যান্ডের গুরুত্ব একটু বেশী। কারণ এটি সমগ্র টরেস স্ট্রেইটের প্রশাসনিক মূলকেন্দ্র। এখানে রয়েছে সরকারী অফিস, পোস্ট অফিস, হাসপাতাল, ব্যাংক, শপিংমল, হোটেল, পাব, চার্চ সহ আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। গুরুত্বপূর্ন কারণ হচ্ছে, এই সকল প্রতিষ্ঠান টরেস স্ট্রেইট দ্বীপপু্ঞ্জের আর কোথাও নেই।
দ্বীপের লোকসংখ্যা প্রায় ৩৫০০। বেশীরভাগই স্থানীয়। তাদের আইল্যান্ডার বলা হয়। কালো কুচকুচে চামড়া, কোকড়ানো চুল, থ্যাবড়া নাক তাদের। এছাড়া চাকরির সুবাদে এখানে অনেকে থাকেন। অনেক পর্যটক এখানে বেড়াতে আসেন। মৎস শিকারীদের লোভনীয় স্থান এই দ্বীপ। প্রচুর সামুদ্রিক মাছের আনাগোনা এই জায়গায়। সাগরে জাহাজ নিয়ে অনেকে মাছ ধরতে যান। মাছ ধরা এই দ্বীপের অধিবাসীদের প্রধান বিনোদন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত হয়ে আছে থার্সডে দ্বীপে। এখানে রয়েছে গ্রিন হিল ফোর্ট, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে কৌশলগত ভূমিকা পালন করেছিল। দ্বীপের সর্বোচ্চ চূড়ায় এই দূর্গ অবস্থিত। এখান থেকে সমগ্র দ্বীপ, আশেপাশের হর্ন আইল্যান্ড, ফ্রাইডে আইল্যান্ড, ওয়েডনেসডে আইল্যান্ড, প্রিন্স অব ওয়েল্স আইল্যান্ড, এমনকি অস্ট্রেলিয়ার মেইনল্যান্ডও দেখা যায়। দূর্গের সর্বোচ্চ শিখরে স্থাপিত চারটি কামান সেসময় আশেপাশে অগ্রসরমান অনেক জাপানী যুদ্ধজাহাজকে ডুবিয়ে দিয়েছিল। প্রচুর জাপানী সৈন্য প্রাণ হারিয়েছিল তখন। সেসব নিহত জাপানী সৈন্যদের কবর রয়েছে থার্সডে আইল্যান্ডে।
থার্সডে আইল্যান্ডে যেতে হলে প্রথমে কেয়ার্নস থেকে বিমানযোগে হর্ন আইল্যান্ডে যেতে হবে। সেখান থেকে ফেরীতে ২০ মিনিট লাগবে থার্সডে আইল্যান্ড যেতে। ব্রিসবেন, সিডনি, মেলবোর্ন বা অন্যকোন শহর থেকে আসতে হলেও প্রথমে কেয়ার্নস আসতে হবে। কোয়ান্টাস এয়ারলাইন্সের দুটো ফ্লাইট প্রতিদিন কেয়ার্নস থেকে হর্ন আইল্যান্ডে যাওয়া আসা করে।
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১২ রাত ১০:১৫