somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ফেসবুক বন্ধ প্রসঙ্গে

৩০ শে মে, ২০১০ দুপুর ১:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

গতকাল একটি সরকারী ঘোষনার মাধ্যমে ফেসবুক বন্ধ নিয়ে এই ব্লগে অনেকেই দেখলাম লিখেছেন। কিন্তু যে জিনিসটা আমার মাথায় ঢুকলনা সেটা হলো এইটা নিয়ে এত মাতামাতির কি আছে? তাই না লিখে আর পারলাম না।

বুঝলাম ফেসবুক খুব জনপ্রিয় একটা সাইট, কিন্তু কতটা কাজের সাইট সেটা দেখার বিষয়। কিন্তু কিছু লেখা পড়ে মনে হলো এই নিষেধাজ্ঞ্যার মাধ্যমে সরকার যেন মানুষের অক্সিজেন সাপ্লাই বন্ধ করে দিয়েছে। এত্ত এত্ত ব্লগ পড়লাম, এই পর্যন্ত মাত্র একজনকেই দেখলাম যার ফেসবুক বন্ধ হওয়ায় সত্যিকার অর্থে কোন ক্ষতি হয়েছে (একজন ফেসবুক এপ্লিকেশন ডেভেলপার)। বাকি যারা এটা নিয়ে বেশি নাচানাচি করছেন, কয়জন বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবেন ফেসবুক-এ আপনারা খুব প্রডাক্টিভ কিছু করেন? আমি বলছি না ফেসবুক একদম অপ্রয়োজনীয় একটা সাইট, এর উপকারী দিক অবশ্যই আছে, কিন্তু প্রশ্ন হলো বাংলাদেশে কয়জন তরুণ এটাকে সত্যিকার অর্থে কাজে লাগিয়েছেন আর কয়জন এটাকে একটা অহেতুক সময়ক্ষেপনের মাধ্যম (এবং আরো কিছু কাজে, সেগুলো না হয় না-ই বললাম) হিসেবে ব্যবহার করছেন?

কিছু তথাকথিত ডিজুস জেনারেশনের পোলাপানের ধারণা হয়েছে ফেসবুক হলো 'কুলনেস' আর ডিজিটাল লাইফস্টাইলের প্রতীক। এরা ফেসবুকে কাজের কাজ তো কিছু করে না বরং সারাদিন ফেসবুকে বসে ফাইজলামি ফাতরামি করে। আর এখন যখন ফেসবুক বন্ধ তখন তারা দেশ গেল দেশ গেল রব তুলেছে। এম্নিতে আপনি এদের দেখা পাবেন না, এরা ২৪/৭ ফেসবুকিং-এ ব্যস্ত, এখন ফেসবুক বন্ধ তাই আর কিছু করার না পেয়ে হাউকাউ করছে। অনেকে যুক্তি দিয়েছেন ফেসবুকের মাধ্যমে তারা তাদের পুরনো বন্ধুদের সাথে আবার মিলিত হতে পেরেছেন। আপনি আপনার পুরনো বন্ধুদের খুজে পেয়েছেন খুবই ভাল কথা, কিন্তু যদি তাদের খুজে পাওয়ার পরও এখনো ফেসবুকই তাদের সাথে আপনার যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হয়ে থাকে, আপনি তাদের ব্যাপারে কতটা কেয়ার করেন তা তো এতেই পরিস্কার হয়ে যায়। তাহলে তাদের খুজে পাওয়া আর না পাওয়ার মধ্যে তফাৎটা কোথায়, আর যদি তফাৎ না-ই থাকে তাহলে আপনার ফেসবুকের প্রয়োজনীয়তা-টাই বা কোথায়? আমার কাজের মাধ্যম কিছুটা আই.টি সম্পর্কিত তাই আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, আমার অনেক বন্ধু আছে যারা এখনো কম্পিঊটারের ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সমস্যা নিজে সমাধান করতে পারে না কিন্তু একেকজনের ফেসবুকের উপরে পি.এইচ.ডি আছে- আপনি কি এদের লাইফস্টাইলকে ডিজিটাল বলবেন নাকি অর্থহীন বলবেন?

না, আমি বাকস্বাধীনতার বিপক্ষে নই, আমি নই মতপ্রকাশের বিপক্ষে। আমিও বিশ্বাস করি একটা দেশের সরকার কখনো তার জনগণের তথ্য পাওয়ার অধিকারে হস্তক্ষেপ করতে পারে না- তা ধর্মীয় ইস্যুতে হোক অথবা রাজনীতিক ইস্যুতে। তাই আমিও সরকারের এই নিষেধাজ্ঞা সমর্থন করি না। আমার আপত্তি কিছু লোকের এই সামান্য ইস্যুতে মাত্রাতিরিক্ত নাচানাচিতে। প্রথমত পরিস্কারভাবেই বলা হয়েছে এই নিষেধাজ্ঞা সাময়িক এটা জানার পরও যারা চেচামেচি করছেন স্বাভাবিকভাবেই বোঝা যাচ্ছে তারা আসলে ফেসবুক-এডিক্ট, একজন সাধারণ ইউজার দুএকদিন ফেসবুক ব্যবহার করতে না পারলে এত ছটফট করবে না। আর এটা কি চিন্তা করে দেখেছেন যে সরকার এই নিষেধাজ্ঞাটা প্রকাশ্যে না দিয়ে গোপনেও ইন্টারনেট সেন্সরশিপ চালু করতে পারতো, সেটা কি ভালো হতো? এখন তো তবু একটা সাবধানবাণী পাওয়া গেল, যারা ফেসবুকের অপব্যবহার করছেন তারা নিজেকে শুধরানোর একটা সুযোগ পেয়েছেন। যদি হঠাৎ একদিন রাত ১২.৩০-এ আপনার বাসার দরজায় র‌্যাব এসে হাজির হতো, সেটা কি ভালো হতো?

আমি জানি আমার কথা অনেকেরই পছন্দ হবে না, না হতেই পারে, এটা সম্পূর্ণই আমার ব্যক্তিগত মতামত। আপনারও ব্যক্তিগত মতামত প্রকাশের অধিকার আছে, আমার সাথে একমত না হলে সেটা প্রকাশ করুন; কিন্তু দয়া করে সেটা যেন হয় যুক্তির মাধ্যমে। অনেকেরই দেখছি প্রবনতা আছে অহেতুক গালাগালি করার, আমার ধারণা খোজ করলে এদের সাথে ফেসবুকের অপব্যবহারকারীদের মানসিকতার কিছু সামঞ্জশ্য পাওয়া যেতে পারে।

সবশেষে কিছু প্রশ্ন- একটা দেশের ডিজিটাল হওয়া কি এতটাই সস্তা যে একটা সাইটের এক্সেসের উপরে নির্ভর করবে দেশ ডিজিটাল না এনালগ? ফেসবুক কি আপনাকে ডিজিটাল বানাবে? ইন্টারনেটে একটা সাইট তো অনেক সময় ডাউন-ও থাকে, এটা নিয়ে এত হইচই-এর আসলেই কোন দরকার আছে কি?
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মে, ২০১০ দুপুর ১:১২
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×