somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বিশ্বের ভয়ংকরতম নরপিশাচদের গল্প!! পর্ব-২

১৭ ই জুলাই, ২০১৩ রাত ১০:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

১ম পর্বের পরে ২য় পর্ব লেখার একটা ছোট্ট প্রয়াস নিলাম।। জানি না কতদূর ভালো লিখতে পারব।।

ওয়ার্নিং - বাচ্চারা ১০০ হাত তফাতে থাকো। তারপরও পুংটামি করে পড়ে রাতে ঘুমাতে না পারলে লেখক নোওস নাথিং!!! :|

১৯২৪ সালের জুলাই মাসে ফ্রান্সিস ম্যাকডোনেল (৮) খেলছিল তার বাসার সামনে। এসময় ফ্রান্সিসের মা এক বৃদ্ধকে দেখতে পান সেখানে। যে হেটে যাচ্ছিল পাশ দিয়ে আর কেমন করে যেন তাকাচ্ছিল ম্যাকডোনেলের দিকে। অনেকক্ষণ পর তাকে আবার দেখা যায় সেখানে বসে বসে ফ্রান্সিস আর তার বন্ধুদের খেলা দেখছিল সে। একটু পর সে ফ্রান্সিসকে নিজের কাছে ডাকে, এবং কোথায় যেন নিয়ে যায়।। এর পর ফ্রান্সিসকে যখন খুঁজে পাওয়া যায় তখন সে মৃত।। নির্যাতনের প্রচণ্ডতায় তার শরীর চেনার কোন উপায় তখন নেই।

১৯২৭ সালের ১১ ফেব্রুয়ারী , বিলি গ্রিফনি (৪) তার এপার্টমেন্টের বাইরে এক বন্ধুর সাথে খেলছিল। এরপর নিখোঁজ হয়ে যায় ২ বন্ধু।। পরে অপর বন্ধুকে পাওয়া যায় ছাদের উপর, কিন্তু বিলিকে আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যায়নি। তার বন্ধুকে সবাই জিজ্ঞেস করলে সে জানায় বিলিকে বুগিম্যান নিয়ে গেছে। স্বভাবতই কেউ তার কথায় পাত্তা দেয় নি। সবাই ভেবেছিল সে নদীতে পড়ে গেছে। কিন্তু তার মৃতদেহও কখনও খুঁজে পাওয়া যায় নি।

এডওয়ার্ড বাড , একজন ১৮ বছরের তরুন। একটা ভালো চাকরির আশায় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিল সে। একটা ভালো চাকরির দেখাও পেয়ে গেল। ১৯২৮ সালের ২৮ মে তার বাড়িতে আসল ফ্রাঙ্ক হাওয়ার্ড নামের ধুসর চুল আর বিশাল গোঁফ বিশিষ্ট নম্র ভদ্র এক লোক। সে জানালো ফারমিংডেলে তার ২০ একরের একটা ফার্ম আছে। সেখানে এডওয়ার্ডকে সাপ্তাহিক ১৫ ডলার বেতনে নিয়োগ দিতে চায়। স্বভাবতই এডওয়ার্ড রাজি হয়ে গেল।। জুনের ২ তারিখে
এডওয়ার্ডকে নিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সে সেদিন একটা চিঠি লিখে তার না আসার কথা জানায় এবং পরের দিন তাকে নিয়ে যাবে বলে জানিয়ে দেয়।। ফ্রাঙ্ক ৩ তারিখে এডওয়ার্ডকে নিতে আসে এবং সেদিনই দুপুরের খাবার খেতে বসে ফ্রাঙ্ক প্রথম এডওয়ার্ডের বোন গ্রেস বাড কে দেখে। তখন হঠাত করেই ফ্রাঙ্ক এডওয়ার্ডকে জানায় তার জরুরী একটা জন্মদিনের অনুষ্ঠানে যেতে হবে, সেখান থেকে ফিরে সে এডওয়ার্ডকে নিয়ে যাবে। ফ্রাঙ্ক গ্রেসকেও সেই অনুষ্ঠানে নিয়ে যাবার অনুমতির জন্য অনুরোধ করে এবং গ্রেসকে ঠিক রাত ৯ টায় পৌঁছে দেয়ার কথা দেয়। গ্রেসের মা ও অনুমতি দিয়ে দেন।
তখনও কেউ বুঝতে পারেনি যে এটাই ছিল তাদের শেষ গ্রেস দর্শন! পরের দিন এডওয়ার্ড থানায় মামলা করতে গিয়ে জানতে পারে ফ্রাঙ্ক হাওয়ার্ড নামে কোন ব্যাক্তির ফার্মই নেই ফারমিংডেলে।


গ্রেস হারিয়ে যাওয়ার প্রায় ৭ বছর পর, ১৯৩৪ সালের ১২ নভেম্বর গ্রেস এর মা একটি চিঠি পান । সে চিঠির কিছুটা অংশ এমন,

" যেদিন আমি আপনার বাড়িতে দুপুরের খাবার খাই, সেদিন গ্রেস আমার কোলে বসে এবং আমাকে চুমু খায়, ঠিক তখনই আমি তাকে খাওয়ার সিদ্ধান্ত নেই। তারপর আমি আপনাকে একটা অনুষ্ঠানের কথা বলি এবং গ্রেসকেও সাথে নিতে চাই। আপনিও রাজি হয়ে যান।.।.।.।.।.।.।.।.।"
"আমি তাকে ওয়েস্টচেষ্টার এর একটা খালি বাড়িতে নিয়ে যাই। সেখনে নিয়ে প্রথমে তাকে বাইরে রেখে আমি ঘরের ভেতরে যাই। তারপর নিজের সব কাপড়চোপড় খুলে ফেলি যাতে রক্ত না লাগে। তারপর জানলা দিয়ে তাকে ভিতরে ডাকি।। সে রুমের ভিতরে না ঢোকা পর্যন্ত ক্লসেট এর ভেতর লুকিয়ে থাকি। সে রুমের ভিতর ঢুকে যখন আমাকে নগ্ন অবস্থায় পায়, তখন সে কান্নাকাটি শুরু করে এবং দৌড়ে পালানর চেষ্টা করে। আমি তাকে ধরে ফেলি তখন সে জানায় সে আপনাকে সব বলে দিবে।.।.।.।.।.।.।.।.।"
"আমি তাকে নগ্ন করে ফেলি, তখন সে প্রচুর কামর আর আচড় কাটছিল। তখন তাকে মেরে ফেলি। এরপর তাকে টুকরোটুকরো করি যাতে নিজের ঘরে নিয়ে রান্না করে খেতে সহজ হয়। তার পিছনের দিকের মাংসের রোস্টটা অসাধারন ছিল। তার পুরো শরীর খেয়ে শেষ করতে আমার প্রায় ৯ দিন লাগে।"

এই চিঠির হাতের লেখার সাথে পুরোপুরি মিলে যায় ৭ বছর আগের চিঠির হাতের লেখা।। পুলিশের তদন্তে ধিরে ধিরে বের হয়ে আসতে থাকে এক ভয়ঙ্কর খুনির পরিচয়। অবশেষে নানা ঘটনা প্রবাহের মধ্য দিয়ে গোয়েন্দা কিং ১৯৩৪ সালের ১৩ ডিসেম্বর সেই খুনিকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।।

তাকে গ্রেপ্তারের পর তার শিকার বিলি গ্যাফনি এর মা তার সাথে জেলে দেখা করতে যান যাতে তার ছেলের ভাগ্যে কি জুটেছিল তা জানতে পারেন। তখন সেই খুনি যা জানায় তা অনেকটা এ রকম,

" আমি প্রথমে আমার বেল্টটাকে কেটে অর্ধেক করি, তারপর সেটাকে ৬ ফালি করি। সবগুলো ফালি একসাথে নিয়ে তার পিঠে মারতে থাকি যতখন না তার পা বেয়ে রক্ত বের হয়ে আসে। তারপর তার নাক এবং কান কেটে নেই, মুখ ২ কান পর্যন্ত কেটে দেই, চোখ তুলে ফেলি। তখন সে মারা যায়। তখন আমি তার পেটে ছুরি ঢুকিয়ে দেই এবং হা করে তার সব রক্ত খাই। তারপর আমি তাকে কেটে টুকরোটুকরো করতে শুরু করি।"
তারপর সে খাওয়ার বর্ণনা দিয়েছে এভাবে,
" প্রথমে তার পিছনের মাংস টুকরোটুকরো করে , সব মাংসের টুকরোকে বেসনে ডুবাই। তারপর তাদেরকে ওভেনে ১৫ মিনিট রাখি। তারপর হলুদ, মরিচ, আদা, পেয়াজ, শালগম, লবন প্রভৃতি নেই এবং একত্রে রান্না করা শুরু করি।তারপর ২ ঘণ্টা ধরে ধিরে ধিরে রান্না করি। ২ ঘণ্টার মধ্যে এটি থেকে সুন্দর ঘ্রান বেরতে শুরু করে বাদামি হয়ে আসে এবং আমার রান্নাও শেষ হয়। বিশ্বাস করুন এর চেয়ে ভালো খাবার আমি আর কোনদিন খাইনি।।"
এসময় সে আরও বহু খুনের কথা অকপটে স্বীকার করে।।



এই খুনির নাম আলবার্ট ফিশ, জন্ম ১৮৭০ সালে আমেরিকায়। ১৮৯৮ সালে সে বিয়ে করে এবং ৬ সন্তানের জন্ম দেয়।। সব কিছু ঠিকঠাক ভাবেই চলছিল হঠাত করে ১৯১৭ সালে তার স্ত্রী অন্য আর একজনের সাথে পালিয়ে গেল।এরপর থেকেই সে মুলত শুরু করে ভয়ংকর পথে হাটা। প্রথম দিকে ফিশ নিজেকে নিজে আঘাত করত যতক্ষণ না তার পা বেয়ে রক্ত গড়িয়ে মেঝেতে পড়ত।। তার আর একটা প্রিয় কাজ ছিল নিজের হাতের আঙ্গুলে ক্রমাগত সুচ ভরা। এরপর থেকেই মুলত সে শুরু করে একের পর এক খুন করা। তার মুল টার্গেট ছিল শিশুরা।।এসব শিশুদের হত্যা করা তাদের মাংস খেত সে।। এভাবে চলতে চলতেই একসময় ধরা পরে যায় সে।। তখন তার বিরুদ্ধে প্রায় ১০০ খুনের অভিযোগ পাওয়া যায়।

১৯৩৫ সালের ১১ মার্চ তার বিচার শুরু হয়, এবং তাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।। তাকে বহু মনোবিজ্ঞানী পরীক্ষা নিরীক্ষা করেন।তখন তার পেলভিসের ভিতর সুচ পাওয়া যায় যা তার ভাষ্যমতে সে যৌন তৃপ্তি পাওয়ার আশায় নিজেই ভরেছিল।। অবশেষে ১৯৩৬ সালের ১৬ জানুয়ারি এই ভয়ংকর খুনিকে সিংসিং কারাগারে ইলেকট্রিক চেয়ারে বসিয়ে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।।

তথ্যসূত্র- উইকিপিডিয়া
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে জুলাই, ২০১৩ দুপুর ১২:২২
২৮টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পুরোনো ধর্মের সমালোচনা বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেই নতুন ধর্মের জন্ম

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:১৫

ইসলামের নবী মুহাম্মদকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিথি সরকারকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে এক বছরের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে প্রবেশনে পাঠানোর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×