somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাষ্ট্র, প্রতিনিধিত্ত্ব ও শ্রেণী: দাদাভাই নওরোজি

১৭ ই মে, ২০১০ সন্ধ্যা ৬:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এই লেখার সূত্রপাত নিক দাসত্ব ওর পোষ্ট Click This Link এখানে আমার যোগ করা এক মন্তব্য থেকে। ওখানে বলেছিলাম, "যে কোন রাষ্ট্র গঠন (constitute) আকাঙ্খার মূল বিষয় প্রতিনিধিত্ত্ব: জনগোষ্ঠির সব অংশের প্রতিনিধিত্ত্ব নিশ্চিত করা"। ওখানে আরও বলেছিলাম, বাংলাদেশে "নতুন রাজনীতি, নতুন রাষ্ট্র কায়েম করতে গেলে কমপক্ষে অন্তত - কংগ্রেস, মুসলীম লীগের জন্ম, পাকিস্তান আন্দোলন, ৪৭ এর ভাগাভাগি, পাকিস্তান রাষ্ট্র ভেঙ্গে বাংলাদেশ ইত্যাদির একটা নিরাবেগ মুল্যায়ন, ইতিহাসের নতুন দৃষ্টিভঙ্গীর বয়ান জরুরী"।
দাসত্ব কে আমার পয়েন্টের সারকথাটা বুঝাতে পেরেছিলাম মনে হয়নি; বুঝা বা বুঝানো সহজও ছিল না। ভেবেছিলাম পরে কোথাও কখনও সবিস্তারে বলার সুযোগ নিতে হবে। কিন্তু পরবর্তীতে প্রথমে নিক স্তব্ধতা ও পরে নিক প্লাটো আমার পয়েন্টগুলোকে বিস্তারে দেখার আকাঙ্খা প্রকাশ করে বিস্তর প্রশ্ন করে বসে। ওদের প্ররোচনাকে ইতিবাচকভাবে নিয়ে এই লেখার উছিলা বানিয়েছি। লেখা শুরুর শানেনজুল এটাই।

শিরোনামে দাদাভাই নওরোজির নাম নিয়েছি: দাদাভাই নওরোজি কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠাতা। পপুলার লেভেলে জানা অর্থে অনেকে ভারতীয় ন্যাশনাল কংগ্রেস বা সংক্ষেপে কংগ্রেস বলতে মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর কথাই জানেন। দাদাভাই নওরোজি কংগ্রেসের প্রতিষ্ঠা করেন ১৮৮৫ সালে, তিনি ছিলেন সবচেয়ে প্রভাবশালী উদ্যোক্তা। গান্ধী, জিন্নাহসহ আরও অনেক বিখ্যাত রাজনৈতিক ফিগারের গুরু তিনি। বলা হয়ে থাকে, নওরোজির চিন্তা ও তৎপরতা কাজকর্ম পরবর্তী ত্রিশ বছর অর্থনৈতিক অর্থে ভারতীয় জাতীয়তাবাদ চিন্তা তৈরি হতে ভুমিকা রেখেছিল। গান্ধীর ভারতীয় কংগ্রেসে প্রবেশ ১৯১৫ সালে সাউথ আফ্রিকা থেকে ফেরার পর।
শিরোনাম নিয়ে আপাতত এতটুকু পাঠকের কৌতুহল নিবারণ করলাম।

আমার অনেক দিনের ইচ্ছা অবিভক্ত ভারত অর্থাৎ বৃটিশ-ভারতের জমানায় আমাদের স্ব-রাজনৈতিক আকাঙ্খার স্ফুরণের কালে এক আদি-পাপের কথা সবার সামনে আনি। আদি-পাপ মানে আদম-হাওয়ার গন্ধম ফল খাওয়া ও বেহস্তচ্যুতির ফল/কুফল ভোগ করা। অথবা, এক আদম-ঈভ থেকে যদি আমাদের সকলের সৃষ্টি হয়ে থাকে তবে নিশ্চয় আমরা কোন এককালে কখনও একই সহোদরেরা সন্তান উৎপাদনে মগ্ন হয়েছিলাম ফলে সেই থেকে এক আদি-পাপ ও সেই পাপের ভাগিদারী আমাদের সকলের আছে। এটা সেই ধরণের এক রাজনৈতিক আদি-পাপের কথা। যার আগুনে আমরা তিনটা দেশ, ভারত, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ এখনও জ্বলছি, মুক্তি মেলেনি। কেউ মুক্ত নয়। বরং সে আদি-পাপের আগুন আরও জটিলতরভাবে বিস্তর নতুন নতুন ঘটনায় ছড়িয়ে পড়ছে।
কিন্তু উনিশ শতকের শেষভাগের উপমহাদেশীয় রাজনীতির সেকথা এখন কেন তুলব? তুলব এজন্য না যে উপমহাদেশের ইতিহাসের নতুন এক বয়ান খাঁড়া করে আমি ইতিহাসবিদ হতে চাই। অথবা, নৃতত্ত্ববিদের মত মানুষের মৌলিক স্বভাবের কোন দিক নির্দেশনা হাজির করা আমার লক্ষ্য নয়। আমি ইতিহাসবিদ বা নৃতত্ত্ববিদ হতেও চাই না। বরং কথা তুলব, আগামী দিনের জন্য আমাদের রাজনৈতিক কর্তব্য কী হতে পারে সে সম্পর্কে এখান থেকে কোন ধারণা দিতে পারে কী না, পাঠক নিজের সাথে নিজেকে নিয়ে কোন চিন্তায় বসবার খোরাক এখান থেকে সংগ্রহ করতে পারে কী না - এরই একটা প্রচেষ্টা নিব।

প্রসঙ্গে প্রবেশ করব, প্লাটোর কলম পিছলে গিয়ে লেখা এক অসচতনে শব্দ বদল থেকে।
আমি এক জায়গায়, "১৯৪৭ ও ১৯৭১ সালে দু'দুবার রাষ্ট্র গঠন করা গেলেও রাষ্ট্রে জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধিত্ত্ব কখনই নিশ্চিত হয়নি, স্বার্থ প্রতিফলিত হয়নি" - এজাতীয় কিছু বলছিলাম। নিক প্লাটো আমার এই কথা নিজে কোট করতে গিয়ে, "জনগোষ্ঠীর বিভিন্ন অংশের প্রতিনিধিত্ত্ব" বলার বদলে "শ্রেণীর প্রতিনিধিত্ত্ব" বলেছে। কিন্তু "শ্রেণীর প্রতিনিধিত্ত্ব" এই শব্দ বসিয়ে বুঝতে গেলে আমার কথার মানে ভিন্ন হয়ে যাবে। প্লাটোর অসতর্কে শব্দ বদলে দেওয়াতে কী মানে হবে সে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রসঙ্গে ঢুকে যাব।

কোন নতুন রাষ্ট্র গঠনের প্রাক্কালে সমাজে জনগোষ্ঠির সব অংশের প্রতিনিধিত্ত্ব ভালভাবে নিশ্চিত করা না গেলে পরবর্তীকালে সে রাষ্ট্রে বিচ্ছিন্নতাবাদীসহ সব ধরণের রাজনৈতিক সমস্যা চাগিয়ে উঠার সম্ভাবনা নিয়েই ওর জন্ম হবে। কালক্রমে সেসব আপাত ছোট সমস্যা মহীরুহ হয়ে হাজির হবে। ব্যাপারটা হয়ে যাবে ভুমিকম্পের জমিনে বসবাসের মত, যে কোন সময় যা ফেটে বের হতে পারে। সারকথায়, রাষ্ট্র শুরু থেকেই এক দূর্বল ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত হবে, ফলে কখনই শক্তিশালী রাষ্ট্র হতে পারবে না। রাষ্ট্র সমাজের কোন দূর্বল নাজুক বা খারাপ সময় আঘাত করে বসে সব ভেঙ্গে চুড়ে তছনছ করে দিতে পারে।।
তাহলে রাষ্ট্র গঠনের প্রাক্কালে জনগোষ্ঠির সব অংশের প্রতিনিধিত্ত্ব যত ভালভাবে নিশ্চিত করা সম্ভব সে দিকে খেয়াল রাখা খুবই গুরুত্ত্বপূর্ণ কাজ। রাষ্ট্র শক্তিশালী করার পক্ষে সেটা একটা অগ্র-পদক্ষেপ বটে ।

পাঠক লক্ষ্য করলে দেখবেন উপরে রাষ্ট্রে সমাজের "জনগোষ্ঠির সব অংশের" প্রতিনিধিত্ত্ব বলে আমার কথা সাজিয়েছি। কিন্তু এই শব্দের বদলে সব "শ্রেণীর প্রতিনিধিত্ত্ব" নিশ্চিত করার কথা যদি কেউ বুঝে থাকেন, মনে করেন এদুটো প্রায় সমার্থক কথা তবে অর্থ ভিন্ন হয়ে যাবে; এভাবে চিন্তা করাটা একটা অবাস্তব এ্যবসার্ড প্রকল্প হয়ে যাবে এবং তা নেতিধারণাও বটে।
এ্যবসার্ড বা অবাস্তবায়নযোগ্য এজন্য যে যেকোন নতুন রাষ্ট্র গঠন করলে তা অনিবার্যভাবে সমাজের একটা না একটা শ্রেণীর আধিপত্ত্বে, দাপটেই সেটা ঘটতে পারে এবং ঘটবে। রাষ্ট্র মানেই সেজন্য শ্রেণী-রাষ্ট্র মানে করে বুঝা হয়; রাষ্ট্রক্ষমতা অর্থে, অন্যান্য শ্রেণীর উপরে একটা দাপুটে শ্রেণীর রাষ্ট্র; বিজয়ী ওই শ্রেণী নেতৃত্ত্বে রাষ্ট্রের অভ্যুদ্বয় ঘটে।
উদাহরণ দিয়ে বলি, ১৯৪৭ সালের কথাই ধরি। এর শুরু হিসাবে ১৮৮৫ সালে ভারতীয় ন্যাশনাল কংগ্রেস বা সংক্ষেপে কংগ্রেসের জন্ম ঘটছে প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠাতা দাদাভাই নওরোজির (১৮২৫- ১৯১৭) হাতে। একজন ওয়েষ্টার্ন এডুকেটেড ব্যবসায়ী, সমাজ সংগঠক, ধর্মীয় সংস্কারক, সে আমলেই বৃটেনে তাঁর আসা-যাওয়া ছিল। সে আমলের বৃটেনের এশীয় সমাজে জনপ্রিয় তিনি এবং ১৮৬৭ সালে প্রথম বৃটেনে ইষ্ট এশীয় এসোসিয়েশন গঠন করেছেন। এই এসোশিয়েশন মানে নেহায়তই সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রবাসী সংগঠন না; বরং যারা বৃটিশ রাজ শাসকের প্রজা উপনিবেশ রাষ্ট্ বৃটিশ-ইন্ডিয়ার প্রতি নীতিগুলো পর্যালোচনা করে; প্রজারাষ্ট্রে বৃটিশ-রাজের নীতির সমালোচনা করে পাল্টা একুইরেট ও সর্বশেষ তথ্য প্রকাশ করে সেসব বৃটিশ নীতি প্রভাবিত করার চেষ্টা করে। শুধু তাই নয়, The Poverty of India (1876) নামে এক রচনায় তিনি অভিযোগ করে বসেছিলেন, ভারতের দারিদ্র সীমাহীন এবং এই সীমাহীনতার মুল কারণ ভারত থেকে বৃটেনে সম্পদ পাচার হয়ে যাওয়ার অনুকুলে বৃটিশ নীতি। অর্থাৎ তিনি বলতে চাচ্ছেন, ভারতের উদ্বৃত্ত ভারতেই বিনিয়োজিত না হওয়ার কারণে ভারতে দারিদ্র সীমাহীন বাড়ছে। একথা তিনি বৃটেনে বসে বলছেন। এরপর আরও আগিয়ে নওরোজির এক ক্লাসিক স্টাডি Poverty and un-British Rule in India (1901) তে একথা আরও গবেষণা ভিত্তি দিয়ে বলছেন। অর্থনৈতিক অর্থে ভারতে এক ধরণের ন্যাশনালিজমের চিন্তা ভাবনা দানা বাঁধতে স্বভাবতই তাঁর এসব কাজ, কথাবার্তা তাৎপর্যময় ভুমিকা রেখেছিল, বুঝা যায়।
নওরোজির বিষয়ে উপরের পরিচিতিমূলক এসব তথ্যকে আমাদের প্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গে এনে আরও ব্যাখ্যা করব।
নওরোজি একজন ব্যবসায়ী হওয়া সত্ত্বেও তাঁর হাতে Poverty শব্দটার ব্যবহার তাৎপর্যপূর্ণ; কারণ, Poverty of India তাঁর বিষয় হয়ে যাওয়াতে সাধারণভাবে সারা ভারতের জনগণ যেন তাঁর কনস্টিটুয়েন্সী হয়ে গেছে, যাদের প্রতিনিধিত্ত্ব করে তিনি কথা তুলছেন। তিনি ভারতের ব্যবসায়ী সমাজ বা নিজের ব্যবসায়ের প্রতিনিধিত্ত্ব করে কেবল নিজেদের সমস্যার কথা বলতে পারতেন, কেবল সেদিক থেকে ঘটনা উপস্হাপন করতে পারতেন এবং সেখানেই থেমে যেতে পারতেন। কিন্তু তিনি এর সাথে ভারতের জনগণের দরিদ্র হাল সম্পর্কিত বলে আমাদের নজর টানছেন, সম্পর্কিত করে দেখতে, দেখাতে প্ররোচনা শুরু করেছেন। ফলাফলে, রাজনৈতিক না হলেও অর্থনীতির সীমিত অর্থে ভারতে একটা নতুন জাতীয়তাবাদের সূচনা হয়ে যাচ্ছে এখান থেকে।

লক্ষ্যণীয়, যে অর্থনৈতিক শ্রেণীতে নওরোজি অবস্হান করেন তার দেখভালের কাজ তিনি ত্যাগ করেন নি তাসত্ত্বেও নিজের শ্রেণীর বাইরে সারা ভারতীয় সব শ্রেণীর জনগণের প্রতিনিধি, প্রবক্তা-মুখপাত্র তিনি, পারেন আর নাই পারেন, হতে চেয়েছিলেন এতে সন্দেহ নাই।

কিন্তু এবার পরবর্তী পর্যায়, অর্থনীতির অর্থে ভারতে নতুন এই জাতীয়তাবাদকে ট্রানস্লেশন করে রাজনৈতিক অর্থে জাতীয়তাবাদের ধারণায় রূপান্তরের আরও কাজ তাঁকে করতে হবে। রাজনৈতিক মানে ক্ষমতা, ক্ষমতা নেবার পাত্র রাজনৈতিক দল লাগবে, নিজের শ্রেণীসহ সবশ্রেণী জনগণকে এক ছাতার নীচে একটা রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে জড়ো করতে হবে। সেই সাথে আগামী একটা রাষ্ট্রের কথা ভাবতে হবে, জনগোষ্ঠির সব অংশের প্রতিনিধিত্ত্ব নিশ্চিত যাতে হয় সেদিকে সতর্ক খেয়াল রেখে এক রাষ্ট্রে সংগঠিত হতে হবে, constitute a State বলতে যা বুঝায় তেমন অর্থে একটা রাষ্ট্র হয়ে উঠতে হবে।
এগুলোকে আমরা রাজনৈতিক কনষ্ট্রাকশন, মানে সমাজে চিন্তা ভাবনার পুনর্গঠন অর্থে কনষ্ট্রাকশন, সমাজের চিন্তায় হৈ চৈ তুলে তোলপাড় করে ফেলার বিস্তর কাজ বলে মনে করতে পারি।
নওরোজি ও তাঁর কংগ্রেস বাস্তবে এসবের কী পেরেছিলেন, কতদূর করেছিলেন সে প্রসঙ্গে একটু পরে আসছি। এখন "শ্রেণীর প্রতিনিধিত্ত্ব" ও "জনগোষ্ঠির সব অংশের প্রতিনিধিত্ত্ব" - যে বিষয় দুটো নিয়ে কথা শুরু হয়েছিল সেগুলো এখন কী অবস্হায়, কী হালে দাঁড়াল এর খোঁজে যাব।

উপরের ঘটনা পরম্পরার মধ্যে আমরা দেখছি, নওরোজির শ্রেণী নিজের ক্ষমতা, কর্তৃত্ত্ব নেতৃত্ত্ব দাপট কখনই ত্যাগ করছে না। এই ক্ষমতা তিনি অন্যান্য শ্রেণীকে প্রতিনিধিত্ত্ব দিবার নামে শেয়ার করছেন না। ক্ষমতা সতীন সহ্য করে না। বরং, নওরোজির শ্রেণী কেবল নিজের স্বার্থটাকে সমাজের বৃটিশ শাসন নিস্পেষণ থেকে মুক্তি আকাঙ্খায় উন্মুখ সব শ্রেণীর কাছে এটা সবারই স্বার্থ বলে উপস্হাপন করেছে, গ্রহণীয় করে তুলার চেষ্টা করছে, তবে নতুন হয়ে উঠতে যাওয়া ক্ষমতার কর্তৃত্ত্ব নিজের কাছে রেখে দিয়েছেন। এটা চাতুরি বা শঠতার প্রশ্ন নয়, ক্ষমতা বিষয়ক স্বাভাবিক ঘটনা।

তাহলে দাঁড়াল, ক্ষমতা অন্য শ্রেণীর সাথে ভাগ-বাটোয়ারার বিষয় নয়, তবে অপর সব শ্রেণীকে নিজের নেতৃত্ত্বের অধীনে নিয়ে জায়গা করে দেয়া সম্ভব; যেটা কোনভাবেই অপর শ্রেণীগুলোকে আলাদা আলাদা পাশাপাশি প্রতিনিধিত্ত্ব করতে দেয়া নয়। এভাবে বুঝলে ভুল হবে। বরং ওদের সবার প্রতিনিধিও ওখানে সে নিজে।
অতএব, সবাইকে নিজ নিজ "শ্রেণীর প্রতিনিধিত্ত্ব" দেওয়া এক অসম্ভব এ্যবসার্ড কল্পনা প্রস্তাব।

এবার "জনগোষ্ঠির সব অংশের প্রতিনিধিত্ত্ব" বিষয়ে:
নওরোজির শ্রেণী নিজের ক্ষমতা, কর্তৃত্ত্ব নেতৃত্ত্ব নিজের কাছে রেখেও রাষ্ট্রে জনগোষ্ঠির সব অংশের প্রতিনিধিত্ত্ব" নিশ্চিত করতে পারেন। এটা সম্ভব। কারণ, একটা নতুন কনষ্টিটিউট করা রাষ্ট্রে ধনী-গরীব নির্বিশেষে সবাইকে সমান জ্ঞান করা যায় এবং প্রত্যেকেই সেখানে রাষ্ট্রের এক একজন কনষ্টিটিউয়েন্ট, সমান উপাদান। শুধু তাই নয় একটা আদর্শ রাষ্ট্রে মানুষে মানুষে আর যত ভেদাভেদ চিহ্ন আছে যেমন, ভৌগলিক স্হান (যেমন নোয়াখালী না দিনাজপুর), গায়ের রং ও সাইজ (ফর্সা না শ্যামলা, উচ্চতার বৈশিষ্ট, হাই ল্যান্ডার নাক বোচা না সমতলী চোখা নাক), ধর্মীয় সাংস্কৃতিক বৈশিষ্টের ভিন্নতা, নারী-পুরুষ, পাহাড়ি-সমতলী, জীবন যাপন জীবন প্রকাশে যে কোন ভিন্নতা - ইত্যাদি সব কিছুর উর্ধে সকলকে সমান জ্ঞান করা সম্ভব।
লক্ষ্য করলে দেখব, মানুষে মানুষে যেসব ভেদাভেদ, চিহ্নের কথা এখানে বললাম - যাসত্ত্বেও রাষ্ট্র সমান জ্ঞানে সবাই এক একজন কনষ্টিটিউয়েন্ট, সবাই সমান উপাদান বলে স্বীকার করে সেগুলো - সবই প্রাকৃতিক অর্থাৎ ন্যাচারাল বা নৃতাত্ত্বিক, ভৌগলিক বৈশিষ্টের; এই ভিন্নতাগুলো মানুষ নিজে সিদ্ধান্ত নিয়ে করে নাই, বরং তাঁর জন্মের আগে থাকতে ঠিক হয়ে থাকা এসব বৈশিষ্ট, ভেদচিহ্ন।

বিপরীতে আমরা যদি দেখি, শ্রেণী ধারণাটা সামাজিক; সামাজিক মানে সমাজবদ্ধ হয়ে লেনদেন বিনিময়ে জীবন যাপন, জীবন পুনরুৎপাদন করতে গিয়ে পরিণতিতে তৈরি হয় বিভিন্ন ক্ষমতা ও শ্রেণী। ফলে সমাজের রাজনৈতিক লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এর বদল ঘটানো সম্ভব, বদল ঘটে, ঘটবে। সামাজিক লড়াই সংগ্রামে কার কেমন- ক্ষমতা অর্থাৎ শ্রেণী-ক্ষমতা বা শ্রেণী-রাষ্ট্রক্ষমতা এসব দিয়ে তা নির্ধারিত হবে।

তাহলে সারকথায়, রাষ্ট্রে শ্রেণী হিসাবে সবশ্রেণী প্রতিনিধিত্ত্ব নিশ্চিত করা সামাজিক পরিবর্তনে নেতৃত্ত্বদানকারী শ্রেণীর কর্তব্য-কর্ম নয়। যতদিন রাষ্ট্র কনষ্টিটিউট করে বসবাসের দরকার পড়বে ততদিন, আত্মবিনাশী একাজ হতেই পারে না। তবে শ্রেণী হিসাবে নয়, সমাজের জনগোষ্ঠির সব অংশকে এক সাথে রাখতে এক পরিচয়ে সবাইকে রাষ্ট্রে প্রতিনিধিত্ত্ব নিশ্চিত করার দিকে খেয়াল রেখে নতুন রাষ্ট্র কনষ্টিটিউট বা গঠনের কাজ সে করে, সম্ভব করতে পারে।
আসলে শ্রেণীর সাথে অপর শ্রেণীর সম্পর্ক মূলত উৎখাতের (দৈহিকভাবে মেরে কেটে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া নয়)। ফলে অপর শ্রেণীর প্রতিনিধিত্ত্ব নিশ্চিত করার কোন কর্তব্য সেখানে নাই, বরং উৎখাতের কর্তব্য আছে। অপরদিকে, রাষ্ট্রে জনগোষ্ঠির সব অংশের প্রতিনিধিত্ত্ব নিশ্চিত করার মানে যার সাথে একই পরিচয়ে তাকে নিজের মতই সমান রাজনৈতিক অধিকার আছে গণ্য করে রাষ্ট্র কনষ্টিটিউট বা গঠন করতে চাই, একসাথে থাকতে চাই।

এবার আবার পিছনে ফিরব, নওরোজির অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদ নিজের পরবর্তী স্তরে রূপান্তরে রাজনৈতিক, রাষ্ট্র, ক্ষমতা হয়ে উঠতে কতদূর পেরেছিল সেটা দেখব।

এর সোজা উত্তর কিছুই হতে পারে নাই। নওরোজির ১৮৮৫ সালের কংগ্রেস পরবর্তী ২০ বছর ধরে উপনিবেশ ভারত প্রজারাষ্ট্রে বৃটিশরাজের নীতি বিশেষত বাণিজ্য নীতি বদলাবার দেন দরবার, চাকরিতে নেটিভদের আরও বেশি সুযোগ, স্হানীয় সরকার কাউন্সিলগুলোতে প্রতিনিধিত্ত্ব এসব দাবীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থেকে আটকে গিয়েছিল।
ফলে এই সময়ে অর্থনীতির অর্থে ভারতে নতুন এই জাতীয়তাবাদ ভাবনাটাকে রাজনৈতিক অর্থে জাতীয়তাবাদের ধারণায় ট্রানস্লেশন রূপান্তরের কাজ কিছুই আগায়নি। নতুন সম্ভাব্য রাষ্ট্রের জন্য নতুন রাজনৈতিক ক্ষমতা তৈরি, নতুন রাজনৈতিক পরিচয় বিনির্মাণের কোন কাজই হয়নি। আমাদের আদি-পাপ শুরু এখান থেকে।
একাজগুলো দরকারী এজন্য যে উপনিবেশ শাসকের বিরুদ্ধে লড়তে নতুন রাজনৈতিক ক্ষমতা হতে হত। সারা ভারতীয় সমাজের জনগোষ্ঠির সব অংশকে একটা একক পরিচয়ে সংগঠিত ও হাজির করা দরকার ছিল। শত্রু-মিত্রের একটা সোজা ভাগাভাগির লাইন টানার দরকার ছিল। ভাগের একদিকে থাকত বৃটিশ শাসক ও এর ঔরসে গড়ে উঠা বাংলার জমিদাররাসহ সমাজের সুবিধাভোগী সব শ্রেণী। অন্যদিকে বাকি সবাইকে এককাট্টা নতুন বিনির্মিত একক পরিচয়ে জেগে উঠাতে হত।

নতুন পরিচয় কনষ্ট্রাকশনের ব্যাপারটা খুবই গুরুত্ত্বপূর্ণ ও নির্ধারক। ভারতে বৃটিশ শাসন কায়েমের কিছু ইতিবাচক দিকের মধ্যে একটা হলো আগের ছোট ছোট রাজার শাসনে বিচ্ছিন্ন বিভক্ত বিভিন্ন রাজ্য নাই হয়ে গিয়ে একই বৃটিশ কলোনিয়াল শাসনের অধীনে সবাই চলে আসে। কোথাও কোথাও (যেমন হায়দারাবাদ, মহিশূর, জম্মুকাশ্মীর ইত্যাদি) বৃটিশ বশ্যতা মেনে পররাষ্ট্র প্রতিরক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে ওদের হাতে সঁপে দিয়ে একই বৃটিশ গভর্নর জেনারেলের অধীনে সকলেই করদ রাজ্য; কেবল স্হানীয় শাসনের হক-দার ছিল তারা নিজে। এসবের পরিণতিতে ইতিবাচক দিকটা হলো, ভৌগলিকভাবে আমরা এক বিশাল ভারতবর্ষ সহজেই দেখতে পেয়ে পাই যদিও ইতোমধ্যে সেটা কলোনী বৃটিশ-ভারত। এর আর ইটিবাচক দিক হলো। পুরানো রাজ্যগুলো বিশাল ভারতবর্ষ ডিসলভড হয়ে যাওয়াতে সবার মুল সংঘাত, কমন শত্রু একই কলোনী শাসক বৃটিশ-রাজ। অর্থাৎ ভৌগলিকভাবে বৃটিশ শাসকের বিরুদ্ধে একস্বার্থ ভাবার শর্ত ইতোমধ্যেই তৈরি হয়ে ছিল সেখানে। কেবল দরকার ছিল রাজনৈতিকভাবে একক ক্ষমতা হিসাবে উঠে দাঁড়ানোর জন্য একটা একক পরিচয়। একক এক পরিচয় নির্মাণ করে সংগঠিত হওয়া মানে নতুন রাষ্ট্রের আকাঙ্খায় constitute a new state বা নতুন রাষ্ট্র গঠন করে ফেলা - একই কথা।

এখন, ধরা যাক নতুন পরিচয় যদি হয় আমরা ভারতীয় - এই জাতীয়তাবোধ (অথবা অন্য কোন ভিত্তিতে জাতীয়তাবোধ বা অন্য কোন একক পরিচয়ে) তবে, এই আমরা কারা - পরিচয় নির্মাণের এ কাজ, একইসঙ্গে কেন পরিচয় নির্মাণ দরকার, চিন্তা ভাবনার পুনর্গঠনে কেন নতুন রাষ্ট্র দরকার- এসবের স্বপক্ষে একটা ন্যায্যতা, পাশে একটা ন্যায় বা ইনসাফের দন্ড খাড়া হয় এমন একটা নতুন বয়ান দরকার। বয়ান ব্যাখ্যা হাজির করার এটা একটা গুরুত্ত্বপূর্ণ কাজও বটে। এই ব্যাখ্যাটা খুবই গুরুত্ত্বপূর্ণ। কারণ এর উপরই নির্ভর করছে জনগোষ্ঠি সব অংশ বয়ানের মধ্যে সহজ আপনবোধ করছে কি না, আনন্দে নিজেকে ঐ বয়ান ব্যাখ্যার ভিতরে আবিস্কার করছে, গ্রহণ করছে, নিজের সাথে বাইরের সব "অপর" এর সাথে এক সম্পর্কসূত্র বন্ধনে আবদ্ধবোধ করছে কী না - এসব; তবেই ঐ পরিচয়ের সবাইকে নিয়ে constitute a new state এর কাজে নতুন রাষ্ট্র গঠন করে ফেলা সহজে সম্ভব হবে। কোন উচানিচু অস্বস্তি থাকলে জনগোষ্ঠির সব অংশের প্রতিনিধিত্ত্ব নিশ্চিত করার কাজকে তা প্রভাবিত করবে, খুতসহ জন্ম নিবে। সেক্ষেত্রে রাষ্ট্রে সংগঠিত হবার আগেই হয়ত দেখা যাবে কোন অংশ বাইরে একা দাঁড়িয়ে আছে। চাইকি দেখব, শত্রুর সাথে ভিন্নভাবে রফা করছে। পরিচয় নির্মাণের সে প্রজেক্ট পুরাটাই ভেস্তে যেতে পারে। তবে, স্পষ্ট করে মনে রাখতে হবে এটা একটা রাজনৈতিক প্রজেক্ট। কোন ধর্মীয় সংস্কারের বা থিওলজিক্যাল ধর্মতত্ত্বের প্রজেক্ট নয়।

পরিচয় নির্মাণের ষ্টেজে সাধারণভাবে দেখা যায়, কারা আমরা, কী অতীত পরিচয়, আর কী হতে চাই এসবের জবাব, ন্যায্যতা জোগাড়, হিরো আদর্শ কে - এসবে যে নতুন বয়ান তৈরি হয় সেগুলো সমাজের পুরানো চিন্তাগুলোরই একটা পুনঃব্যাখ্যা বা নতুন করে করা ব্যাখ্যা মাত্র। পুরানো চিন্তা বলতে - ধর্মের ভিতর দিয়ে ও সাথে বড় হওয়া বিভিন্ন চিন্তা, ধর্মীয় উপকথা, পৌরাণিক গল্প, কোন মিথ, কাহিনী বা উপখ্যানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ন্যয়পরায়ণতা ও ইনসাফের প্রতীক হয়ে থাকা বিভিন্ন হিরো আদর্শরা, সমাজের সবার হিত ও স্বার্থে জীবন দান করে গেছেন এমন কেউ - ইত্যাদি থেকে সংগ্রহ করা। তবে, গুরুত্ত্বপূর্ণ হলো এসব উপাদান, অভিজ্ঞতা সবই পুরানো হলেও এর ব্যাখ্যা ও উপস্হাপন একেবারেই নতুন। এটাই সামাজিক চিন্তায় একটা মহা ওলটপালট তৈরি করে, সবাই নিজেকে খুঁজতে থাকে - সে কে? আশপাশের সব অপর মানুষের সাথে সম্পর্ক কী? অপর মানুষগুলোর সাথে তাকে কেন এক হতে হবে, এক সম্পর্কিত ভাবতে হবে? কী তাঁর গন্তব্য? এসব প্রশ্নে মানুষ জর্জরিত হয়ে পড়ে, সমাজের সকলকে এসব ভাবনায় তাড়িত হতে হয়।
পাঠক অনেকের মনে উঁকি দিতে পারে তাহলে গান্ধীর "সত্যাগ্রহ" কী ছিল? তাঁদেরকে স্মরণ করিয়ে দিব, আমি এখনও ১৮৮৫-১৯০৫ সালের মধ্যে আছি। গান্ধীর "সত্যাগ্রহ" আরও পরের ঘটনা, ১৯১৫ সালের আগের নয়। ঘটনা পরবর্তীতে এখানে গান্ধীর "সত্যাগ্রহ" নিয়ে কথাও বলব।

নওরোজির কংগ্রেস জন্মের পরবর্তী বিশ বছর এসব কাজের দিকে নজর পড়েছে বা কোন কাজ হয়েছে আমরা দেখি নাই। এর মুল কারণ, বৃটিশ নীতি বৃটিশ-ভারত কলোনী থেকে বৃটেনে সম্পদ পাচার ফলে সম্পদ পুনর্বিনিয়োগের অভাব ভারতে দারিদ্রের কারণ - এতটুকু বুঝের উপর দাঁড়ানো চিন্তা স্বভাবতই যথেষ্ট নয়।

[লেখা বড় হয়ে গেছে। আরও দুই পর্ব না হলেও আর এক পর্বে গড়াবে। আপাতত পরের পর্বে দেখুন।]
৯টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতিঃ ব্যাঙের বিয়েতে নামবে বৃষ্টি ...

লিখেছেন অপু তানভীর, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:০০



অনেক দিন আগে একটা গল্প পড়েছিলাম। গল্পটা ছিল অনেক এই রকম যে চারিদিকে প্রচন্ড গরম। বৃষ্টির নাম নিশানা নেই। ফসলের মাঠ পানি নেই খাল বিল শুকিয়ে যাচ্ছে। এমন... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাংলাদেশি ভাবনা ও একটা সত্য ঘটনা

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৭


আমার জীবনের একাংশ জুড়ে আছে; আমি চলচ্চিত্রাভিনেতা। বাংলাদেশেই প্রায় ৩০০-র মত ছবিতে অভিনয় করেছি। আমি খুব বেছে বেছে ভাল গল্পের ভাল ছবিতে কাজ করার চেষ্টা করতাম। বাংলাদেশের প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাকি চাহিয়া লজ্জা দিবেন না ********************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:৩৫

যখন প্রথম পড়তে শিখেছি তখন যেখানেই কোন লেখা পেতাম পড়ার চেষ্টা করতাম। সেই সময় দোকানে কোন কিছু কিনতে গেলে সেই দোকানের লেখাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়তাম। সচরাচর দোকানে যে তিনটি বাক্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

=এই গরমে সবুজে রাখুন চোখ=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১

০১।



চোখ তোমার জ্বলে যায় রোদের আগুনে?
তুমি চোখ রাখো সবুজে এবেলা
আমায় নিয়ে ঘুরে আসো সবুজ অরণ্যে, সবুজ মাঠে;
না বলো না আজ, ফিরিয়ো না মুখ উল্টো।
====================================
এই গরমে একটু সবুজ ছবি দেয়ার চেষ্টা... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

×