somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমার দেশ ইস্যু: গণমাধ্যমের স্বাধীনতা প্রসঙ্গে

১০ ই জুন, ২০১০ রাত ২:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথম পর্ব Click This Link

দ্বিতীয় পর্ব:
আগের পর্বে শেষ করেছিলাম এই দাবী জানিয়ে যে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার একমাত্র রক্ষাকবচ জনগণ। আন্দোলিত সচেতন জনগণই একে রক্ষার গ্যারান্টি। সেই সাথে এও দাবী করেছিলাম যে জনগণের সংগঠিত আন্দোলনের পাল্টা ক্ষমতায় তৈরি করে সাময়িক সময়ের জন্য হলেও এর প্রমাণ রেখেছিল।

এই উদাহরণ দেখাতে আমি এরশাদের নয় বছরের শাসনকালে মিডিয়ার দশা পরিস্হিতি মূল্যায়নে পাঠককে নিয়ে যাব।
এরশাদের শাসনকাল ছিল ২৪ মার্চ ১৯৮২ থেকে ৬ ডিসেম্বর ১৯৯০। এই সময়কালে রাজনৈতিক মুল আন্দোলন অনেকভাবে অনেক আঁকেবাঁকে গড়িয়েছিল, সেসব এখানে সরাসরি প্রসঙ্গ নয়। তবে রাজনৈতিক আন্দোলনের ঐসময়ের আন্দোলনের সেসব পটভুমিতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে যেসব কথাবার্তায় সাংবাদিক পেশাজীবী, মালিকরা যতটুকু এই আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন এবং ১৯৯০ সালে এরশাদ শাসনের পরিসমাপ্তিতে তা কী ফল পরিণতিতে পৌছেছিল সেটাই এখানকার প্রসঙ্গ।

এরশাদের সামরিক আইন অধ্যাদেশ জারির পর গণমাধ্যমের উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ ও সেন্সরশীপ ব্যবস্হা আরোপ করা হয়। সারাদিনের খবর নিয়ে পত্রিকাগুলো কীভাবে রিপোর্ট লিখবে সন্ধ্যার পর সে ব্রিফিং তথ্য অধিদপ্তর থেকে পত্রিকা অফিসগুলোকে সংগ্রহ করে নিতে হত। এছাড়াও, টেলিফোনে নির্দেশ, হুমকি এসব ছিল খুব সাধারণ ব্যাপার। এরশাদ হয়ত কোন কিছু উদ্বোধন করতে গিয়েছেন, এখন সেখানে কোন বিক্ষোভ প্রদর্শন ঘটলে সে খবর পুরোপুরি ব্ল্যাকআউট করতে বলা হত। এখানে তথ্য অধিদপ্তরের ব্রিফিং মানে হলো, প্রতিদিনের ঘটনাবলীর সরকারি তথ্য-ভাষ্য, প্রেস রিলিজ ধরণের এই ভাষ্য এটাই হত পত্রিকায় রিপোর্টিংয়ের গাইডলাইন। আর এসবের বাইরে যে যে খবর একেবারেই রিপোর্ট হবে না তারা মনে করত তা ফোনে নির্দেশ দিয়ে দেয়া হত।

এদিকে সামরিক আইন চালুর উল্টো পিঠে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক ছাত্র আন্দোলন একটু একটু করে নিজের পায়ের মাটি করে নিচ্ছিল। এরই এই পর্যায়ে ১৯৮২ সালের ডিসেম্বরে এরশাদ আইন জারি করেন, “আচার আচরণ উচ্চারণে রাজনৈতিক আলাপ করলে” সাত বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেয়া হবে। ছাত্রমৈত্রীর তিন কর্মীকে এই আইনে সাজাও দেয়া হয়েছিল। এথেকে বুঝা যায় রাজনৈতিক তৎপরতা নুন্যতম নড়াচড়া কিভাবে দমন পীড়ন করে মোকাবিলার রাস্তায় হাটছিলেন এরশাদ। উল্টো করে বললে, এটুকু সহ্য করার মত রাজনৈতিক ক্ষমতাও তাঁর ছিল না, এতই গণবিচ্ছিন্ন ছিল এরশাদের সরকার ও তাঁর রাজনৈতিক ক্ষমতা। এককথায় বললে, সামরিক শাসন ও খবর ব্ল্যাকআউটের ঐ সময়ে সমাজের শ্বাসরুদ্ধ অবস্থা থেকে বের হবার একমাত্র ভরসা হিসাবে এগিয়ে আসতে থাকে ছাত্র আন্দোলন।
ততদিনে ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ প্রথমে কলা ভবনের করিডোর মিছিল মিটিং এরপর বটতলায়, এরপর সারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এরিয়ার মধ্যে মিটিং মিছিল করার ক্ষমতা ধাপে ধাপে অর্জন করে ফেলেছিল; এরশাদের সমাবেশ, মিছিল মিটিংয়ের উপর নিষেধাজ্ঞাকে চ্যালেঞ্জ করে পাল্টা ক্ষমতার কেন্দ্র ভ্রুন হিসাবে নিজের জায়গা করে নিয়েছিল। এরপর এটা অপেক্ষা করছিল এবার ক্যাম্পাস ছাড়িয়ে বাইরে ছড়িয়ে পড়তে যাতে গণমানুষের আকাঙ্খাধন্য হয়ে এই পাল্টা ক্ষমতা নিজেকে অভিষিক্ত করে নিতে পারে, ব্যাপকতা লাভ করে গণমানুষের আকাঙ্খার প্রতীক হিসাবে নিজেকে হাজির করতে পারে। ক্যাম্পাস ছাড়িয়ে বাইরে বের হবার প্রথম ঘোষিত কর্মসূচী ছিল ১১ জানুয়ারী ১৯৮৩ সাল, শিক্ষাভবন ঘেরাও কর্মসূচী। কিন্তু এরশাদ রাজনৈতিক দলগুলোর মাধ্যমে ছাত্র আন্দোলনের চাপ সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়, রাজনৈতিক দলগুলো ছাত্রদের কর্মসূচী সমর্থন করবে না বলে হুমকি দেয়। ফলে নানা ঘটনার পর সাময়িক সেই কর্মসূচী পুনঃনির্ধারিত হয় ঐতিহাসিক ১৪ ফেব্রুয়ারী ১৯৮৩। এদিনের ঘটনার বিস্তারিত রাজনৈতিক বর্ণনায় এখন যাব না। কেবল সংক্ষেপে বলব, ঐদিন কমপক্ষে তিনজন লাশ হয়ে ঘরে ফেরে, আর বিকাল হতেই কার্ফু জারি করে প্রায় হাজার ছয়েক ছাত্র গ্রেফতার করে ঢাকা ক্যন্টনমেন্টের ট্রানজিট ক্যাম্পে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়েছিল পরবর্তী তিনদিন, ১৭ তারিখ পর্যন্ত। গণমাধ্যমে খবর সম্পূর্ণ ব্ল্যাকআউট ছিল অথচ ঐদিন জোহরা তাজউদ্দিনের ঐ আন্দোলনের সাথে কোন সংসর্গ অস্বীকার করে দেয়া বিবৃতি ছাপা হয়। শাসক এরশাদ পাল্টা ক্ষমতা সংগঠিত হয়ে উঠা রোধ না করতে পারুক একে থমকে দেয়ার সব প্রচেষ্টা জারি রাখে। এরশাদের সামরিক শাসন ক্ষমতা এক বছরের মাথায় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে যায়। কিন্তু সামলে নেয়। রাজনৈতিক দলগুলো ছাত্র আন্দোলনের পাল্টা ক্ষমতা চ্যালেঞ্জকে সুযোগ হিসাবে নিয়ে বৃহত্তর জনগোষ্ঠির পরিসরে নিজস্ব কর্মসুচী নিয়ে তা ছড়িয়ে দিবে এটাই ছিল স্বাভাবিক, আকাঙ্খিত। কিন্তু এরা করে ঠিক উল্টোটা। এরা এরশাদকে ক্ষমতার চ্যালেঞ্জ সামলাতে সহায়তা করে; ছাত্র আন্দোলনের ভয় দেখিয়ে এরশাদের কাছ থেকে ক্ষমতার ভাগ শেয়ার দাবি করে। এরপরের সেসব রাজনৈতিক বিষয়াবলীর বিস্তারে না গিয়ে চাপে মৃতপ্রায় মিডিয়া প্রসঙ্গে আসি।

পত্রিকা প্রকাশের একটা বড় দিক হলো শেষ বিচারে এটা একটা ব্যবসা। পত্রিকায় যদি কোন খবর না থাকে পাঠকের তা আগ্রহ করে কিনবার কোন কারণ থাকে না। আবার, সাংবাদিকের পেশায় যদি পদে পদে গায়েবী ডিক্টেশন মেনে কাজ করতে হয় তবে সে বড়ই বিপদজনক পেশা, কারণ ভুলচুকের কারণে মাথার উপর ধরা খড়্গে কখন কার মাথা কাটা পড়ে কে জানে। এভাবে কোন প্রতিষ্ঠান চলতে পারা সম্ভব না। ফলে ছাত্র আন্দোলনের সফল ধাক্কাকে পত্রিকাসেবীরা এই অসহনীয় অবস্থা থেকে বের হবার রাস্তা হিসাবে নেয়। অবশ্য অন্য আর এক অনুষঙ্গী কারণ ছিল সাথে। রাজনৈতিক দলের সাথে ক্ষমতার ভাগ নিয়ে দরকষাকষিতে যখন এরশাদ বসতে বাধ্য হন তখন তাঁর সামরিক আইনের দাঁত নখের ধার আগের চেয়ে স্বাভাবিকভাবে কমে গিয়েছিল।
এই পরিস্থিতি মিডিয়ার জন্য এক অপুর্ব সময় হিসাবে হাজির হয়। আসলে ছাত্র আন্দোলনের ১৪ ফেব্রুয়ারী আগের ক্ষমতার ভারকেন্দ্র, ভারসাম্য সব উলটপালট করে দেয়। আর এই দূর্বলতার সুযোগ নিয়ে মিডিয়া শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে বের হবার পথ খুঁজে নেয়। তাঁরা নিষেধাজ্ঞা ভাঙ্গা শুরু করে। কিন্তু মিডিয়ার সাথে সহনশীল হওয়া ছাড়া এসময়ে এরশাদের জন্য অন্য পথ খোলা ছিল না। একটা সীমার বেশি চাপাচাপি করলে হিতে বিপরিত ঘটার সম্ভাবনা, আন্দোলন আবার ক্যাম্পাসের বাইরে বের হয়ে পড়বে, এই ভয় ছিল। অবস্থাটা ছিল বড়ই অদ্ভুত। একদিকে এরশাদের হাতে মিডিয়া দমনের যা কিছু তথাকথিত আইন ছিল এগুলোর একটাও প্রত্যাহার বা বাতিল করা হয়নি অথচ, এগুলোর কোনটারই প্রয়োগ নাই। যেন সরকার ভুলে গেয়ে ছিল যে তাদের হাতে দমনমুলক আইন আছে যেগুলো দিয়ে চাইলেই দমানোর চেষ্টা তারা করতে পারত। ওদিকে ক্ষমতার নতুন ভারসাম্যের হিসাবটা মিডিয়ার জানা হয়ে গেছে। আন্দোলনের খুটিনাটি খবর ছেপে ছাত্র আন্দোলনের সমর্থক মুডে থাকলে এই মিডিয়ার উপর সরকার খবরদারি করতে গেলে প্রতিক্রিয়া সরকারের বিপক্ষে যেত। ক্ষমতা ভারসাম্যের এই নতুন পরিস্হিতি ১৯৮৩ সালের এরপর থেকে ১৯৮৫ সালে প্রথম উপজেলা নির্বাচন ঘটার আগে পর্যন্ত বজায় ছিল।
এখানে একটা সারমর্ম টানব। এখানে লক্ষ্য করবার বিষয় হলো, মিডিয়ার এই স্বাধীনতা কোন আইন তাকে দেয়নি বরং দমনমূলক কালো আইনগুলো এরশাদের হাতে তখনও বহাল কিন্তু প্রয়োগ নাই অকেজো। কেন? কারণ, এরশাদের ক্ষমতার পালটা ক্ষমতা ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে রয়ে গেছে; ওটা নিজেকে জনগণের গণতান্ত্রিক আকাঙ্খা ধারণ করে টিকে ছিল যতটুকু ততটুকুই সে পালটা ক্ষমতা। এই ক্ষমতাটুকুই রাষ্ট্রক্ষমতা ভারসাম্যের একটা গুরুত্ত্বপূর্ণ খুটি। ফলে, জনগণের এই ক্ষমতার জোরে মিডিয়া স্বাধীনতা ভোগ করে গেছে, মিডিয়া ততটুকু ক্ষমতাবান। এই সময়টাতে কোন অনুমতি, ডিক্লারেশনের ধার না ধেরে কত অসংখ্য প্রকাশনা (পার্টি প্রকাশনাসহ) প্রকাশিত হয়েছে এর শেষ নাই। আবার এসময়ে মিডিয়া স্বাধীনতার অপব্যবহারের কথাও শোনা যায়নি; এসব কিছুর মুল কারণ, জনগণের ক্ষমতা মিডিয়ার স্বাধীনতার রক্ষাকবচ একপায়ে দাড়িয়ে গেছিল।

এরপরের ঘটনাবলী সংক্ষেপ করব। এরশাদ উপজেলা নির্বাচন করবেনই। বলা ভাল এরশাদ নয়, বিশ্বব্যাঙ্ক। জিয়ার মৃত্যু, এরশাদের আবির্ভাব এগুলো সবই বিশ্বব্যাঙ্কের প্রশাসনিক সংস্কার প্রজেক্টের অংশ। আগ্রহী পাঠকরা এবিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে, আমার পুরানো “বিশ্বব্যাঙ্ক ও আইএমএফ” সিরিজ পোষ্ট বিশেষত, ষষ্ঠ পর্বটা পড়তে পারেন। এই প্রজেক্টের লোকাল এজেন্ট, প্রধান নির্বাহী হো মো এরশাদ।
এদিকে ঐ সময়ের এরশাদ ক্ষমতা নেবার পর বিগত প্রায় আড়াই বছরে প্রশাসনিক সংস্কার ও এর অংশ উপজেলা কাঠামো বিল্ডিং সব কিছু সমাপ্ত, কেবল উপজেলা নির্বাচনটা বাকি এরপর কোর্ট বসার কথা। রাজনৈতিক দলগুলো এরশাদকে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে সহযোগিতা করলে এরপর সংসদ নির্বাচনে ক্ষমতার একটা ভাগাভাগি শেয়ার দেয়া হবে –এভাবে এরশাদ রাজনৈতিক দলের সাথে রফা করেছিল। এই রফার খবর বড় রাজনৈতিক দলগুলো ছাত্রনেতাদের ব্রিফ করেনি। ক্ষমতা ভাগাভাগির এই আঁতাতের কারণে ছাত্র আন্দোলন মুখ থুবড়ে পরে, গণক্ষমতা উত্থানের শেষ সম্ভাবনার কবর রচনা হয়ে যায়। এরশাদ আবার প্রবল প্রতাপে দমননীতিতে উপজেলা নির্বাচন করতে রওনা হয়।
এরপরের রাজনৈতিক গুরুত্ত্বপূর্ণ ঘটনাবলী হলো: ১৯৮৬ সালের নির্বাচন, আওয়ামি লীগের অংশগ্রহণ, শেষ মুহুর্তে বিএনপির বাইরে থাকা, নির্বাচনে ক্ষমতার ভাগ সংক্রান্ত এরশাদের প্রতারণার শিকার আওয়ামি লীগ, এসবের দায় ডিল বা রফা করার মহানায়ক কামাল হোসেনের অবস্হান নড়বড়ে হওয়া, সংসদ ত্যাগ করে এরশাদের বিরুদ্ধে লীগের বিএনপির সাথে জোটবদ্ধতা, বছর খানেকের মধ্যে এরশাদের সংসদ ভেঙ্গে দেওয়া, নতুন আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টর বাবা বুশের ইরাক আক্রমণের প্রভাব, আমেরিকার বৈদেশিক নীতিতে পরিবর্তন - শান্তি মিশন ও সিভিলিয়ান নির্বাচিত সরকারের ধারণা সামনে আসা– এরশাদের প্রয়োজনের সমাপ্তি ইত্যাদি ইত্যাদি।
অর্থাৎ এরশাদের প্রয়োজন শেষ, বিশ্বব্যাঙ্ক ও দাতা এ্যমবেসী সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে পরবর্তী খেলার জন্য স্টেজ সাজানো হয়ে গেছে, খেলোয়ারও তৈরি । তৎকালীন আর্মি চীফ নুরুদ্দিন এরশাদের কথা অমান্য করে রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের মাঠসহ শহরের নানা জায়গায় ক্যাম্প বসিয়ে ফেলেছে। ডিল টা হলো, এরশাদকে সরিয়ে নির্বাচন দেয়া হবে তাতে আওয়ামী লীগ বা বিএনপি যে আসে ক্ষমতায় তার সাথেই বিশ্বব্যাঙ্ক ও দাতা এ্যমবেসী কাজ করতে রাজি। কিন্তু এরশাদ সহজে হস্তান্তরের একাজ হতে দিতে রাজি না। জেনারেলদের কমান্ড কোরের সভায় এরশাদ শেষ চেষ্টা করেন আর্মির বেতন সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর প্রস্তাব করে। কিন্তু অফিসার সৈনিক ততদিনে জেনে গেছে শান্তি মিশনের খবর। আমেরিকা বাংলাদেশকে মিশনের খেপ মারার কাজে এক নম্বরে প্রায়রিটিতে রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ফলে নাছোড়বান্দা এরশাদের শেষ মুহুর্তের এসব নিজস্ব মুলামুলির চেষ্টা থেকে উৎসারিত উত্তেজনার - এই জাহাজের খবর রখি না, জানা নাই বলে এদিকে আমাদের মধ্যবিত্ত মন ভাবলো, প্রেসক্লাবের রাস্তায় বসে বাদাম চিবাতে চিবাতে গণঅভ্যুত্থান করে ফেলা কতই না একটা সহজ কাজ, আগে বুঝিনি কেন!
সেসব কথা এখন থাক, ১৯৮৭ থেকে ১৯৯০ গণমাধ্যমের জন্য আর একটা বড় কালো সময় গেছিল; পত্রিকা প্রকাশনা বাতিল, সম্পাদক জেলখানায় – সবচেয়ে বেশি ঘটেছে এই সময়। এর আগের ১৯৮৫ সালের উপজেলা নির্বাচনের পর থেকে হারানো গণমাধ্যমের স্বাধীনতা আর কখনো ফিরে আসেনি। মুল কারণ, জনগণের ক্ষমতা, গণক্ষমতা আর কখনই আর আন্দোলনের মুল লক্ষ্য ছিল না। একটা আপোষের ক্ষমতাভাগ পাওয়া এই লক্ষ্যে সবকিছু পরিচালিত হয়েছে। ফলে একটা নতুন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের উত্থান ঘটানো, নতুন রাষ্ট্র কনষ্টিটিউট বা গঠন করা মানে নতুন গণতান্ত্রিক কনষ্টিটিউশনের লক্ষ্যে আন্দোলন পরিচালিত হয়নি। গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রসঙ্গটাও তাই অবান্তর থেকে গেছে।

এতে শেষ পেরেক মারার কাজটা করেন পত্রিকা মালিক ও মালিক হতে আকাঙ্খী এমন প্রভাবশালী সাংবাদিকেরা। নতুন রাষ্ট্র কনষ্টিটিউট বা গঠন করা মানে নতুন গণতান্ত্রিক কনষ্টিটিউশনের লক্ষ্যে আন্দোলন গড়ার কোন দায় তাদের আছে এমন বোধ তাঁরা কখনই করেননি। ভেবেছেন, জনগণের স্বাধীনতা, একটা গণক্ষমতা তৈরি, নয়া গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র, কনষ্টিটিউশন - এর লক্ষ্যে জনগণকে আন্দোলিত করে তা হাসিল ছাড়াই কেবল সংবাদপত্রের স্বাধীনতা আলাদা করে চোরাগলির পথে তা অর্জন সম্ভব। তাই যখন টের পেয়েছে, ডিসেম্বর ১৯৯০, সাহাবুদ্দিনের কাছে এরশাদের ক্ষমতা হস্তান্তরের সময়কালে হাসিনা, খালেদা কেউ না কেউ তো নির্বাচনে জিতবেন হয়ত তখন হুশ হয়েছে তাদের ভাগ কই?
তাঁরা ভাবলেন, জনগণের ক্ষমতা, গণক্ষমতা আর মিডিয়ার স্বাধীনতা দুটো আলাদা জিনিষ, ভুলে গেলেন এতদিনের শিক্ষা যে জনগণের ক্ষমতাই একমাত্র স্বাধীন মিডিয়ার রক্ষাকবচ হতে পারে।

এমন কী জনগণ এই তথাকথিত গণঅভ্যুত্থান থেকে কি লাভ করল সেটা ভেবে দেখতেও ভুলে গেলেন। তাই নিজেদের স্বার্থ, মিডিয়ার স্বাধীনতাকে স্বতন্ত্র ভেবে দাবি তুললেন, কেবল স্বাধীন মিডিয়ার সমস্যা সমাধানে লক্ষ্যে একটা কমিশন বসাতে হবে। হাসিনা খালেদারে বিশ্বাস নাই।
ফলে তাঁদের দাবি মোতাবেক, নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার আগেই ক্ষমতার চালচুলোহীন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন, তাঁরই আবার অধ্যাদেশ বলে এই কমিশন গঠন করে ফেলা হয়।

পত্রিকাসেবীদের কাছে দুইটা আইন কালো আইন হিসাবে চিহ্নিত।
১। বিশেষ ক্ষমতা আইন ৫৪ক ধারা
২।পেনাল কোড ৫০১ ধারা

প্রথমটা, মানে ৫৪ ক ধারার এমনই শক্তি যে কাউকে কেবল সন্দেহের বাতিকে গ্রেফতার করে ফেলা সম্ভব। এরপর তাঁকে কোন কোর্টে ম্যাজিষ্টেটের সামনে হাজির করারও দরকার পরে না। সরাসরি জেলখানায় জেলরের হাতে তুলে দিলেই হলো, সাথে একখানা কাগজ, ডিটেনশন অর্ডার যেটাতে যে কোন জেলা ডিসির স্বাক্ষরই যথেষ্ট। ফলে পত্রিকাসেবীদেরকেও এই বে-আইনী আইনে অন্দর করে দেয়া সম্ভব এবং বহুবারই তা করা হয়েছে।

দ্বিতীয়টা, হলো আসলে যাকে পছন্দ হয় না এমন কারও বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ দায়েরের সহজ ধারা। পত্রিকাসেবীদেরকে অস্পষ্ট এই আইনের ধারার অপব্যবহার ঘটিয়ে বহুবার সহজেই অন্দর করে দেয়া হয়েছে। এই ধারায় করা অভিযোগের মারাত্মক দিকটা হলো এটা অজামিনযোগ্য ধারা। এর সোজা মানে কারো বিরুদ্ধে এই ধারায় মামলা হলে দীর্ঘ আইনি প্রক্রিয়ায় মামলায় রায় না হওয়া এবং মামলা ডিসমিস না পর্যন্ত জেলে পঁচে মরতে হবে, তাতে মামলা ভুয়া হোক আর না হোক। এপর্যন্ত প্রায় সব মামলার ক্ষেত্রেই এই মামলা ভুয়া প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু তাতে কী ততদিনে বিস্তর হয়রানি নাকানিচুবানি করার এই "আইনী" মাফুতা সুযোগ তো আর কোথাও পাওয়া যায় না।

তাই, "স্বাধীন" মিডিয়ার সমস্যা সমাধানে লক্ষ্যে এই কমিশন সুপারিশ করলো, এই দুইটা তথাকথিত আইনের বিষয় পত্রিকাসেবীদের উপর প্রযোজ্য নয়। এবং এই সুপারিশ তখন থেকে এখনো গৃহীত হয়ে আছে।

এখন এঘটনার সারমর্ম কী?

মিডিয়া মালিকরা ভেবেছেন ও পরিস্কার বুঝেছেন,
১। জনগণ জাহান্নামে যাক পত্রিকাসেবীরা তো বাঁচল।
২। এটা তথাকথিত গণঅভ্যুত্থান, প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় বসে বাদাম চিবানোর মত সহজ; এর সাথে জনগণের ক্ষমতা বলে কোন কিছুর সম্পর্ক নাই, তৈরিও হয়নি। কারণ, এটা জনগণের ক্ষমতা হলে তো তা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য একমাত্র রক্ষাকবচ হত, আমাদেরও আলাদা করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য কমিশন বসানোর দাবি করার দরকার ছিল না।
৩। এটা বড়জোর হাসিনা আর খালেদা মধ্যে কে নিপীড়নের ক্ষমতা পাবে সেই ভাগাভাগির একটা নির্বাচন। পালটা গণক্ষমতা, জনগণের ক্ষমতার এটা নয়।

মিডিয়া মালিকদের এই সংকীর্ণ ভাবনা থেকে যে প্রশ্ন গুলোর জন্ম দেয় তা হলো,
১. যে আইন সংবাদপত্রসেবীর জন্য নিপীড়ক কালো আইন তা সব নাগরিকের জন্যও কালো আইন হতে বাধ্য। জনগণের যে কেউ বহাল থাকা এই একই কালো আইনে নির্যাতিত হবেই।
২. সংবাদপত্রসেবীরা একই সঙ্গে কী নাগরিক জনগণ নয়? ফলে নাগরিক হিসাবে চেপে থাকা এই কালো নিপীড়ক আইনগুলো তাদের উপরও প্রযোজ্য হওয়া থেকে বাইরে থাকবেন কী করে? আমার দেশ ইস্যুতে কী তাই হচ্ছে না?
৩. ইদানিং শুরু হয়েছে, রিম্যান্ড নামের ভয়াবহ নতুন নির্যাতনের ব্যবস্হা। জনগণের কথা বাদ দিলাম, সংবাদপত্রসেবীরা কী এর বাইরে থাকতে পারছেন? আমার দেশ ইস্যুতে কী আমরা "রিম্যান্ডের" প্রতিহিংসা চরিতার্থ হতে দেখছি না?
৪. আইনে থাকুক আর না থাকুক যে ধরণের ক্ষমতা ব্যবস্হা আমরা চালু রেখেছি তাতে সরকারের আইনকে প্রতিহিংসার টুল হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহারের অফুরন্ত অবারিত সুযোগ আমাদের কনষ্টিটিউশন, বিচার ব্যবস্হা রেখে দিয়েছে।
৫. ঢাকঢোল পিটিয়ে দাবী করা হয়েছিল বিচার বিভাগের স্বাধীন হয়ে গেছে। ম্যজিষ্টেট কোর্টগুলো এখন থেকে আর সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের নির্দেশ বা নির্বাহী বিভাগ সরকার থেকে স্বাধীন হয়ে গেছে। মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলাগুলোর ধরণ ও তাতে রিম্যান্ড মন্জুরের যে বন্যা দেখা দিয়েছে তাতে কী আমাদের মনে হয় যে ম্যাজিষ্টেটরা স্বাধীন, নিজেদের বিচার বিবেচনা তাঁরা প্রয়োগ করছেন অথবা তাঁদের উপর হাইকোর্টের তদারকি বলে কিছু আছে? ওদিকে ১/১১ সরকারের আমল থেকে এপর্যন্ত হাইকোর্ট, চেম্বার জাজ নিয়ে যেসব প্রশ্ন উঠেছে তা নিয়ে তো প্রাক্তন প্রধান বিচারপতিরাই ভয়াবহ পরিণতির হুশিয়ারি জানাচ্ছেন।

সব মিলিয়ে তাহলে এই অরাজক পরিস্হিতি থেকে পরিত্রাণের উপায় কী? ঘটনাবলী প্রমাণ করছে মিডিয়ার স্বাধীনতা জনগণের স্বাধীনতা থেকে আলাদা কিছু নয়; মিডিয়া নিজেদের জন্য আলাদা আইন করেও পরিত্রাণ জোগাড় করতে পারেনি। এটা আজ প্রমাণিত।
এসবই একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কায়েমের লক্ষ্যে আন্দোলন, জনগণের পাল্টা ক্ষমতা তৈরি, নতুন রাষ্ট্র কনষ্টিটিউট করার লক্ষ্যে অসমাপ্ত আন্দোলন সমাপ্ত করার দিকে আমাদের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

মুহম্মদ জাহাঙ্গীরের লেখা থেকে শুরু করেছিলাম, তাঁকে দিয়েই শেষ করব।
তিনি তাঁর আমার দেশ ইস্যুতে কলাম শুরু করছেন এভাবে,
“আমাদের অনেকের ধারণা ছিল, রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ দুটি কালো আইন প্রত্যাহার করে নেওয়ায় এ দেশের আর কোনো সরকার একক ক্ষমতাবলে সংবাদপত্র বন্ধ করতে পারবে না। কিন্তু আমার দেশ পত্রিকা সরকার বন্ধ করে দেওয়ায় আমাদের সে ধারণা ভেঙে গেল। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার আবার প্রমাণ করেছে, ‘সরকার জঘন্য রকমের ক্ষমতাশালী। সরকার যা খুশি তা করতে পারে।’”

মুহম্মদ জাহাঙ্গীরের লেখাকে যদি সংবাদপত্রসেবীদের প্রতীকী উপলব্দি হিসাবে ধরি তাহলে তাঁর, "আমার দেশ পত্রিকা সরকার বন্ধ করে দেওয়ায় আমাদের সে ধারণা ভেঙে গেল" কথাটা তাৎপর্যটাই আমি এতক্ষণ এই পোষ্টে বয়ান করার চেষ্টা করলাম।
তবু মুহম্মদ জাহাঙ্গীরের লেখাকে সংবাদপত্রসেবীদের সবার এই উপলব্ধি "ধারণা ভেঙে গেল" - এটা তো ভাঙ্গারই কথা। মুহম্মদ জাহাঙ্গীর তো তবু বলছেন তাঁর কথা। অন্যদিকে বেশীর ভাগ মিডিয়া মালিক সম্পাদক এখনও আমার দেশ ও মাহমুদুর রহমানের ঘটনাকে দেখছেন "বিশেষ বিরোধী দলের" পত্রিকার ব্যাপারস্যাপার বলে; এছাড়া মাহমুদুর রহমানের উপর নির্যাতনে তাদের একধরণের স্যাডিষ্ট মর্ষকামী সুখ পাবার খবরও আমরা দেখতে পাচ্ছি। দুর্ভাগ্য হলো, আজ যা মাহমুদুর রহমান কাল সেখানে অপেক্ষা করছে অন্য সকল সম্পাদকের নাম - এটা এখনও কারও খেয়ালে নাই। দলবাজি ও সংকীর্ণ স্বার্থে বিভোর আত্মরমনসুখী মানুষকে কে হুশে আনতে পারে।
সর্বশেষ এডিট : ১০ ই জুন, ২০১০ দুপুর ১:৪৬
১৯টি মন্তব্য ১৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

খুলনায় বসবাসরত কোন ব্লগার আছেন?

লিখেছেন ইফতেখার ভূইয়া, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:৩২

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় তথা কুয়েট-এ অধ্যয়নরত কিংবা ঐ এলাকায় বসবাসরত কোন ব্লগার কি সামুতে আছেন? একটি দরিদ্র পরিবারকে সহযোগীতার জন্য মূলত কিছু তথ্য প্রয়োজন।

পরিবারটির কর্তা ব্যক্তি পেশায় একজন ভ্যান চালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

একমাত্র আল্লাহর ইবাদত হবে আল্লাহ, রাসূল (সা.) ও আমিরের ইতায়াতে ওলামা তরিকায়

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৬:১০



সূরাঃ ১ ফাতিহা, ৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
৪। আমরা আপনার ইবাদত করি এবং আপনার কাছে সাহায্য চাই।

সূরাঃ ৪ নিসার ৫৯ নং আয়াতের অনুবাদ-
৫৯। হে মুমিনগণ! যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। মুক্তিযোদ্ধা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:২১



মুক্তিযুদ্ধের সঠিক তালিকা প্রণয়ন ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা প্রসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, ‘দেশের প্রতিটি উপজেলা পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি রয়েছে। তারা স্থানীয়ভাবে যাচাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভারতীয় রাজাকাররা বাংলাদেশর উৎসব গুলোকে সনাতানাইজেশনের চেষ্টা করছে কেন?

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:৪৯



সম্প্রতি প্রতিবছর ঈদ, ১লা বৈশাখ, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, শহীদ দিবস এলে জঙ্গি রাজাকাররা হাউকাউ করে কেন? শিরোনামে মোহাম্মদ গোফরানের একটি লেখা চোখে পড়েছে, যে পোস্টে তিনি... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরান-ইজরায়েল দ্বৈরথঃ পানি কতোদূর গড়াবে??

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ১৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:২৬



সারা বিশ্বের খবরাখবর যারা রাখে, তাদের সবাই মোটামুটি জানে যে গত পহেলা এপ্রিল ইজরায়েল ইরানকে ''এপ্রিল ফুল'' দিবসের উপহার দেয়ার নিমিত্তে সিরিয়ায় অবস্থিত ইরানের কনস্যুলেট ভবনে বিমান হামলা চালায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×