somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দুই পরিবারের ক্যাচালে আমরা পড়ছি মাইনক্যাচিপায়

০৮ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


এ দেশের রাস্তায় বাসের রেষারেষিতে রাজিব হাত হারাচ্ছে, দিয়া-করিম প্রাণ হারাচ্ছে। কোটার খপ্পরে পড়ে তারুণ্যের ভবিষ্যৎ ঢাকার রাস্তার বাসগুলোর মতই ঝরঝরে হয়ে যাচ্ছে আর আমরা আমজনতা, শেখ পরিবার ও জিয়া পরিবার এই দুই রেজিমের রেষারেষিতে পড়ে আম ছালা সবকিছুই হারাচ্ছি। বিপদেই আছি! কথায় আছে, রাজায় রাজায় যুদ্ধ করে, উলুখাগড়ার বিপদ বাড়ে... স্বাধীনতার সাতচল্লিশ বছর পর এসে আমরা সেই উলুখাগড়ারও অধম হয়ে গেছি বলে মনে হচ্ছে।

ছোটবেলায় পাঠ্য বইয়ে পড়েছিলাম- এক বৃদ্ধ মৃত্যুশয্যায় তাঁর সাত ছেলেকে ডেকে সবার হাতে একটা করে লাঠি ধরিয়ে দিয়ে বললেন, ভাঙ্গো। ছেলেরা সব সুপুরুষ, সামর্থ্যবান। পটাপট লাঠিগুলো ভেঙে ফেললো। এরপর বৃদ্ধ সাতটা লাঠিকে একসাথে কষে বেঁধে ছেলেদের হাতে দিয়ে বললেন, এবার ভাঙ্গোতো দেখি বাছারা... ছেলেরা বহুত চেষ্টা করে হাটু টাটু ছিলে ফেললেও ওই লাঠির আঁটিকে ভাংতে পারলো না।

বৃদ্ধ বললেন, কি বুঝলে বাবারা? ছেলেরা সুন্দর করে বুঝে গেলো ঐক্যের সুফল আর বিভক্তির কুফল।

তো এই বৃদ্ধ আর তাঁর সাত ছেলে মূখ্যসূখ্য মানুষ ছিলো, লেখাপড়া জানতো না, তাই তারা খুব দ্রুত বুঝতে পেরেছিলো নিজেদের ভালোটা। কিন্তু আমরা তো সব অতি শিক্ষিত। একেকজনের ডিগ্রি আর পদকের কি বাহার! আমরা এ সব বুঝতে যাবো ক্যান?

আজ পর্যন্ত দেখলাম না কোনো একটা সিঙ্গেল সাবজেক্টে বিএনপি আর আওয়ামীলীগ এক হতে পেরেছে। আওয়ামীলীগ যদি বলে ডান, বিএনপি নির্ঘাৎ বলবে, বাম। বিএনপি যদি বলে রাত, আওয়ামীলীগ অতি অবশ্যই বলবে, দিন। কি, আপনি কি মনে করতে পারছেন একটা ইস্যুও, যেখানে এই দুই দল একমত হয়েছে? আমি কিন্তু একটা খুঁজে পেয়েছি। সেটা হইলো শুল্কমুক্ত সুবিধায় ব্যক্তিগত দামী গাড়ি আমদানী।

এ ধরণের আরো কিছু ইস্যু নিশ্চয় আছে। কিন্তু যেই বিষয়গুলাতে এই দুই দল একমত হয়, সেইখানে বিলক্ষণ কোনা খারাপ কিছু থাকে। নিশ্চিত থাকেন যে সেইগুলা দিয়া এই দেশের ‘ইয়ে’ মারা ছাড়া কোনো উপকার হয় না।

আর এই দুই রেজিমের উত্তরাধিকার আমরাও মাশাল্লা, স্বাধীনতার পর থেকেই একদল আরেক দলকে সমানে পাঙ্গা দিয়ে যাচ্ছি। আরে ভাই, এরকম দ্বিধাবিভক্ত জাতিই যদি হবো, তাইলে স্বাধীন হয়ে কি ‘চ্যাটের বাল’টা ছিড়ছি আমরা? আর যাঁদের পিরিতে মুখর হয়ে এসব করছি, তাঁদের চৌদ্দগুষ্ঠির সবাই কিন্তু বহুত আগেই এই দেশের পাছায় লাত্থি দিয়ে বিদেশে দিব্বি সংসার পেতে বসেছে।

এর চেয়ে ভালো ছিলো যে স্বাধীনতার পর পরই পাড়ায় পাড়ায়, গ্রামে মহল্লায় মহল্লায় গণআদালত বসিয়ে আরো লাখ দুয়েককে কোরবানী দিয়ে দিতাম। তাহলে আমরা সবাই অন্তত একপক্ষীয় হতে পারতাম!

নিজেদের মুক্তি খুঁজতে একাত্তুরের প্রজন্ম বেছে নিয়েছিলো আওয়ামীলীগকে আর আশির প্রজন্ম বিএনপিকে। তারপর পদ্মা-মেঘনা-ধরলা-তিস্তায় বহু পানি গড়িয়ে গেছে। ‘ঘোড়ার ডাক’র যুগ থেকে দেশ এখন ফোরজিতে রুপান্তরিত। দুই ব্যান্ডের রেডিও ফেলে হাতে হাতে এখন এফএম। ম্যান! এটা ২০১৮। এই প্রজন্মকে এখন আর ‘চুদুরবুদুর’ বোঝানো যাচ্ছে না। ওদের কাছে দেশই আগে। দল নয়, কোনো ভন্ড ডাইন্যাস্টি নয়। এখন ওরা আর দুই ভাগে থাকতে চায় না। দুই পরিবারের মাইনক্যা চিপায় আটকে থাকতে চায় না। আটকে থেকেও যে কোনো লাভ নেই; এই প্রজন্ম সেটা বুঝতে পারছে কিন্তু পারছি না আমার মত বুইড়ারা। অগত্যা কি আর করা, নিজেই মোনাজাত ধরছি, হে আল্লাহ.... তো মা র কা ছে বি চা র দি লা ম...
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই আগস্ট, ২০১৮ দুপুর ১২:৩৭
২০টি মন্তব্য ১৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের মুমিনী চেহারা ও পোশাক দেখে শান্তি পেলাম

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৭ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৯:৫৮



স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে স্টেজে উঠেছেন বত্রিশ মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের চব্বিশ জনের দাঁড়ি, টুপি ও পাজামা-পাঞ্জাবী ছিলো। এমন দৃশ্য দেখে আত্মায় খুব শান্তি পেলাম। মনে হলো আমাদের মুক্তিযোদ্ধা আমাদের মুমিনদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

দু'টো মানচিত্র এঁকে, দু'টো দেশের মাঝে বিঁধে আছে অনুভূতিগুলোর ব্যবচ্ছেদ

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ১২:৩৪


মিস ইউনিভার্স একটি আন্তর্জাতিক সুন্দরী প্রতিযোগিতার নাম। এই প্রতিযোগিতায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সুন্দরীরা অংশগ্রহণ করলেও কখনোই সৌদি কোন নারী অংশ গ্রহন করেন নি। তবে এবার রেকর্ড ভঙ্গ করলেন সৌদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের দুই টাকার জ্ঞানী বনাম তিনশো মিলিয়নের জ্ঞানী!

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ২:৫৯

বিশ্বের নামীদামী অমুসলিমদের মুসলিম হয়ে যাওয়াটা আমার কাছে তেমন কোন বিষয় মনে হত না বা বলা চলে এদের নিয়ে আমার কোন আগ্রহ ছিল না। কিন্তু আজ অষ্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত ডিজাইনার মিঃ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×