সে অনেক দিন আগের কথা , তখন আমি জগতের কদার্য তেমন বুঝতে শিখিনি , তবে দেখতে শুরু করেছিলাম। আজ ঠিক কোন ক্লাশে পড়তাম তখন , মনে নেই। ক্লাশ ফোর ফাইভ কিছু তে একটা হবে। গ্রাম থেকে বেড়াতে এসেছেন ঢাকায় আমার বাবার এক চাচাত চাচার ছেলে , সহজ সম্পর্কে আমার চাচা। আজকের একজন শহুরে চাকুরীজীবী তিনি তখন সো ইয়াং হিউম্যান বিয়িং। ঘুরতে যাবেন ঢাকা শহর। উল্লেখ্য যে ছোট বেলা গ্রাম থেকে কেউ এলেই দেখতাম দর্শনের জন্য অন্যতম প্রধান দুটি স্থান তাদের কাছে ঢাকার চিড়িয়াখানা আর শিশুপার্ক। সেই চাচাও তাদের থেকে আলাদা কিছু করেন নাই। তবে আমাকে আমার সরল ভীতু মা অন্য কারও সাথে একা না ছাড়লেও বাইরে সেই চাচার সাথে যেতে দিলেন। দুই চাচা ভাতিজা প্রথমে গেলাম শিশুপার্ক। আমি জানতাম শিশুপার্কে ঢুকতে নাম মাত্র মূল্যের টিকিট কাটতে হয়। সেদিন জানলাম কিছু মানুষ এর জন্য নিয়ম বদলে যায়। সেই দলে আমার সেই চাচাও। কেমনে? তাইতো, কেন সহরাওয়ার্দি পার্ক লাগোয়া লোহার দেয়াল টা আছে না। তখনও ছিল। নিজে টপকালেন , আমাকেও হেল্প করলেন টপকাতে। তখন উদ্যানে শিখা প্রজ্বলন হতোনা, এখন কার মতো পুলিশ ক্যাম্প ট্যাম্পও ছিলনা। একটু সাহস করে লাফ দিলেই হয়। বেশ একটা থ্রিলিং জেগেছিল সে চোরামী কর্মে।
সেদিনই আবার শিশুপার্ক হতে বের হয়ে গিয়েছিলাম চিড়িয়াঘর এ , মিরপুর বৃক্ষসুনিবিড় এলাকাটাতে। আমার জন্য হাফ টিকিট আর ওনার জন্য ফুল টিকিট কাটার নিয়ম ঠিকই পালন করলেন চাচা। কিন্তু তারপর ঠিক মনে পড়ছেনা , তবে মনে পড়ছে ঢুকেছিলাম এবং টিকিট এ একটুও কাটা ফাটা ছাড়াই। .....সারা চিড়িয়া খানায় শত চিড়িয়ার কর্মকান্ড দেখে শেষে চাচর কাছে অতি অক্ষত টিকিট দেখে ভাবলাম এ আবার কোন চিড়িয়া রে ভাই। অবাক হলেও বলছি উনি বাহির হয়ে টিকিট দুটো পুন ঃ সেল ও করেছিলেন চাপার তীব্র জোড়ে। আমার ক্ষি ণ হাসি তে বলেছিলেন , দেখলা মামুন কেমন মজা করলাম।
কি দারুন চিজ ঐ চাচা ছিলেন বুঝলেন। দারুন জিনিস একজন।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই অক্টোবর, ২০০৬ দুপুর ২:৫৪