গতকাল তাই ভোরে ঘুরতে বের হয়েছিলাম। আমার অফিসের দুজন সেন্ট মার্টিন যাবে। তাদের চাকুরীর জীবন শেষ বেলার সূর্যর মত টুপ করে ডুবল বলে। তাই কক্সবাজরের পোষ্টিংয়ের সুবধিাটা কাজে লাগানো তাদের বুড়ো বয়সে। গাড়ী দিতে কার্পন্য করিনি তাই। কার্পন্য করিনি নিজেকেও পথে ছুড়ে মারতে ।
ভোর ছয়টা য় ...টেকনাফের জিগজাগ পথ..কুয়াশার সাথে মিলে মিশে জোট বেঁধেছে , কিছু দেখতে দেবেনা। ড্রাইভার মাসুদ তবুও দ্রুত চালিয়ে পৌঁছে গেল মাত্র দেড় ঘন্টায় ৭৮ কিলোমিটার পথ।
...বাহ! ডিপার্টমেন্ট থেকে নতুন একটা রেস্ট হাউস করেছে দেখলাম টেকনাফে নাফ নদীর পাড়ে...বেশ মনকাড়া। সামনের পাহাড় থেকে নাকি হাতিও নেমে আসতে পারে। ভাল হলো এর পর থেকে এসে থাকা যাবে। ...
বৃদ্ধসম দুজন কর্মচারীকে সেন্টমার্টিন এর জাহাজে উঠিয়ে দেবার আগেই হাতে সময় থাকায় টেকনাফ সী বীচ থেকে একবার ঢু মেরে এলাম । আগেও গিয়েছি । ছোট বীচ বাট সুন্দর। টেকনাফ টাউন থেকে ৪ কিমি এর মতো দূরত্ব।
সে দুজনকে নামিয়ে দিয়ে জাহাজ ঘাটে ( বন্দরে) ...সাথের আরেকজন টেকনিসিয়ান বলল স্যার চলেন শাহ পরীর দ্বীপ যাই। শুনলাম কাছেই। ...যাই রওয়ানা দিলাম। .ওমা পথ যে আর শেষ ই হয়না। আর রাস্তা তো নয় বন্ধুর ইট বালুর পথ। কোমর যেন গেলো গেলো। .........আধঘন্টা লাগল প্রায় ..১৪/১৫ কিমি পারহয়ে পৌঁছালাম শাহপরীর দ্বীপে। আসলে দ্বীপ নয় কোন , জাস্ট নাম।...পথে বিস্তর লবনের ক্ষেত মন জুড়িয়ে দিল।
ছবিতে যে জেটিটা দেখতে পাচ্ছেন ওটাই শাহ পরীর দ্বীপ। বাংলাদেশের একদম শেষ কর্ণার বলতে পারেন।
টেকনাফের মূল বন্দর জেটি এটাই হওয়ার কথা ছিল । কেন হয়নি , বা রাস্তা পুরো কেন ঠিক হয়নি জানতে পারিনি। ..তবে জার্নির কষ্ট সহ্য করতে পারলে ঘুরে আসতে পারেন। দৃশ্য খারাপ না।
ওখান থেকে আবার সেই এবড়োথেবড়ো পথ পেরিয়ে টেকনাফ এর পাহাড় ছোঁয়া নাফ নদীর তীর ঘেঁষা পথ চিরে কক্সবাজারের দিকে যাত্রা শুরু হলো । পথের একধারে নদীর কাদায় আর অন্য ধারে জঙ্গলের মাঝে অসংখ্য রোহিঙ্গা দের দেখা গেলো নিদারুন মানবেতর জীবন ধারনের দৃশ্য। ...
উখিয়া হতে কক্সবাজার এর দূরত্ব প্রায় ৩০ কিমি। ভাবলাম একটু ঘুরে যাই ইনানী বীচ দেখে। যারা কক্সবাজার ভাল ঘুরেছেন জানেন, হিমছড়ির সামনে দিয়ে মেরিন ড্রাইভ ধরে ১৬/১৭ কিমি গেলে ইনানী নামে এক সুন্দর নতুন বীচ এ যাওয়া যায়। উখিয়া থেকে কোট বাজার এর মধ্যে দিয়ে একটা বাইপাস রোড দিয়েও ইনানী বী চ এ যাওয়া যায়। কিন্তু হয়রে ..ওপথে নেমেই বুঝলাম কি ভুল করেছি। ভয়ংকর ভাষাতীত খারাপ ওই ৮/৯ কিমি রাস্তা। ভুলেও কেউ ওপথে যাবেন না। ইনানী বীচে গেলে মেরিন ড্রাইভ ধরেই যাওয়া বেটার । ওপথে মাত্র ২ কিমি পথ খারাপট । আর্মিরা ঠিক করছে। আর সবটাই অতি সুন্দর রাস্তা।
নিচের ছবিতে যে পাথর দেখতে পাচ্ছের সাগরের বালুর উপর । ওটাই ইনানী বীচ। সুন্দর। সেন্টসার্টিনের একটি অতি ক্ষুদ্রসংসস্করণ বলতে পারেন। যদিও সেন্টমার্টিনের তুলনায় কিছুই না। ...
ইনানী বীচে একটু ঘুরে টুরে আবার সেউ ২ কিমি রাস্তায় কোমর ভেঙে মেরিন ড্রাইভ ধরে ফিরে এলাম কক্সবাজার। .....ভীষন ক্ষুধা আর গায়ে মাথায় ব্যাথা নিয়েও অসাধারন এক ভ্রমন সমৃতিতে আসন গাড়ল।
কপাল খারাপ রাত দশটা পর্যন্ত অফিস করতে হলো ...কিছু টেকনিক্যাল প্রেবিলেম যে হলো বিকেলে আর হই অফিশিয়াল কজন এলো রাতে।
ওহো!। সত্যি বলছি একটু কষ্ট হলেও ঘুরে আসতে পারেন...টেকনাফ , শাহপরীর দ্বীপ, ইনানী বীচ কিংবা টেকনাফ সী বীচ। ভাল লাগতেও পারে মনোটোনাস জীবনে।
হয়তো কোন একদিন যাতায়াতের এই কষ্টও কমবে। আমরা আশাবাদী।
ছবিঃ
নিচের ছবিতে ....1ম ও 4র্থটা-- ইনানী বীচ
2য় ও 3য়টা-শাহপরীর দ্্বীপ
সর্বশেষ এডিট : ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০০৬ রাত ৩:৩৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



