আজ হ্যালুয়িন, ক্যানাডা জীবন যাপনের প্রথম বছর হঠাৎ সেপ্টেম্বরের শেষে দোকান গুলো ভুত, কঙ্কাল, আর নানারকম ভৌতিক সরঞ্জামে সেজে উঠতে দেখে ভিষণ অবাক হয়ে যাই। কাটা হাত পা, ঠিকরে বেরিয়ে আসা চোখ,রক্তমাখা। দোকানে সাজিয়ে রাখা ভৌতিক বস্তু গুলো হঠাৎ হঠাৎ কথা বলে উঠে, ভয়ঙ্কর শব্দে পিলে কাঁপিয়ে দেয়। অথবা চোখ ঘুরিয়ে তাকায়,লাফিয়ে উঠে বা হিঁ হিঁ হিঁ হেসে উঠে। যদিও জানি সবই তৈরী সরঞ্জাম তবু গা সিরসির করে ওঠে ভয়ে। দোকান না মনে হয় যেন হন্টেট হাউসে ঢুকে পরেছি। এসব দিয়ে সুরু হয় বাড়ি সাজানোর। নিজেস্ব সামর্থের মধ্যে সবাই সাজায় বাড়ি হ্যালুয়িন উৎসবের জন্য। অক্টোবরের একত্রিস প্রতিবছর পালিত হয় হ্যালুয়িন উৎসব।
অশুভ আত্মা যাতে ক্ষতি করতে না পারে মানুষের। এজন্য শীত শুরুর ঠিক আগে প্রেতদের ভোজ, পূজা সব দেয়া হয়। হ্যালুয়ীনের ক’দিন আগে থেকে বাড়ি গুলো সাজানো হয় প্রেতপুরীর মতন। ভুত,প্রেত, রক্ত, পুরানো মাকড়শার জাল, মাকড়শা, কঙ্কাল, চামচিকা, জ্যাকলন্ঠন, পামকিন, ভৌতিক শব্দ ইত্যাদি দিয়ে সাধ্যমতন যথা সম্ভব ভীতিকর করে সবাই বাড়িগুলো সাজায়। হ্যালুয়িনের রঙ কমলা কালো। ‘‘ট্রিক ওর ট্রিট’’ হ্যালুয়িনের প্রচলিত শব্দ। এদিন সন্ধ্যায় বাচ্চারা নানারকম ভুত প্রেত সেজে বাড়ি বাড়ি যায়। হাঁক দেয় ’ট্রিক ওর ট্রিট’ দরজা খোলাই থাকে বাড়িগুলোর, নানা রকম চকোলেট দিয়ে ভরে দেয়া হয় বাচ্চাদের হাতের ব্যাগ। বাড়ি বাড়ি ঘুরে বোঝাই চকোলেট ব্যাগ বয়ে খুশি মনে বাচ্চারা বাড়ি ফেরে।
প্রথম যারা জাহাজে ভাসতে ভাসতে এসে ক্যানাডায় জীবনযাত্রা শুরু করে। ইংলেন্ড থেকে বিতারিত পাইরেটস শ্রেণীর লোকরাই তার মধ্যে বেশী। সে সময় প্রচণ্ড শীতে যখন প্রচুর মানুষ মারা যেত। এত বেশী মৃত্যুকে প্রচীনকালের মানুষরা অশুভ ভৌতিক কারণ হিসাবে ভাবত আর ভুত-পিশাচদের তুষ্ট করার জন্য, রোমান সেল্টিক কাল্চারের অনুসরনে আত্মার শান্তিদিনের প্রার্থনা শুরু হয় এই দিনে।
বাড়ির বাইরে খাবার দিয়ে রাখা হতো অশুভ আত্মাদের খুশি করতে । শীতকালে শীতের প্রকোপ থেকে যেন বাঁচে, সুস্থ সবল থাকে। পিশাচরা টেনে না নেয় মৃত্যুর কোলে তার জন্য শীতের আগে শুরু হয় র্প্রাথনা। আগুনের প্রতিক হিসাবে পামকিন আর ভয় অশুভ, অন্ধকারের প্রতিক ধারন করে কালো রঙ।
পৌরানিক সেই ধারার প্রচলন আজ চকোলেটের ট্রিটে এসে ঠেকেছে।
নানান রকম মানুষের বাস এখন ক্যানাডায়। জীবন যাপন তাই সব সময় নিরাপদ নয়। শিশুরা যেন নিরাপদ থাকে হ্যালুয়িনের সন্ধ্যায় তার জন্য সতর্ক ব্যবস্থা নেয়, শহরের পুলিশ বিভাগ আর নিরাপদ ভাবে চলার র্নিদেশনা দিতে থাকে রেডিও টেলিভিশন আগের ক’দিন থেকে। বাচ্চাদের সাথে অভিভাবকও হাঁটে বাড়ি বাড়ি।
দেশে যেমন পুজায় অংশ নেয়ার জন্য ব্যাস্ত থাকতাম এখানে তেমনি জীবনের সংস্কৃতিতে সংযোজিত হয়েছে অবাক হয়ে দেখা হ্যালুয়িন দিবস।
হ্যালুয়িন সম্র্পকিত ......................Roxy Lais
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর
আলোচিত ব্লগ
৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…
১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন
ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)
ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন
'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'
নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন
বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ
আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন
ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা
গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন