শহীদুল ইসলাম প্রামানিক
হঠাৎ করেই নতুন জামাই
এলো শ্বশুর বাড়ি
শ্বশুর মশাই হাটের দিকে
গেলেন তাড়াতাড়ি।
শ্বাশুড়ি তো জামাই পাগোল
কি দিয়ে কি করে
ভাত রেঁধেছে অনেকগুলো
তরকারী নাই ঘরে।
রাস্তার দিকে চেয়ে চেয়ে
দিনটা হলো পার
সন্ধার পরে ফিরলো শ্বশুর
মুখটা করে ভার।
শ্বাশুড়ির তো চিল্লাচিল্লি
লজ্জা পাওয়ার দশা
শ্বশুর মশায় ঠান্ডা মাথায়
পিঁড়ার উপর বসা।
শ্বশুর হলো কৃপণ মানুষ
হোক না নতুন জামাই
বিনা কারণে খরচ করে না
যতই হোক না কামাই।
ডাক দিয়ে কয়, “কাঁদিস নে বউ
মুখ করিস না কালো
এই গ্রামে সবার চেয়ে
জামাই খাওয়াবো ভালো”।
এই না বলে ঘরের বাইরে
করছে ডাকাডাকি
“জামাই বাবা আছেন কেমন?”
বলছে থাকি থাকি।
“অসময়ে এলেন জামাই”
বললেন বাড়ির কর্তা
“কি দিয়া ভাত খবেন জামাই
চেংটি মাছের ভর্তা”।
জামাই বাবুও বড়ই ত্যাদর
বলল রুষি রুষি,
“ভয় করবেন না নতুন জামাই
তাতেই আমি খুশি”।
যেমন শ্বশুর তেমন জামাই
শুয়ে থাকল ঘরে
চেংটি মাছের ভর্তা খেয়েই
রইল সাত দিন পড়ে।
জামাই বাবু চিন্তা করে
শ্বশুর কিপ্টে বটে
যাচ্ছি নাকো মুরগী ছাড়া
কপালে যা ঘটে।
শ্বশুর মশাই ভাবছে বসে
কেমনে তাড়াই তাকে
চেংটি মাছের ভর্তা খেয়ে
কয়দিন যে থাকে?
ঝামটা মেরে বলছে গিন্নি,
“গেল না আর পারা
জামাই বেটা যাবে নাকো
মুরগীর মাংস ছাড়া”।
শ্বাশুড়ি তো মহাখুশি
মুরগী একটা ধরে
অর্ধেক মুরগী দিলেন ঢেলে
জামাইর পাতটা ভরে।
শ্বশুর মশাইয়ের কিপ্টামীতে
ধরলেন জামাই আড়ি
মুরগীর মাংস খাওয়ার পরে
তবেই ছাড়লেন বাড়ি।
(টাকি মাছের আরেক প্রজাতি রাগা বা চ্যাংকে উত্তরাঞ্চলে চেংটি মাছ বলে। উত্তরাঞ্চলে ছোট ছোট টাকি মাছকেও চেংটি মাছ বলে। )
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৫৪