somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভাসানীর জীবনে মজার কাহিনী

১৭ ই নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ১:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

*** হিন্দু বাড়িতে আল্লাহ ***
১৯৪৭ সালে হিন্দুস্থান পাকিস্থান ভাগাভাগি হয়েছে। মওলানা ভাসানী গেছেন টাঙ্গাইলের কৈজুরীর জমিদার গোপেশ্বর সাহা রায় চৌধুরীর বাড়ি। জমিদার গোপেশ্বর রায় প্রজা বৎসল ছিলেন। গরীব-দুঃখীর সাহয্য ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে আলোপ আলোচনা করছিলেন। মাগরিবের সময় হলে তিনি গোপেশ্বর রায় চৌধুরীর কাছে নামাযের জায়গা চাইলেন। গোপেশ্বর বাবু হেসে বললেন, “হিন্দু বাড়িতে নামায পড়লে নামায হবে কী মওলানা সাহেব”?
গোপেশ্বর বাবুর কথা শুনে মওলানা সাহেবও হেসে জবাব দিলেন, “আল্লাহ সব জায়গায় বিরাজমান, তবে কি হিন্দু বাড়িতে থাকে না?”
মওলানার জবাব শুনে গোপেশ্বর বাবু থ’ হয়ে গেলেন, উচ্চারণ করে বললেন, “হুজুর, আপনার মত উদার মনের মানুষ যদি সবাই হতো তাহলে কেউ সম্প্রদায়িকতার আগুনে জ্বলতো না।”

*** মওলানার পানি পড়া ***
মওলানা ভাসানীর পানি পড়ার খুব সুনাম ছিল। অনেকের বিশ্বাস তাঁর পানি পড়া, তেল পড়া, কালিজিরা পড়া, ঝাড় ফুকের বেশুমার বরকত। এই জন্য অনেকেই তার পানি পড়া নেয়ার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়তো।

একবার মওলানা সাহেব এক বাড়িতে রাতে ছিলেন এবং ভোরে উঠেই সেখান থেকে চলে যান। সকাল বেলা পানি পড়ার জন্য লোকজন এসে ভিড় করতে লাগল। কিন্তু মওলানা তো নেই। ঐ বাড়ির একজন রসিকতা করে বলল, এই ইন্দারায় মওলানা সাহেব এক গ্লাস পানি পড়ে ঢেলে দিয়ে গেছে। এখান থেকে পানি নিয়ে খেলেই কাজ হবে। যেই না বলা অমনি সবাই ইন্দারার পানি তুলে নেয়া শুরু করল। কিছুক্ষণের মধ্যেই ইন্দারার পানি শুকিয়ে তলায় কাদা বের হলো। লোকজন কাদাও তুলে নিতে লাগল। বাড়িওয়ালা অবস্থা বেগতিক দেখে হাত জোড় করে কাকুতি মিনতি করতে লাগল, দোহাই আল্লাহর, আপনাদের হাত পা ধরে অনুরোধ করি, আমার ইন্দারা রক্ষা করেন। এভাবে কাদা উঠালে আমার ইন্দারা ভেঙে যাবে।

*** হুজুরের জ্বীন ***
একবার যমুনা নদীর পাড়ের অদূরে মওলানা ভাসানীর আগমনে ইসলামী অনুষ্ঠানের আয়োজন চলছিল। সেই অনুষ্ঠানে খাওয়া দাওয়ার আয়োজনও ছিল। রান্নার চাল, ডাল, লবন, মসলা যোগাড় হলেও মরিচের অভাবে বাবুর্চিরা রান্না শুরু করতে পারছিল না। এই খবরটি মওলানার কাছে দেয়া হলে তিনি উপস্থিত কয়েকজনকে লক্ষ্য করে বললেন, দেখ তো-- নদীর ঘাটে মরিচের নৌকা দেখা যায় কিনা।
লোকজন দৌড়ে নদীর ঘাটে গিয়ে দেখে সত্যিই নৌকা বোঝাই মরিচ নিয়ে কয়েকজন ঘাটে ভিড়তেছে।
এই ঘটনায় মুহুর্তেই পুরো এলাকায় খবর রটে গেল যে, হুজুরের সাথে জ্বীন আছে। জ্বীনেরা হুজুরের কথামত অনেক কিছু যোগাড় করে দেয়।

*** গরীবের রসগোল্লা ***
একবার মওলানা সাহেব আসামের ঘাগমারীতে ঘোড়ায় চড়ে বাজারে যাচ্ছিলেন। বাজারের কাছাকাছি এলে একজন খবর দিলেন, হুজুর আপনার অমুক মুরীদ খুব অসুস্থ্য, মরে মরে অবস্থা। মওলানা তৎক্ষনাৎ ঘোড়া নিয়ে সেই মুরীদের বাড়ি গেলেন। রোগী মৃত্যু যন্ত্রনায় ছটফট করছে। তিনি এক গ্লাস পানি নিয়ে ফু’ দিয়ে রোগীর মুখের সামনে ধরে বললেন, তুমি কি খাবা?
রোগী কাতর কণ্ঠে জবাব দিল, রসগোল্লা হুজুর।
মওলানা সাহেব বাজার থেকে দু’টি রসগোল্লা আনালেন। একটি রসগোল্লার অর্ধেক খাওয়ার পরেই রোগী আর খেতে পারল না, একটু পরেই মারা গেল।
কোন এক জনসভায় ভাসানী দরিদ্র কৃষকদের দুর্দশার কথা বলতে গিয়ে এই ঘটনার উল্লেখ করে বলেছিলেন, দেশে এমন অনেক কৃষক আছে যারা পথে ঘাটে রসগোল্লা দেখেছে কিন্তু জীবনে পুরো একটি রসগোল্লা খেয়ে মরার সৌভাগ্য হয় নাই।

(বিভিন্ন সংকলন থেকে সংগৃহীত)
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই নভেম্বর, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৫২
২৮টি মন্তব্য ২৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×