Click This Link
ডিভাইসসহ আমার ছোট ছেলে ও ডাক্তারের ছবি (ছবি সামুতে পোষ্ট করতে না পারায় ফেসবুকে লিঙ্ক দিলাম)
গতমাসে গিয়েছিলাম ফরিদপুর নগরকান্দা থানার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে একজন গ্রাম্য ডাক্তারের কাছে। তার চিকিৎসা পদ্ধতি দেখে আশ্চার্যই হলাম।
ঢাকা থেকে খুব সকালেই রওনা হয়েছিলাম। সাথে নিয়েছিলাম আমার ছোট ছেলেকে। ডাক্তারের বাড়ি যখন পৌঁছি তখন প্রায় সাড়ে বারোটা বাজে। শুক্রবারে ডাক্তার একটার পড়ে রুগি দেখেন না। গিয়ে দেখি তখনও অনেক রুগি বসে আছে। রুগির সিরিয়াল অনুযায়ীে একটার আগে আমার পক্ষে ডাক্তার দেখানো সম্ভব হবে না। সিরিয়াল দিচ্ছেন একজন বুড়ো চাচা। চাচা বড়ই কঠিন লোক, সিরিয়াল ভঙ্গ করে কাউকেই ডাক্তারের চেম্বারে ঢুকতে দেন না। তবে ঢাকা থেকে গিয়েছি এমন কথায় অন্য রুগি বসিয়ে রেখে সিরিয়াল চাচা আমাকে একটার আগেই সিরিয়াল দিয়ে দিলেন।
ডাক্তারের কাছে বসতেই ডান হাতে একটি এলেক্ট্রনিক্স ডান্ডা ধরিয়ে দিলেন এবং পায়ের তলায় আরেকটা ডান্ডা চেপে ধরতে বললেন। টুকটুক শব্দ করে আমার বডি স্ক্যান হতে লাগল। একটা সময় শব্দ বন্ধ হলো।
স্ক্যান শেষে ডাক্তার আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনার কি কি সমস্যা?
আমি চিন্তা করলাম, আমি যদি সব বলে দেই উনি স্ক্যান করে কি পেলেন সেটা কি করে বুঝবো। একটু চালাকি করে বললাম, আমার সমস্যা যা আছে তা পরে বলবো আপনি কি কি সমস্যা পেলেন সেইটা বলেন।
আমার কথা শুনে, ডাক্তার গণক ঠাকুরের মত কিছু কথা বললেন। আমার যেসব বর্ননা দিলেন তাতে আমার শরীরের সমস্যার সাথে মিলে গেল। তার কথা শুনে কিছুটা আশ্চর্যই হলাম। আশ্চার্য হওয়ার কারণ হলো-- যাওয়ার আগের দিন আমি লিপিড প্রফাইল এবং ডায়াবেটিস টেস্ট করেই গিয়েছিলাম। সেসব বর্ননা ঠিক ঠিক মিলে গেল।
আরো আশ্চার্য হলাম যখন তিনি বললেন আপনার বাম হাঁটুতে তো সমস্যা দেখতেছি। আমি গিয়েছিলাম মূলত হাঁটুর ব্যাথার কারণেই। নিজের থেকেই আমার সমস্যাগুলো বলায় তার প্রতি আমার শ্রদ্ধা বেড়ে গেল। রোগ নির্নয় করে ঔষধ পত্রও ভালই নির্বাচন করেন। দুই নম্বর কোম্পানির ঔষধ লিখতে দেখলাম না, সব নামিদামি কোম্পানির ঔষধ প্রেস্ক্রিপশনে লিখেছেন।
অনেককে জিজ্ঞেস করে জানলাম, তার চিকিৎসায় প্রচুর রুগি সুস্থ্য হয়েছেন। যে কারণে এখন অনেক দূর দূর থেকে রুগি আসে। অত্র এলাকায় তার নাম ডাকও মন্দ নয়। ফরিদপুর জেলার, নগরকান্দা থানার জয়বাংলা মোড়ে নেমে যে কোন রিক্সাওয়ালাকে ডাক্তার বাড়ি যাবো বললেই চোখ বন্ধ করে নিয়ে যায়।
গ্রামে যখন এমবিবিএস ডাক্তাররা যেতে অনীহা প্রকাশ করে তখন এই ডিভাইসসহ কিছু অভিজ্ঞ ডাক্তারদের সারা বাংলাদেশেই বসানো উচিৎ। তাতে অন্তত হাসপাতালগুলোর উপর থেকে চাপ কমে যাবে।
(অনেকেই হয়তো ভুল বুঝতে পারেন যে এখানে ডাক্তারের কেরামতি আছে, না ভাই এখানে ডাক্তারের কোন কেরামতি নাই কেরামতি হলো বডি স্ক্যান করা ঐ মেশিনের, বডি স্ক্যানের পর কম্পিউটারে যে রেজাল্ট আসে সেই অনুযায়ী ডাক্তার ঔষধ নির্ধারণ করে। তবে ঔষধ সম্পর্কে অবশ্যই ডাক্তারের অভিজ্ঞতার প্রয়োজন আছে।)
মেশিনটির নাম না জানায় আজব মেশিন নাম দিয়েছি সম্ভাবত মেশিনটির নাম বডি এনালাইজার জাতিয় কিছু একটা হবে।