অধিকার আদায়ের একমাত্র পথ-আন্দোলন। কখনো এটি অহিংস, আবার কখনো সহিংস পন্থায় এগোয়। পৃথিবীর ইতিহাসে আন্দোলন ছাড়া কখনো অধিকার আদায় সম্ভব হয়নি। মানবসমাজের সত্যিকার বিকাশের আগ পর্যন্ত তা হবেও না। ঢাকা শহরে পোশাকশ্রমিকরা কয়েক মাস যাবৎ ‘ন্যূনতম বেতন পাঁচ হাজার টাকা’সহ ১৪ দফা দাবিতে লাগাতার আন্দোলন করে যাচ্ছেন। কেবল বেতন বৃদ্ধি নয়, এ আন্দোলন তাঁদের অস্তিত্ব রক্ষার আন্দোলন-বেঁচে থাকার আন্দোলন। পোশাকশিল্পকে ধ্বংস করার চক্রান্ত বলে অনেকে এর অবতরণিকা করেন। কেবল চক্রান্ত বাস্তবায়নের জন্য লাখ লাখ শ্রমিক রাজপথে নির্যাতিত হতে পারেন, পঙ্গুত্ব মেনে নেন, জেল খাটেন, চাকরি হারান, মৃত্যুবরণ করেন-কোনো স্বাভাবিক বুদ্ধিসম্পন্ন মানুষ তা বিশ্বাস করতে পারেন না। বাংলাদেশে শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মান দক্ষিণ এশিয়ায় নিম্নতম ও সবচেয়ে দুর্দশাগ্রস্ত। পোশাকশ্রমিকের ন্যূনতম বেতন এখানে মাত্র এক হাজার ৬৬২ টাকা। ঢাকা শহরে তো নয়ই বাংলাদেশের কোনো অঞ্চলে নিম্নতম মানে জীবনধারণের জন্য এ বেতন পর্যাপ্ত নয়। ১৯৭৩ সালে সরকার শ্রমিকদের ন্যূনতম বেতন নির্ধারণ করে ১৫৫ টাকা। সেই হিসেবে আজ ন্যূনতম মজুরি দাঁড়ায় তিন হাজার টাকারও বেশি। ৪০ বছরে মানুষের আয়-উন্নতি কেবল কমেছে বৈ বাড়েনি। জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে ভয়ঙ্কর হারে, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য, খাদ্য, চিকিৎসা, শিক্ষা, বস্ত্রসহ দৈনন্দিন বিভিন্ন ব্যয় দেশের ৮০ ভাগ মানুষের নাগালের বাইরে, মুদ্রাস্ফীতির হার বেড়েছে চরম পর্যায়ে। পরিসংখ্যান ব্যুরো বলছে, ১৯৯৯ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত শ্রমিকের প্রকৃত মজুরি বেড়েছে ২৪ ভাগ। পক্ষান্তরে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে ৯৪ ভাগ। শ্রমিকের পক্ষে এ অবস্থায় কীভাবে এত নগণ্য বেতনে টিকে থাকা সম্ভব?
তা ছাড়া মাসের পর মাস বেতন, ওভারটাইম, বোনাস, ছুটি না দিয়ে দৈনিক ১২ থেকে ১৮ ঘণ্টা কাজ করানো হয় কারখানাগুলোতে, বোনাস দেওয়ার সময় হলেই বিনা নোটিশে বন্ধ ঘোষণা করা হয় মিলগুলো, নারীশ্রমিকের ওপর চলে নির্যাতন, নারীশ্রমিকের বেতন পুরুষ শ্রমিকের তুলনায় কম, মাতৃত্বকালীন ছুটি চাইতে গেলে চাকরিচ্যুত করার ভয় দেখানো হয়, ২০ থেকে ২৫ বছর কাজ করার পর তুচ্ছ ভুলের কারণে চাকরিচ্যুত করে পেনশনের অর্থ মেরে দেওয়া হয়, প্রতিবছর কারখানায় আগুনে পুড়ে হাজার হাজার শ্রমিক মারা গেলেও দুর্ঘটনা এড়াতে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় না, দুর্ঘটনায় আহতদের দেখভালসহ বা কোনো দায়িত্ব নেওয়া হয় না, কারখানাগুলোর পয়ঃনিষ্কাশনব্যবস্থা অত্যন্ত নাজুক, মালিকদের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের চিত্তবিনোদনের জন্য কোনো উদ্যোগ নেই, দাবি আদায়ে সোচ্চার হলে নেতাদের গুম করা হয়, মারধর করা, জেলে পোরা কিংবা চাকরিচ্যুত করা হয়, শ্রমিকসংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ করার চেষ্টাও ভেতরে ভেতরে চলে।
ঢাকা শহরের শ্রমিক অঞ্চলগুলোতে, কারখানাগুলোতে এ রকম নানা বঞ্চনার কারণে পুঞ্জীভূত ক্ষোভ-বিক্ষোভে রূপান্তরিত হয়েছে। কিন্তু কারা শ্রমিকদের জীবন বিপন্ন করছে, তাদের কী লাভ, তারা কোন শ্রেণী অথবা বাংলাদেশে তাদের স্বরূপ কী-ভাবলেই অাঁতকে উঠতে হয়। গোটা দেশের যারা বারোটা বাজাচ্ছে, শ্রমজীবী-মেহনতি মানুষকে যারা নিয়ত নির্যাতন করছে তারা হলো শাসকশ্রেণী ও ধনিক ব্যবসায়ী গোষ্ঠী। প্রকৃতপক্ষে বর্তমানে শাসকশ্রেণী ও ধনিক ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর মধ্যে কোনো ভেদ টানা যায় না। বাংলাদেশের শিল্পমালিকদের একটি বড় অংশই স্বাধীনতা-উত্তর আওয়ামী-বাকশালসহ বিভিন্ন সরকারের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ মদদে কোটি কোটি টাকার রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটপাট করে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ পাচার করে, শিল্পকারখানা হরিলুট করে আঙুল ফুলে কলাগাছ তো কম, কলার বাগানে পরিণত হয়েছে। পরবর্তীতে এরাই মুনাফার লোভে শ্রমিকদের শ্রমশক্তি চিবিয়ে, তাঁদের জীবনীশক্তি ধ্বংস করে দেশের কর্ণধার বনে যায়। আওয়ামী-বাকশাল সরকারের জরুরি আইন জারি থাকার সময় ঢালাওভাবে সব ট্রেড ইউনিয়ন কার্যকলাপ নিষিদ্ধ করা হয়। এরপর সামরিক ছায়ায় গড়া প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সরকার ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রমে ভীষণ বাধার সৃষ্টি করেন। আগের পদাঙ্ক অনুসরণ করেছেন এরশাদ, খালেদা ও হাসিনার সরকার। ভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন হওয়া সত্ত্বেও তাদের ভূমিকাই বলে দেয় এরা সবাই একই শ্রেণীভুক্ত এবং সেই শ্রেণীর স্বার্থে শ্রমজীবী শ্রেণীর বিরুদ্ধে নিয়ত কাজ করে। এই বিশেষ শ্রেণীটিই জাতীয় সম্পদ পাচার করছে, ভূমি-নদী-খাল-বিল-সরকারি জমি-পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ের পর পাহাড় দখল করছে, বনের পর বন উজাড় করছে, টেন্ডারবাজি করছে, বাংলাদেশের নাগরিক হয়েও বিদেশীদের দাসত্বমূলক প্রতিনিধিত্ব করছে। এ দেশের বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানিসহ জনজীবনের প্রয়োজনীয় নানা খাতে যে ঘাটতি বিদ্যমান তার জন্য মূলত দায়ী ব্যবসায়ী ও সরকার মিলে এই শোষকশ্রেণী। কোটি কোটি টাকার বিদ্যুৎ বিল-গ্যাস বিল- পানির বিল-টেলিফোন বিল-আয়কর-ব্যাংকঋণ ফাঁকি দিয়ে বাংলাদেশকে এরা আখের ছোবড়া বানিয়ে ছাড়ছে। জোচ্চুরি নামটি থেকে বাঁচতে এসব চুরির নাম দিয়েছে ‘সিস্টেম লস’। অবাক লাগে এরাই জাতিকে নেতৃত্ব দেয়, অভিভাবক বনে যায়, জাতির সুখ ও সমৃদ্ধির পরিকল্পনা করে।
শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর দাবি বহু বছরের। বেতন বাড়ানোর জন্য এ দেশে প্রত্যেকবারই শ্রমিকদের রাজপথে নামতে হয়েছে, হত্যা-নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। যতবারই বেতন বাড়ানোর দাবি করা হয়েছে ততবারই মালিকপক্ষ পোশাকশিল্প ধ্বংস হওয়ার ভয় দেখিয়েছে। কিন্তু প্রায় সব শিল্পমালিকের কারখানার সংখ্যা বেড়েছে প্রতিবছর। আন্দোলন দানা বাঁধলে শিল্পমালিক ও সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিবারই বলা হয় ‘এটি কোনো অশুভ শক্তির চক্রান্ত’, ‘অরাজকতা সৃষ্টিতে বাইরের শক্তির হাত আছে যারা বাংলাদেশের উন্নতির বিপক্ষে’, ‘বাংলাদেশের শ্রমিকরা অতটা উচ্ছৃঙ্খল নয় যে তারা ভাঙচুরের মতো কাজ করতে পারে; এটি নিশ্চয়ই বহিরাগতদের কাজ’। এ জাতীয় নানা ধরনের মুখস্থ, ভাঁওতাবাজিপূর্ণ কথা শুনলে মনে হয় কারখানাগুলোতে শ্রমিকরা যেন জান্নাতে আছেন, মহাসুখে চাকরি করছেন। তাঁদের পক্ষে আন্দোলন করা অসম্ভব। বর্তমানে দক্ষিণ এশিয়ার কোনো দেশে ন্যূনতম বেতন চার হাজার টাকার নিচে নেই। যেই ভারতকে সরকার তাদের অভিভাবকের স্থানে ঠাঁই দিয়েছে, তাদের দেশেও ন্যূনতম বেতন চার হাজার ৫০০ টাকা। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা খাওয়া-দাওয়া, বাসাভাড়া, যাতায়াত ও শিক্ষাব্যয়সহ আনুষঙ্গিক খরচ মিলে মাসে জনপ্রতি ৫০০০-৭০০০ টাকা ব্যয় করেন। একজন শ্রমিক তবে কীভাবে এক হাজার ৬৬২ টাকা দিয়ে তাঁর পরিবার-সন্তান-সন্ততিদের ভরণপোষণ করবেন, শিক্ষার ব্যবস্থা করবেন, খাদ্যের বন্দোবস্ত করবেন তা বুঝতে দার্শনিক হতে হয় না।
বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের অবস্থাও শ্রমিকদের চেয়ে খুব ভালো বলা যাবে না। শিক্ষাব্যয় বৃদ্ধির মাধ্যমে, শিক্ষাকে বাণিজ্যিকীকরণের মাধ্যমে সাধারণ মধ্যবিত্ত, গরিব-শ্রমিক-মেহনতি মানুষের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার পাঁয়তারা চলছে। শিক্ষাকে ব্যবহার করা হচ্ছে বাণিজ্যের হাতিয়ার হিসেবে। বাণিজ্যের নিয়মই হলো অল্প খরচে অধিক মুনাফা। তাই শিক্ষাকে যত কম খরচে, ন্যূনতম মানে প্রদান করে অধিক মুনাফা অর্জন করা যায় সেই চেষ্টাই চলছে। ব্যবসায়ী শ্রেণীটিই শিক্ষাকে বাণিজ্যে রূপান্তর ঘটানোর প্রধান ভূমিকা পালন করছে। বর্তমানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ভর্তি ফি, মাসিক বেতন, ফরমের মূল্য ইত্যাদির লাগামহীন যথেচ্ছ বৃদ্ধি তারই প্রামাণ্য দলিল। বর্তমানে একজন অভিভাবক ভালো একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াতে মাসে ন্যূনতম ১০ হাজার টাকা ব্যয় করেন। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে ভর্তি ফি এবং বেতন গড়ে যথাক্রমে ১০০০০-১৫০০০ টাকা এবং ১৫০০-২০০০ টাকা। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পাঁচ ভাগ মানুষ এই ব্যয় বহন করতে সক্ষম। প্রতিবছর কর বাড়ছে, করের আওতা বাড়ছে, নতুন নতুন দ্রব্যের ওপর করারোপ করা হচ্ছে। সাধারণ মানুষের এই করের টাকায় সরকার তাহলে কী করে? প্রহসনটা এখানেই যে, প্রতিবছর বাজেটে শিক্ষায় বরাদ্দ থাকে সর্বোচ্চ এবং তা বছর বছর বাড়ে। আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বেতন-ভর্তি ফি প্রতিবছর বেড়েই চলেছে। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর অবকাঠামোগত অবস্থাও নাজুক। কেবল সরকারি প্রাইমারি বিদ্যালয়গুলোর দিকে তাকালেই এর কিয়ৎ বোঝা যাবে। তাহলে শিক্ষা বাজেটের এত বড় বরাদ্দ কোথায় যায়? নিরেট কোনো বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থেকে সাধারণ মানুষ খুব কমই সেবা পায়। বিভিনণ প্রতিষ্ঠান যেমন সরকারি হাসপাতাল, প্রাইভেট ক্লিনিক, সাধারণ রেস্টুরেন্ট, পাঁচতারকা রেস্টুরেন্ট, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলা মিডিয়াম ও ইংরেজি মিডিয়াম স্কুলে সাধারণ মানুষের সেবা পাওয়ার পার্থক্য থেকেই পষ্ট বোঝা যায়। বুদ্ধিজীবীদের বলতে শুনি বাণিজ্যিকীকরণ বা বেসরকারিকরণ উন্নয়নের পূর্বশর্ত। এটি একটি ডাহা মিথ্যা কথা, ভুয়া বুলি। মানুষের অস্তিত্বের সঙ্গে জড়িত বিষয়গুলো নিয়ে বাণিজ্য করা চলে না। একটি স্বাধীন দেশে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও কেন ৮০ ভাগ মানুষ শিক্ষা, খাদ্য, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, বস্ত্র ইত্যাদি থেকে চরমভাবে বঞ্চিত হবে? কেউ কেউ ক্যান্সার হলেও অর্থের অভাবে, চিকিৎসার অভাবে মারা যান, কেউ কেউ সামান্য জ্বর হলেই সিঙ্গাপুর চলে যান চিকিৎসার জন্য। প্রতিদিন সরকারপক্ষের রাজনীতিক-ব্যবসায়ীরা বলছেন বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় বাড়ছে। তাহলে কেন প্রতিদিন রাস্তায় রাতযাপন করা, অনাহারে-অর্ধাহারে থাকা সর্বহারা মানুষের সংখ্যা বাড়ছে? অর্থনীতির সাধারণ সূত্রে একে ব্যাখ্যা করা যায় না। গুটিকয়েক মানুষ কোটি কোটি টাকা লুটপাট করছে এবং কোটি কোটি মানুষ না খেতে পেয়ে মারা যাচ্ছে। শিক্ষা, খাদ্য, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা-নির্বিশেষে সব কিছুর বাণিজ্যিকীকরণ বা বেসরকারিকরণের মাধ্যমে উন্নয়নের চিত্র এটাই। শাসকশ্রেণী এভাবেই জাতিকে শুভঙ্করের ফাঁকি দিয়ে যাচ্ছে।
সরকার বা শাসকশ্রেণী, ব্যবসায়ী, সুশীল সমাজ নামে ভিন্ন হলেও চরিত্রগত দিক থেকে এদের ভূমিকা একই এবং তা জনবিরোধী-জনবিধ্বংসী। বর্তমান বিশ্বব্যবস্থা মুনাফার আক্রোশে বিশ্বায়ন, বৈশ্বিক নগর, বেসরকারিকরণ ইত্যাদি মনভোলানো নামে পৃথিবীকে এবং মানুষকে ধ্বংস করার খেলায় মত্ত। করপোরেট বিশ্ব তার মুনাফার স্বার্থে, সাম্রাজ্য বিস্তারের স্বার্থে আমাদের মতো দেশের অভিভাবকদের কিনে ফেলে বা মগজে ভাইরাস ঢুকিয়ে দেয় যেন তারা গতরে স্বদেশী হলেও মননে-চিন্তায় বিদেশীদের হয়ে তাদের স্বার্থে কাজ করতে পারে। ফলে আমাদের দেশের সরকার, ব্যবসায়ী শ্রেণী, সুশীল সমাজ অর্থাৎ শাসকশ্রেণী আদতে দেশের প্রতিনিধিত্ব করে না বরঞ্চ সাম্রাজ্যবাদের স্বার্থে কাজ করে, দেশ ধ্বংসের পাঁয়তারা করে। এই শাসকশ্রেণীই একদিকে পোশাকশ্রমিকদের হত্যা-নির্যাতন-নিপীড়ন করছে অন্যদিকে শিক্ষার অধিকার হনন করে শিক্ষার্থীদের জীবন অাঁস্তাকুড়ে নিক্ষেপ করছে। তাই পোশাকশ্রমিকদের এ আন্দোলন কেবল অর্থনীতিবাদী আন্দোলন নয়, এর গহিনে লুকিয়ে আছে শ্রেণীশোষণ-শ্রেণীবৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম। তথা শাসকশ্রেণীকে উৎখাত করার চেতনা।
আজ পোশাকশ্রমিকদের আন্দোলনে শামিল হতে হবে সব শিক্ষার্থী সমাজকে। কারণ তাঁরাই সমাজের শক্তিশালী, পিছুটানহীন, যোগ্য অংশ। যুগে যুগে তরুণ শিক্ষার্থীরাই দেশ-জাতিকে পথ দেখিয়েছে, রক্ত দিয়েছে। শিক্ষার্থীদের ভাবতে হবে তাঁদের মৌনতা কার পক্ষে অবস্থান নেয়; সাধারণ মানুষ নাকি শোষকশ্রেণীর পক্ষে। তাঁদের শিক্ষা অর্জন কি সমাজ-স্বজন-জাতির সমৃদ্ধি নাকি গুটিকয় মানুষ আর দেশ ধ্বংসের জন্য। দেশের লাখ লাখ মানুষ তরুণদের দিকে তাকিয়ে আছে। তাই সাধারণ মানুষ, পোশাকশ্রমিক, শিক্ষার্থী সমাজকে শত্রুশ্রেণী এবং তাদের সব অপকর্মের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে হবে একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। ইতিহাসের কাছে, সমাজের কাছে শিক্ষার্থীদের আজ এই দায়।
সূত্র: সাপ্তাহিক বুধবার
লেখক: রহমান শিহান
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০১০ রাত ৯:০৩