আজ থেকে প্রায় ২৫ দিন আগে আমার এক ব্লগে লিখেছিলাম যদি কোনভাবে এই আন্দোলনকে নাস্তিক বিরোধী কিংবা ধর্মীয় দিকে ডাইভার্ট করানো যায় তবে সেই আন্দোলন আমাদের সরকারের কিংবা বিরোধী দলের কিংবা এই দুই দল একত্রিত হয়েও সামাল দেবার ক্ষমতা রাখেনা। এও বলেছিলাম ক্ষমতা পিপাসুদের সাথে আতাত করে কোন আন্দোলন সফল করা যাবেনা। হোক সে সরকারী দল কিংবা বিরোধী দল। যতক্ষন পর্যন্ত শাহবাগ সরকার দলীয়দের ডিমান্ড ফুলফিল করে গেছে ততদিন শাহবাগ ছিল জাতীয় চেতনা! আর এখন এই জাতীয় চেতনার পূর্ণজন্ম দেবায় যারা ভূমিকা পালন করেছে তাদেরকে একে একে অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দিচ্ছি। এজন্যই বলেছিলাম নেতৃত্ব খুব জরুরী ভাই। বাস্তবতা বুঝে কর্মসূচী দেয়া খুব জরুরী বন্ধু।! বাংলা ইংরেজী সিলেবাস মেনে পরীক্ষা দেবার সময় এটা নয় এটা ছিল জাতীয় ক্রাইসিস ভাই! ভাই গালি শুনেছি, অনেক উপাধী পেয়েছি।
মুকুল ধরা আম গাছ দেখেছেন কেউ? আম গাছে যখন মুকুল ধরে তখন গন্ধে চারপাশটা ম ম করে। ভ্রমর ভ্যান ভ্যান করে উড়তে থাকে। বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থা অনেকটা মুকুল ধরা আমগাছের মত! ভ্রমর ভ্যান ভ্যান করে উড়ছে! ক্ষমতা পিপাসু ভ্রমর। একদল সরকার পন্থী ভ্রমর আর সরকার বিরোধী ভ্রমর। কিছু ম্যাঙ্গো পিপল যতই দুহাত আগলে রেখে আমের মুকুলকে এই ভ্রমরদের কাছ থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করুক না কেন কিছু বুদ্ধিমান আছেন ঢিল ছুড়ছেন মুকুলকে এই দুইপন্থীদের হাতে তুলে দেবার জন্য! আর আমরা ম্য্যাঙ্গো পিপল চেয়ে চেয়ে এদের কর্ম দেখছি আর নীরব চোখে চেয়ে আছি আমাদের ক্ষত-বিক্ষত হাতের দিকে, কখনোবা আমাদের গাছের শেকড়ের দিকে আবার কখনোবা উপরওয়ালার দিকে। উপরের দিকে তাকাই আর ভাবি খেলতে খেলতেই কি ইশ্বর নরকের একটি শাখা খুলেছেন পাঁচটি বর্ণের সমষ্টি "বাংলাদেশ" নামক ভূখন্ডে। ক্ষমতার লোভ আমাদের কোথায় নিয়ে যাচ্ছে? যুদ্ধবাজ ক্ষমতালোভীদের জটিল পরিচালনা ও তাদের নির্মমতায় আমরা এক ভয়াবহ অনিশ্চয়তা ও চরম অসহায়ত্বের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। বিভৎস এই ভালোবাসাহীন নিষ্ঠুরতা । বোবা হয়ে যাচ্ছি, অন্ধ হয়ে থাকতে হচ্ছে! সব কিছু দেখেও না দেখার ভান করে নিজের বাবুকে নিয়ে খেলছেন, বউয়ের সাথে ঘুমুতে যাচ্ছেন, সকালে উঠে বউয়ের হাতের নাস্তা খেয়ে বাসের শিক ধরে অফিসে যাচ্ছেন, কেউ কেউ গালফ্রেন্ডের সাথে ডেট করছেন, রাতে বাসায় এসে ফেইসবুকে আপনার ফ্রেন্ডদের স্ট্যাটাস কিংবা পিকচার লাইক করতে করতে নচিকেতার সুরে গেয়ে উঠছেন এই বেশ ভাল আছি!!!! তাহলে আপনাদের নরক জীবন ভালই চলছে?
কথা দিচ্ছি এই নরককে বেশিদিন ভাললাগবেনা। যেদিন আপনার মেয়ের নামটি হবে অন্তু, কিংবা চিন্তা করুন আপনার মেয়ের নাম মেঘ আর আপনি আর আপনার স্ত্রী সাগর-রুনি, কিংবা রোজ সকালে যাকে নাস্তা খাইয়ে অফিসে পাঠান সে আপনার স্বামী কিংবা বাবা যে কিনা পুলিশ অফিসার। এই নরকের প্রতিটি ঘটনার পাত্রপাত্রীর স্থানে শুধু একটিবারের জন্য হলেও নিজেকে বা নিজের পরিবারের কেউকে বসিয়ে ঘটনাগুলো আরেকবার একটু চিন্তা করুন তাহলেই দেখবেন আপনাদের নরকজীবনের গেয়ে উঠা নচিকেতার সুর বদলে মাকসুদের সুর হয়ে যাবে গেয়ে উঠবেন মোদের আবারও যুদ্ধে যেতে হবে কিংবা নজরুলের সুর কারার ঐ লৌহকপাট,ভেঙ্গে ফেল কর রে লোপাট, রক্ত-জমাট শিকল পূজার পাষাণ-বেদী।
আমি আমার আরও একটা লেখায় বলেছিলাম বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থার জন্য সরকার ও বিরোধী দলের পাশাপাশি আমাদের গণজাগরন মঞ্চ সমানভাবে দায়ী সেটা কিভাবে বলে চিৎকার করে অনেকেই আমার পিঠের চামড়া তুলে নিয়েছিলেন এখানে। আবার বলছি যেই শাহবাগ হতে পারতো আমাদের ভবিষ্যত রাজনীতির পথপ্রদর্শক সে মাঝখানে পথ হারিয়ে আমাদেরকে অবিশ্বাসের পথে নিয়ে গেছে। আমাদেরকে দ্বিধা বিভক্ত করেছে শুধু মাত্র শাসক শ্রেনীর কিছু পাচাটা গোলামদের কারনে। আফসোস আমরা আবার পিছিয়ে যাচ্ছি। এই তরুণ সমাজের আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। আমরা এরকম করে আর এক হতে পারবো কিনা আমার জানা নেই। শুধু মাত্র আমাদের ভূল নেতৃত্বের কারনে আমরা হয়তো আরও ৪২ বছর পিছিয়ে যাচ্ছি বা গেলাম।।!
ফেইসবুক পেইজ জীবনানন্দের ছায়ায় একপৃষ্ঠার বুলেটিন কয়েকটি লাইন শেয়ার করেছিলাম অনেক আগেই কিন্তু কেউ বুঝতে পারেনি। আজও পারবে সেই আশা করছিনা তবুও করছি-
একজন জিজ্ঞাসা করেছিলো, আপনার রাজনৈতিক মাতাদর্শ কি
আমি বলেছিলাম, আর ব্যাটা, রাজনীতি তে আদর্শের দেখা পাস তুই
এ তো প্রচন্ড আমাবস্যায় ঝকঝকে পূর্নিমা আবিষ্কার
আমি সকল স্বার্থপর রাজনৈতিক মতাদর্শ কে ঘৃনা করি
সিস্টেম পাল্টা, নচেৎ শাহবাগ গিয়ে ভাজা পোড়া খা
আমিও গিয়ে ছোট্ট টুলে বসি, উঠতি বিপ্লবী দের কথা শুনি
চে'র গ্রিন ব্যারেট লাগানো আর চে'র টি-শার্ট পড়া চুতিয়া দের দেখি
সিস্টেম টা কে পাল্টা পাগল, লাখ খানেক মানুষ জড় করেছিলি তোরা
নড়িয়ে দিতে পারতিশ সকল শকুনের ঘর, মগবাজার থেকে নীলক্ষেত
কি করলি রে তোরা, ফুচকা খেতে এখন শাহবাগ আসলি ?
এখন নিশ্চয়ই প্রশ্ন করবেন, নিরপেক্ষতার বুলি আওরাচ্চি কিনা
না, নিজের মা কে যখন ধর্ষন করে ধর্ষকেরা সুরম্য প্রসাদে আল কোরান
এর বানী আওরায় আর ওয়াজ করে, তখন ঐ চুতিয়া দের
কি যেন বলেন আপনারা-" দল মত নির্বিশেষে", ঠিক ও ভাবেই পিটিয়ে মারতে হয়।
একটি দল দেশ দেশ স্বাধীন করেছে, শালার রাজাকার তাড়াতে ৪২ বছর লাগাচ্ছে
আরেক দল আচলের তলায় রাতের প্রয়োজনীয় জন্মনিয়ন্ত্রক বড়ির মত
রাজাকার পুষে যাচ্ছে। আর বিপ্লব, সে তো কবেই সন্ধ্যার চা'র আড্ডার পর শেষ
হয়ে যায়। শেষ রাতে তারা ঘুমের ঘোরে বলে ওঠে, বিপ্লব দীর্ঘজীবি হোক।
যদি পারিশ, একজনেই হবে, দাড়িয়ে যা, সিস্টেম টা কে পাল্টা।
হয়তো আমার মতো মাজা ভেঙে বসিয়ে দেবে। তারপরও থেমে থাকিশ না।
এই সমাজে থুতু ফেল। থুতু ফেল সকল নিয়মের গায়ে। আমার মত বল
আমি সকল স্বার্থপর রাজনৈতিক মতাদর্শ কে ঘৃনা করি।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা এপ্রিল, ২০১৩ রাত ৯:৪২