somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভয়ের গপ্প শোনাই

২০ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৮:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ভয়ের গল্প শুনতে বেশ লাগে। গভীর রাত্তিরে। খালি বাসায়। জনমানুষশূন্য এলাকায়। কিংবা জমজমাট আড্ডায়। গল্পগুলো যদি গায়ে কাঁটা দিতে পারে, কিংবা একটু অস্বস্তিকর ভয়-ভয় অনুভূতির জন্ম দেয়- তাহলেই ধরে নেই আমরা- গল্প বলা সফল। পরের দিন ভুলে যাই। পেছনের কাহিনিটা তেমন ভেবে দেখা হয় না। বিশ্লেষণ-ও করা হয় না।

আজ আমরা কিছু গল্প শুনব। তারপর একে একে এসবের পেছনের কাহিনীও জানব। জায়গা, চরিত্রের নাম পাল্টে দিলেও, এসব কাহিনীর অধিকাংশই আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবদের কাছে শোনা। কয়েকটা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। কিন্তু সবগুলোই নিঃসন্দেহে - ভৌতিক!


#১

'৯৮ সালের দিকের কথা। গ্রামের বাড়িতে গেছে রফিক। খাওয়া দাওয়া শেষ তখন, রাত্রি বাজে দশটার মত। চাচাত ভাই বোনরা একত্রে বসে আছে সবাই। হারিকেন জ্বলছে। ঘরে লালচে হলুদ আলো। বাইরে কালিগোলা আঁধার, মাঝে মাঝে হুঁয়া হুঁয়া করে শেয়াল ডাকছে। বড়রা পান খাচ্ছেন, নিজেদের মাঝে কথা বলছেন। স্বভাবতই, উপযুক্ত এই পরিবেশে ভূতের কথা তুলল একজন।

'জানো রফিক ভাই, হাসিনারে কিরম জ্বালায় ভূতে, রাইতে?'
হাসিনা ওর চাচাত বোন, দশ বারো বছর বয়েস হবে। অবাক হল রফিক, 'ভূতে জ্বালায়? তুই দেখসস?'

উত্তরে যা শুনল ও, তার সারমর্ম এরকম- হাসিনা প্রতি রাতে তার বড়ভাবির সাথে ঘুমায় [কারণ বড়ভাই বিদেশে আছেন বছরখানেক ধরে], এতোদিন কোন সমস্যা হয় নি। কিন্তু গত কয়েক সপ্তা ধরে হাসিনার গভীর রাতে ঘুম ভেঙ্গে যাচ্ছে বারবার। মনে হয় কেউ যেন আড়াল থেকে তাকিয়ে আছে তার দিকে। পাশে বড়ভাবি কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকেন। কিন্তু হাসিনার মনে হয় ভাবি নন, অন্য কেউ শুয়ে আছে সেখানে। বা অন্য কিছু একটা। এখনই কাঁথা সরিয়ে বিকৃত মুখ বের করে হেসে উঠবে। শুধু তাই নয়, অনেক সময় সকালে উঠে হাসিনা দেখে, তার চুল অন্যভাবে বাঁধা, কাঁথা পড়ে আছে নিচে--যেন রাতে এসে কেউ তার চুলে হাত দিয়েছে, বেঁধে দিয়েছে, টেনে ফেলে দিয়েছে কাঁথা। হাসিনা এখন রাতে বাথরুমে যেতেও ভয় পায়, তার মনে হয় এখনই কেউ পেছন থেকে এসে ঘাড় টিপে ধরবে। কিন্তু বড়ভাবি সবসময় তার সাথেই থাকেন, তিনি কোন অস্বাভাবিকতা বুঝতে পারেন না।

হাসিনা-কে জিজ্ঞেস করা হলে সে চুপ করে থাকে। গুনগুন করে কাঁদে। চঞ্চল মেয়েটা একেবারে বদলে গেছে, মনমরা হয়ে থাকে সব সময়। বাড়ির সবার ধারণা হাসিনাকে কোন জিন-টিন টাইপের কিছু আসর করেছে। 'আবিয়াইত্যা মাইয়া' তো, তাই নজর লেগেছে। তাঁকে তিন চারটে মাদুলি পরানো হয়েছে, রফিকের ছোট চাচা নিয়মিত মসজিদ থেকে পানিপড়া এনে খাওয়াচ্ছেন। হাসিনার বাপ ইতোমধ্যেই মেয়েকে বিয়ে দেবার তোড়জোড় শুরু করেছেন।

এই গল্পের আরও কিছু শাখা-প্রশাখা বের হয়, তারপর একসময় শেষ হয় আড্ডা। ঘুমাতে যায় সবাই। শেষ রাতে রফিকের তলপেটের চাপে ঘুম ভেঙে যায়। কিন্তু বাইরে বাতাসের হুঁশ হুঁউউশ শব্দ, বাঁশঝাঁড়ের মড়মড়ানি, আর শেয়ালের হুক্কা হুয়া হুয়া ডাক শুনে দমে যায় বেচারা। বদ জিন কিংবা ভূতের কথা মাথার ভেতরে তার পাক খেতে থাকে। আর তাই প্রাণপণে প্রস্রাব চেপে প্রতীক্ষা করতে থাকে সকালের।


#২

বাংলাদেশে তখন মোবাইল ফোন জনপ্রিয় হচ্ছে কেবল। খরচ অনেক বেশি। এক মিনিট কথা বললে সাত টাকা গচ্চা, আর রিচার্জ কার্ডগুলোও বিশাল। ৫০০ টাকার কার্ড নিলে টেনে টুনে দুই-আড়াই সপ্তা চলা যায়। অর্থাৎ পুরো ব্যাপারটাই খরচসাধ্য। এমন সময় বড় ভাই শখ করে মোবাইল নিলেন। মটোরোলার ইষ্টক-সদৃশ দানবীয় মোবাইল। হাতে নিয়ে ঘুরলে মানুষ দুই তিন বার ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে।

সব ভালই চলছিল। কিন্তু সমস্যা শুরু হল দুদিন পর। রাতে ঠিক তিনটে কি চারটের সময় মোবাইলে কল আসে। কল রিসিভ করলে অদ্ভুত একটা শব্দ ভেসে আসে। বিটিভির খসখসে ঝিরঝিরানি ব্যাকগ্রাউন্ডে রেখে খুব তীক্ষ্ণ গলায় অল্প সময়ের জন্য চিৎকার করলে যেমন শব্দ হবে, ঠিক তেমনি। ঠিক এক মিনিট পর কলটা কেটে যায়। এভাবে একদিন গেল, দুই দিন গেল, তিন দিনের দিন ভাই খেপে গিয়ে কলব্যাক করলেন। কল ধরলেন এক বয়স্ক ব্যক্তি, গলা শুনে বোঝাই যাচ্ছে তিনিও ঘুম থেকে সদ্য উঠেছেন। প্রথমে একপ্রস্থ মাইল্ড গালাগালি হল দুজনের মাঝখানে। তারপর ভাই বুঝতে পারলেন ইনি কিছুই জানেন না- এবং কলটা ইনি দেন নি।

এভাবে সাত আটদিন কল এলো। প্রত্যেকবার কল ব্যাক করা হল। মোবাইল ধরলেন ভিন্ন ভিন্ন মানুষ, যারা কিছুই জানেন না; তাদের মোবাইল থেকে কল দেওয়া হয়েছে কিনা- এই প্রশ্নের জবাবে সম্পূর্ণ অস্বীকার করলেন। আর প্রত্যেক কলের সাথে বাড়ছিল চিৎকারের তীব্রতা। মনে হচ্ছিল কারেন্টের শক দিয়ে কাউকে অত্যাচার করা হচ্ছে- তারপর সেটা রেকর্ড করে শোনান হচ্ছে। উল্লেখযোগ্য ব্যাপার হচ্ছে- তখন মোবাইল ব্যবহার করাটা যথেষ্ট খরচের ব্যাপার, স্রেফ ফাজলামো করার জন্য এই কাজ করার কথা না। এরপর ভাই বিরক্ত হয়ে মোবাইল ইউজ বাদ দিয়ে দিলেন। 'শখের তোলা আশি টাকা, দরকার নাই আমার মোবাইল! ফাউল জিনিস!'

পরের দিন। সকালের খাবার খাচ্ছি সবাই, আম্মা বললেন, 'কালকে রাত্রে ল্যান্ডলাইন ফোনে কল আসছিল। প্রথমে ঘড়ঘড়ে গলায় কি জানি বলল, তারপর খালি খসখসানি শব্দ আর বিজবিজানি। এতো রাতে ফাজলামি করে কে? তোর বন্ধু নাকি?'

আমি খাওয়া বন্ধ করে ভাইয়ের দিকে চাইলাম। বেচারার মুখ শুকিয়ে গেছে, মুখে পাউরুটি আদ্ধেকটা ঢুকিয়ে থেমে গেছে। চোখে ভয়।

এরপরে আরও কয়েকবার কল এসেছে। এক রাতে বাসায় কেউ ছিল না, এক কাজের মেয়ে ছিল স্রেফ- আর ল্যান্ডলাইনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা ছিল কোন কারণে [ঠিক মনে নেই কেন]। মেয়েটা কসম কেটে বলেছিল, ফোন ডিসকানেক্টেড থাকা সত্ত্বেও তিনটের দিকে কল এসেছিল। খসখসানি শব্দ, চিৎকার সে-ও শুনেছে। এরপর আমরা অপরিচিত নাম্বার ধরতাম না, তাও ভুলে ধরা হয়েছিল দুতিন বার। প্রত্যেকবার একই কাহিনী। মাস ছয়েক পর ব্যাপারটা থেমে যায়।


#৩

অতীশ দাদুর কাহিনী।

উনি তখন কলকাতা-প্রবাসি। চাকরি করছেন। রাজশাহিতে তার পুরো পরিবার- সবার মুখের ভাত জোগাচ্ছেন এই এতো দূরে কাজ করে। একাকি মানুষ। লং স্ট্রিটে পুরনো একটা দালানে একতলায় বাসা নিয়েছেন। কাজ থেকে ফেরেন হেঁটে হেঁটে। আজকেও ফিরছেন। সরকারবাড়ির রাস্তাটা পানিতে ডুবে গেছে বলে একটু বিপদে পড়েছেন, ঘুরে ডালগড়া দিয়ে যেতে হচ্ছে। ডালগড়ার রাস্তাটা ভাল না, বামে লক্ষ্মীগড়ের বস্তি পড়ে। মানুষ যেতে চায় না এখান দিয়ে। জায়গাটা একসময় কি অশ্লীলরকম চঞ্চল, মানুষ ভরা ছিল! কম করে হলেও পঞ্চাশটি পরিবারের বাস ছিল এখানে। গত ফাল্গুনে কি হল- কিভাবে যেন আগুন ধরে গেল বস্তিগুলোর একটাতে। ফায়ার সার্ভিসে খবর দেবার আগেই সবগুলো পুড়ে ছারখার। আগুনের লকলকে জিভের কাছে হার মানল সস্তা প্লাস্তিক আর কঞ্চির বস্তিগুলো, আর ভেতরের মানুষগুলো অগ্নিপরীক্ষায় পাশ করতে পারল না, পুড়ে মরল তারাও।

অতীশের এখনও পরিষ্কার মনে পড়ে--পুলিশ এসে লাশ বের করছে একের পর এক--ব্লিচিং পাউডার সহ কত কি ছেটান হচ্ছে পোড়া গন্ধ চেপে রাখতে; কিচ্ছু কাজ হচ্ছে না। কত মানুষ হাউমাউ করে কাঁদছে তার হিসেব নেই। হয়তো ছ্যাকরা-গাড়ি টানতে গেছিল গর্ভবতী স্ত্রীকে রেখে, হয়তো জুতো-পালিশের কাজ করে এসেছে- এখন মায়ের কাছে ফিরবে, হয়তো চা বিক্রি করে ছেলের জন্য গোল্লা নিয়ে এসেছে দুটো--এসে দেখে সব ছাই। ইস! পুরো এলাকাটা নরকসদৃশ হয়ে গেছিল সেদিন। এখানে কয়জনের সৎকার হয়েছে? গণ-কবর দিয়েছিল ধর্ম-বর্ণ-জাত না দেখেই। তারপর সরকার সবার বাস উঠিয়ে দিল এখান থেকে, বললে মিউনিসিপ্যালিটির ভবন করবে। এখনও কিছু হয় নি। কালো একটা ক্ষতের মত কলকাতার বুকে বসে আছে লক্ষ্মীগড় বস্তি।

ভাবতে ভাবতে অতীশ হাঁটার গতি বাড়ান। রাস্তায় মানুষ নেই একজন। কত অতৃপ্ত আত্মা ঘোরাফেরা করছে এখান দিয়ে কে জানে। তাড়াতাড়ি করাই বাঞ্ছনীয়। তার ভাবনাকে বিদ্রূপ করেই যেন চাঁদ ঢেকে দেয় মেঘ। বস্তির ভেতরে থেকে কথার ফিসফিস শব্দ ভেসে আসে। অতীশ তাকাতে চান না প্রথমে, তারপর যেন কেউ তার ঘাড় ধরে ঘুরিয়ে দেয় বস্তির দিকে। ফিসফিস প্রবলতর হয়। তার পা জমে যায় মাটিতে।

ওই তো ওরা আসছে মৃত্যুর ওপার থেকে! হাঁটতে অনেক কষ্ট হচ্ছে তাদের, সারা গা পোড়া, চামড়া খসে খসে পড়ছে অনেকের। কিন্তু আসছে ওরা। ফিসফিস করে কথা বলছে। চোখে জিঘাংসা। অতীশকে ধরে নিয়ে যেতে আসছে!

প্রাণের ভয় বড় ভয়। ঠাকুর-দেবতার নাম করতে করতে অতীশ সোজা দৌড় দিলেন বাসার দিকে। চিৎকার করতে করতে বাসার সামনের সিঁড়িতে আছাড় খেয়ে পড়লেন। ততক্ষণে বাকি মানুষেরা বের হয়ে এসেছে বাইরে। তারা অতীশকে ঘিরে দাঁড়ালেন, একজন বাতাস করতে লাগলেন। জ্ঞান হারানোর ঠিক আগ মুহূর্তে অতীশ তাকালেন পেছনের রাস্তায়--পোড়া অশরীরীদের শেষজন ততক্ষণে ঢুকে গেছে বস্তির ভেতরে।


#৪

আমাদের গ্রামের বাড়িতে সবচেয়ে প্রাচীন ঘরটা ছিল মাটির। দাদির আপত্তির কারণে ঘরটাকে পাকা করা বা কোন পরিবর্তন করা হয় নি, প্রায় শতাব্দী ধরে একই অবস্থায় আছে। পরিবর্তন না করার কারণ?

দাদাকে কবর দেওয়া হয়েছিল এই ঘরের মেঝেতে।

সে সময়ে ঘরে মানুষকে কবর দেওয়া হয়তো অস্বাভাবিক ছিল না, কে জানে! কিন্তু এই একটি তথ্য ঘরটাকে ভুতুড়ে করে তুলেছে। আমরা পারতপক্ষে একা কেউ সে ঘরে যাই না। রাতে অনেকে নাকি এই ঘরে গোখরা সাপের জোড়া দেখেছে, কিন্তু সাপ যেন না আসতে পারে সেজন্যে কেমিকেল দেওয়া আছে অনেক আগে থেকেই। সাপ আসবে কোত্থেকে? এই ঘরে নাকি মাঝরাতের পর থেকে আতরের ঘ্রাণ আসে। মেঝে থেকে আসে ঘ্রাণটা। আমার চাচা-চাচিরা সবাই একবার না একবার দেখেছেন ঘরের ভেতরে কেউ হাঁটাহাঁটি করছে। দরজা খুলে ঘরের ভেতরে গেলেই থেমে যায় শব্দ। গ্রামের সবার ধারণা দাদা হয়তো জিন পালতেন, তাই এসব হয়। ঘরের তাপমাত্রা কখনো বাড়ে কমে না। আর্দ্রতা অনেক বেশি। আরও অনেক ভুতুড়ে ব্যাপার। এজন্যে তালায় আটকে রাখা হয়।

ঘরের বর্তমান আসবাব হচ্ছে-- একটা প্লাস্টিকের টেবিল। তিনটে চেয়ার। আর কিছু নেই। বেশি কিছু রাখলে নাকি ঘরের ভেতরের আত্মা বা জিনিস যাই হোক, সেটা রেগে যায়। লণ্ডভণ্ড করে ফেলে সবকিছু। তো আমরা চাচাত ভাই তিনজন ঠিক করলাম সকালে ঘরের ভেতরে যাব। চা খাব। যদি কিছু হয় দেখা যাবে।

প্ল্যান অনুসারে সকালে ঘরে গেলাম। তামার পুরান গ্লাসে আমাদের ধোঁয়া ওঠা চা দেওয়া হল। দুই চুমুক খেয়ে টেবিলের এক কোণে গ্লাস রেখেছি, মনে মনে ভাবছি- সকাল বেলায় আদৌ কিছু দেখতে পাব কিনা--ঠিক এমন সময় গ্লাসটা স্থির অবস্থা থেকে চমৎকার স্লাইড করে পাঁচ ফুট দূরে টেবিলের অপর প্রান্তে চলে গেল! কিন্তু আমি সেটা রাখার পর একবার স্পর্শও করি নি। যেন ঘরের বাসিন্দা আমাদের চোখের সামনে কাজটা করে বলছে-- এবার? এবার কি করবে?

গ্লাস হাতে নিয়ে সুবোধ বালকের মত তিনজনে বেরিয়ে এলাম বাইরে। দাদা বা দাদার গৃহপালিত জিন- যেই থাকুক ওখানে-- যথেষ্ট হয়েছে বাপ!


#৫

আসাদ ভাইয়ের কাছে শোনা কাহিনী। তিনি তখন অনার্সে উঠেছেন কেবল। এক চিলেকোঠায় ভাড়া থাকেন। ছাত্র পড়ান চার-পাঁচজন। ছাত্রী পড়ানোর জন্য খুঁজছেন, কিন্তু পাচ্ছেন না। এই ব্যাপার নিয়ে তিনি এবং তার রোমান্টিক মন ভীষণ হতাশ।

আসাদ ভাই যেখানে থাকতেন, সেটা আক্ষরিক অর্থেই চিলেকোঠা। তিন তলা বাসার ছাদের ওপরে জায়গাটা কিছুটা কুখ্যাত, বছর দুয়েক আগে এক মেয়ে নাকি লাফ দিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছিল। উনি অবশ্য এসবে বিশ্বাস করতেন না, বরঞ্চ ভাড়া কম আর টিনের ছাদে বৃষ্টির সেতার শোনার সুযোগ আছে দেখে লুফে নিয়েছিলেন বাসাটা।

যাই হোক, এক রাতের কথা। ছাত্র পড়ছে উনার কাছে, পড়তে পড়তে আটটা বেজে এসেছে। ছাত্র বলছে - তার বাসা গ্রামের দিকে, বাসে করে যেতে হয়। এখন বাস আর পাওয়া যাবে না। রাতটা কি সে এখানে কাটাতে পারে? আসাদ ভাই প্রথমে মোটেই রাজি না, কিন্তু পরে ছাত্রের অনুনয়ে বিরক্ত হয়ে বলছেন, 'আচ্ছা যা থাকিস। আমার খাট পিচ্চি, খাটে জায়গা নাই। তুই ফ্লোরে শুবি।' ছাত্র রাজি! খেয়েদেয়ে দশটা বাজার পর সে সুন্দর করে চাদর এবং আসাদ ভাইয়ের কোলবালিশ নিয়ে মেঝেতে শুয়ে পড়ল। তার ঠিক আধা ঘণ্টা পর, আসাদ ভাইকে ডাকা শুরু করল।
'ভাই খিদা লাগছে।'
-'অ্যাঁ?'
'খিদা লাগছে ভাই।'
-'অই ছ্যাড়া, কেবল না খাইলি?'
'পেট ভরে নাই। কিছু খামু ভাই।'
-'হায়রে আখাইতার গুষ্টি! পাতিলে ভাত আছে। বাইড়া নে।'
'ভাত খামু না ভাই। পুইড়া গেছে। অন্য কিছু।'
- [কাঁথামুড়ি দিয়ে] আমি পারুম না।'
'আসেন না ভাই, বাইরে চায়ের দোকান খোলা আছে এখনও। কলা-পাউরুটি খায়া আসি। আপনারে বিড়ি খাওয়ামুনে।'
-'বাড়িওলা দরজা আটকায়া দিছে। বাইরে যাইতে দিবো না।'
'ভাই চলেন না যাই।'

আরও মিনিট দশেক ঘ্যানঘ্যানানির পরে অবশেষে তিক্ত-বিরক্ত হয়ে আসাদ ভাই উঠলেন, লাইট-টাইট নিয়ে গজগজ করতে করতে বাইরে এলেন। বের হয়ে দরজা ভেজাতেই ছাত্র তাঁকে আঁকড়ে ধরল- 'ভাই আমি খাওয়ার কথা বইলা আপনাকে বাইরে নিয়া আসছি।'
-'ক্যান?'
'আপনার খাটের নিচে একটা মেয়ে হামাগুড়ি দিয়া বইসা আছে। আমি ফ্লোরে শুয়া কাত হইছি, সাথে সাথে দেখি মেয়েটা দেয়ালের দিকে মুখ কৈরা বইসা আছে। আর আস্তে আস্তে ঢুলতাছে। ঘরে যায়েন না ভাই।'

তারপর পুরো রাত দুজনে মিলে নির্ঘুম কাটিয়ে দিলেন সেই চায়ের দোকানের সামনে। সকাল হল। ভীরু পায়ে দুজনে চিলেকোঠায় ফিরলেন, তারপর আসাদ ভাই ধীরে ধীরে উঁকি দিলেন খাটের নিচে।

ফাঁকা। খা খা করছে। কেউ নেই সেখানে।


--পরের গল্প ১--

হাসিনার বিয়ে হয়ে গেছিল তার মাসদুয়েক পরেই। প্রকৃতির অসংখ্য ধাঁধাঁর একটা ধরে নিয়ে ক্রমশ সবাই ভুলে যায় ব্যাপারটা। প্রায় পনের-বিশেক বছর পর, গ্রামে বউ-পোলাপান নিয়ে ছুটি কাটাতে গিয়ে আগের মতই সবার সাথে রফিক বসেছে। এখন কেউ আর ছোট্ট নয়, সবাই বাচ্চার বাপ মা। কথা হয় হয়তো এভাবে বছরে দুবার, কিন্তু তাই বলে আন্তরিকতা আছে সেই আগের মতই। আড্ডায় একসময় কথায় কথায় পুরনো ব্যাপারটা তোলে রফিক, 'হ্যাঁরে হাসিনা, তর মনে আছে সেই ভূতের কথা? তরে যে জ্বালাইত?'

ঘরে অস্বস্তিকর নিরবতা নেমে আসে। হাসিনার মুখ বিবর্ণ হয়ে যায়, সে ঢোক গিলে বলে, 'মনে আছে দাদা। আপনে না বলছিলেন এইবার তেতুলের আচার খাইবেন, নিয়া আসি? বানায়া রাখছি দুই বয়াম।' কথা ঘুরিয়ে দিয়ে সে প্রস্থান করে। এই ব্যাপারটা নিয়ে কথা হয় না আর। পাশের গ্রামে নতুন স্কুল হচ্ছে, সেটার মান কিরকম- তা নিয়ে প্রচণ্ড মনোযোগ নিয়ে আলোচনা করা শুরু করে বাকিরা।

ঘুমোতে যাবার আগে হাসিনার ছোট বোন রফিকের ঘরে আসে। 'দাদা, আপ্নে কি জানতেন না হাসিনা আর কাকার কথা? পুরান কথা তুললেন যে?'
-'ছোট চাচা?', রফিক একই সাথে অবাক হয় এবং মনে প্রশ্ন জাগতে থাকে ওর। ছোট চাচা চট্টগ্রামে মুভ করেছিলেন অনেকদিন আগে। নিঃসন্তান ছিলেন। মারা গেছেন বছর পাঁচেক হল। তার সাথে ভূতের কি সম্পর্ক?
'দাদা, আপ্নের এই চুতমারানি 'ছোট চাচা'ই আছিল সেই ভূত। হাসিনার চেহারা আগে থিকাই সুন্দর না? এই লোকে অরে পিচ্চি থাকতেই এইখানে ওইখানে ধরত। বুজছেন কি কইতাছি? হাসিনা বিয়ার আগে শরমে কইতে পারত না। আকার ইঙ্গিতে বুঝাইলেও কেউ বিশ্বাস করে নাই। বিয়ার পরে আম্মারে আয়া একদিন কইছিল, তারপর থিকা তার সাথে আমাগো সবকিছু বন্ধ। আমরা তারে একঘরে করছিলাম শুনছিলেন? এই কারণে। হ্যার জানাযায় আমরা কেউ যাই নাই, মনে নাই?'

রফিকের মনে আছে। কিন্তু সে যেতে পারে নি বাচ্চাদের পরীক্ষা ছিল বলে। কত দূরে চট্টগ্রাম! এই কথা তো কেউ বলে নি তাঁকে!

'এই কথা আর তুইলেন না দাদা। আইচ্ছা, ঘুমান।'

বাইরে বাতাসের হুঁশ হুঁউউশ শব্দ। বাঁশঝাঁড়ের মড়মড়ানি অবশ্য নেই, কেটে ফেলা হয়েছে সে কবে। শেয়ালের হুক্কা হুয়া হুয়া ডাক-ও শোনা যায় না এখন। স্ত্রী-সন্তান ঘুমিয়ে পড়েছে পাশে, কিন্তু রফিকের ঘুম আসে না। নিজের পরিবার নিয়ে এই অকস্মাৎ আবিষ্কার, নিজের চাচা একজন পেডোফাইল- এই ঘৃণ্য তথ্যটা ওর মাথার ভেতরে ঘুরপাক খেতে থাকে। খোদা, চাচাত বোনটি কি পরিমাণ মানসিক যন্ত্রণায় ভুগেছে! দম আটকে আসা অনুভূতি নিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে সে সকালের।


--পরের গল্প ২--

জিনিসটা নিতান্তই একটা টেকনিকাল ফল্ট। প্রাথমিক দিকে কল সেন্টারগুলোর ফ্যাক্স মেশিন বা মডেমগুলোতে একটা অটোমেটেড সিস্টেম ইন্সটল করা থাকত। এই সিস্টেমে একটা রেকর্ড করা ক্লিপ আর ম্যানুফ্যাকচারারের নম্বর দেওয়া থাকত, যাতে যন্ত্রে কোন প্রব্লেম হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যন্ত্র প্রস্তুতকারিদের কাছে নির্দিষ্ট সময়ে মেসেজ চলে যায়- আর তারা এসে যন্ত্র ঠিক করে দেয়। আর সেকেন্ডারি অপশন ছিল- মোবাইলের লোকেশন বের করে তাদের ল্যান্ডলাইনে কল দেওয়া। অনেক ক্ষেত্রে কি হোতো, প্রস্তুতকারিদের নম্বর পরিবর্তন হলেও-- যন্ত্রে সেটা তোলা হোতো না। কিংবা যন্ত্রে সমস্যা দেখা দিলে সেটা ভুল নম্বরে কল দিয়ে ফেলত।

এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। যন্ত্রটা নষ্ট হয়ে গেছিল, এবং নিয়ম অনুসারে তা একটা নির্দিষ্ট সময়ে [৩টা-৪টায়] রেকর্ডেড মেসেজ পাঠাচ্ছিল। কিন্তু যেহেতু যন্ত্র নষ্ট, তাই মেসেজটা বিকৃত হয়ে ভুল নম্বরে যাচ্ছিল। তারপর একই ভাবে ল্যান্ডলাইনেও। তারপর নিশ্চয়ই যন্ত্রটা ঠিক করা হয়েছে, তাই ভুতুড়ে কল-ও থেমে গেছে!

আর কাজের মেয়ের ব্যাপারটা স্রেফ হুজুগে তাল দেওয়া, আর কিছু না। আমরা ভেবেছি ভূত, সে-ও এতে সামিল হবার জন্যে চমৎকার ভূতের গপ্প ফেঁদে বসেছে!


--পরের গল্প ৩--

পঞ্চাশের দশকের ঘটনা এটি। আর পঞ্চাশের দশকেই কলকাতার গলিতে গলিতে ছড়িয়ে গেছিল কুষ্ঠরোগ। কুষ্ঠরোগীরা সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল, তাদের স্বভাবতই ভাল চোখে দেখা হত না। তাই তারা মানুষের কাছ থেকে পালিয়ে থাকতে বাধ্য হত। রাতে বের হত খাদ্য অন্বেষণে। কুষ্ঠের কারণে তাদের চামড়া, অনেক সময় অঙ্গপ্রত্যঙ্গ খসে খসে পড়ত, ভয়ানক দেখা যেত। অনেকের গলার মাংস পচতে শুরু করায় জোরে কথা বলতে পারত না। ফিসফিস করে কথা বলত।

লক্ষ্মীগড় বস্তি জনমানুষশূন্য এলাকা ছিল। কুষ্ঠরোগীরা সেখানে আশ্রয় নেয়। মৃত পোড়া শব জীবন্ত হয়ে ফিরে আসে নি, বরঞ্চ রাতে এই কুষ্ঠরোগীরা বেরিয়েছিল খাদ্যের সন্ধানে। অতীশকে ভয় পেতে দেখে আবার লুকিয়ে গিয়েছিল বস্তির ভেতরে।


--পরের গল্প ৪--

ঘরটা মাটির, সুতরাং স্বভাবতইঃ এর তাপমাত্রা শীতে গরম, গ্রীষ্মে শীতল থাকবে। এখানে অতিপ্রাকৃতিক কিছু নেই। পুরনো ঘরে সাপ থাকাও অস্বাভাবিক কিছু নয়। কার্বলিক এসিড দেওয়া হয় ঘরের চারপাশে, যাতে বাইরে থেকে সাপ না ভেতরে ঢোকে। কিন্তু সাপ আগে থেকেও তো ভেতরে থাকতে পারে? সেটাই চোখে পড়েছিল।

ঘরের পেছনে লক্ষ্য করেছিলাম, হাস্নাহেনার ঝোপ আছে একটা। রাতে হাস্নাহেনা চমৎকার ঘ্রাণ ছড়ায়, অনেকটা আতরের মতন। পরীক্ষা করে দেখা গেছে- সরীসৃপজাতীয় প্রাণীকে এই ঘ্রাণ আকৃষ্ট করে। এখানেও সাপের একটা ব্যাখ্যা হতে পারে।

ঘরের ভেতরে হাঁটাহাঁটির রহস্য ভেদ হয়েছিল পরে, যখন দেখা গেল আসল আসামি বেড়াল। ঘরের উপরে একটা বিশাল ঘুলঘুলি আছে, কতিপয় অসাধু মার্জারগোষ্ঠী সেটা দিয়ে ভেতরে ঢোকে, ঘরের ভেতরের আসবাব উল্টাপাল্টা করে ফেলে, আবার সাড়া পেলেই লাফিয়ে বাইরে বের হয়ে যায়। এদের মিঁআও মিঁআও শব্দ কেউ লক্ষ্য করে নি কেন সেটাই হল আসল প্রশ্ন।

আর সবশেষে-- গ্লাস স্লাইড করার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে। যেহেতু আর্দ্রতা বেশি, সুতরাং গরম গ্লাস নামিয়ে রাখলে জলীয় বাষ্প জমে এর চারপাশে রিঙের মতো একটা পানির স্তর অতিদ্রুত সৃষ্টি হয়। প্লাস্টিক আর তামার মাঝে ঘর্ষণ শক্তি এমনিতেই কম, তার সাথে এদের মাঝে যদি যথেষ্ট পরিমাণ পানি জমা হয়, এবং টেবিলটা কিঞ্চিৎ ঢালু হয় [এক্ষেত্রে, টেবিলটা দেড় ইঞ্চির মতন ঢালু ছিল], তবে পাঁচ ফিট স্লাইড করে সরে যাওয়া কোন ব্যাপার না। খুবই স্বাভাবিক। গাড়ির ক্ষেত্রেও এরকম হয়ে থাকে, তাকে আমরা বলি হাইড্রোপ্লেনিং।


--পরের গল্প ৫--

....তারপর আসাদ ভাই পুরো ঘর, তারপর ছাদ খুঁজলেন তন্ন তন্ন করে। খুঁজতে খুঁজতে ছাদে পানির ট্যাঙ্কের পেছনে দেখা মিলল শতচ্ছিন্ন পোশাকের নোংরামাখা এক মেয়ের। সাত-আট বছর বয়েস হবে। প্রথমে দেখে আসাদ ভাইকে কামড়ে দিতে এলো, তারপর তিনি আস্তে আস্তে শান্ত করলেন মেয়েটাকে। এরপর মেয়েটার কথা শুনে যা বোঝা গেল- এক মাস আগে মেয়েটার বাবা তাকে নিয়ে শহরে আসে। এই বিল্ডিংয়ের একতলার বাসায় কাজ করতে দিয়ে যায়। কিন্তু বাসার মালকিন তাঁকে খুব বকত, চুল ধরে মারধর করত। এক সপ্তা পরে মেয়েটার বাবার আসার কথা ছিল, কিন্তু বাবা-ও আর আসে নি। ভয়ে, অত্যাচার সহ্য না করতে পেরে সে ছাদে কাপড় শুকোতে এসে চিলেকোঠায় ঢুকে পড়ে, তারপর আর নিচে ফেরত যায় নি। গত সাত আটদিন ধরে সে এখানে আছে। আসাদ ভাই এলে সে খাটের নিচে ঢুকে পড়ত, তিনি ঘুমালে বা বাইরে গেলে তার উচ্ছিষ্ট খাবার খেয়ে পেট ভরাত, আর কাঁদত। কিন্তু জোরে কাঁদত না যদি সে ধরা পড়ে যায়, আর আবার তাঁকে নিচে কাজ করতে পাঠানো হয়! কাল রাতে সে ছাত্রটির কথা শুনতে পেয়েছিল, বুঝতে পেরেছিল তার অস্তিত্ব ফাঁস হয়ে গেছে। তাই আসাদ ভাই আর ছাত্রটি বের হয়ে যাবার খানিকক্ষণ পরে সে-ও বেরিয়ে আসে, কিন্তু কোথায় যাবে বুঝতে না পেরে পানির ট্যাঙ্কের পেছনে লুকিয়ে বসেছিল সারা রাত।

আসাদ ভাই শুনেছিলেন যে নিচতলার কাজের মেয়েটা ভেগে গেছে, কিন্তু এরকম কিছু কল্পনাও করেন নি। ব্যাচেলর এবং ভুলোমনা মানুষ- তাই বুঝতেও পারেন নি খাবারের কমবেশি, আর ঘর ঝাড়ু দিতে গিয়ে আবিষ্কার করার প্রশ্নই আসে না।

পরবর্তীতে মেয়েটার বাবার সাথে যোগাযোগ করে তাঁকে গ্রামে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তারপর কি ঘটেছে মেয়েটার কপালে- কে জানে!
সর্বশেষ এডিট : ২০ শে এপ্রিল, ২০১৫ রাত ৯:০৩
৩৫টি মন্তব্য ৩৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুড়ি শব্দের গল্প

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৯:১৭



জলে ভাসা পদ্ম আমি
কোরা বাংলায় ঘোষণা দিলাম, "বিদায় সামু" !
কিন্তু সামু সিগারেটের নেশার মতো, ছাড়া যায় না! আমি কি সত্যি যাবো? নো... নেভার!

সানমুন
চিলেকোঠার জানালায় পূর্ণিমার চাঁদ। ঘুমন্ত... ...বাকিটুকু পড়ুন

ধর্ম ও বিজ্ঞান

লিখেছেন এমএলজি, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ ভোর ৪:২৪

করোনার (COVID) শুরুর দিকে আমি দেশবাসীর কাছে উদাত্ত আহবান জানিয়ে একটা পোস্ট দিয়েছিলাম, যা শেয়ার হয়েছিল প্রায় ৩ হাজারবার। জীবন বাঁচাতে মরিয়া পাঠকবৃন্দ আশা করেছিলেন এ পোস্ট শেয়ারে কেউ একজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

তালগোল

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ৯:৩৫


তু‌মি যাও চ‌লে
আ‌মি যাই গ‌লে
চ‌লে যায় ঋতু, শীত গ্রীষ্ম বর্ষা
রাত ফু‌রা‌লেই দি‌নের আ‌লোয় ফর্সা
ঘু‌রেঘু‌রে ফি‌রে‌তো আ‌সে, আ‌সে‌তো ফি‌রে
তু‌মি চ‌লে যাও, তু‌মি চ‌লে যাও, আমা‌কে ঘি‌রে
জড়ায়ে মোহ বাতা‌সে ম‌দির ঘ্রাণ,... ...বাকিটুকু পড়ুন

মা

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৩


মায়াবী রাতের চাঁদনী আলো
কিছুই যে আর লাগে না ভালো,
হারিয়ে গেছে মনের আলো
আধার ঘেরা এই মনটা কালো,
মা যেদিন তুই চলে গেলি , আমায় রেখে ওই অন্য পারে।

অন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কপি করা পোস্ট নিজের নামে চালিয়েও অস্বীকার করলো ব্লগার গেছে দাদা।

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৫ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ২:১৮



একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ আগে থেকেই ঘুরে বেড়াচ্ছে। পোস্টটিতে মদ্য পান নিয়ে কবি মির্জা গালিব, কবি আল্লামা ইকবাল, কবি আহমদ ফারাজ, কবি ওয়াসি এবং কবি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×