পুরো নাম সাঈদ হাসান টিপু। বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড দল "অবসকিওর" এর প্রতিষ্ঠাতা এবং মূল ভোকালিস্ট। ৯৪/৯৫ সালের দিকে অবসকিওর ব্যান্ডের "স্বপ্নচারিনী" এ্যালবামের গান প্রথম শুনতে পাই নানু বাড়ি বেড়াতে গিয়ে। ছোট মামা অডিও ক্যাসেট প্লেয়ারে তার গান বাজাচ্ছিলেন, সেই প্রথম তার গান শোনা। এর পর থেকেই মূলত আমি তার বিরাট ফ্যান বনে যাই।

সাঈদ হাসান টিপু © নিউ নেশন।
বহু বছর ধরেই চেষ্টা করছি বাংলা ব্যান্ডের সিডি সংগ্রহ করতে। ছাত্র অবস্থায় খুব স্বাভাবিকভাবেই আর্থিক কারণে অত সিডি সংগ্রহ করা হয়ে ওঠেনি। যখন প্রফেশনাল জীবনে প্রবেশ করি, তখন আমি আমেরিকায়। চাইলেও ততটা উদ্যোগ নিয়ে কিছু করার সাহস হয় নি। তারও বহু বছর পর, করোনার সময় আমি আার আমার বন্ধু রাশেদ মিলে প্রকাশনী সাইটটির কাজে হাত দিলাম। কিছু তথ্য সংগ্রহের জন্য টিপু ভাইয়ের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলাম। আমার আর আমার বন্ধুর উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে তিনিও সময় করে বেশ কিছু তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। ভাইয়াকে জিজ্ঞেস করলাম, এখন কোথাও কি অবসকিওরের সিডি বিক্রি হচ্ছে কি না?! বা কোথাও পাওয়া যাবে কিনা?! তিনি জবাব দিলেন, দেশে আসলে আমি যেন তার সাথে যোগাযোগ করে দেখা করি। তিনি তার কাছে কিছু সিডি আছে সেগুলো দিতে পারবেন। রীতিমত খুশিতে আটখানা হয়ে গেলাম।
গত বছর নভেম্বরের শেষ দিকে, দেশে যাওয়া হলো পারিবারিক কারণে। ছেলের জন্মদিনে উপস্থিত থাকার প্রয়াসে। আমার ছেলেকে উপহার হিসেবে দেয়া কম্পিউটারে বসে কাজ করছি, হঠাৎই মনে হলো, টিপু ভাইয়াকে নক করলে কেমন হয়? যেই ভাবা সেই কাজ। ভাইয়াকে সোশ্যাল মিডিয়াতে নক করলাম। তিনি সরাসরি তার ব্যক্তিগত ফোন নাম্বার দিয়ে দিলেন। সাথে সাথেই ফোন করলাম, মনে করিয়ে দিলাম তার দেয়া কথা, জিজ্ঞেস করলাম কখন তিনি সময় দিতে পারবেন। বললো, তুই আজই চলে আয়! জিজ্ঞেস করলাম ক'টার দিকে আপনি ফ্রী থাকবেন? বললো, বেলা বারোটার দিকে চলে আর। বন্ধু রাশেদকে ফোন করে এক সাথে মগবাজারের দিকে রওনা হলাম। যাত্রা পথে মনে হলো, এত বড় একজন মানুষের বাসায় যাচ্ছি খালি হাতে তো আর যাওয়া যায় না। মিষ্টি নিলাম। যথারীতি, বাসায় গিয়ে হাজির হলাম। তিনি বললেন, এগুলো আনতে গেলি কেন? তার আন্তরিকতায় মুগ্ধ হলাম।
তার সাথে বিভিন্ন বিষয়ে গল্প হলো প্রায় আধ ঘন্টারও বেশী সময় ধরে। পুরো আলোচনাটাই রেকর্ডিং করা হলো, কোন এক সময় হয়তো আমার ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করবো, কিন্তু ঠিক হয়ে উঠছে না। অনেক অনেক গল্প হলো। গান নিয়ে, আমার ছোটবেলার স্মৃতি, তার ব্যক্তিগত কিছু তথ্য জানা হলো, কিছু উপদেশ। এর মাঝেই তার ব্যান্ড দলের অন্যান্য সদস্যরাও এসে হাজির। সবার সাথেই কথা হলো, ছবি তোলা হলো।
যাবার আগে তিনি তার দেয়া কথা মতো প্রায় ৮/৯ টা সিডি নিয়ে আসলেন, আটোগ্রাফও দিলেন আমার অনুরোধে। গুণীজনদের সাথে দেখা হলে আমি এই জিনিসটা ভুলে যাই না কখনো। ড.ইউনুস স্যার, প্রাক্তন জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনান, রেডিটের প্রতিষ্ঠাতা এ্যালেক্সিস ওহানিয়ান যাদের সাথেই দেখা করেছি, তাদের আটোগ্রাফ এবং তাদের সাথে ছবি তোলার ব্যাপারে একই ঘটনা ঘটেছে।
যাইহোক, টিপু ভাইয়ার সাথে দেখা করে বেশ ভালো লাগলো। আমাদের কাজেও বেশ উৎসাহও দিলেন। বলতে দ্বিধা নেই, এই ধরনের উৎসাহ পাওয়াটাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। বড় কাজ করার উদ্দেশ্য থাকলে কখনো স্বীকৃতি পাওয়ার আশা রাখতে নেই, তবুও স্বীকৃতি বরাবরই অনুপ্রেরনা হিসেবে কাজ করে। তাই এই লিখার মাধ্যমে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই টিপু ভাইকে সেই সাথে অবসকিওর ব্যান্ডের সকল সদস্যদের। অনেক ধন্যবাদ।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা জুলাই, ২০২২ সকাল ১১:৪৩

অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। ছবি আটো ইন্সার্ট হবে।



