somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর আধুনিকায়ন ও ব্যক্তিগত ভাবনা

০৫ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১০:০০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীকে দেশের গর্ব বলেই আমি মনে করি। ছোট বেলায় স্কুলে পড়াকালীন সময়ে ক্লাস রুমের জানালা দিয়ে দেখতাম সেনা বাহিনীর সদস্যরা ভারী সরঞ্জাম কাঁধে নিয়ে হেটে যাচ্ছেন। সেই থেকে মিলিটারী বাহিনীর প্রতি আকর্ষণ জন্ম নেয়। আমেরিকায় এসেও এখানকার সেনা বাহিনীতে যোগ দেয়ার জন্য রিক্রুটিং সেন্টারে গিয়ে মৌখিক ও লিখিত পরীক্ষায় পাশের পর শারীরিক ভাবে উত্তীর্ণ হয়েছিলাম। ছ'মাসের ট্রেনিং এর মানসিক প্রস্তুতি নেয় হলো, দিনক্ষণ নির্ধারণ হওয়ার পর বুঝতে পারলাম খুব সম্ভবত আমাদের ট্রেনিং শেষে ডিপলয়মেন্ট ইরাকে হবে। কিছুটা ভেবে-চিন্তে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। বিষয়টা আমাকে পীড়া দিলেও ব্যক্তিগতভাবে নীতির কাছে আপোষ করা আমার জন্য অনেকটাই কঠিন। আমি প্রথম থেকেই ইরাক যুদ্ধের বিরোধীতা করেছি, করছি আর আগামীতেও করবো। আমেরিকার সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য আমার অস্ত্র ধরতে কোন দ্বিধা নেই, তবে বিনা কারণে কোন দেশ আক্রমণের পক্ষে আমি নই, বিশেষ করে সেটা যদি হয় মিথ্যের উপর ভিত্তি করে।

যাইহোক বলছিলাম বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী নিয়ে, আমি বিশ্বাস করি আমাদের অর্জিত স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তারাই আমাদের প্রথম লাইন অফ ডিফেন্স। আমি দৃঢ়ভাবে মনে করি আমাদের সামরিক বাহিনী চৌকশ ও দক্ষ। পাশাপাশি এটাও মনে করি বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীগুলোর আরো অনেক বেশী আধুনিকায়ন প্রয়োজন যা কোন একটা অজানা কারণে খুব ধীর গতিতে হচ্ছে। তাদের আধুনিকায়ন জরুরী।

দীর্ঘদিন ধরেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সামরিক বাহিনী ও তাদের বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে জানার চেষ্টা করছি। লব্ধ জ্ঞান বারবার আমাকে এটাই মনে করিয়ে দিচ্ছে যে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী সরঞ্জামের দিক থেকে ঠিক ততটা আধুনিক নয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে তাদের সরঞ্জাম আধুনিকায়ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে তারপরেও বলবো তাদের সরঞ্জামের মান খুব একটা সন্তোষজনক নয় বলে আমার মনে হয়। বিগত কয়েক বছরে দেশে কিছু সরঞ্জাম দেশে এসেছে কিন্তু এগুলোর কোনকিছুই অত্যাধুনিক নয়। বলতে পারেন অনেকটা দায় সারা কাজের মতো করেই সরঞ্জাম আসছে। বুঝতে পারি দেশ কঠিন অর্থনৈতিক অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তবুও সামরিক বাহিনীর আধুনিকায়নকে কোনভাবেই হালকাভাবে নেয়া উচিত নয় বিশেষ করে আমরা যখন ধীরে ধীরে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছি।

যেকোন দেশের সামরিক বাহিনীগুলো মূলত সেনা, নৌ এবং বাহিনী দিয়ে সাজানো যদিও কিছু কিছু দেশে এর ব্যাতিক্রমও দেখা যায় ভৌগোলিক কারণে। যেমন ধরুন নেপালের কোন নৌ বাহিনী নেই কারণ তাদের দেশে জলসীমা বলতে তেমন কিছু নেই বা কোন সমুদ্র তীরবর্তী দেশও সেটা নয়। তবে এই তিন বাহিনী ছাড়াও স্বাভাবিকভাবে কোস্ট গার্ড এবং বর্ডার গার্ড বাহিনীও দেখা যায় বিভিন্ন দেশে। তবে আমি আমার দৃষ্টিতে মূলত তিন বাহিনীর সম্ভাব্য প্রয়োজনীয় কিছু সরঞ্জাম আলোচনা সীমাবদ্ধ রাখার চেষ্টা করবো।

এখানে এটা বিষয় মনে রাখা জরুরী যে, কোন দেশের সামরিক সরঞ্জাম ও তার প্রয়োজনীয়তা মূলত সুর্নিদিষ্ট বাহিনী প্রস্তুত করলেও প্রশাসন এখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। প্রস্তাবিত সরঞ্জাম আদৌও ক্রয় করা হবে কি না বা তার প্রয়োজনীয়তা কতটুকু রয়েছে তার সিদ্ধান্ত কোন দেশের নীতি নির্ধারকরাই করে থাকেন। তাই নীতি নির্ধারকদেরও কিছুটা সামরিক জ্ঞান অর্জন করার চেষ্টা করলে সুফল পাওয়া সম্ভব। দেশ ভেদে এ সংক্রান্ত বিভিন্ন সংসদীয় কমিটিও গঠিত হয়ে থাকে যারা বিষয়গুলো নিয়ে পর্যালোচনা করে থাকেন।

উদাহরণ হিসেবে ধরুন, সেনা/বিমান বাহিনী বললো তারা রাশিয়ার এস-৩০০/৩৫০/৪০০ অথবা আমেরিকার প্যাট্রিয়ট আকাশ প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনা প্রয়োজন বলে মনে করছেন। কিংবা বিমান বাহিনী বললো তারা আমেরিকার এফ-১৫ ঈগল/এফ-১৮ হরনেট যুদ্ধ বিমান কেনার প্রয়োজন বোধ করছেন। কিংবা নৌ বাহিনী বললো তারা এয়ার ক্রাফট ক্যারিয়ার ক্রয় করা প্রয়োজন। খুব সম্ভবত এ ধরনের প্রস্তাব গুলো কখনোই পাশ হবে না। হয়তো আমাদের বাহিনী কখনোই এ ধরনের প্রস্তাবও দেবেন বলে আমি মনে করি না তবুও আলোচনার জন্য বলছি। বাংলাদেশের জন্য এ ধরনের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কোন প্রয়োজন আছে বলে আমার মনে হয় না। বিষয়গুলো অনেকটাই দেশের আকার, ভৌগোলিক অবস্থান, ক্রয় ক্ষমতা, পররাষ্ট্র নীতি ছাড়াও বেশ কিছু বিষয়ের উপর নির্ভরশীল বলে আমার ধারনা।

এসব কিছুর আলোকে আগামী পোস্টে কিছু কিছু সুর্নিদিষ্ট সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে আলোকপাত করার চেষ্টা করবো ব্যক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে।

দ্রষ্টব্য: আমার ভাবনাগুলো নিতান্তই ব্যক্তিগত। আমি কোন দেশের কোন সামরিক বাহিনীর সদস্য নই বা কখনো ছিলাম না এবং এ বিষয়ে প্রাতিষ্ঠানিক কোন ডিগ্রী অর্জন করিনি। পুরো বিষয়গুলোই দীর্ঘদিনের নিজস্ব গবেষণা ও লব্ধ জ্ঞাণ থেকে নেয়া। এর সাথে বাস্তবতার কোন মিল নাও থাকতে পারে।

ছবি কপিরাইট: দি ডিপ্লোম্যাট।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১২:৩৯
১০টি মন্তব্য ১০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গরিবি

লিখেছেন মৌন পাঠক, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ৯:২১


চিত্রঃ অন্তর্জাল

গরিবি বা ফকিন্নি ও সেল করা যায়,
উহারে এনক্যাশ করা যায়।

সেই এনক্যাশমেন্টটা গরিব নিজেও সেল করতে পারে, আবার তার গরিবানারে অন্য কেউও এনক্যাশ করতে পারে।

দেশের সিংহভাগ এতিমখানা মাদ্রাসা এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

হেলুসিনেশন। চ্যাপ্টার ৮

লিখেছেন স্প্যানকড, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৩৪

ছবি নেট ।

এ তুমি কি সেই তুমি?
যাকে খুঁজি দিবানিশি
এ তুমি কি সেই তুমি?
যার জন্য নিজেকে
খতম করতে রাজি।

এ তুমি কি সেই তুমি?
যার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

কবিতা

লিখেছেন জিনাত নাজিয়া, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:৪২

"শেষ অধ্যায়"

তুমি আমায় দেবতাদের দেয়া
অভিশপ্ত সিসিফাস ভেবোনা,
আসলে আমি হই, জলন্ত কোনো অগ্নিকুণ্ড,
অথবা ভালোবাসার দুরন্ত কোনো
এক দুর্বাঘাস।

যেখানে তুমি নিশ্চেন্তে মুখ ডুবিয়ে
শ্বাস নিতে পার। অথবা তুমি
জানই না,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেউ প্লিজ বলে না, ধন্যবাদ বলে না, সরিও বলে না। ***************************

লিখেছেন মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৩:১৫

আমাদের দেশের মানুষের খুব কমন একটি বিষয় একটু খেয়াল করলেই যে কারো চোখে পরে। আমাদের দেশের মানুষ পারতপক্ষে প্লিজ, সরি, ধন্যবাদ এই জাতীয় শিষ্টাচার বা এটিকেট (Etiquette) সমৃদ্ধ শব্দগুলোর ব্যবহার... ...বাকিটুকু পড়ুন

হ্যালোকাহিনী :) The HELLO Story

লিখেছেন আফলাতুন হায়দার চৌধুরী, ০৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ বিকাল ৫:৪৬

আমরা ফোন বাজলে প্রথমে বলি হ্যালো। প্রশ্ন হল হ্যালো আসলে কি?

কিছু মানুষ বিশ্বাস করতো হ্যালো হলেন টেলিফোনের আবিষ্কারক বিখ্যাত বিজ্ঞানী আলেক্সান্ডার গ্রাহাম বেল এর প্রেমিকা। এই নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×