somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সোনালী অতীত ৮০-৯০+ :: নষ্টালজিয়া - ২

২৯ শে এপ্রিল, ২০০৯ বিকাল ৪:৪৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঠিক এরম সময়ে ... গ্রীষ্মের কাঠ ফাটা দিনগুলোতো আম-কাঁঠালের সময়.. স্কুল ছুটি থাকত ... তখন অবশ্য সামার ভ্যাকেশন ছিল না .. ছিল আম-কাঁঠালের বন্ধ। স্কুল ছুটি মানে নানা বাড়ি যাওয়া অবশ্যম্ভাবী... কোন গাছের কোন আমটা পেকেছে.. সব তখন থাকত নখ দর্পণে। আর গাছে চড়লেই টারজান টারজান ভাবও চলে আসত। গাছ থেকে ডাল ভেঙ্গে পরার স্মৃতীও ছিল।

এমনিতে স্কুলের সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতে দুপুরে খাওয়া শেষে আম্মা যখন কানে ধরে বিছানায় পাঠাত ... মন খারাপ করে বিছানায় এপাশ ওপাশ... কখন আম্মার চোখটা বন্ধ হবে... আর ছুটবো টিভির দিকে.... বেলা তিনটার চল্লিশ (সম্ভবত) এ শুরু হতো টারজান। সাউন্ড কমিয়ে বোবা ছবি দেখতাম... প্রতিটা ঘটনা... পরের ঘটনা... গাছের ডালে দরি ঝুলিয়ে টারজান হওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা ... পুকুরের ঘাটলা থেকে টারজানের চিৎকার দিয়ে জাম্প দিয়ে পড়া ... সব কিছুই অনুকরণের চেষ্টা চলত।

পরবর্তী সময়ের আরো কিছু কার্টুন জনপ্রিয় ছিল। থান্ডার ক্যাটস, নিনজা টার্টেল স্পেল বাইন্ডার, থ্রি স্টুজেস, গার্ল ফ্রম টুমোরো, কজবি শো, সহ বেশি কিছু কিডজ শো।

সেই আমলে বাড়ির বড়দের মুখে মুখে আলোচিত হতো সকাল সন্ধ্যা এবং ঢাকায় থাকি সিরিয়াল।

সকাল সন্ধ্যা একটি বাংলা ধারাবাহিক নাটকের নাম। ১৯৮০-র দশকের শুরুতে এটি বিটিভি-তে সম্প্রচার হয়। প্রধান চরিত্রে ছিলেন পীযুষ বন্দোপাধ্যায় এবং আফরোজা বানু । তৎকালীন সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় নাটক। - বাংলা ইউকিপিডিয়া

এর পরের সময়গুলোতে আরো অনেক নাটক বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়ে ছিল ... বহুব্রীহি, সংশপ্তক, এই সব দিনরাত্রি, কোথাও কেউ নেই, বারো রকমের মানুষ, ইত্যাদি। প্রায় ঈদেই আমজাদ হোসেনের ফানি নাটক জব্বর আলি সিরিজ পাওয়া যেত (সব ঈদে নয়)। আনন্দমেলা ছিল ঈদের প্রধান আকর্ষণ এবং যথারীতি নিরানন্দের। তখন এক একটা নাটক ছিল প্রায় এক ঘন্টার আর প্রতি সপ্তাহে নাটক ছিল মাত্র দুটা। আর তাই ভাল ভাল নাটকের প্রতিযোগিতা চলত সেই সময়ে। বর্তমান প্রজন্মের জন্য মায়াই লাগে... তাদের কপালে এইসব আর জুটবে না।


সংশপ্তক নাটকে হুমায়ুন ফরিদির এবং ফেরদৌসি মজুমদারের দুর্দান্ত অভিনয়


কোথাও কেউ নেই নাটকে আসাদুজ্জামান নুর সে সময় একটা স্টাইল ক্রিয়েট করেছিলেন... বাইকের চাবিটা একটা চেন এর মাথায় লাগিয়ে হাতের আঙ্গুলে ঘুরানো... যেটা ঢাকার রাস্তায় অনেক কেই দেখা যেত। আবার নাটকের শেষ দৃশ্যে তার মৃত্যুর জন্য তো ঢাকা রিতিমত মিছিল। এখনো বাকের ভাইয়ের জন্য পুরানা ঢাকায় কুলখানি হয়।


আজ রোববার হুমায়ুন আহমেদের আরেকটি ক্রিয়েশন। যেখানে তিতলি ভাইয়া, কংকা ভাইয়া... বড় চাচা না কফিনের মধ্যে শুয়ে আছে। ফানি সব ক্যারেক্টার। বহুব্রীহি নাটকটি্ও ফানি নাটক।

অয়োময়ের জনপ্রিয়তা আলাদা করে বলার মত। আসাদুজ্জামানের অভিনয়ের তুলনা শুধু তিনিই ছিলেন।


পরের সময়টায় ... আমরা ছোট পর্দার নায়িকা হিসেবে পাই বিপশা হায়াত.... সমী কায়সার... আর আফসানা মিমিকে। বিশেষ করে সমীর ভক্ত ছিলাম ;) ... পরে সমী বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হলে ব্যাপক কষ্ট পাই :( ... বিপাশার একটা ইনোসেন্ট লুক ছিল ... সমীর অভিনয় ছিল দুর্দান্ত ... আর আফসানা মিমি? তাকে দেখলেই মনে হতো স্কুল থেকে ফির'ল মাত্র ;)। এদের সমসাময়িক ছিলেন বিজরি বরকতুল্লাহ।

বিটিভির দাপুটে অভিনেতাদের মধ্যে প্রথমেই আফজালের ক্রেজ ছিল মেয়ে মহলে ;)... হুমায়ুন আহমেদের দুর্দান্ত অভিনয়ের মাঝেও আসাদুজ্জামান নুরের অবস্থান ছিল স্ব-মহিমায় উদ্ভাসিত। তখন মেঘনা নামের একজন টিভি নায়িকা ছিল। যিনি এখন আর টিভিতে আসেন না। আর বিশেষ ভাবে ছিলেন সুবর্না মুস্তাফা। আলি যাকের .. সারা যাকের... আবুল হায়াত... আবুল খায়ের... পীযুষ... আসাদ ... খালেদ খানদের অভিনয় ছিল সত্যি দেখার মত।

এর পর আসে তৌকির একটা এডিক্টেড নাটকের নায়ক হওয়ার সুবাদে তাকে সব সময় তাই মনে হত। জাহিদ হাসানতো পুরা মফিজ টাইপ ;) (এটাও নাটকের সুবাদে), আজিজুল হাকিম ছিলেন চিরসবুজ... তার আরো একটি নাম ছিল .. প্যাকেজুল হাকিম ;), শহীদুজ্জামান সেলিমদের যুগ।

(চলবে)
সর্বশেষ এডিট : ১৩ ই মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১২:৫৯
২৭টি মন্তব্য ২৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মিশন: কাঁসার থালা–বাটি

লিখেছেন কলিমুদ্দি দফাদার, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ৯:২৭

বড় ভাই–ভাবীর ম্যারেজ ডে। কিছু একটা উপহার দেওয়া দরকার। কিন্তু সমস্যা হলো—ভাই আমার পোশাক–আশাক বা লাইফস্টাইল নিয়ে খুবই উদাসীন। এসব কিনে দেওয়া মানে পুরো টাকা জ্বলে ঠালা! আগের দেওয়া অনেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

×