somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

খোকা

০৬ ই জুন, ২০১৭ রাত ৮:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এবার রোজা একটু বড় দিনেই হচ্ছে। তবে আমি যার কথা বলছি সে এই দীর্ঘ দিনে রোজা রাখার জন্য ক্লান্ত নয়। বয়স সত্তর ছুঁই ছুঁই করলেও কেউ দেখলে মনে করবে ষাট বছর হয়েছে কি হয় নি। উপর থেকে যতই শক্ত দেখাক ভিতরটা ক্লান্তি আর দুর্বলতায় ভরে আছে। তবে সেই ক্লান্তি যতটা না শারীরিক তার চে বেশি মানুষিক । দীর্ঘ জীবনের হিসাব না মিলাতে পাড়ার জন্যই হয়ত এই ক্লান্তি ।

আজা পঁচিশ রোজা, কয়েক দিন পরে ঈদ। বিধবা হয়েছে সাত বছর আগে, হিসাবে গড়মিল অ বোধহয় তখন থেকে শুরু। দুনিয়াতে আপন বলতে কেউ নেই বললে ভুল হবে, তার চেয়ে থেকেও নেই বললেই বেশি ভাল হয়।
আছে বলতে একমাত্র ছেলে আর তার বউমা আর এক মাত্র নাতি, আবার নেই ও। সত্যিকারে অর্থে তার আপন বলতে যারা আছেন তারা, তারই মত হতভাগ্য মা-বাবা, যাদের ঠিকানা বৃদ্ধাশ্রম।

তার স্পষ্ট মনে আছে একবার তার খোকার জর হওয়ায় সারা রাত জেগেছিল, আর জেগেছিল বটে তবে অই দিন টার কথা বেশি মনে পরে। সেদিন তার খোকা কথা দিয়েছিল যে সে মা কে ছেরে যাবে না। কোথায় আজ তার সেই খোকা, কোথায় ই বা তার সেই কথা।

নতুন জায়গা, শহুরে পরিবেশ, মানিয়ে নিতে পারবে না বলেই নাকি তাকে বৃদ্ধাশ্রমে রাখা। সে বহুবার বলেছিল যে মানিয়ে নিবে, খোকার সাথে থাকার জন্য এ আর এমন কি। তা আর শুনলে কই। মাঝে মাঝে দেখা করতে আসে। তবে তা বহুক্ষণের জন্য নয়, জেলের আসামির মত সময় মেপে সেই সাক্ষাত হয়।

আজ তার খোকা, রহমতের আসার কথা, তাই যেন আজ এসব কথা আরও বেশি মনে পরছে। সকাল গেল, বিকাল গেল, ছোট্ট অথচ ভয়ানক রাত্রিটাও কেটে গেল, খোকা এলো না।

এক রাত্রে হঠাৎ তার ছোট খোকা এসে তাকে বললে, "মা দুয়া কর।" সে জিজ্ঞাস করার আগেই বলে উঠেছিল যাতে সে সবার প্রথম হয় সেই জন্য দুয়া করতে। করেছিল, খোকা প্রথম ও হয়েছিল। আজ করে, আল্লার কাছে আজও নিজের মঙ্গল কামনার আগে সে তার খোকার মঙ্গল চায়। এমনি আর কত ঘটনা আছে, এসব ভাবতে ভাবতেই সে আরও কয়েকটা টা দিন পার করে দিল।

অবশেষে উনত্রিশ রোযায় তার খোকা এলো, নাতি ও এসেছে, বৌ ও এসেছে। নাতির সাথে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলল। চলে যেতে যেতে নাতি জেন আর মা এর কানে কিছু একটা বললে। সে কথা বৃদ্ধ শুনে নি, সোনার কথাও নয়। শুনলে হয়তবা বলে উঠতেন, "ছি এসব বলে না।"

পাঁচ বছরের বালক টি তার মা কে বেশি কিছু বলে নি শুধু বলে ছিল, " মা, আমি বিয়ে করলে কি তুমিও এখানে থাকবে।"

পরেরদিন রহমতের ঘর যেন আনন্দে মেতে উঠল।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জুন, ২০১৭ রাত ৮:২৯
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা ও পদ্মশ্রী পুরস্কার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৬



এ বছরের পদ্মশ্রী (ভারতের চতুর্থ সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মাননা) পদকে ভূষিত করা হয়েছে, বাংলাদেশের রবীন্দ্র সংগীত এর কিংবদন্তি শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে।

আমরা গর্বিত বন্যাকে নিয়ে । ...বাকিটুকু পড়ুন

কষ্ট থেকে আত্মরক্ষা করতে চাই

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৯



দেহটা মনের সাথে দৌড়ে পারে না
মন উড়ে চলে যায় বহু দূর স্থানে
ক্লান্ত দেহ পড়ে থাকে বিশ্রামে
একরাশ হতাশায় মন দেহে ফিরে।

সময়ের চাকা ঘুরতে থাকে অবিরত
কি অর্জন হলো হিসাব... ...বাকিটুকু পড়ুন

রম্য : মদ্যপান !

লিখেছেন গেছো দাদা, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৩

প্রখ্যাত শায়র মীর্জা গালিব একদিন তাঁর বোতল নিয়ে মসজিদে বসে মদ্যপান করছিলেন। বেশ মৌতাতে রয়েছেন তিনি। এদিকে মুসল্লিদের নজরে পড়েছে এই ঘটনা। তখন মুসল্লীরা রে রে করে এসে তাকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

= নিরস জীবনের প্রতিচ্ছবি=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৪১



এখন সময় নেই আর ভালোবাসার
ব্যস্ততার ঘাড়ে পা ঝুলিয়ে নিথর বসেছি,
চাইলেও ফেরত আসা যাবে না এখানে
সময় অল্প, গুছাতে হবে জমে যাওয়া কাজ।

বাতাসে সময় কুঁড়িয়েছি মুঠো ভরে
অবসরের বুকে শুয়ে বসে... ...বাকিটুকু পড়ুন

Instrumentation & Control (INC) সাবজেক্ট বাংলাদেশে নেই

লিখেছেন মায়াস্পর্শ, ২৩ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৫




শিক্ষা ব্যবস্থার মান যে বাংলাদেশে এক্কেবারেই খারাপ তা বলার কোনো সুযোগ নেই। সারাদিন শিক্ষার মান নিয়ে চেঁচামেচি করলেও বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরাই বিশ্বের অনেক উন্নত দেশে সার্ভিস দিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×