somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

মহানবী (সঃ) এর একটি ঘটনা ও হেফাজতে ইসলামের কর্ম!

০৩ রা মে, ২০১৩ বিকাল ৪:০১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

মহানবী (সঃ) এর একটি ঘটনা বলি। ঘটনাটির রেফারেন্স দিতে পারবো না বলে দুঃখিত! কিন্তু ঘটনাটি কমবেশি আমাদের সবার জানা।

নবীজি একবার এক বাড়ির পাশ দিয়ে কোথাও যাচ্ছিলেন। হটাৎ তিনি থমকে দাঁড়ালেন! সাথে থাকা সাহাবী জিজ্ঞেস করলেন, ‘হজুর থামলেন কেন, কী হয়েছে?’ তিনি উত্তর দিলেন, ‘আশে-পাশেই একটি কবর আছে এবং সেই কবরে থাকা মুর্দারের ভয়াবহ আজাব হচ্ছে।’ সাহাবা লোকজনদেরকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারলেন যে আসলেই ওখানে একটা কবর আছে এবং কবরটি একটি যুবক ছেলের। নবীজি জিজ্ঞেস করে জানলেন যে ছেলেটি জীবদ্দশায় প্রচণ্ড খারাপ ছিল। ধর্ম-কর্ম মোটেই করতো না এমনকি ছেলেটি তার মায়ের সাথে সবসময় খারাপ ব্যবহার করতো এমনকি মারধরও করতো। ছেলেটির মা এখনও জীবিত আছেন। তিনি ছেলেটির মাকে ডেকে আনতে বললেন।

মহিলাটি (মৃত ছেলেটির মা) আসার পর নবীজি তাকে বললেন, ‘আপনি কী জানেন কবরে আপনার ছেলের কত আজাব হচ্ছে?’ মহিলাটি ক্ষোভের সাথে জবাব দিলেন, ‘জানিনা, তবে হোক বেশি বেশি হোক। বেঁচে থাকতে ও আমাকে বহুত জ্বালিয়েছে।’ নবীজি তখন বললেন, ‘দেখুন আপনি জানেন না ওর কীরকম ভয়াবহ আজাব হচ্ছে। ওর এত আজাব হচ্ছে যে আপনি ওর চিৎকার শুনলে পাগল হয়ে যেতেন। আপনি ওকে মাফ করে দিন। আপনি মাফ না করলে ওর কবর আজাব কমবে না।’ এই কথা শোনার পরও মহিলাটির কোন বিকার হলো না। সে তার অবস্থানেই অনড়।

কোনো উপায় না দেখে নবীজি তখন দুহাত তুললেন। মোনাজাতে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করলেন, ‘হে আল্লাহ তুমি এই মহিলাকে তার পুত্রের চিৎকারের একটু অংশ শুনিয়ে দাও।’ এই দোয়ার সাথে সাথে মহিলা বিকট চিৎকার করে বলতে লাগলনে, ‘হে আল্লাহ আমি আমার ছেলেকে মাফ করে দিলাম, তুমি ওর কবর আজাবকে মাফ করে দাও।’ সাথে সাথে আল্লাহ ঐ ছেলেটির কবরের আজাব মাফ করে দিলেন। এরপর নবীজি সেখান থেকে তাঁর পথে রওনা হলেন।

এখন আসি আমাদের কথায়। এই নবীজিরই একনিষ্ঠ অনুসারী দাবি করা হেফাজতে ইসলামের নেতারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার-প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করার জন্য জামায়াত ইসলামের ফাঁদে পা দিয়ে তাদের টাকা খেয়ে তথাকথিত নাস্তিক বিরোধী আন্দোলনে নেমে দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলছেন! সাধারণ মানুষের কথা না হয় বাদই দিলাম কিন্তু হেফাজতের বড় বড় মাওলানারা কি এই বিষয়গুলো জানেন না? ইসলাম ধর্ম হেফাজতের জন্য তো ইসলাম ধর্মের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহই যথেষ্ট। আল্লাহ বলেছেন যে তিনি সর্বশক্তিমান। হেফাজতিরা এটা আমাদের চেয়ে ভাল জানেন এবং বুঝেন কিন্তু মানেন না কেন? তাঁরা কি তাহলে আল্লাহর শক্তিতে সন্দেহ পোষণ করেন?

পাপীদের পরকালে কিরুপ শাস্তি হবে, কেমন কঠিন, ভয়াবহ শাস্তি হবে তা উনারাই ভাল জানেন। এইসব বিষয়ে উনারা সচরাচরই ওয়াজ-মাহফিল করেন। তাহলে ভুল পথে থাকা (ধর্ম মতে) নাস্তিকদের পরকালে একেকজনের কীরুপ ভয়াবহ, লোমহর্ষক শাস্তি পাবে তা ভেবে শিউড়ে ওঠেই তো নাস্তিকদের হেদায়েতের জন্য উনাদের দোয়া করার কথা! নাস্তিকদের বুঝিয়ে-শুনিয়ে দ্বীনের পথে আনার চেষ্টা করার কথা! নবীজির উপরোক্ত ঘটনা এবং তায়েফের ঘটনা তো তাই শিক্ষা দেয়। কিন্তু তা না করে উনারা জামায়াত ইসলামের টাকা খেয়ে নাস্তিকদের ফাঁসি এবং অন্যান্য অযৌক্তিক দাবিতে আন্দোলন করছেন। কিন্তু কেন? নাস্তিক ও নাস্তিকতা তো সাম্প্রতিক সমস্যা না। তাহলে উনারা কেন আগে এ আন্দোলন করলেন না। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের শেষ মুহূর্তে কেন উনারা এ আন্দোলন শুরু করলেন? দেশের বিরোধিতা করা ও দেশের মানুষদের হত্যাকারীদের বাঁচাতে গিয়ে উনারা কি অন্যায় করছেন না, পাপ করছেন না? তাছাড়া নাস্তিকরা তো উনাদের মারতে যাননি, কাটতে যাননি কিংবা উনাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধও ঘোষণা করেননি। কে আস্তিক, কে নাস্তিক তার বিচার করার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট। তিনিই তাঁর নামে তাঁর নবীর নামে কটুক্তিকারীদের বিচার করবেন। কেন উনারা আল্লাহর ওপর সেই বিচারের আস্থা রাখতে পারছেন না?

দেশে তো আরও অনেক বড় বড় আলেম-উলামা আছেন যারা উনাদের সমর্থণ তো দূরের কথা, সরাসরি বিরোধিতা করছেন! কেন? তাঁরা কি ইসলাম জানেন না, বুঝেন না? হেফাজতের নেতারা কি আসলেই ইসলামের রক্ষক? নাকি ইসলাম হেফাজতের নাম করে একেকজন নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত? সাধারণ-কোমলমতি মাদ্রাসা ছাত্রদের এবং ধর্মপ্রাণ সাধারণ মানুষদের ব্যবহার করে একেকজন কি দুনীয়াবি ভোগ-লালশায় মত্ত হচ্ছেন না?

কে জানে বা কে দিবে এইসব প্রশ্নের জবাব? কেউ দিবে না। তবে এর উত্তর পাঠক আপনার কাছেই আছে। নিজেকে জিজ্ঞেস করুন পেয়ে যাবেন।
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ছি , অবৈধ দখলদার॥ আজকের প্রতিটি অন‍্যায়ের বিচার হবে একদিন।

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:১০



ধিক ‼️বর্তমান অবৈধভাবে দখলদার বর্তমান নরাধমদের। মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশে । বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষমা চাইতে হলো ! রাজাকার তাজুলের অবৈধ আদালতে। এর চাইতে অবমাননা আর কিছুই হোতে পারেনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আম্লিগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধে আর কোন বাধা নেই

লিখেছেন সৈয়দ মশিউর রহমান, ০৪ ঠা ডিসেম্বর, ২০২৫ দুপুর ১২:২২


মঈন উদ্দিন ফখর উদ্দিনের ওয়ান-ইলেভেনে সরকারের ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে ভারতের সহায়তায় পাতানো নির্বাচনে হাসিনা ক্ষমতায় বসে। এরপরই পরিকল্পিত উপায়ে মাত্র দুই মাসের মধ্যে দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের পর্যায়ক্রমে বিডিআরে পদায়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামীকেও নিষিদ্ধ করা যেতে পারে ।

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ রাত ১২:৪৫


বাংলাদেশে আসলে দুইটা পক্ষের লোকজনই মূলত রাজনীতিটা নিয়ন্ত্রণ করে। একটা হলো স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি এবং অন্যটি হলো স্বাধীনতার বিপক্ষ শক্তি। এর মাঝে আধা পক্ষ-বিপক্ষ শক্তি হিসেবে একটা রাজনৈতিক দল... ...বাকিটুকু পড়ুন

J K and Our liberation war১৯৭১

লিখেছেন ক্লোন রাফা, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:০৯



জ্যাঁ ক্যুয়ে ছিলেন একজন ফরাসি মানবতাবাদী যিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্সের একটি বিমান হাইজ্যাক করেছিলেন। তিনি ৩ ডিসেম্বর, ১৯৭১ তারিখে প্যারিসের অরলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ

লিখেছেন এ আর ১৫, ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:৪০



এবার ইউনুসের ২১শে অগাষ্ঠ ২০০৪ এর গ্রেনেড হামলার তদন্ত করা উচিৎ


২০০৪ সালের ২১ শে অগাষ্ঠে গ্রেনেড হামলার কারন হিসাবে বলা হয়েছিল , হাসিনা নাকি ভ্যানেটি ব্যাগে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×