মানুষটাকে দেখতে একটু বোকা মনেহয়। শুধু মনেই হয়না আসলেই বোকা। নাম তার ছায়াবাজ। সহজে তার মাথায় কেনো কিছু ঢুকে না। যখন কেনো কিছু মাথায় ঢুকে যায় তখন তার চিন্তা ক্ষমতা দ্রুত কাজ করে। বর্তমানে খানিকটা দুঃশ্চিন্তায় পড়েছে। মানুষ যখন শারীরিক এবং মানুসিক দুর্বল হয় তখন অনেক ধরনের চিন্তা চলে আসে মাথায়। রাত থেকে বিদুৎ নেই তাই মোবাইল কম্পিউটার বন্ধ হয়ে আছে। হালকা-পাতলা ঝড়ের কারণে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ । আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে যেখানে বৃষ্টি হলেই বিদুৎ চলে যায় কয়েক ঘন্টার জন্য,এখন’তো মোটামুটি ঝড় হয়েছে। মনেহয় ঝড়ের কারণে বৈদ্যুতিক খুঁটি উপড়ে গেছে।
বিদুৎ না থাকায় কম্পিউটার মোবাইল বন্ধ রয়েছে তাই কিছুটা মানসিকভাবে দুঃশ্চিন্তায় পড়েছে ছায়াবাজ। রাতে শুয়ে শুয়ে ভাবছে সকালে পযর্ন্ত যদি বিদুৎ না আসে, ঝড় তুফান সাইক্লোন যাই হোক না-কেনো সকল বাঁধা পেরিয়ে মোবাইল চার্জ করতে হবে। জরুরী একটা মেইল পাঠাতে হবে। ইচ্ছা করলে হাতে লিখে চিঠিটি কুরিয়ার সার্ভিসে করে পাঠানো যেতো কিন্তু হাতে লেখা ভালো না। স্কুলজীবনে স্কুলে পড়ার সময় হাতের লেখা এতটাই খারাপ ছিল যে, নিজের উপর নিজের খুব রাগ হত। একদিন স্কুলের স্যার হাতের লেখা দেখে শুকনা মুখে তাকিয়ে বললো যদি আমাদের স্কুলে হাতের লেখার জন্য কোনো অ্যাওয়ার্ড দেওয়া সিস্টেম থাকতো তাহলে তোর নামটা প্রথম সারিতে বসিয়ে দিয়ে নিজেকে নিয়ে গর্ববোধ করতাম। স্যারে কথা শুনে,ভয়ে হাত পা কাঁপতে লাগল ছায়াবাজের।
স্যার, দয়াকরে ক্লাসে আর লজ্জা দিবেনা। আপনার কথায় আমি কিন্তু লজ্জা পাচ্ছি। দেখছেন’তো ক্লাসে সবাই দাঁত কিলিবিলি করে খিল খিল করে হাসছে। আরে তোদের লজ্জা তো কঁচু পাতার পানির মতো। দেখিস না, শিশির কর্ণা বা বর্ষাকালে মেঘলা আকাশে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ফোঁটা কঁচু পাতায় বেশিক্ষণ থাকেনা, একটু নাড়া লাগলেই গড়িয়ে পড়ে। তোমাদের লজ্জাও ঠিক তেমন। ওভাবে গড়িয়ে ঝরে যায়।
পিছন থেকে একজন ছাত্র স্যার’কে বলছে স্যার, আপনাকে একটি কথা জিজ্ঞাস করতে চাই। যদি আপনি কিছু মনে না করেন। কি বলবি, বল শুনি। স্যার এমন কেনো পাতা আছে যা বৃষ্টির পানিকে চম্বুকের মত দুর্দান্ত আকর্ষণ করে আটকিয়ে রাখে ? শুন, তোর এই প্রশ্নটি ও ছায়াবাজ'কে কর। যদি ছায়াবাজ উত্তর দিতে না পারে তখন আমাকে বলিস। আমি নাহয় বলেদিবো। আমি ছায়াবাজের কথা কেনো বলছি জানিস ? ছায়াবাজের হাতের লেখা খারাপ হলেও সে একটি জিনিস ভালো পারে। অনেক’কে উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করে বিপদে ফেলে দিতে জানে। অন্যে স্যারেরাও কয়েকবার অভিযোগ করেছেন ওর নামে। তাই তোর এই প্রশ্নটি ছায়াবাজে উপর ছেড়েদেয়। তবে ছায়াবাজের উল্টাপাল্টা প্রশ্নকে খারাপভাবে দেখছি না। খারাপভাবে তখনই দেখবো যখন সে জোড়াতালি দিয়ে অবাস্তব প্রশ্ন করবে বা অযৌক্তিক কথা বলবে।
স্যার, ছায়াবাজ’কে প্রশ্ন করলো ছায়াবাজ তুই কাউকে কখনোই উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করিসনা। কারণ আমরা হয়তো তোর অনেক প্রশ্ন মেনে নিতে দ্বিধাবোধ করবো না কিন্তু অন্যরা তকে খারাপ ভাববে। স্যার, আমি আসলে উল্টাপাল্ট প্রশ্ন করি কি-না জানিনা তবে আমি অনেক’কে প্রশ্ন করি কিছু জানা ও শিক্ষার জন্য। তাছাড়া বিশ্লেষণমূলক প্রশ্ন করলে হয়তো অনেকের কাছে প্যাঁচে বাঁধে। কিন্তু আমি আমার মস্তিষ্কের চর্চ্চা করতে পারি। তাইবলে আমি কাউকে জোর করে কারো মাথায় প্রশ্ন ঢুকিয়ে দেই না। তবে হ্যাঁ, কিছু কিছু প্রশ্ন মাঝে মাঝে মস্কিষ্কে কিলিবিলি করে তখন দেখাযায় মাথা ঘ্যান ঘ্যান শুরু করে। মাস্টার ছায়াবাজকে বলছে। শুন, তোর ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করা উচিত কাকে কি প্রশ্ন করার প্রয়োজন। সে যাইহোক, আগে তোর হাতের লেখা সুন্দর কর। সবসময় চেষ্টা করবে হাতে লেখা সংশোধন করার জন্য।
আজ অনেকদিন পর হঠাৎ করে স্যারের কথা স্মরণ হচ্ছে। কিন্তু স্যারের কথা স্মরণ হলে কি হবে, হাতের লেখা সুন্দর বা সংশোধন করতে পারছিনা। আর কিভাবে পারবো। খাতা কলমের সাথে এখন বেশি সাক্ষাৎ হয়ে উঠেনা। ইন্টারনেট,কম্পিউটার,মোবাইল ফোন,
ফেসবুকের মতো এমন আরো অনেক কিছু এসে মানুষকে অনেক কিছু দিচ্ছে আবার অনেক কিছু কেড়েও নিচ্ছে। কম্পিউটারের লেখায় কোনো কাটাকুটি নেই।তবে হাতের লেখায় কাটাকুটি রয়েছে । অনেকটা কসাইদের মতো ওরা মাংস কাটাকুটি করে। আমরা কাগজে লেখালেখির কাটাকুটি করি। বর্তমানে শুরু হয়েছে কম্পিউটারের লেখার যুগ। হাতে লেখা মনেহয় এই যুগে আর সংশোধন হবে না। হাতের লেখার যুগ প্রায় কেড়ে নিচ্ছে এই বর্তমান যুগ। তবে এই যুগ শেষ হবে নতুন যুগ আসবে।
এই কম্পিউটার যুগে কাটাকুটি না করলেও আরেকটি জিনিস করে থাকি। যে বিষয়টি লক্ষ্যনীয়, সঠিকভাবে বাংলা বানান আর ভাষাকে আয়ত্ব করতে পারিনা। লেখতে গিয়ে শুধু ভুল আর ভুল করে যাই। মাঝেমাঝে অধিকাংশ শব্দ উচ্চারণ করতেই দাঁত নড়বড়ে হয়ে যায়। বানান নিয়ে অনেক ঝামেলায় আছি। তবে মাঝেমাঝে সন্দেহজনক কিছু বানান দেখে সমস্যায় পড়তে হয়।
...........আজকের মত এখানে বিরতি।