somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

খাগড়াছড়ির পথে

১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ১১:৪৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সময় রাত ১০টা, ২৫শে জানুয়ারি, সাল ২০১৪ইং। সবার ব্যাগ-প্যাক করা হয়ে গেছে অপেক্ষা করছি মাইক্রো বাস আসার জন্য। শ্যামলী পরিবহনের রাত ১১টা ৩০ মিনিটের বাসের টিকেট কাটা আছে- গন্তব্য খাগড়াছড়ি। এবারের ভ্রমণে সদস্য সংখ্যা ৯জন। দস্যু পরিবারের ৩ জন- আমি (সারোয়ার সোহেন), মিসেস সোহেন, আর আমাদের মেয়ে সাইয়ারা সোহেন। আছে আমার বন্ধু ইস্রাফীল এবং ওর ওয়াইফ। আরো আছে বন্ধু বসির, মিসেস বসির আর ওদের মেয়ে বুসরা। সব শেষে আছে বসিরের খালাত ভাই স্বপন।


মাইক্রো বাসে যাত্রাবাড়ীর পথে যাত্রা শুরু.....

সাড়ে ১০টার দিকে মাইক্রো বাস আসে বাসার সমনে। সবাই গিয়ে বসে গাড়িতে। রাত আর ইস্তেমার কারণে রাস্তা বেশ ফাঁকা, অল্প সময়েই পৌঁছে যাই যাত্রাবাড়ীর শ্যামলীর ৩নং কাউন্টারের। সাড়ে এগারোটা পার হয়ে যায়, বাস আসে না। এই ফাকে গাড়িতে খাওয়ার জন্য চিপস-বিস্কিট-কেক ইত্যাদি কিনে নেই। বেস কদিন ধরে আমার কাশি, তাই অনেক খুঁজে একটা ফার্মেসী থেকে আমার জন্য কাশির সিরাপ কিনে আনে স্বপন। তারপরও বাস আসে না। ১২টার দিকে বলা হয় বাস এসেছে ৪নং কাউন্টারে। আমরা সবাই তখন হাঁটা ধরি ৪নং কাউন্টারের দিকে। এটাই শুরু, এর পরে আরো অনেক হাঁটতে হবে আমাদের এবারের ভ্রমণে।




কিছুক্ষণ পরেই যাত্রা শুরু করে আমাদের বাস, এ-রাস্তা সে-রাস্তা ঘুরে যাত্রাবাড়ী ওভার ব্রিজের উপরে উঠে আসে বাস। ক-মাস আগেও যে রাস্তাটুকু জ্যাম ঠেলে পেরুতে ঘণ্টা দেড়েকের মত সময় লাগত, তা কয়েক মিনিটেই পেরিয়ে আসি।


দুই পিচ্চির জন্য একটা বেশি সিট নেয়া হয়ে ছিলে। যাত্রার শুরুতে সেই সিটের দখল ওরা বুঝে নেয়।

ঢাকা চট্টগ্রাম রোড চার-লেন করার কাজ চলছে, সেই রাস্তা দিয়ে ঝড়ের বেগে এগিয়ে চলে আমাদের বাস। প্রচণ্ড রাফ চালাচ্ছিল আমাদের ড্রাইভার সাহেব, যদিও গাড়ির উপর উনার কন্ট্রোল দেখার মতো ছিল। মাত্র দেড় ঘণ্টায় পৌঁছে যাই কুমিল্লা চৌদ্দ গ্রামে। এখানে যাত্রা বিরতি ২০ মিনিট। ২০ মিনিট পরে আবারো বাস ছুটে চলে ঝড়ের বেগে, ঝড়ের বেগেই ওভারটেক করে চলে একের পর এক বিভিন্ন পরিবহনের বাস গুলি। ঝাঁকুনি আর সাপের মত একে-বেকে চলার কারণে বাসের বেশির ভাগ যাত্রীই তখনো জেগে আছেন। প্রায় সারা রাত এদের জেগেই কাটাতে হয়ে ছিল শেষ পর্যন্ত।


মিস্টার এ্যান্ড মিসেস বসির


রাত প্রায় সাড়ে তিনটার পরে চট্টগ্রামের যায়গাটার নাম মনে নাই, খুব বেশি সম্ভব “শান্তিরহাট” এসে থেমে যায় গাড়ি। সামান্য ঝিমুনির মতো এসেছিলো গাড়ি থামতেই তা কেটে গেলো।
বিষয় কি? গাড়ি থেমে আছে কেন?
তেমন কিছুই না। সমনে খাগড়াছড়ির পাহাড়ি রাস্তা প্রায় ৪ ঘণ্টার মত সময় লাগবে শহরে পৌছতে। রাস্তায় একটা গাছ কেটে ফেলে রাখলেই হল। নিশ্চিন্তে ডাকাতি করে চলে যেতে পারবে। রাস্তাটা খুবই নির্জন, তাই ড্রাইভার অপেক্ষা করতেছে আরো কয়েকটা গাড়ি আসলে এক সাথে সবাই রওনা হবে। এই সংবাদ শুনে ঘুমের ১২টা বেজে গেলো।


মিস্টার এ্যান্ড মিসেস ইস্রাফীল


আমাদের অস্থির ড্রাইভার সাহেব বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে পারলো না। আরেকটা বাস আসার পরেই গাড়ি ছেড়ে দিলো। আবার শুরু হল খাগড়াছড়ির সর্পিল পথে ছুটে চলা। এবারও গতি কিন্তু মোটেও কমলো না। একে-বেকে ছুটে চলার দরুন যারা জেগে ছিল তারা আর ঘুমতে পারলো না, আর যারা কুম্ভকর্ণের মতো আগে ঘুমিয়েছে তাদের তেমন কোন ব্যাঘাত হল না। পাহাড়ি নির্জন পথে ছুটতে ছুটতেই এক সময় রাতের অন্ধকার ম্লান হয়ে চারদিকে এক ধরনের সাদা আলো ছড়িয়ে পরতে থাকলো। সেই আলোও তেমন জোরালো হতে পারলো না শ্বেত-শুভ্র কুয়ারা কারণে। এক সময় এমন অবস্থা হল দু'হাত সামনের রাস্তাই ঠিক মত দেখা যাচ্ছে না কুয়াশার কারণে। ড্রাইভারের সামনের কাচ ঘুলা হয়ে আছে বিন্দু বিন্দু শিশির কণা জমে। “ভাইপার” চলিয়ে শিশির বিন্দুদের হটিয়ে দৃষ্টি-সীমা কিছুটা বাড়িয়ে নেয়ার চেষ্টা করে ড্রাইভার। এক সময় চোখে পরে সামান্য জনবসতির চিহ্ন। “শান্তিরহাট“ থেকে চলা শুরু করার পরে কোন একটা বাস বা অন্য কোন যানবাহন চোখে পড়েনি আমাদের এই প্রায় ৪ ঘণ্টার পথে। একসময় দেখতে পাই খাগড়াছড়ি গেট। খাগড়াছড়ির শেষ স্টপেজে বাস থামার পরে আমরা নেমে আসি বাস থেকে। তখন সকাল ৭টার মত বাজে। এবার শুরু হবে আমাদের খাগড়াছড়ি ভ্রমণ।
চলবে.........
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

রাজত্ব আল্লাহ দিলে রাষ্ট্রে দ্বীন কায়েম আমাদেরকে করতে হবে কেন?

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ০৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:০৬



সূরাঃ ৩ আলে-ইমরান, ২৬ নং আয়াতের অনুবাদ-
২৬। বল হে সার্বভৈৗম শক্তির (রাজত্বের) মালিক আল্লাহ! তুমি যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) প্রদান কর এবং যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা (রাজত্ব) কেড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তির কোরাস দল

লিখেছেন সেলিনা জাহান প্রিয়া, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৫



ঘুমিয়ে যেও না !
দরজা বন্ধ করো না -
বিশ্বাস রাখো বিপ্লবীরা ফিরে আসবেই
বন্যা ঝড় তুফান , বজ্র কণ্ঠে কোরাস করে
একদিন তারা ঠিক ফিরবে তোমার শহরে।
-
হয়তো... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাইডেন ইহুদী চক্তান্ত থেকে বের হয়েছে, মনে হয়!

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৮



নেতানিয়াহু ও তার ওয়ার-ক্যাবিনেট বাইডেনকে ইরান আক্রমণের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলো; বাইডেন সেই চক্রান্ত থেকে বের হয়েছে; ইহুদীরা ষড়যন্ত্রকারী, কিন্তু আমেরিকানরা বুদ্ধিমান। নেতানিয়াহু রাফাতে বোমা ফেলাতে, আজকে সকাল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজ ২৫শে বৈশাখ। ১৬৩তম রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আমার গাওয়া কয়েকটি রবীন্দ্রসঙ্গীত শেয়ার করলাম। খুব সাধারণ মানের গায়কী

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০৫

আপনারা জানেন, আমি কোনো প্রফেশনাল সিঙ্গার না, গলাও ভালো না, কিন্তু গান আমি খুব ভালোবাসি। গান বা সুরই পৃথিবীতে একমাত্র হিরন্ময় প্রেম। এই সুরের মধ্যে ডুবতে ডুবতে একসময় নিজেই সুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিশ্ব কবি

লিখেছেন সাইদুর রহমান, ০৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৭

বৈশাখেরি পঁচিশ তারিখ
কবি তোমার জনম
দিন,
বহু বছর পার হয়েছে
আজও হৃদে, হও নি
লীন।

কবিতা আর গল্প ছড়া
পড়ি সবাই, জুড়ায়
প্রাণ,
খ্যাতি পেলে বিশ্ব জুড়ে
পেলে নভেল, পেলে
মান।

সবার ঘরেই গীতাঞ্জলী
পড়ে সবাই তৃপ্তি
পাই,
আজকে তুমি নেই জগতে
তোমার লেখায় খুঁজি
তাই।

যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×