somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বান্দরবন ভ্রমণ – “শৈলপ্রপাত”

০৫ ই জুন, ২০১৪ সকাল ৮:৩৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বান্দরবন ভ্রমণ – “শৈলপ্রপাত”

২৫ জানুয়ারি রওনা হয়ে ২৬ তারিখ সকালে পৌছাই খাগড়াছড়ি। একটি মাহেন্দ্রা গাড়ি রিজার্ভ করে নিয়ে সারা দিনের জন্য বেরিয়ে পড়ি খাগড়াছড়ি ভ্রমণে। একে একে দেখে ফেলি “আলুটিলা গুহা”, “রিছাং ঝর্ণা”, “শতবর্ষী বটবৃক্ষ” আর “ঝুলন্ত সেতু”।

পরদিন ২৭ জানুয়ারি খাগড়াছড়ি থেকে রাঙ্গামাটির দিকে রওনা হই একটি চান্দের গাড়ি রিজার্ভ করে। পথে থেমে দেখে নিই “অপরাজিতা বৌদ্ধ বিহার”। ২৭ তারিখ দুপুরের পরে পৌছাই রাঙ্গামাটি। বিকেল আর সন্ধ্যাটা কাটে বোটে করে কাপ্তাই লেক দিয়ে “সুভলং ঝর্ণা” ঘুরে। ২৮ তারিখ সকাল থেকে একে একে দেখে এলাম ঝুলন্ত সেতু, রাজবাড়ি ও রাজবন বিহার। দুপুরের পরে বাসে করে রওনা হয়ে যাই রাঙ্গামাটি থেকে বান্দারবানের উদ্দেশ্যে। রাতটা কাটে বান্দরবনের “হোটেল ফোরস্টারে”। পরদিন ২৯ তারিখ সকালে একটি জিপ ভাড়া করে নিয়ে চলে যাই নীলগিরিতে।

নীলগিরিতে অনেকটা সময় কাটিয়ে রওনা হই ফেরার পথে। ফেরার পথে সামনে পরবে চিম্বুক পাহার।
বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম পাহাড় এই চিম্বুক। বান্দরবন শহর থেকে ২৬ কিলোমিটার দূরের চিম্বুক পাহাড় সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২৫০০শ ফুট উঁচু। এখানে গিয়েছি আগে কয়েকবার তাই এবার আর কষ্ট করে উপরে সবাই উঠবো না ঠিক করেছি। শুধু স্বপন একা চিম্বুকের চুম্বক আকর্ষণে উপরে একটা ঢু মেরে আসে। এই ফাকে আমরা চিম্বুকের নিচে থাকা পাহাড়ি পেঁপে আর মালটা কিনে খেয়ে আবার রওনা হয়ে যাই। এবার থামবো বান্দরবন শহর থেকে সাড়ে ৭ কিলোমিটার দূরের শৈলপ্রপাতের সামনে। শৈলপ্রপাতটি একেবারেই পথের ধারে।



রাস্তার পাশেই আছে পর্যটকদের জন্য বিশ্রামাগার বা বসার ছাউনি, সেখান থেকে অনেক ধাপের সিঁড়ি নেমে গেছে নিচে প্রপাতের ধারে।

বর্ষায় এই শৈলপ্রপাতের রূপ অপরূপ হয়ে ওঠে, বিশাল জলধারা ছটে চলে প্রচণ্ড গতিতে। সেই সময় এর কাছে যায়গাটা কষ্টসাধ্য ও ভয়ংকর। পুরটা দেখার সুযোগই থাকে না তখন। পাথর থাকে মারাত্মক পিচ্ছিল, একটু এদিক-ওদিক হলেই পা পিছলে আলুর দম হতে হবে তখন।



আমরা যে সময় গিয়েছি (জানুয়ারি মাসে) তখন প্রপাতে জলের ধারা ক্ষণ, অল্প জল পাথরের উপর দিয়ে গড়িয়ে যাচ্ছে। বেশির ভাগ পাথরই শুকনো তাই অনায়াসেই তার উপর দিয়ে হেঁটে যাওয়া যায়।



প্রপাতের নিচের অংশের সমনেই একটা চওড়া ঢালু অংশ আছে, জল জমে আছে সেখানে। জলে না নামতে চাইলে এই অংশ টুকু লাফিয়ে পার হওয়া ছাড়া কোন উপায় নাই (মেয়েদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব)। শীতের সময় বলে আমরা এই অংশটুকু দেখতে পেলাম, বর্ষায় এর ধারে কাছেও যাওয়া যাবে না। শীতকাল হওয়াতে শৈলপ্রপাতের পুরটা হেঁটে দেখে আসতে পারলাম আমরা।


প্রপাতের শেষ অংশে এসে বেশ কয়েক ফুট নিচে জল গরিয়ে গিয়ে একটি মাঝারি আকারের পুকুরের মত হয়েছে, সেখান থেকে জল চলে যাচ্ছে পাহাড়ি ছড়া বা খাল হয়ে।




এই প্রপাতের জলই আশপাশের পাহাড়ি গ্রামগুলির একমাত্র জলের উৎস, এই জলই ওরা পান করে, আবার এই জলেই চলে অন্যান্য সমস্ত কাজ‌ও।


























প্রপাতের উপরে রাস্তার পাশে পাহাড়িরা তাদের নিজেদের হাতে তৈরি নানা সামগ্রীর পশরা নিয়ে বসেছে পর্যটকদের জন্য, আর আছে নিজেদের উৎপাদিত ফল আর ফসলের আসরও। চাইলেই কিনে নিতে পারেন তবে অবশ্যই দরদাম করে।



ওরা যে আনারস বলবে মধুর মত মিষ্টি সেটা আপনি মুখেরও দিতে পারবেন না, আর কে মালটা বা কমলা বলবে চিনির মত মিষ্টি সেটা খেলে আপনার মাথার উকুনগুলি মাথা থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করবে। তবে ভালো পাকা পেঁপে আর কলা খেতে পারে নিশ্চিন্তে। আজকে এগুলি খেয়েই পেট ভরান



আগামী পর্বে দেখা হবে নীলাচলে।
পূর্বের পর্বগুলি -
খাগড়াছড়ির পথে”।
খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – প্রথম পর্ব”।
খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – আলুটিলা গুহা”।
খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – রিছাং ঝর্ণা”।
খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – শতবর্ষী বটবৃক্ষ”।
খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – ঝুলন্ত সেতু”।
খাগড়াছড়ি ভ্রমণ – অপরাজিতা বৌদ্ধ বিহার”।
রাঙ্গামাটি ভ্রমণ – সুভলং ঝর্ণা ও কাপ্তাই হ্রদে নৌবিহার”।
রাঙ্গামাটি ভ্রমণ – ঝুলন্ত সেতু, রাজবাড়ি ও রাজবন বিহার”।
বান্দরবন ভ্রমণ – নীলগিরি”।
বান্দরবন ভ্রমণ – শৈলপ্রপাত”।


প্রথম প্রকাশ: ঝিঁঝি পোকা


এখনো অনেক অজানা ভাষার অচেনা শব্দের মত এই পৃথিবীর অনেক কিছুই অজানা-অচেনা রয়ে গেছে!! পৃথিবীতে কত অপূর্ব রহস্য লুকিয়ে আছে- যারা দেখতে চায় তাদের ঝিঁঝি পোকার বাগানে নিমন্ত্রণ।
৯টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×