আমার আব্বা ৬ মাস অসুস্থ ছিলেন। প্রতিনিয়তো ডাক্তার হাসপাল নিয়ে থাকতে হতো সেই সময়টুকুতে। বাচ্চাদের কোথাও নিয়ে যাওয়া হতোনা। দেখতে দেখতে পহেলা বৈশাখ এসে যায়।
আমার আব্বা সব সময় আমার মেয়ে সাইয়ারাকে বৈশাখের শাড়িচুড়ি কিনে দিতেন। ইলিশ কিনে রাখতেন আগেই। বাসায় ভাগনা-ভাগনিরা আসতো। আমি আমার বউ-বাচ্চাদের নিয়ে কোনো কোনো বছর সকালেই বেরিয়ে যেতাম কোনো গ্রামের দিকে।
সেই বছর তার কিছুই হবে না। ১৩ই এপ্রিল রাতে আমার মেয়ে সাইয়ারা আবদার করে ওকে নিয়ে যেনে পরদিন আশেপাশে একটু ঘুরিয়ে আনি।
সকালে বের হবো বলে রাতেই অনেকদিনের গজানো দাড়ি-গোফ ফেলে দিয়ে চকচকে ক্লিন সেভ হই।
কিন্তু হঠাত করেই মাঝ রাতের কিছু পরে আব্বার সামান্য অস্থিরতা বেড়ে যায়। সাথে সাথে হাসপাতালে নিয়ে যাই। তেমন কিছু না ইলেক্ট্রোলাইট ইমব্যালেন্স। কিন্তু পরদিন ১৪ই এপ্রিল পহেলা বৈশাখের দিন সকালে আব্বা মারা যান। চকচকে ক্লিন সেভ মুখ নিয়ে বাবার জানাজা পড়ি আমি।
এগুলি ২০১৬ সালের কথা। এখনো পহেলা বৈশাখ আসে। বোন, ভাগনা-ভাগনিরা পহেলা বৈশাখ পালন করে। ঘুরে বেড়ায়।
শুধু আমার বাড়িতে পহেলা বৈশাখের কোনো আয়োজন থাকে না, ইলিশ কেনা হয় না। শুধু আমার বৌ-বাচ্চারা কোনো জামা কেনে না, কোথাও বেড়াতে যায় না। আমিও বাড়িতেই থাকি।
এবছর পহেলা বৈশাখ অনেকেরই মাঠে মারা গেলো।
সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:৩৬