somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি - ১৩

০৮ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ২:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :



চাঁদের কতগুলি ডাকনাম আছে জানেন?

অম্ভোজ, অর্ণবোদ্ভব, ইন্দু, উড়ুপ, ঋক্ষেশ, এণকতিলক, ওষধিনাথ, ওষধিপতি, কলাধর, কলানাথ, কলানিধি, কলাভৃৎ, কান্তিভৃৎ, কুমুদনাথ, কুমুদপতু, কুমুদবান্ধব, কৌমুদীপতি, ক্ষীরাদ্ধিজ, ক্ষীরোদনন্দন, চন্দ্র, চন্দ্রক, চন্দ্রমা, চন্দ্রিমা, চাঁদ, ছায়াঙ্ক, তারাধিপ, তারাধিপতি, তারানাথ, তারাপতি, তারাপীড়, তুহিনাংশু, দ্বিজপতি, দ্বিজরাজ, দ্বিজেন্দ্র, নক্ষত্রপতি, নক্ষত্রাধিপতি, নক্ষত্রেশ, নিশাকর, নিশানাথ, নিশাপতি, নিশামণি, নিশারত্ন, নিশিকান্ত, নিশিনাথ, নিশিপতি, পক্ষচর, পক্ষজ, পক্ষধর, বিধু, মৃগাঙ্ক, যামিনীকান্ত, যামিনীনাথ, যামিনীপ্রকাশ, রজনীকর, রজনীকান্ত, রজনীপতি, রজনীরাজ, রজনীশ, রজনীসখা, রাকাপতি, রাকেশ, রাত্রিকর, রাত্রিমণি, রেবতীরমণ, শশধর, শশবিন্দু, শশভৃৎ, শশলক্ষণ, শশলাঞ্ছন, শশাঙ্ক, শশী, শিতরশ্মি, শীতকিরণ, শীতময়ূখ, শীতাংশু, শ্বেতধাম, সিতকর, সিতরশ্মি, সিতরুচি, সিতাংশু, সুধধার, সুধাংশু, সুধাকর, সুধাধামা, সুধানিধি, সুধাবর্ষী, সুধাময়, সোম, হরিণাঙ্ক, হিমকর, হিমকিরণ, হিমধামা, হিমাংশু ইত্যাদি।

চাঁদ নিয়ে ঘাটাঘাটি করার সময় হঠাৎ মাথায় এলো রবিবাবুর কোন কোন ছড়া-কবিতা-গানে চাঁদের উপস্থিতি আছে তা খুঁজে দেখি। প্রথম ৮টি পর্বে সেগুলি দেখিয়েছি। এরপর চাঁদের সমার্থক শব্দ চন্দ্র নিয়ে কবিতাংশ ৯ থেকে ১৫ তম পর্ব পর্যন্ত দিয়েছি। তারপর চাঁদের সমার্থক শব্দ শশীকে উপস্থাপন করেছি ১৬ ও ১৭তম পর্বে। ১৮তম পর্বে ছিলো ইন্দু নামের কবিতাংশ গুলি। আর সব শেষে ১৯ মত পর্বে ছিল চাঁদের আরেক নাম বিধু সংক্রান্ত কবিতাংশ। সব মিলিয়ে ১৯ পর্বে ১৮১টি চন্দ্র পংক্তি দিয়েছে।

এবার কাজী নজরুল ইসলাম তার কোন কোন ছড়া-কবিতা-গানে চাঁদেকে তুলে এনেছেন তার খোঁজ করলাম। এবার দেখুন কি কি পেলাম।





১২১।
এলো রমজানেরি চাঁদ এবার দুনিয়াদারি ভোল
সারা বরষ ছিলি গাফেল এবার আঁখি খোল।।
এই একমাস রোজা রেখে
পরহেজ থাক গুনাহ থেকে
কিয়ামতের নিয়ামত তোর ঝুলি ভরে তোল।।
বন্দী রহে এই মাসে শয়তান মালাউন
(তার) এই মাসে যা করবি সওয়াব দর্জা হাজার গুণ।
ভোগ বিলাসে মাখলি যে পাঁক
রমজানে তা হবে রে সাফ
এফতারে তোর কর রে সামান আল্লা রসুল বোল।।




২২২।
মহুয়া বনে লো মধু খেতে, সই,
বাহিরে চাঁদ এলো, ঘরে মোর চাঁদ কই।।



২২৩।
শুধু চেয়ে থাকি, কেঁদে কেঁদে ডাকি, চাঁদ আর পারাবার
যেন চাঁদ আর পারাবার।
মোদের জীবন-মঞ্জরি দুটি হায়!




২২৪।
নাইতে গিয়ে নদীর জলে
দেরি করিস নানান ছলে
ওরে ভাবিস তোরে দেখতে কখন আসবে জোয়ার ধেয়ে।।
চাদেঁর সাথে মিলিয়ে দেখিস চাঁদপানা মুখ তোর
ভাবিস তুই-ই আসল শশী চাঁদ যেন চকোর
ওলো চাঁদ যেন চকোর।



২২৫।
মহুয়া মদের নেশা পিয়ে বুঁদ হয়েছে বৌয়ে–ঝিয়ে
চাঁদ ছুটছে মনকে নিয়ে
ডুরি ছেঁড়া ঘুড়ি (যেন) লো।।
বাজে নুপূর পাঁইজোড় সারা গায়ে নাচের ঘোর
ওলো লেগেছে, মন হ’ল নেশায় বিভোর;
ওই আকাশে চাঁদ হের মেঘের সাথে যেন করে খুনসুড়ি লো।।




২২৬।
যদি নাহি বয় দখিনা বাতাস
আমার আছে অঞ্চল আছে কেশ পাশ।
যায় ডুবে যাক আকাশে চাঁদ
মোর চাঁদ যেন নাহি ডুবে যায়।।



২২৭।
জানি জানি প্রিয়, এ জীবনে মিটিবে না সাধ
আমি জলের কুমুদিনী ঝরিব জলে
তুমি দূর গগনে থাকি’ কাঁদিবে চাঁদ।।
আমাদের মাঝে বঁধু বিরহ বাতাস
চিরদিন ফেলে যাবে দীরঘ শ্বাস
পায় না বুকে কভু পায় না বুকে তবু মুখে মুখে
চাঁদ কুমুদীর নামে রটে অপবাদ।।
তুমি কত দূরে বঁধু, তবু বুকে এত মধু কেন উথলায়?
হাতের কাছে রহো রাতের চাঁদ গো
ধরা নাহি যায় তবু ছোঁওয়া নাহি যায়।




২২৮।
একাদশীর চাঁদ রে ওই রাঙা মেঘের পাশে
যেন কাহার ভাঙা কলস আকাশ গাঙে ভাসে।।
সেই কলসি হতে ধরার ’পরে
অঝোর ধারায় মধু ঝরে রে
দলে দলে তাই কি তারার মৌমাছিরা আসে।।



২২৯।
কলঙ্ক আর জোছনায় মেশা তুমি সুন্দর চাঁদ
জাগালে জোয়ার ভাঙ্গিলে আবার সাগর-কুলের বাঁধ।।
তিথিতে তিথিতে সুদূর অতিথি
ভোলাও জাগাও ভুলে যাওয়া স্মৃতি
এড়াইতে গিয়ে পরানে জড়াই তোমার রূপের ফাঁদ।।




২৩০।
ওরে ও নতুন ঈদের চাঁদ
তোমার হেরে হৃদয় সাগর আনন্দে উন্মাদ।।
তোমার রাঙা তশতরিতে ফিরদৌসের পরী
খুশির শিরনি বিলায় রে ভাই নিখিল ভুবন ভরি
খোদার রহম পড়ছে তোমার চাঁদনি রূপে ঝরি।
দুখ ও শোক সব ভুলিয়ে দিতে তুমি মায়ার ফাঁদ।।




আগামী পর্বে আরো ১০টি চন্দ্র পংক্তি থাকবে।


=================================================================
সিরিজের পুরনো পর্বগুলি দেখতে -
নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি - ০১, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি - ০২, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি - ০৩, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি - ০৪
নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি - ০৫, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ০৬, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ০৭, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ০৮
নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ০৯, নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ১০ , নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ১১ , নজরুলের চন্দ্রপ্রীতি – ১২



রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০১, রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০২, রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০৩, রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০৪, রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০৫, রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০৬, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ০৭, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ০৮, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ০৯, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১০, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১১, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১২, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৩, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৪, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৫, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৬, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৭, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৮, রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৯
সর্বশেষ এডিট : ০৮ ই আগস্ট, ২০২১ রাত ২:৫৮
৩টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার প্রফেশনাল জীবনের ত্যাক্ত কথন :(

লিখেছেন সোহানী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সকাল ৯:৫৪



আমার প্রফেশনাল জীবন বরাবরেই ভয়াবহ চ্যালেন্জর ছিল। প্রায় প্রতিটা চাকরীতে আমি রীতিমত যুদ্ধ করে গেছি। আমার সেই প্রফেশনাল জীবন নিয়ে বেশ কিছু লিখাও লিখেছিলাম। অনেকদিন পর আবারো এমন কিছু নিয়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি হাসান মাহবুবের তাতিন নই।

লিখেছেন ৎৎৎঘূৎৎ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩



ছোটবেলা পদার্থবিজ্ঞান বইয়ের ভেতরে করে রাত জেগে তিন গোয়েন্দা পড়তাম। মামনি ভাবতেন ছেলেটা আড়াইটা পর্যন্ত পড়ছে ইদানীং। এতো দিনে পড়ায় মনযোগ এসেছে তাহলে। যেদিন আমি তার থেকে টাকা নিয়ে একটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুক্তিযোদ্ধাদের বিবিধ গ্রুপে বিভক্ত করার বেকুবী প্রয়াস ( মুমিন, কমিন, জমিন )

লিখেছেন সোনাগাজী, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ বিকাল ৫:৩০



যাঁরা মুক্তিযদ্ধ করেননি, মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে লেখা তাঁদের পক্ষে মোটামুটি অসম্ভব কাজ। ১৯৭১ সালের মার্চে, কৃষকের যেই ছেলেটি কলেজ, ইউনিভার্সিতে পড়ছিলো, কিংবা চাষ নিয়ে ব্যস্ত ছিলো, সেই ছেলেটি... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সাংঘাতিক উস্কানি মুলক আচরন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৪



কি সাঙ্ঘাতিক উস্কানিমুলক আচরন আমাদের রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রীর । নাহ আমি তার এই আচরনে ক্ষুব্ধ । ...বাকিটুকু পড়ুন

একটি ছবি ব্লগ ও ছবির মতো সুন্দর চট্টগ্রাম।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২৮ শে মার্চ, ২০২৪ রাত ৮:৩৮


এটি উন্নত বিশ্বের কোন দেশ বা কোন বিদেশী মেয়ের ছবি নয় - ছবিতে চট্টগ্রামের কাপ্তাই সংলগ্ন রাঙামাটির পাহাড়ি প্রকৃতির একটি ছবি।

ব্লগার চাঁদগাজী আমাকে মাঝে মাঝে বলেন চট্টগ্রাম ও... ...বাকিটুকু পড়ুন

×