আমার ধারনা এমন কোনো বিষয় নেই যেটা নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কবিতা লেখেন নি।
কত-সহস্র কবিতা উনি লিখেছেন!!
কয়েক দিন ধরে চাঁদ নিয়ে ঘাটাঘাটি করার সময় হঠাৎ মাথায় এলো বরিবাবুর কি কি ছড়া-কবিতা-গানে চাঁদের উপস্থিতি আছে তা খুঁজে দেখি।
আমি কবিতা ফ্রেন্ডলি লোক নই, তাই মানুষের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ার মতো ফলাফল দেখে আমার মাথায় চাঁদ ভেঙ্গে পড়েছে।
সেই ভাঙ্গা চাঁদের ১০টি টুকরো আপনাদের জন্য আজকে রইলো এখানে।
৫১।
এক যে ছিল চাঁদের কোণায়
চরকা-কাটা বুড়ী
পুরাণে তার বয়স লেখে
সাত-শ হাজার কুড়ি।
৫২।
সন্ধ্যেবেলায় আকাশ চেয়ে
কী পড়ে তার মনে।
চাঁদকে করে ডাকাডাকি,
চাঁদ হাসে আর শোনে।
৫৩।
হেনকালে মায়ের মুখে
যেমনি আঁখি তোলে
চাঁদে ফেরার পথখানি যে
তক্খনি সে ভোলে।
৫৪।
হে বিলাসী, তব ঐশ্বর্যের ভার
ক্ষুদ্র রুদ্ধদ্বারে শুধু একাকী তোমার।
নাহি পড়ে সূর্যালোক, নাহি চাহে চাঁদ,
নাহি তাহে নিখিলের নিত্য আশীর্বাদ।
৫৫।
পথে আসিতে ফিরে, আঁধার তরুশিরে
সহসা দেখি চাঁদ আকাশে আঁকা।
অশথ উঠিয়াছে প্রাচীর টুটি,
সেখানে ছুটিতাম সকালে উঠি।
৫৬।
হেথাও ওঠে চাঁদ ছাদের পারে,
প্রবেশ মাগে আলো ঘরের দ্বারে।
আমারে খুঁজিতে সে ফিরিছে দেশে দেশে,
যেন সে ভালোবেসে চাহে আমারে।
৫৭।
আজিকে চাঁদ উঠবে প্রথম রাতে
নদীর পারে নারিকেলের বনে,
দেবালয়ের বিজন আঙিনাতে
পড়বে আলো গাছের ছায়া-সনে।
জোয়ার যখন মিশিয়ে যাবে কূলে,
থমথমিয়ে আসবে যখন জল,
বাতাস যখন পড়বে ঢুলে ঢুলে,
চন্দ্র যখন নামবে অস্তাচল,
শিথিল তনু তোমার ছোঁওয়া ঘুমে
চরণতলে পড়বে লুটে তবে।
৫৮।
ফুলবাগানের বেড়া হতে
হেনার গন্ধ ভাসে,
কদমশাখার আড়াল থেকে
চাঁদটি উঠে আসে।
৫৯।
ঘাটের সিঁড়ি ভেঙে গেছে,
ফেটেছে সেই ছাদ--
রূপকথা আজ কাহার মুখে
শুনবে সাঁঝের চাঁদ।
৬০।
মলয় তব প্রণয়-আশে ভ্রমে না হেথা আকুল শ্বাসে,
পায় না চাঁদ দেখিতে তোর শরমে-মাখা মুখানি ।
আগামী পর্বে আরো ১০টি চন্দ্র পংক্তি থাকবে।
=================================================================
সিরিজের পুরনো পর্বগুলি দেখতে -
রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০১
রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০২
রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০৩
রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০৪
রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০৫