চাঁদের কতগুলি ডাকনাম আছে জানেন?
অম্ভোজ, অর্ণবোদ্ভব, ইন্দু, উড়ুপ, ঋক্ষেশ, এণকতিলক, ওষধিনাথ, ওষধিপতি, কলাধর, কলানাথ, কলানিধি, কলাভৃৎ, কান্তিভৃৎ, কুমুদনাথ, কুমুদপতু, কুমুদবান্ধব, কৌমুদীপতি, ক্ষীরাদ্ধিজ, ক্ষীরোদনন্দন, চন্দ্র, চন্দ্রক, চন্দ্রমা, চন্দ্রিমা, চাঁদ, ছায়াঙ্ক, তারাধিপ, তারাধিপতি, তারানাথ, তারাপতি, তারাপীড়, তুহিনাংশু, দ্বিজপতি, দ্বিজরাজ, দ্বিজেন্দ্র, নক্ষত্রপতি, নক্ষত্রাধিপতি, নক্ষত্রেশ, নিশাকর, নিশানাথ, নিশাপতি, নিশামণি, নিশারত্ন, নিশিকান্ত, নিশিনাথ, নিশিপতি, পক্ষচর, পক্ষজ, পক্ষধর, বিধু, মৃগাঙ্ক, যামিনীকান্ত, যামিনীনাথ, যামিনীপ্রকাশ, রজনীকর, রজনীকান্ত, রজনীপতি, রজনীরাজ, রজনীশ, রজনীসখা, রাকাপতি, রাকেশ, রাত্রিকর, রাত্রিমণি, রেবতীরমণ, শশধর, শশবিন্দু, শশভৃৎ, শশলক্ষণ, শশলাঞ্ছন, শশাঙ্ক, শশী, শিতরশ্মি, শীতকিরণ, শীতময়ূখ, শীতাংশু, শ্বেতধাম, সিতকর, সিতরশ্মি, সিতরুচি, সিতাংশু, সুধধার, সুধাংশু, সুধাকর, সুধাধামা, সুধানিধি, সুধাবর্ষী, সুধাময়, সোম, হরিণাঙ্ক, হিমকর, হিমকিরণ, হিমধামা, হিমাংশু ইত্যাদি।
কয়েক দিন ধরে চাঁদ নিয়ে ঘাটাঘাটি করার সময় হঠাৎ মাথায় এলো রবিবাবুর কোন কোন ছড়া-কবিতা-গানে চাঁদের উপস্থিতি আছে তা খুঁজে দেখি। প্রথম ৮টি পর্বে সেগুলি দেখিয়েছি। এবার চাঁদের সমার্থক শব্দ চন্দ্র ও শশী এর খোঁজ করলাম।
আমি কবিতা ফ্রেন্ডলি লোক নই, তাই মানুষের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ার মতো ফলাফল দেখে আমার মাথায় চন্দ্র ভেঙ্গে পড়েছে।
সেই ভাঙ্গা চন্দ্রের ১০টি টুকরো আপনাদের জন্য আজকে রইলো এখানে।
১৪১।
ছায়াপথে দেবতা সবাই
বসেন দলে দলে।
গাহেন তাঁরা, 'কী আনন্দ!
এ কী পূর্ণ ছবি!
এ কী মন্ত্র, এ কী ছন্দ,
গ্রহ চন্দ্র রবি!'
১৪২।
ওগো জানি না কী নন্দনরাগে
সুখে উৎসুক যৌবন জাগে।
আজি আম্রমুকুলসৌগন্ধ্যে,
নব- পল্লব-মর্মর ছন্দে,
চন্দ্র-কিরণ-সুধা-সিঞ্চিত অম্বরে
অশ্রু-সরস মহানন্দে
আমি পুলকিত কার পরশনে
গন্ধবিধুর সমীরণে।
১৪৩।
তন্দ্রাবিহীন নীড়ে ব্যাকুল পাখি
হারায়ে কাহারে বৃথা মরিল ডাকি।
প্রহর অতীত হল, কেটে গেল লগ্ন,
একা ঘরে তুমি ঔদাস্যে নিমগ্ন,
তখনো দিগঞ্চলে চন্দ্র ছিল।
১৪৪।
নিত্য পুষ্প, নিত্য চন্দ্রালোক,
অস্তিত্বের এত বড়ো শোক
নাই মর্তভূমে
জাগরণ নাহি যার স্বপ্নমুগ্ধ ঘুমে।
১৪৫।
তারকাকুসুমচয়
ছড়ায়ে আকাশময়
চন্দ্রমা আরতি তাঁর করিছে গগনে।
আশা ছিল, কিছু বুঝি আছে অতিরিক্ত
অতীতের স্মৃতিখানি অশ্রুতে সিক্ত--
বুঝিবা নূপুরে কিছু ছন্দ ছিল।
উষার চরণতলে মলিন শশী
রজনীর হার হতে পড়িল খসি।
১৪৬।
শিহরি শিহরি সর্ব শরীর কাঁপিয়া উঠিল ত্রাসে।
পাণ্ডু আকাশে খণ্ড চন্দ্র হিমানীর গ্লানি-মাখা,
পল্লবহীন বৃদ্ধ অশথ শিহরে নগ্ন শাখা।
১৪৭।
সূর্য তাঁরে কহে অনিবার, ‘মুখপানে চাহো একবার,
ধরণীরে আলো দিব আমি।’
চন্দ্র কহিতেছে গান গেয়ে, ‘হাসো প্রভু, মোর পানে চেয়ে–
জ্যোৎস্নাসুধা বিতরিব স্বামী।’
১৪৮।
যে পথে তব রথের রেখা ধরিয়া
আপনা হতে কুসুম উঠে ভরিয়া,
চন্দ্র ছুটে, সূর্য ছুটে, সে পথতলে পড়িব লুটে--
সবার পানে রহিব শুধু চাহি রে ॥
১৪৯।
কটি স্বপ্ন মুগ্ধ সজল নয়নে,
একটি পদ্ম হৃদয়বৃন্তশয়নে,
একটি চন্দ্র অসীম চিত্তগগনে--
চারি দিকে চিরযামিনী।
১৫০।
অজ্ঞাত শিখর হতে
সহসা প্রচণ্ড স্রোতে
ছুটে আসে সূর্য চন্দ্র, ধেয়ে আসে লক্ষ কোটি লোক।
কোথাও পড়েছে আলো, কোথাও বা অন্ধকার নিশি,
কোথাও সফেন শুভ্র, কোথাও বা আবর্ত আবিল
আগামী পর্বে আরো ১০টি চন্দ্র পংক্তি থাকবে।
=================================================================
সিরিজের পুরনো পর্বগুলি দেখতে -
রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০১
রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০২
রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০৩
রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০৪
রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০৫
রবিবাবুর চন্দ্রকণা - ০৬
রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ০৭
রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ০৮
রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ০৯
রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১০
রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১১
রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১২
রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৩
রবিবাবুর চন্দ্রকণা – ১৪