আমি প্রায়শই পুরনো সিনেমা দেখে থাকি। কিছু কিছু সিনেমা কয়েকবার করে দেখেছি, আগামীতেও হয়তো দেখবো। আবার কিছু কিছু সিনেমা বেশ পুরনো হলেও আগে হয়তো দেখা হয়নি। তেমন একটি সিনেমা হচ্ছে ১৯৯৫ সালে মুক্তি পাওয়া জনি ডেপ অভিনিতো Nick of Time সিনেমাটি।
দিন কয়েক আগে হঠাত করে সিনেমাটি দেখতে শুরু করি এবং প্রথম থেকেই সিনেমাটির গল্প পরিচিত মনে হতে থাকে। যদিও এই সিনেমাটি আমি আগে কখনো দেখিনি। কয়েক মিনিটের মধ্যই বুঝে যাই এই সিনেমাটি না দেখলেও ঠিক এই কাহিনী নিয়েই নির্মিত একটি সিনেমা দেখেছি বালিউডের।
সিনেমার শুরুতে দেখা যায় নিরিহ ভদ্রলোক জিন ওয়াটসন (জনি ডেপ) তাঁর বাচ্চা লিনকে নিয়ে লস অ্যাঞ্জেলেসের ইউনিয়ন স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমেছে। ঠিক তখন সেখানে মিস্টার স্মিথ ও মিসেস জোন্স নাম দুজন নিজেদের পুলিশ অফিসার পরিচয় দিয়ে বাবা ও মেয়েকে একটি ভ্যানে উঠিয়ে নেয়।
স্মিথ ওয়াটসনকে বলে যে তাঁরা তাঁর মেয়েকে ১টা ৩০ মিনিটে হত্যা করবে। নিজের মেয়েকে বাঁচাতে হলে ওয়াটসনকে একজন মহিলাকে হত্যা করতে হবে ১টা ৩০ বাজার আগেই। মহিলাটির ছবি বের করে ওয়াটসন দেখে যে মহিলাটি রাজ্যের গভর্নর এলেনর গ্রান্ট।
ওয়াটসন যদি গভর্নর এলেনর গ্রান্টকে হত্যা না করে তাহলে ঠিক ১টা বেজে ৩০ মিনিটে স্মিথ ও জোন্স ওয়াটসনের মেয়ে লিনকে হত্যা করবে। আর ওয়াটসন যদি গভর্নরহত্যা করে তাহলে সে নিজেও পালাতে পারবে না। তাই সে চেষ্টা করে পুলিশ বা সিকিউরিটি গার্ডদের কাছে নিজের পিস্তলটি দেখিয়ে দিতে। যাতে করে পুলিশ তাকে ধরে ফেলতে পারে। কিন্তু স্মিথ সব সময় ওয়াটসনকে নজরে নজরে রাখে। কিছু সময়ের মধ্যেই ওয়াটসন বুঝে যায় গভর্নরের সিকিউরিটির কাজে নিয়োজিত প্রায় সকলেই এই চক্রান্তের যাথে জড়িত।
একসময় ওয়াটসন সুযোগ বুঝে গভর্নরের সেক্রেটারি ক্রিস্টা ব্রুকসকে তার পিস্তল দেখিয়ে এবং সমস্ত ষড়যন্ত্রের কথা জানিয়ে তার সাহায্য চায়। ক্রিস্টা ওয়াটসনকে নিয়ে যায় গভর্নরের স্বামী ব্রেন্ডন গ্রান্ট এর কাছে। ব্রেন্ডন গ্রান্ট এর রুমে দেখা যায় তিনি একজন প্রভাবশালী ব্যবসায়ীর সাথে আছে। ওয়াটসন তাদের সব কথা খুলে বলে। ঠিক তখন সেখানে স্মিথ উপস্থিত হয় এবং গভর্নরের সেক্রেটারি ক্রিস্টা ব্রুকসকে গুলি করে মেরে ফেলে। ওয়াটসন বুঝে যায় গভর্নরের স্বামীও এই চক্রান্তের সাথে জড়িতো।
যাইহোক, একসময় ওয়াটসনের কথা হয় সেখানকার একজন জুতা পালিশ করা লোকের সাথে, তার নাম হিউই। সে ছিলো একজন সৈনিক, যুদ্ধে তার একটি পা হারিয়েছে। ওয়াটসন তাঁকে সব কিছু খুলে বলে। শেষে হিউই ওয়াটসনকে সাহায্য করতে রাজি হয়। সে ওয়াটসনকে গভর্নর গ্রান্টের স্যুটে যেতে এবং তাঁকে ষড়যন্ত্রের কথা জানিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করে দেয়।
গভর্নর ওয়াটসনের কথা শুনে প্রথমে বিশ্বাস করতে পারে না। কিন্তু অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি তার স্বামী ও চারপাশের অন্যান্য লোকের আচরণ লক্ষ্য করে বুঝতে পারেন ওয়াটসন যা বলেছে তাই সত্যি।
শেষর্যন্ত গভর্নরকে ওয়াটসন গুলি না করে স্মিথের দিকে গুলি করে। গভর্নর বেঁচে যান এবং সমস্ত ষড়যন্ত্রের বিষয় জেনে যান। অন্যদিকে সৈনিক হিউই ওয়াটসনের মেয়েকে আটকে রাখা ভ্যানের সামনে গিয়ে উপস্থিত হয় এবং লিনকে বাঁচিয়ে নেয়। সকল চক্রান্তের অবশান হয়।
এবার বলুন এই কাহিনী আপনার পরিচিত মনে হচ্ছে কিনা?
এই কাহিনী অবলম্বনে (একটু এদিক-ওদিক করে) ১৯৯৯ সালে বলিউডে একটি সিনেমা তৈরি হয়, নাম তার "বাদশা" (Baadshah)। মুখ্য ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন শাহরুখ খান।
=================================================================
সিনেমা নিয়ে আমার আরো কিছু পোস্ট -
The Invisible Guest
আমার দেখা অসাধারন একটি সিনেমা : ফরেস্ট গাম্প ১
আমার দেখা অসাধারন একটি সিনেমা : ফরেস্ট গাম্প ২
আমার দেখা অসাধারন একটি সিনেমা : ফরেস্ট গাম্প ৩
=================================================================
সর্বশেষ এডিট : ২৬ শে এপ্রিল, ২০২২ বিকাল ৫:৪১